somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষকে পরাজিত করা যায় না, বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রবেশ নয়- সকল ক্যাম্পাসে সহবস্থানের কথা বলুন।

০১ লা এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের সহজাত বৃত্তি হলো মানুষ পরাজিত হয় না, হতে পারে না, পরাজিত হওয়া সম্ভব নয়। পরাজিত করাও সম্ভব নয়।
মানুষের মৃত্যু হয়,মে*রে ফেলা যায়, পরাজিত করা যায় না। বিধ্বংসী শাসক যদি অত্যাচার করতে করতে সব শেষও করে দেয়; তবুও মানুষ উন্মাদের মতো আচরণ করবে কিন্তু পরাজিত হবে না। মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি অসীম,মহাজাগতিক; এ শক্তি স্বয়ং মহান আল্লাহর দেয়া। এ শক্তি ভেতর থেকে নাড়বেই। শক্তিটা কখনো দমে যায় না।

আমি শিশুকে যখন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করি এ মহাশক্তির খেলাটি দেখি, আমার প্রচন্ড রকম ভালো লাগে। পরিবারের সবাইকে একটি শিশু এক বন্ধনে বেঁধে ফেলে। ছোট্ট একটা শরীরের ভেতর যখন মহাশক্তি-র উথাল-পাতাল প্রাণ সঞ্চারণ হয়, প্রাণটি বিপুল বেগে কল্পনাশক্তি নিয়ে নাড়িয়ে উঠে, গেয়ে উঠে, কেঁদে উঠে, বিপুল কথা বলতে চায়, লাফাতে চায়, পাহাড় টপকিয়ে যেতে চায়; মানুষ এটাই!

আমি যখন একা থাকি, একদম নিবিড় এবং গভীর একা ; আমি আমাকে ছোটবেলায় দেখি, ছোটবেলাকে যতটুকু পারি অনুভব করতে চাই, সে এক অসাধারণ আমি যার অনেককিছুই এখন নাই। কেন নাই?
কারণ আমরা বশ মানতে মানতে একটা শরীরে পরিণত হয়েছি। শরীরের ভেতর যে মহাপ্রাণশক্তিটিই মূল এটা আমি, আমরা বেমালুম ভুলে যাই। এটি নানাভাবে জেগে উঠে, আপনি হয়তো জানেন না, এটি অত্যাচার করলেও হঠাৎ জেগে উঠে, মানুষকে দমিয়ে দেয়া যায় না।

----এ জিনিসটি আমাকে প্রকৃতি-প্রাণ, মানুষ, শিশু এবং কাজী নজরুল ইসলাম মনে করিয়ে দেয়। যৌবনের একটা মারাত্মক কামড় আছে! এ কামড় যত আপনি নীলকন্ঠী বিষের মতো ধারণ করবেন, আপনি কাজী নজরুলকে তত বেশি অনুভব করতে পারবেন, বিপুল ভালোবাসায় মানুষ খোঁজে পাবেন। কাজী নজরুল ইসলামকে অনেকেই একটু অস্থির, চিন্তার উপরের স্তরের কবি দেখাতে চান; মূলতই উনারা চিন্তার গভীরতায়ও যে মানুষ বিপুল প্রাণচঞ্চল এটা অনুভবই করেন না। প্রাণের অমরাবতী-তে মাতৃগর্ভে শিশু কিন্তু গভীরভারে ধ্যাণীই হয়, অস্থির নয়; বরং অসম্ভব প্রাণশক্তি সম্পন্ন মহাপ্রাণ। নজরুল বলেন---

"মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল।
মোরা বিধাতার মত নির্ভয়, মোরা প্রকৃতির মত সচ্ছল।"

বলতেছিলাম, মানুষ পরাজিত হয় না। অনেকের ধারণা ভারত প্রতাপশালী প্রতিবেশী, আওয়ামী লীগ তার সুবিধাভোগী। এখানে তেমন কিছুই সম্ভব নয় ভারত ছাড়া, আবরার মরে গেলো এক লোমহর্ষক নৃশংস হৃদয়বিদারক অত্যাচারে, যেখানে সবাই তার সহপাঠী। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব।

এখন যখন বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির পক্ষ-বিপক্ষই নিষিদ্ধ, তখন কিছু হলোরাম চিন্তা আর প্রগতিশীলতা চলে গেলো বলে কান্না করতেছে। কিন্তু আবরারের হত্যাকান্ড নিয়ে তাদের মানবাধিকার নাই। মানুষরূপী কিছু ছাত্রলীগ যখন প্রতিটি ক্যাম্পাসে চিন্তার উপর অত্যাচারের খড়গ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে তখন উনারা প্রগতির গতি খোঁজে পান না।
কিন্তু মানুষ তো পরাজিত হবে না, চিন্তা তো পরাজিত হবে না, মহাপ্রাণশক্তি তো দমে যাবে না।

সে উদাহরণ গুলো আমাদের বাংলাদেশেই আছে। ইরান থেকে আগত বর্ণবাদী ব্রহ্মণ্য আর্য সম্প্রদায় বাংলায় পরাজিত ছিলো, তাই আমাদের "যবন" বলে গালি দিতো।
ম্লেচ্ছও বলতো। গ্রীক বীরও তার বীরত্ব হারিয়েছে, দিল্লিও আমাদের করায়ত্ত রাখতে পারেনি। প্রাচীন কোল-মুন্ডা-চামার-মুচার-বার ভূঁইয়া থেকে শুরু করে জানা-অজানা সকল বীর বাঙালি, বাংলাদেশী ; সকলেই আমাদের পরাজিত না হওয়া প্রাণ। আমাদের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে; যা আমাদের ভুলিয়ে রাখতে চায়। শুধু একাত্তর থেকেই আমাদের ইতিহাস নয়, তিভাগাও আমাদের ইতিহাস।
সলিল চৌধুরীর
---- হে সামালো ধান হো
---কাস্তেটা দাও সান হো

পরাজয় স্বীকার না করা প্রাণ গায় --------

মোরা তুলবনা ধান পরের গোলায়
মরবনা আর ক্ষুধার জ্বালায় মরবনা
ধার জমিতে লাঙ্গল চালাই
ঢের সয়েসি আর তো মোরা সইবনা
এই লাঙ্গল ধরা কড়া হাতের শপথ ভুলবনা।।

বাংলাদেশের শপথ আমরা ভুলবো না। আমরা হারবো না, গণতন্ত্র এবং সাম্যের সংগ্রাম হারবে না। মানুষের সংগ্রাম হারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×