মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরিয়ে, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থী তার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। একদিকে প্রত্যাশার চাপ, প্রতিযোগিতা এবং অনিশ্চয়তা নিয়ে একজন শিক্ষার্থী পরিক্ষার হলে ঢুকে। অপরদিকে তার মন ভরা প্রত্যাশা, স্বপ্ন, প্রত্যয়। এই স্নায়ু চাপ নিয়ে কাঙ্খিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কেউ স্বস্তিতে থাকেনা।
এই যখন অবস্থা তখন যদি কোন শিক্ষার্থীর সকল স্বপ্ন অন্যের হেঁয়ালির কারনে ধূলিসাৎ হয়ে যায় তাহলে সেই শিক্ষার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দায় কে নিবে?
গত ১৮ই অক্টোবর এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে শরিফুল ইসলাম এর জীবনে। সে জার্নালিজম বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল। তখন সে জানতোনা তার সাথে কি ঘটতে চলেছে।
ভর্তি পরীক্ষা শুরু হল, সবার মত সেও স্বাভাবিক ভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছিল। অর্ধেকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। মাথায় প্রত্যাশার চাপ আর মনে উৎকণ্ঠা। হঠাৎ করে তার প্রশ্নপত্র মেঝেতে পড়ে যায় এবং সে সেটি তুলে।
কিন্তু এটাই তার কাল হয়ে দাঁড়াল।
পরীক্ষা হলের দায়িত্বরত শিক্ষিকা ঘটনাটি দেখলেন আর সাথে সাথে অগ্রসর হয়ে এসে উত্তরপত্র নিয়ে নিলেন।
সেই অবস্থায় ছাত্রটি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলে যে ম্যাডাম, প্রশ্নপত্র পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি কোন কথা না শুনে উত্তরপত্র নিয়ে নেন! অনেক অনুরোধ এর পরেও তিনি আর উত্তরপত্র ফেরত দেননি।
এখন প্রশ্ন হল, এই হেঁয়ালি আচরনের ফলে একটি নির্দোষ শিক্ষার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর দায় কার? সেই সময়ে উৎকণ্ঠার মাঝে সে কিভাবে প্রমান করবে যে সে নির্দোষ? হারিয়ে যাওয়া প্রতি মিনিট তার জীবনকে অনিশ্চিত করে দিচ্ছিল। একজন গ্রামের কৃষকের ছেলে হিসেবে তার আকুতি করা ছাড়া আর কিইবা করার ছিল? যেখানে আমাদের হাজারো কৃষকের সন্তানেরা শিক্ষার মূলধারা থেকে প্রতিনিয়ত ঝড়ে পরছে। একজন উচ্চশিক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিবেক কি একবারও ভাবেনি যে তাঁর হেঁয়ালি আচরণ একজন শিক্ষার্থী কে কোথায় নিয়ে যেতে পারে? আজ রাতে সেই শিক্ষিকার ঠিকই ঘুম হবে কিন্তু সেই শিক্ষার্থী আর তার পরিবারের অনেক রাতেই ঘুম হবেনা।
এরকম অজস্র ছোট ঘটনা ঘটে যায় কিন্তু কারো চোখে পড়েনা। আমরা কি পারব শুধু একজনকে ন্যায়বিচার দিতে?
শিক্ষার্থীর নামঃ মোহাম্মাদ শরিফুল ইসলাম
পরীক্ষার রোলঃ ৩৮১২৪৮১
বিভাগঃ সি - ৮, জার্নালিজম
কক্ষঃ গনিত ও পরিসংখ্যান বিভাগ (পরিসংখ্যান গ্যালারি)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
পরীক্ষার তারিখঃ ১৮/১০/২০১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



