somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের বসবাস অযোগ্য নোংরা ২৫টি শহরের সেরা দশের তালিকায় আমাদের 'ঢাকা'

০৮ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
বসবাসের অযোগ্য এই শহরে দেশের যোগ্য নাগরিকদের বসবাস। জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বসবাসের অযোগ্য সেরা দশটি শহরের অন্যতম হিসেবে ঢাকা শহরকে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিকটবর্তী দেশ শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো। সাউথ এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর। অথচ শ্রীলংকার অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় তেমন উন্নত নয়।
তাদের মানসিকতা পরিচ্ছন্ন। কারন পরিচ্ছন্নতার ভাবনা পরিচ্ছন্ন মানসিকতা থেকেই আসে।

আপাতদৃষ্টিতে পুরো রাজধানীটাকেই একটা বড় ডাস্টবিন বলা চলে।
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, যানবাহন সংকট, শব্দদূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মশার উপদ্রব, ভয়াবহ যানজট, পয়ঃনিষ্কাশনের করুণ অবস্থা, জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের করুণ দশা প্রভৃতি সমস্যায় ঢাকা নগরী বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় ঢাকা নগরীতে জীবনযাপন যে সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ তা কারো অজানা নয়।

এই নোংরা শহরে বসবাস করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বি এন পির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী। সরকার এবং বিরোধীদলের বড় বড় মন্ত্রী এমপিরা।
দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতানেত্রীরা। দেশের নামকরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই শহরেই। নামিদামী হাসপাতাল, হোটেল রেস্তোঁরা, শপিং মল, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আরো কত কী...

রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির রাস্তার পাশে ছড়ানো-ছিটানো ময়লা-আবর্জনা দেখে মনে হবে কোনো বস্তিতে দাঁড়িয়ে আছেন আপনি।

যাত্রাবাড়ি মোড় থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত রোডের দুইপাশে আপাতদৃষ্টিতে তাকালে ময়লার ভাগাড় মনে হবে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশ দিয়েই অতিক্রম করেছে শাহবাগ-ফার্মগেট রাস্তাটি। এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ইদানীং হাসপাতালের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে পারে এমন সাধ্য কারো নেই। রীতিমতো মনুষ্য বর্জ্যে ও দুর্গন্ধে এ এলাকায় টেকা দায়। মানুষ যেখানে দুর্গন্ধে দাঁড়াতেই পারে না সেখানে চিকিৎসাসেবা নেবে কী করে?

কোথাও কোথাও ডাস্টবিন থেকে উপচে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়, মানুষের চলাচল স্থানে। কোতোয়ালি, বংশাল, চকবাজার ও মিরপুরের অবস্থা মূলত এইরকমই। আবার ময়লাবোঝাই গাড়িগুলো যখন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ময়লা বহন করে, তখন চলন্ত গাড়ি থেকে ময়লা পড়ে রাস্তায়, ছড়িয়ে যায় নানান জায়গায়। কিন্তু সেদিকে নজর নেই কারো।

শুধু সিটি কর্পোরেশানকে দোষারোপ করলেই চলবেনা। আমরা নিজেরা কতটা সচেতন?
শহরকে নোংরা কারা করছে? আমরাইতো নাকি !!
বসবাসের অযোগ্য সেরা দশ শহরের অন্যতম শহরে বাস করছি। এই লজ্জা কি শুধুই সরকারের নাকি আমাদের সবার?

বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির মতো দেশের মানুষের মানসিকতাও নোংরা হয়ে গেছে আসলে।
নোংরা মানসিকতা নিয়ে নোংরা পরিবেশে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে বাঙ্গালীদের।
তবুও আমরা ডিজিটাল।

টেলিভিশনের টক শোতে দেশের সমস্যা নিয়ে কথা বলা লোকের অভাব নেই। কিন্ত বাস্তবে দেশের জন্য নিজের কিছু ত্যাগ করতে রাজী নেই কেউই। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রতিদিনের টক শো গুলোতে বড় বড় উপদেশ আর বুদ্ধির সয়লাব।
দেশের উন্নতি চায় সবাই।
পর্দার আড়ালে এদের অধিকাংশই নানান অপরাধকর্মের সাথে জড়িত।

মাথায় আবর্জনার স্তুপ নিয়ে আমরা দিনবদলের বুলি আওড়াই। এমন ডিজিটাল জাতি পৃথিবীর অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েও আমরা লজ্জিত হইনা। বরং আমরা এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে সরকারের সমালোচনায় মেতে উঠি।
বিশ্বের সেরা নোংরা শহরে বাস করি। তাতেও আমাদের লজ্জা লাগেনা।
নিজেরাই নোংরা করি, তারপর এক অন্যকে দোষারোপ করি।

রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপ দেখে নাকে রুমাল চেপে রাস্তা পার হচ্ছি। পার হয়েই গালি দিচ্ছি। কাকে গালি দিচ্ছি?
নিজের বিবেককে কখনো প্রশ্ন করিনা,
আমি কতটুকু সঠিক কাজ করছি?
আমি কতটুকু সৎ পথে আছি?
আমি দেশের জন্য কতটুকু ভাবছি?
আমি দেশের জন্য কি করছি???
চা খেয়ে টি ব্যাগটা কোথায় ছুঁড়ে ফেলছি?
পেপসি ম্যারেন্ডা খাওয়া শেষে বোতলটা ডাস্টবিনে ফেলেছি তো?
রাস্তায় আমার ছুঁড়ে ফেলা কলার খোসাটা কারো বিপত্তির কারন হবেনা তো?

নাহ্‌ আমরা এসব ভাবিনা। কেউই ভাবিনা। দেশ গোল্লায় যাক... জন্ম থেকেই আমরা স্বার্থপর জাতি।
এই পঁচা দুর্গন্ধময় শহরে আমাদের জন্ম। দুর্গন্ধ শুঁকে শুঁকে বড় হয়েছি আমরা। নোংরা আবর্জনা দেখলে আমাদের বিবেকে কোনো প্রভাব পড়েনা। শরীরের সাথে সয়ে গেছে।
বর্তমান ঢাকার যে অবস্থা,
পঞ্চাশ বছর পরও নোংরা শহরের তালিকা থেকে মুক্তি পাবে বলে মনে হয়না B:-) :|
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×