নারী দিবসের মত শ্রমিক দিবসের অঙ্কুরোদগম শুরু হয় সুদুর আমেরিকার শিকাগো শহরে, দাবী ছিলো আট ঘন্টা কাজ, ঐদিন আমাদের ভাষা আন্দোলনের মত পুলিশ গুলিবর্ষণ করে, কিন্তু ঐদিন বোমা মেরে পুলিশকে তাতিয়ে দেয়া হয়,যা আমাদের বেলায় ঘটেনি। ফলাফল ১০/১২ জন নিহত হয়, ঘটনাটা ঘটে ১৮৮৬ সালে ; ততদিনে কার্ল মার্ক্স জন্ম নিয়ে বই লিখে ফেলেছে বিপ্লবের জন্য। ১৮৮৯ থেকে শুরু করে ১৯০৪ সালের সমাজতান্ত্রিক কমিউনিটির নজরে ছিলো এই ঘটনা, পরে দেশের বিএনপির মত শান্তিপূর্ণ মিছিল, কর্মসুচী পালন করে সিদ্ধান্ত নেয় মে মাসের ১ তারিখ কাজ না করার। পরে এটি জনপ্রিয়তা পায় বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক ও কট্ররপন্থী দলের আয়োজনের খাতিরে এবং পরবর্তীতে সরকারের মাধ্যম দিয়ে এসে ১ মে শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যে দেশে ঘটনার সূত্রপাত ঐ দেশে ১ তারিখ দিবস পালিত হয় না, ভারতে সর্বপ্রথম পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ১৯২৩ সালে।এ দিবসের উদযাপন পূর্বের সোভিয়েত ইউনিয়েনের তাকালে মনে হতে পারে, এভাবে পালন হওয়া উচিত।বর্তমান সোভিয়েত নেই,পুটিন ইউক্রেন নিয়ে ব্যস্ত। বাকি মহাদেশব্যাপী কীভাবে পালন করা হয় কে জানে।
বাংলাদেশে শ্রমিকদের কি হালচাল? বাংলায় শুধু চা শ্রমিকদের শ্রমিক মনে করা হয় মনে হয়, ওদের মুজুরী নিয়ে সবাই উঠে পড়ে লেগেছিলো কিছুদিন আগে,পরে শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে মুজুরী বাড়ানো হয় ; এবং সবাই খুশি হয়।কিন্তু শ্রমিকরা হাসিমুখে চা-গাছে হাত লাগিয়েছে কিনা জানা যায়নি। পরিবহন শ্রমিকদের সিন্ডিকেট শক্তি মাঝে মধ্যে দেখা যায় ও আমজনতা এসব পছন্দ করে না; উক্ত শ্রমিকরাও পরিবহণ মালিক,সিন্ডিকেট পক্ষে থাকতে পছন্দ করে,হয়তো অনেকে জ্ঞানের অভাবে জানে না যে সিন্ডিকেটে লেনিনের আত্না নেই। রানাপ্লাজা ধসে পোশাক শ্রমিকদের কিছুটা সুবিধা হয়েছে বাইরের চাপে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে, কিন্তু সারাজীবন আয় করেও নর্থ সাউথে বা প্রাইভেট মেডিক্যালে ছেলেমেয়ে মানুষ করার সম্ভাবনা নেই।
এ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন,দলের বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকতে পারে, মতবিনিময়, শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের ফাকা বুলির সাম্রাজ্য নিয়ে আলোচনা। বাস্তবতা হলো, দেশে বিদেশী বিনিয়োগ ঢুকছে,শ্রমিকদের শ্রমিক জার্সি খুলে ফেলার সুযোগ নেই,সম্ভাবনা নেই; সস্তা শ্রমের জয় হবে।বরং সরকারী চাকুরীজীবিদের আলাদা প্লান করে ছুটি কাটানোর সম্ভাবনা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:৩৮