somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ জানুন নাৎসী রননীতি ও ব্লীৎসক্রীগের ইতিহাস-২

০৫ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



থার্ড রাইখঃপেছনের কথা

জার্মানরাই বিশ্বে শ্রেষ্ঠ-হিটলারের অদ্ভুত এ তত্ত্ব প্রমান করতে গিয়ে বলি দেয়া হয়েছে কোটি কোটি মানুষ।অথবা ঘুরিয়ে বললে তাদের আত্বত্যাগ এই হিটলারী তত্ত্বকে ব্যর্থ প্রমানিত করে।কিন্তু সত্যিই কি তাই?

পোল্যান্ড আক্রমনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বলতে গেলে আক্ষরিক অর্থে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
পোল্যান্ড আক্রমনের আগে হিটলারের যুদ্ধ ছিলো ভিন্ন স্বভাবের ও চেহারার।এর আগে হিটলারের পদানত হয়েছিলো অষ্ট্রিয়া।দখল হয়েছিলো চেকোশ্লোভাকিয়া।এবং সবই হয়েছে বিনাযুদ্ধে বা ভিন্ন কৌশলের যুদ্ধে।অথবা বলা চলে সফল কূটনৈতিক চালে।হিটলারী কূটনীতি এতই কৌশলী যুদ্ধ ছিলো যা পরবর্তীতে প্রবাদের মত হয়ে গিয়েছিলো।
তবে প্রশ্ন থেকে যায় প্রথম মহাযুদ্ধের ২০ বছর পর আবার আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের সূচনা কেন করলো জার্মানী।সুতরাং বলা যায় কাজটা শুরু করা হয়েছে ভেবেচিন্তেই।নিখাদ নকশা মাফিক এগিয়ে গেছেন হিটলার।তা কি ছিলো এই হিটলারের রণনীতি? কি ছিলো কৌশল তার এবং ‍যুদ্ধ সম্পর্কিত চিন্তা ভাবনা? তা যদি জানা থাকে তবে পরিস্কার হয়ে যাবে দিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাতের ঘটনা।

এই অংশে লেখার চেষ্টা করবো নাৎসী রণনীতি যা নাৎসীতত্ত্বে যুদ্ধ প্রস্তুতির কার্যকারনও বলা যায়। ব্লিৎসক্রীগ সম্পর্কেও বিষদ আলোচনা স্থান পাবে এখানে।

বলা প্রয়োজন যে ব্লিৎসক্রীগ রণকৌশল আবিস্কারের ফলেই হ্টিলারের সাফল্য এসেছে রাতারাতি। ব্লিৎসক্রীগ সে সময়ে ছিলো এক অভূতপূর্ব যুদ্ধ-ফাঁদ।এই অংশে পাঠক ক্লিয়ার হয়ে যাবেন জার্মানীর রণনীতির চিন্তা-ভাবনার ক্রমবিকাশ এবং দু’দুটো বিশ্বযুদ্ধের হোতা জার্মানীর যুদ্ধের প্রবণতা,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের চালিকাশক্তির মূল সূত্রগুলো।সেই সংঙ্গে হিটলারের অভূতপূর্ব কৌশল গুলোর সাথে। যা এক কথায় চমকপ্রদ ও রোমহর্ষকও বটে।তবে তার আগে জানতে হবে নাৎসী তত্ত্বের হিটলারীয় গূঢ়-কথা। পাঠকেদের সুবিধার্থে তা কয়েকটি কিস্তিতে আলাদা পর্ব হিসেবে দিলাম।

নাৎসী রণনীতিঃক্রমবিকাশ-১
১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর যে যুদ্ধ শুরু হয়,সে যুদ্ধ বিশেষভাবে হিটলারের। এ যুদ্ধের স্বপ্ন দেখেছেন তিনি দীর্ঘদিন। তবে ঠিক যে ভাবে চেয়েছিলেন, সেভাবে আসেনি এই যুদ্ধ।কখনও তিনি শত্রু হিসেবে চান নি ব্রিটেন কে।চেয়েছিলেন মিত্রতা।ফ্রান্সকে পুরোপুরি ধ্বংসকরে পূর্ব ইউরোপে জার্মানীকে প্রসারিত করতে চেয়েছিলেন।ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার অনেক আগে মাইনক্যাম্প(হিটলারের আত্মজীবনী)এ হিটলার ইউরোপে জার্মান অধিপত্যের একটি পূর্ণাঙ্গ ছক তৈরি করে রেখেছিলেন।


