হে মজুমদার,
"নগ্ন পায়ে হেঁটেছি অনেকটা পথ,আবৃত চোখে দেখছি ঘুমন্ত সত্ত্বার সৌন্দর্য। কিন্তু যুগী বা শিল্পী কোনটাই হতে পারিনি আজো। যদি বলি ইচ্ছা হয়নি তবে,আমার সত্ত্বার সঙ্গে মিথ্যা বলা হবে। সবকিছুকে উপেক্ষা করার শক্তি আমার নেই। তাই কলমের টানে বা তুলির আঁচড়ে চিৎকার করে বলছি, আপনি দিনমানের প্রতিবিম্বতে থাকা দিনক্ষণের অগোচরের,দিকবালিকার পীতবাস। আমি আপনাকে সবটুকু জানি না বা জানতেও চাই না। কারণ সবটুকু জানতে চাওয়াতো পাপ। আমি হিরক খচিত প্রাণহীন রাজ্যর রাজা হবার স্বপ্ন, স্বপ্নেও দেখার সাহস দেখাই না। কারন আমি আপনার অপরিচিত। আপনাকে নিয়ে লেখা, আমার কাছে ঘুমন্ত নারীর নির্বাক সৌন্দর্যকে, ব্যাক্তি সত্তাকে উপেক্ষা করে শিল্পকে চিত্রায়িত করার মতো শক্ত বা আনাড়ি হাতে তর্করত্ন হবার অভিপ্রায় অথবা কোন ষোড়শীর প্রথম প্রেমপত্র লেখার মতো শক্ত। তাই আমার কলমের কাঁটা-ছেঁড়াতে ,আপনার মনোজগতের কোথাও যদি ব্যাথা অনুভব করেন,তাহলে নিছকই অপরিচিত এক মানুষের সাব-কনশাস মাইন্ডের পুতুল খেলা বলে ক্ষমা করবেন। আমাদের কথাকোপনের সময় আপনার প্রতিটি শব্দ কনিকা ছিল বিদ্যুতের স্ফুলিঙ্গের মতো তীব্র ধাবমান অজানা গ্যালাক্সির ক্ষিপ্র নভোযান দিগন্ত ছিন্ন করা লক্ষ আলোকবর্ষ দৈর্ঘ্যের এক মুক্ত স্বপ্ন। আমি শুধু অবলোকন করেছি,প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম সেই নারী খোলস মুক্ত মানব সত্ত্বাকে। আপনার ভাবনা বাস্তবতাকে আলিঙ্গন করে কাফনে আবৃত থাকা জীবন্ত মানুষের, আর আমি স্বপ্ন দেখি কাফনে আবৃত থাকা "নগ্ন মন" নামক জগতের সর্বজনীন ছাত্র হতে। হয়তো এই জন্যই আমি আপনার অপরিচিত। বিশ্বাস করেন,আজকের পর আমাদের যদি আর কোনদিন কথা হয়,আর আপনি আমাকে এস্টেটকাট বলে দেন, "আমি আপনার অপরিচিত",যদি অনুরাগে মূর্ছা যেতে চায় আমার আত্মা ,যাবে। জাগাবো না। নিজের শরীর দিয়ে কফিন বানাবো। কারন আমি এস্ট্রেটকাট মেনে নেব, "আমি আপনার অপরিচিত"। তবে হে মজুমদার আপনি যদি আমার ইউনিভার্সিটির ম্যাডাম হতেন আমি নিশ্চিত আপনার ক্লাসের প্রেমে পড়ে যেতাম। তারপর হয়তো অচেনা এই শহরে চিলেধরা জীর্ণ এক ঘরের বিশাল দেয়ালের অপারের মানুষটাকে খুব পরিচিত মনে হতো। তারপর একদিন হিমেল বাতাস নিঃশব্দে দুটি রাজ্যর রাজা বানিয়ে দিত আমাদের। তারপর মহাকালের এই ধাবমান রেলগাড়ির কোন এক ইস্টিশনে আবার দেখা হতো আমাদের,আপনি হয়তো আপনার ঠোঁটের কনে বাঁকা এক হাসি নিয়ে একটু কৌতূহলী মনে জিজ্ঞাসা করতে চাইতেন, আমাকে মনে পড়েছে?
জী হে মজুমদার!! ফ্রাঙ্কফুটের বই মেলায় নতুন বইয়ের গন্ধে মনে পড়েছে আপনাকে। সিসটাইন চ্যাপেলের “লাষ্ট জাজমেণ্টে”র মত মহান সৃষ্টি পিয়েতা”র সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমেই মনে পড়েছে আপনাকে। সিসিলির কার্নিভেলে এথেন্সের কফি শপের জমজমাট কবিতা পাঠের আসরে, মনে পড়েছে আপনাকে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই,আপনার নারী সত্ত্বাকে উপেক্ষা করার শক্তি আমার নেই। তাই বিন্ম্র শ্রদ্ধা হে মজুমদার।"
@অপরিচিত
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১