মাতৃগর্ভে একসঙ্গে বাস,পৃথিবীর আলো দেখা কিছুক্ষণের ব্যবধানে। এরপর একসঙ্গে ক্রিকেট খেলা। বলছি ক্রিকেটার যমজ ভাইদের কথা। চলুন আজ এমন কয়েকজন যমজ ক্রিকেটারের গল্প শোনা যাক।
স্টিভ ও মার্ক ওয়াহঃ স্টিভের চার মিনিট পর পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন মার্ক। আন্তর্জাতিক অভিষেকেও পেছনে মার্ক। স্টিভের ছয় বছর পর টেস্ট অভিষেক হয় মার্কের। ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিলো অবশ্য আরও বছর তিনেক আগেই। মার্কের টেস্ট অভিষেকটাও ক্রিকেটের অমর এক গল্প। দলে সুযোগ পেয়েছিলেন যমজ বড় ভাই স্টিভের বদলে! আর অভিষেকেই দেখিয়েছিলেন দারুণ চমক। তবে স্টিভ ফিরেছিলেন দ্রুতই। পরবর্তী প্রায় এক যুগ ওয়াহ ভাইয়েরা ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা। দু'জনে টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে খেলেছেন ৮৬৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। করছেন ৩৫ হাজারের বেশী আন্তর্জাতিক রান,নিয়েছেন ৪৩১টি উইকেট এবং ৫১২টি ক্যাচ। এই পরিসংখ্যানের পর ওয়াহদের নিয়ে আর কিছু বলার প্রয়োজন মনে হয় নেই।
একসঙ্গে খেলাই শুধু নয়,একই রুমে দীর্ঘদিন থেকেছেন দু'জন,বেড়ে ওঠেছেন একসাথে। তার পরেও খেলার ধরণ,ব্যক্তিত্ব সবকিছুতেই দু'জন ছিলেন আলাদা। এই প্রেক্ষাপট থেকেই জন্ম ক্রিকেটের বিখ্যাত স্লেজিংগুলোর একটির। ২০০১ সালে ওভাল টেস্টে অভিষিক্ত ইংলিশ পেসার জিমি আরমন্ডকে মার্কের স্লেজিং,"মেট,তুমি এখানে কী করছো? তুমি তো টেস্ট খেলার যোগ্যই নও!" জবাবে আরমন্ড বলেন,"হয়তো তোমার কথাই ঠিক,তবে আমি অন্তত আমার পরিবারের সেরা ক্রিকেটার!"
হ্যামিশ ও জেমস মার্শালঃ ২০০৫ সালে অকল্যান্ড টেস্টে বড্ড বিপাকে পড়েছিলেন রিকি পন্টিং। কারণ কিউইদের হয়ে তখন একসঙ্গে ব্যাট করছিলেন মার্শাল যমজরা। রিকি বুঝতেই পারছিলেন না কোন জন কে! দুই ভাই দুই ব্র্যান্ডের ব্যাট নিয়ে খেলছিলেন বলে রক্ষা। অবিকল চেহারা,প্রায় একই উচ্চতা,শারীরিক গঠন আর কোঁকড়ানো চুল মিলিয়ে দুই মার্শালকে আলাদা করতে গলদঘর্ম হতে হয় পরিচিত জনদেরও। একসঙ্গে টেস্ট খেলা ১ম 'আইডেন্টিক্যাল' বা একই রকম চেহারার যমজ নিউজিল্যান্ডের এই দুই ভাই। এখন দু'জনের বয়স ৩৫ বছর। তবে ভালো ফর্ম ধরে রাখতে না পারায় দু'জনেই এখন দলের বাইরে।
দুই ডেন্টনঃ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারেননি দু'জনের কেউই। তবে দীর্ঘদিন নর্দাম্পটনশায়ারের ইনিংস ওপেন করেছেন বিলি ও জন ডেন্টন। দুজনেই খেলেছিলেন একশর বেশী ম্যাচ। পরে এই যমজদের ছোট ভাই ডন ডেন্টনও প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছিলেন।
ডাডলি ও সিডনি রিপনঃ কেনসিংটনে জন্ম,কিন্তু দুজনেই খেলেছেন সামারসেটের হয়ে। ডেন্টনদের মতো তাদেরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি কখনই। এই দু'জনও ছিলেন ওপেনার ব্যাটসম্যান। একসাথে ব্যাট করার সময় যথেষ্ঠই গোলমাল বেধে যেতো স্কোরারের। ১৯১৪ সালে নর্দাম্পটনে এক ম্যাচে স্কোরারের তো পাগল হওয়ার মতো অবস্হা হয়েছিলো। কারণ সামারসেটের হয়ে ইনিংস ওপেন করেছিলেন রিপন যমজরা,অপর দিকে নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন ডেন্টন যমজরা!
