somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ থেকে আমিও তোমাদের দলে

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগ পড়ার অভ্যাসটা বেশ পুরোনো। আর ফেসবুকের কল্যাণে কখনো কোন লিঙ্কে ক্লিক করে ফেললে সারারাত কাবার এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আর এটা সামুতে (সামহোয়্যারইন ব্লগ) হলে তো কথাই নেই। এই অ্যাকাউন্টটা বেশ পুরনো, কিন্তু লেখালেখি বা মন্তব্য করতে কখনো ব্যবহার হয়নি তেমন। রীতিমত চুপচাপ পাঠক আর কি। পড়েছি প্রায় সব বিষয়ের ওপর লেখা; ধর্ম, রাজনীতি, প্রযুক্তি ইত্যাদি ইত্যাদি। এক লেখা থেকে আরেক লেখা, একজনের প্রিয় থেকে অন্যেরটা, এক থেকে অনেক, বহু। এমন করে নাওয়া-খাওয়া ফেলে দুপুর কিংবা রাত দুপুর, ভোর।

দেশকে নিয়ে এতো দুঃখ-কষ্ট, কথার কাঁদা কিংবা ফেসবুকের স্ট্যাটাস আর কমেন্ট ছোঁড়াছুড়ির মধ্যেও আমি কালকের আলো খুঁজি ব্লগারদের লেখায়। তাহলে সবকিছু নষ্টদের দখলে যায়নি? আলবৎ না। তবুও ভুতে পাওয়া আমি যেন ভয় পাই এখানেও। দলাদলি আর মিথ্যের নির্লজ্জ বিপণনে (Marketing); কী কী সব নাম, ট্যাগ; ওসব নাহয় নাইবা বললাম। ভয় লাগে, উচিৎ কথা বলতে গিয়ে আমি কখন কার লাল কার্ড দেখি। মাঠ একটা, রেফারি অ-নে-ক, একেক দলের অনেকগুলো করে। কিন্তু নাচতে নেমে ঘোমটার খোঁজ করে কি হবে, ওসব বেশী আমলে নিলে ঘুঙ্গুর পড়াটাই খামোখার তালিকায় জায়গা খুঁজবে।

আমার একটা ওয়েবসাইট আছে, ন'বছর ধরে চালাচ্ছি। এসব লেখালেখি ওখানে করলেই পারতাম, এখানে সবার নলের ডগায় কোন দুর্মুখে মরতে এলাম তাহলে? সমমনা পাবো সেই আশায়। কিংবা, আমার মতো আরো নিরব পাঠক পাবো, যারা কমবেশি এখানে ঢুঁ মারে, টুকটাক ইতিউতি ক্লিক করে। এখানে পোস্ট করা আমার সব লেখাই আগে-পরে আমার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে, কারণ ওটাই আমার কেন্দ্রীয় তথ্যকেন্দ্র। এই ব্লগ অ্যাকাউন্ট এরই একটা বিভাগ বলা যেতে পারে।

নানান ঘটনা-দুর্ঘটনায় ভেতরে ভেতরে অস্থির লাগতো, হাতটা নিশপিশ করতো কিছু লেখার জন্য। কিন্তু হায়, আমার ওয়েবসাইট থাকার কারণে আমি পেঁচিয়ে গিয়েছি সযত্নে গড়া নিজেরই তৈরি আমলাতান্ত্রিকতার লাল তারে। শেষমেশ অতশত না ভেবে শুরু করলাম কাজ, দেখলাম, ওসব শুধু জুজু।

অ্যাকাউন্ট করার অনেকদিন পর যখন মনে হল আর পারছি না, লিখতে হবে শিগগিরই, তখন আমার আমার ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিলাম, "লেখাঝোকার শো-কেসে হঠাৎ করেই একদিন হাজির হয়ে বলব, 'সারপ্রাইজ!!!'" আর 'SHAON84 বাংলা' নামে শুরু হলো আমার বাংলা ব্লগিং। তবে ব্লগিং না বলে, লেখালেখি বলতেই আমি বেশি খুশি। নামের নীচে লিখলাম, 'লেখাঝোকার শো-কেস'।

