যুগ্ম লেখক
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আমার; একজন "রেণুকা রহমান" ছিলেন, আজ তাঁর কথা খুব মনে পড়ছে। তাঁকে নির্দ্বিধায় বলতে পেরেছিলাম, "আমার অমৃতের হার তোমায় দিলাম গো; এই অধমেরে চিনে রাখো গুরু কৃপা-সিন্ধুর প্রেম বন্ধনে"...। এক জীবনে এক রেণুকা রহমানকে খুঁজে পাওয়াই ভাগ্যের কথা। আমি ভীষণ ভাগ্যবান, আমি বুঝতে পেরেছিলাম, জীবনে সবাই সবসময় "রেণুকা রহমান" থাকেন না। তাই এই রেণুকা রহমানকে দেখার লোভ আমি সামলাতে পারিনি। সম্ভবত রেণুকাও পারেননি। ওর নাম ছিল বিষণ্ণময়ী।
ও বই দিয়ে মানুষ চিনতে চাইতো। আমি মানুষ চিনতে চাইতাম না। মানুষ চেনার বিষয়ে আমার এভারেস্ট সমান আত্মবিশ্বাস ছিল। রেণুকার অমনটি ছিলনা। রেণুকা আমাকে সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে ফেলেছিল আদ্যপান্ত। ওর আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন হয়নি। ওর কাছে কাতর হবার জায়গাটাও সে ই তৈরি করেছিল। ভীষণ মেধাবী এবং সেন্সিবল।
মহাকাল আমাদের জন্য একটা এক্সাইটিং দিন বরাদ্দ করেছিল, সেই দিনটা আর ফিরে আসবেনা, সেটা আমরা দুজনাই বুঝেছিলাম। ক্ষণস্থায়ী দিনটা আমাদের জন্য চীরস্থায়ী হয়ে গিয়েছিল। আমাদের জন্য সেদিন দুটো রঙধনু উঠেছিল, ডাবল হেলিক্স। ক্ষণস্থায়ী সেই দিনটার লোভে আমরা এতটাই মগ্ন ছিলাম যে, আমরা খন্ডিত সময়কে চীরজীবনের ধারাপাতে বাঁধতে চেয়েছিলাম।
রেণুকা আমাকে সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে ফেললেও, যুগ্ম লেখক হিসেবে বইটার শেষ পরিচ্ছেদ লেখার কাজটা আমি ওর উপর পুরোপুরি ছেড়ে দেইনি। পুরো একটা মহাদেশ অতিক্রম করে ওর বিশ্বাস হয়েছিল, যে শেষ পরিচ্ছেদ টা খুব ভিন্নভাবে লেখা সম্ভব। আমার বুকে লেপ্টে থেকে ও বারবার বলছিল, “আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে পারিনি, তুমি এটাই চাও, এটাই।“ আমি ভীষণ অবাক হচ্ছিলাম মনে মনে। “রেণুকা তুমি এত বোঝ, আর এটা বোঝ না?“
বিষণ্ণময়ী, “রেণুকা রহমান" হয়ে উঠেছিলেন। আমি চাইছিলাম খন্ডিত এই জীবনে, তিনি অন্তত আমার জন্য “রেণুকা রহমান" ই হয়ে থাকেন। বই পড়ুয়া, “রেণুকা রহমান" তার চরিত্রে আর থাকতে পারেননি। এটা দোষের কিছু না। আমরা কেউই তো পুরোপুরি বইয়ের চরিত্র নই। আমার কেউতো বইয়ের পুরোপুরি লেখকও নই। মানুষ চেনার বিষয়ে আমার এভারেস্ট সমান আত্মবিশ্বাস আগের মত আর নেই। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা হয়েছে ,তা হল বিষণ্ণময়ী কিংবা “রেণুকা রহমান" এর কারণে সেটার প্রয়োজনও ফুরিয়েছে। তবে শেষ পরিচ্ছেদ টা যে খুব ভিন্নভাবে লেখা সম্ভব সেটার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়েই চলেছে। বই শেষ হোক বা না হোক আমার সহলেখকের জন্য অশেষ ভালোবাসা। জীবনতো এমনি, কখনো লেখক, কখনো লেখা।
২৫টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্মৃতিপুড়া ঘরে
বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।
দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজীব নূর কোথায়?
আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন