বোশেখবেলা গড়ায় বইশালায়
দেমাগের গন্ধে ভার ভার বাতাস
আর কোণে কবোষ্ণ কবুতর
তারপর?
দেহেতে আটকে থাকতে থাকতে
দেমাগপাতার খসখসানিতে
বিরক্ত হচ্ছি!
হরিণের পেছনে বন বিভাগের রাইফেল
কত দারোয়ান,
কুমিরমুখো ক্যামেরা দাঁত বের করে
ঝিলিক দিচ্ছে —
এই বোধহয় কামড়ে দেবে!
কবোষ্ণ কবুতর,
আপনাকে কেন বলতে পারছি না?
ঠিক বছর পনেরো আগে
চেড়াডাঙ্গীর মেলায়
ইয়াবড় হ্যাজাক বাতির নিচে
আমরাই ছিলাম খড়ের আসনে।
হিমালয়ের শৈত্যপ্রবাহ
আমাদের স্পর্শ করতে পারেনি।
ওম থেকে অঙ্গার হয়ে
সে জ্বলছিল — আমাদের ফনিমনসায়।
আমরা, দুটি কবুতর,
রাতভর উত্তাপ নিয়ে
ঘেমে-ভিজে-গলে ঘুমে জড়িয়ে
ছিলাম আঠার মতো
পুরো সপ্তাহ।
প্যান্ডেল খুলে নেওয়ার সময়
ঘাঘড়া ছুড়ে দিয়েছিল
নট্ট অপেরার নারদ,
আর বলেছিল —
“ইশ! তোদের এত্ত ইয়ে... নির্লজ্জ!”
আপনার মনে পড়ে?
এই শহর আমাদের শরীর থেকে
হেমন্ত খুলে নিয়ে
বেড়িবাঁধে পিছমোড়া করে বেঁধে
চোখ তুলে নিয়েছিল।
কবরের শীতলতায়
জমে গিয়েছিল
আমাদের রূহ।
ঋতুর দেয়াল ভেদ করে
আর যাইনি ওপাশে।
কবোষ্ণ কবুতর,
আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?
এই বইশালার দেমাগেরও আগে,
দেমাগপাতার খসখসানির পেছনে,
বন বিভাগের রাইফেল, দারোয়ান, আর
ক্যামেরা-কুমিরেরও আগে —
আমরা ছিলাম
আঠায়, লালায়।
তখন আমাদের ঘামেরা
কথা বলত
শৈত্যপ্রবাহে।
শরৎ চৌধুরী, ১লা নভেম্বর, ঢাকা, ২০২৫
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