আমি 'কোন পন্থী নই, সত্য বলতে চাই'। স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই আমার আদর্শিক আর রাজনৈতিক অবস্থান। আমি একজন বাংলাদেশি মুসলমান। কোন বিষয়ে অতি সংবেদনশীল নই, শুনতে চাই, তবে সেটা পুরো নিঃশর্ত ভাবে নয়। আমার কোন দল নেই। যারা সত্যি বলবে, সু-যুক্তি দেবে আমি শুনবো, জানবো, থাকবো তাদের দলে।

মুক্তিযুদ্ধ কিংবা যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে আমার অবস্থান পরিস্কার। মৃত্যুদণ্ড চাই সেইসব এদেশি পশুদের যাদের ছুঁড়ে দেয়া ধর্মীয় কলঙ্কের দায় আজো নির্মম ভাবে বয়ে বেড়াচ্ছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা, আর সহজ জায়গা করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলামবিরোধী চক্রদের। আমি ইসলামপন্থী, কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী; যেমন করে কোরআন-হাদিসে বলা আছে তেমন করে; উগ্র, মডারেট কিংবা লিবারেল নই।

আমি জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে, সেটার কারণ ধর্ম নয়, দেশ। ওরা এদেশের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না। একাত্তর আর আজকের মধ্যে তেমন কোন আদর্শিক তফাৎ আমি পাই না তাদের কাজে। তখনো তারা ভুল রাজনীতি করেছে, ধর্মের অপব্যাক্ষা করেছে, মিথ্যা বলেছে, সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছে, আজো তাই। যাকে প্রয়োজন তাকে বুকে টেনেছে, আর যাকে দরকার নেই মনে করেছে, তাকে ফেলেছে বুটের তলায়। একাত্তরে যেমন জনগন বুটের নীচে ছিল, আজো তাই। তখন যুদ্ধ, আর আজ হরতাল, চোরাগোপ্তা হামলা। জামাত আর ইসলাম এক করে দেখার তীব্র বিরোধী আমি। এসব নিয়ে আজ যারা ফায়দা লুটছে আমি তাদের তীব্র ঘৃণা জানাই।

অন্ধ না-বুঝ ভারত বিরোধ নয়, যৌক্তিক কারনেই ভারতের সমালোচক আমি। আমেরিকার ব্যাপারেও আমার অবস্থান একই। নিজেদের মেরুদণ্ডহীনতা আর কৌশলগত কারণে আমাদের সম্পর্ক রাখতে হচ্ছে এসব সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের সঙ্গে।

অনেক নিবেদিত সাইবার কর্মী আছে বলেই, তথ্য নিয়ে কথা বলব কম। তত্ত্ব কিংবা তথ্যের চেয়ে মন্তব্য লেখাই হয়তো বেশী জায়গা পাবে এখানে। বলব বিষয়ভিত্তিক আমার অবস্থান, কিংবা আমি কি ভাবছি ওসব নিয়ে। কলাম বলতে পারছি না, তেমন যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে বলে। আমার কোন লেখা কোন বিষয়ের শেষ কথা না। আমার জ্ঞানের পরিধি ছোট। অতএব কোন লেখা বাইবেল মনে করে আমাকে বিপদে না ফেললেই ভালো। গোঁড়ামী নয়, বুঝতে পারলে, কিংবা ধরিয়ে দিলে আমি মেনে নেবো সেটা। ভুল হতে পারে আমারও। লেখালেখির কোন নির্দিষ্ট বিভাগ নেই, হতে পারে অনেক কিছুই। তবে ধর্ম, রাজনীতি, ব্যবসায়, ব্যবসায় গবেষণা, বিপণন, মিডিয়া, সৃষ্টিশীলতা ইত্যাদি এখানে প্রাধান্য পেতে পারে।

দেশের ব্লগার কিংবা ফেসবুকে পুষ্টিকর স্ট্যাটাস লেখকদের নিয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী। বিশ্বাস করি হারিয়ে যায়নি সম্ভাবনার সাদা আলো। আজ থেকে আমিও তোমাদের দলে।

______________________________________________________
FB Profile: shaon84 | FB Page: SHAON84web | Twit: @shaon84 | eMail: [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৪৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×