দুই মাতামাবানাদজোঃ জিম্বাবুয়ের হয়ে মাত্র ৩টি টেস্ট ও ৭টি ওয়ানডে খেলেছেন। কিন্তু নামটাই তাকে মনে রাখা বা ভুলে যাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ-এভারটন ভিকমবোরেরো মাতামবানাদজো! ভালো একজন ফাস্ট বোলার ছিলেন,কিন্তু পিছু না ছাড়া চোটের কারণে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সেই ছেড়ে দেন ক্রিকেট খেলা। এভারটনের যমজ ভাই ডারলিংটনও খেলেছেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট।
ডেভিড ও জোনাথন ভ্যারিঃ যমজদের একসঙ্গে খেলার নজিরতো কতই আছে,কিন্তু দু'জন দুই দলে? এখানেই আলাদা হয়ে আছেন ডেভিড ও জোনাথন ভ্যারি। ডেভিড পড়তেন কেমব্রিজে,জোনাথন অক্সফোর্ডে। এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট মাঠে মুখোমুখি হতো নিয়মিতই,যমজ ভাইয়ের লড়াইও তাই জমতো দারুণ। জোনাথন ছিলেন পেস বোলার। ১৯৮২সালের এক ম্যাচে ডেভিডকে আউট করেন জোনাথন। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি তাদেরও।
দুই বেডসারঃ মুখাবয়বে যেমন,তেমনি সাদৃশ্য ছিলো শারীরিক গড়নেও। দু'জনেই ছিলেন সুঠামদেহী,দূর থেকে আলাদা করা যেতোনা। তবে একজন ছিলেন পেসার অন্যজন স্পিনার। এ নিয়েও মজার এক গল্প আছে,ছেলেবেলায় দু'ভাই টস করে ঠিক করেছিলেন কে পেস বল করবেন আর কে স্পিন। টসে জিতে আলেক বেডসার বেছে নিয়ে ছিলেন পেস বোলিং। নিজের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে পরে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ৫১টি টেস্ট। সর্বকালের সেরা মিডিয়াম পেসারদের একজন মনে করা হয় স্যার আলেক বেডসারকে। এরিক বেডসার টেস্ট ক্যাপ পরার সুযোগ পাননি। তবে দুই দশক কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছেন বেশ দাপটের সাথেই।
সিগন্যাল বোনেরাঃ ক্রিকেটের বিখ্যাত যমজদের কথাতো অনেকেই জানেন,কিন্তু একসঙ্গে টেস্টে অভিষেক হওয়া যমজদের কথা ক'জন জানেন? তথ্যটি তাই অনেকের জন্যই আসবে বিস্ময় হয়ে,একসঙ্গে টেস্টে অভিষেক হওয়া যমজ ক্রিকটার কিন্তু ছেলে ক্রিকেটার নয়,মেয়ে ক্রিকেটার! জন্মই শুধু একসঙ্গে নয়,লিজ ও রোজ সিগন্যাল নিউজিল্যান্ড মহিলাদলে সুযোগ পেয়েছিলেন একসাথে। ১৯৮৪ সালে তাদের টেস্ট অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে,হেডিংলিতে।
আলোচিত ব্লগ
ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।
কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।
ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।
কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।