কবিতার কোন ব্যবহার্যতা কোনকালেই সেভাবে ছিলনা। বিশেষত বাস্তবতাকে মোকাবিলার উপায় হিসেবে। আমার কাছে সহস্র রাজনীতিবিদগণের চাইতে একটি কবিতা বেশি কাছের। আমি নিশ্চিতভাবেই ব্যার্থমানুষ, সেটা যেমন রাজনীতিতে তেমনি বাস্তবতাতেও। তাই বাকি রইল কবিতা; ইদানিং দেখতে ইচ্ছে করে সেটি কিভাবে আমাকে ব্যর্থ করে তুলবে।
কথপোকথন
জনপ্রিয় উপন্যাসের বর্ণিল অক্ষরের মত গলে গলে পড়ছে সময়
যেন বৃষ্টিভেজা চড়ুই পাখি, সদ্য ঘুম ভাঙ্গা রোদের সাথে করছে দুষ্টু লুকোচুরি
জরায়ুতে সিস্ট নিয়ে একটা প্রত্যাশাহীন অপেক্ষা দুলে চলছে সময়ের সাথে সাথে
সমুদ্র হতে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে
তবুও অনেক বেশি সামুদ্রিক গভীরে
প্রায় একই সময়ে আকাশে আকাশে ভেসে যায় বৈদেশিক মেঘ
আর বৃষ্টির হাত ধরে ভূমিতে আছড়ে পড়ে এক আধটা তড়িৎ ডাক
এমনি পরাবাস্তব বিদ্যমানে
দেশব্যাপী গুমগুম করে ওঠে লক্ষকোটি ঝিঁঁিঝঁ পোকা, কিছু বেহায়া প্রাত্যহিক প্রহসন
আর বিস্তর দর কষাকষি শেষে মোড়েমোড়ে রক্ত আর দেহাবশেষ বিলি করে
গণ্যমান্য সদালাপী রাজনৈতিক জন
অথচ কি অদ্ভুতভাবে তুমি আমি মেপে চলি শরীরের হেমগ্ল্লবিন
পানশালাগুলোর উপচে পড়া ভীর ঠেলে মেতে উঠি নগ্ন আনন্দে
এদিকে ডিসকোথেকের অশরীরি আলোতে উন্মাতাল নেচে চলে অধরা অকান্ত জীবন
আর পিছল মেঝেতে হোঁচট খেয়ে তাল সামলাতে থাকে
গুটি কয়েক মুগ্ধ কিশোরের মন
তবুও কি অবলীলায় শিশুমেলাগুলো ভরে ওঠে রঙ্গিন বেলুনে
পার্কিং লটে শোভা পেতে থাকে লাক্সারী প্রিমো কিংবা সিডান
এবং উদ্বেগের অদেখা দূরত্ব থেকে কানে কানে ভেসে আসে
ব্যাখ্যাহীন বিমানবিক গান
এরপর কিছু নেই জেনেও প্রার্থনালয়ে আবৃত্ত হয় আত্ম-প্রবোধের গুচ্ছো গুচ্ছো শ্লোক
যেন ফুঁসে ওঠা নরকের আগুন থেকে বাঁচতে না পারার সহস্রবর্ষী মহাশোক
অথচ কি অদ্ভুতভাবে শব্দে শব্দে আমরা ঘুরে আসি শিলং
মেঘেদের ভেতরে লুকোচুরি করে খুঁজতে থাকি হারানো শৈশব
খাসিয়ার ছুরি দিয়ে ধারালো করতে থাকি স্নায়ু
আর নি:শেষ হতে থাকা অক্সিজেনের বদলে ভ'রে নিতে থাকি
একে অপরের প্রাণ সঞ্চারনী স্বর
এভাবে শব্দগুলি যদি ধ্বনিত হতে থাকে খসে পড়া তারকার মতন
তবে নিশ্চিত ফেলে দেব গ্যাসমাস্ক
অযাচিত অথর্ব জীর্ণ পুনরাবৃত্ত মন
আর ফুসফুসে তুলে নেব আমাদের এই অভিনব কথপোকথন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