মাইনক্যাম্প বইটির প্রচ্ছদ


মাইনক্যাম্প বইটির আরেকটি প্রচ্ছদ
ক্ষমতা দখলের পরে এই পরিকল্পনা তিনি ভুলে যাননি।যদিও ইউরোপের রাজনীতিবিদেরা এই পরিকল্পনাকে এক দায়িত্বজ্ঞানহীন, উন্মাদ রাজনৈতিক নেতার প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।কিন্তু হিটলার একে প্রায় হুবহু অনুসরন করেছিলেন।

হিটলারের প্রধান সিদ্ধান্ত ছিল পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সামরিক শক্তি হিসেবে জার্মানী এবং“প্রভূ” জাতি হিসেবে জার্মান জাতিকে নিয়তি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে।দ্বিতীয় রাইখের শান্তিকামী নীতিকে নিন্দা করেছিলেন তিনি। শিল্পায়ন,আন্তর্জাতিক বনিজ্য এবং উপনিবেশবাদ-এই তিনটি বিশেষ প্রবনতার মধ্যে দ্বিতীয় রাইখের শান্তিকামী নীতি পরিস্ফুটিত ছিল। কিন্তু শিল্পায়নের ফলে জার্মানী নিজেই একটি উপনিবেশে পরিণত হয়।আর বর্হিদেশীয় বানিজ্য তো একটা পাহাড় সমান ভুল।কারন তখন এই শান্তিপূর্ন অর্থনেতিক স্থিতাবস্থা আন্তর্জাতিক শান্তির উপর নির্ভরশীল ছিল। এবং এই শান্তির সোনার হরিনের পেছনে ছোটার অর্থ একটাই হতে পারেঃ একটি বাস্তব জার্মান নীতির রূপায়নের সব আশা জলাঞ্জলি দেয়া।

হিটলার মনে করতেন শান্তি ও শান্তিপূর্ণ বানিজ্যের মূলে “প্রভূ” জাতির দুটি চিরন্তন শত্রু-মার্ক্সবাদ ও ইহুদীবাদ।শান্তির লতিত বাণী দিয়েই এই দুই বাদ জার্মানীকে করেছে নিবীর্য।সুতরাং মার্ক্সবাদ ও ইহুদীবাদকে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে।আর আফ্রিকায় নয়, জার্মানী তার উপনিবেশ বিস্তার করবে ইউরোপে। বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার আসন ইউরোপে এবং এখানেই বেগবান যৌবন-চঞ্চল জার্মন জাতিকে তার বেঁচে থাকার জায়গা খুজে নিতে হবে।ইউরোপীয় মহাদেশে জার্মান জাতির সম্প্রসারন শুধু জার্মানীর নীতি নয়,প্রাকৃতিক নিয়ম।সেই জাতির জন্যই প্রকৃতি তার ভূমি রেখে দেয়,যে জাতির এই ভূমি ভোগ করার মত ক্ষমতা ও বিক্রম আছে, যার অধ্যবসায় আছে এই ভূমি চাষ করার।তাই জার্মানীর দৃষ্টি নিবন্ধ থাকা উচিৎ পূর্ব দিকে, যেখানে ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ উর্বর ভূমি প্রসারিত।চিরকাল জার্মানী এদিকেই সম্প্রসারন চেয়েছে এবং এদিকেই আছে সভ্যতার চরম শত্রু সোভিয়েত ইউনিয়ন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইউরোপের মানচিত্র
সভ্যতার এই শত্রুকে ধ্বংস করার দায়িত্বও তাই এই নবজাগ্রত জার্মানীর।

এই সব কথা হিটলার নিজে মনেপ্রানে বিশ্বাস করতেন এবং তার বিশ্বাস জার্মান বাসীর মনে-প্রানে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

কিন্তু পূর্ব ইউরোপের এই বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র জয় করা কি আদৌ সম্ভব?সম্ভব হলে কি ভাবে?
আগামী পর্ব গুলোতে দৃষ্টি রাখুন সেই চমকপ্রদ কাহিনী জানতে।

চলবে...........
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ জানুন নাৎসী রননীতি ও ব্লীৎসক্রীগের ইতিহাস-১
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ জানুন নাৎসী রননীতি ও ব্লীৎসক্রীগের ইতিহাস-৩
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১৩
৩০টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×