মেহের আফরোজ শাওনের হচ্ছে চোরের মন পুলিশ পুলিশ অবস্থা। ছবি মুক্তির আগেই উনি নিশ্চিত ফারুকি সাহেব তাকে ছবিতে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করবে।আর তাই ডুব বন্ধের জন্য তিনি তার অস্ত্রপাতি(রাজনৈতিক প্রভাব)নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছেন। ফারুকি হুমায়ুন আহমেদের জীবনের উপরে ভিত্তি করে হয়ত ছবিটা বানিয়েছে কিন্তু যেহেতু সরাসরি উনার জীবনী নিয়ে ছবি বানায় নাই তাই শাওন কেন তার পরিবারের যারা আছে তারাও এই ছবি স্থগিত করার অধিকার রাখে না। যারা সিনামার খোঁজ খবর রাখে তারা জানে যে এই ধরনের ছবিতে তো কোন কিছু করার নাইই নাম ধাম উল্লেখ্য করেও যদি সিনামা বানায় এবং ছবির শুরুতে লিখে দেয় ‘এই ছবির সাথে কোন জীবিত অথবা মৃত ব্যাক্তির কোন সম্পর্ক নেই, যদি কারো সাথে মিলে যায় তাহলে তা কাকতালীয় ছাড়া আর কিছু নয়।” যারা আমার কথা বিশ্বাস করবেন না তাদের কে যে কোন একটা ফান ম্যাগাজিন হাতে নিতে অনুরধ করব, সেখানে দেশের যে কাও কে নিয়ে সেই লেভেলের মজা করা হয় শুরুতে এই রকম একটা লাইন লাগায় দিয়ে। ইংলিশ মুভিতে ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। কাজেই শাওন আফা কিসের ভিত্তিতে ছবি আটকাতে চাচ্ছে বোধগম্য নয়।
তবে ফারুকি একটা জিনিস মানতেই হবে। ছবির কাহিনী হুমায়ুন আহমেদ নাকি জাফর ইকবাল তা আমরা জানলাম কি ভাবে? না দেশের কোন পত্রিকা থেকে জানার সুযোগ হয় নাই আমাদের, খবর প্রথম প্রকাশ ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে।উনার সব কাজ কারবার ইদানিং আন্তর্জাতিক (!!) হয়ে যাচ্ছে। ইরফান খানের মত আন্তর্জাতিক অভিনেতা কে দিয়ে ছবি বানানোই না শুধু এখন তার ছবির নিউজ করে আন্তর্জাতিক সিনামা ম্যাগাজিন ভ্যারাইটি।যদিও নিন্দুকেরা বলে যে ভ্যারাটির যে সাংবাদিক রিপোর্ট করে সে ফারুকি সাহেবের ঘনিষ্ঠ লোক, তাই তাদের সময় ভোর বেলায় নিউজ বের হয় যে ইরফান খান ফারুকির ছবি ব্যান খাইছে আর আমাদের সময় সন্ধ্যা হলেও আমাদের মিডিয়া একটু ট্যা ফু টের পেলো না!! ভ্যারাইটির খবর ফারুকি সাহেব শেয়ার করার পর আমাদের মিডিয়া খবর পেলো কাম তো একটা হয়ে গেছে!!!। দেখা যাচ্ছে উনার ছবির ব্যাপারে বিদেশি মিডিয়াই সব খবর আগে আগে পেয়ে যাচ্ছে।আন্তর্জাতিক সেলিব্রেটি বলে কথা!! অবশ্য ফারুকি তার নিজের স্ট্যাটাসে জানাইছে তার ছবি স্থগিত করেছে।ভ্যারাইটি বলছে ব্যান করছে, এখন ব্যান আর স্থগিত এক কিভাবে হলো তা আমারা জানি না। তবে যা হওয়ার তাই হয়ে গেছে, ছবি মুক্তির আগেই হিট।
প্রথম প্রথম মিডিয়া নিয়ে যা হয়েছে তা কে সিনামা মার্কেটিং বলে মনে হয়েছে।ভারত থেকে নিউজ লিক হওয়া থেকে শুরু করে সব। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে তাকে মার্কেটিং বলতে পারছি না।শাওন আহমেদের নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছে না। একবার অনাপত্তি পত্র দিয়ে দেওয়ার পর হঠাৎ করে ছবি স্থগিত করে দেওয়া কোন সুস্থ কিছু হতে পারে না। আর যে ছবিতে ইরফান খানের মত অভিনেতা অভিনয় করছে সেই ছবির মনে হয় না এই ধরনের সস্তা মার্কেটিং এর প্রয়োজন আছে।
তবে এখন ফারুকি সাহেব আরেকটা কাজ করতে পারে। হুমায়ুন আহমেদের জীবনের থিম নিয়েই যেহেতু ছবি বানিয়েছেন তাই এখন শাওন আহমেদে যে আচারন করছেন তাও তার ছবিতে সংযুক্ত করে দিতে পারেন। ছবি যেহেতু স্থগিত হয়েছেই আরেকটু সময় নিয়ে এই ঘটনা গুলিও যদি ছবিতে ঢুকিয়ে দেন তাহলে বেশ হয়। কিংবা ডুব ২ নামে আরেকটা চলচিত্রও বানাতে পারেন, যেখানে শাওন আহমেদ মূল চরিত্র থাকবে। তবে আমার অনুরধ থাকবে এই চরিত্রে যেন আবার তিশা কে না নেওয়া হয়,অন্যকোন আন্তর্জাতিক শিল্পী কে যেন নেওয়া হয়। ফারুকির কল্যাণে তাও তো আমরা আন্তর্জাতিক শিল্পী কে আমাদের দেশে দেখতে পাই!!!
ডুব ছবি সম্পর্কে শিলা আহমেদ যে কথা বলেছে তাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহন যোগ্য এবং যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে আমার কাছে। তিনি বলেছেন, আগে ছবি দেখি, তারপর মন্তব্য করব। ব্যাস, সবারই এমন মন্তব্যই হওয়া উচিৎ ছিল।
এই ছবির পার্টনার হিসেবে ভারতও আছে। তাই দেশে মুক্তি না পেলে ভারত থেকে ছবি মুক্তি পাবে। দেশের বাহিরে বহু জায়গা থেকে সিনামা মুক্তি দেওয়া সম্ভব। তাই এই ছবি কে যে আটকানো যাবে না তা যদি আমাদের মহামান্য বুঝতেন তাহলে জল কম ঘোলা হত, আর আমাদেরও নেট খরচ বাঁচত।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