বাংলাদেশের বুকে এক দারুন প্রতিভার আগমন ঘটে গেছে। তার প্রতিভার তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে বহুত এলেমদার। তিনি একাধারে রাজনীতি, সমাজনীতি, রাষ্টনীতি, পেটনীতি চ্যা...নীতি সহ ধর্ম, ইতিহাস এবং অবশ্যই অবশ্যই শিল্পকলা ও সাহিত্য সকাল বিকাল নিয়ম করে গুলে খাওয়াচ্ছে দেশবাসী কে। তার নিজেস্ব পান্ডা বাহিনী আছে। অনলাইনে কারো মতামত যদি পীরে কেবালার পছন্দ না হয় তাহলে তার পান্ডা বাহিনী ঝাপিয়ে পরবে সেই আইডির উপরে। নিমিষে আইডি ব্লক তিনদিনের জন্য কিংবা চিরতরে। উনি যে কত জ্ঞানী তা তো আমি বললে বিশ্বাস করবেন না আপনারা, এই যে রোহিঙ্গা বিষয়ে সরকার যে নীতি পরিবর্তন করল কার কারনে? এই মহামান্য এই বিষয়ে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, তারপরেই তো সব পরিবর্তন হলো!! এই কথা কি আমি বলছি? তার কারনেই যে হয়েছে তা তিনিই আবার আমাদের কে ফেসবুকে জানিয়েছেন
নানান সময়ে নানান বিষয়ে জ্ঞান বিতরণ করে থাকলেও খুব সম্প্রতি যে তিনি জ্ঞান প্রসব করে একখান বই প্রকাশ করেছেন তা পূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভঙ্গ করে দিয়েছে। তার হঠাৎ মনে হয়েছে যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ঠিক মত লেখা হয়নি। তিনি জীবিত থাকতে তা তো হতে দেওয়া যায় না। তাই তিনি লিখে ফেললেন মার্কিন ডকুমেন্টে মুক্তিযুদ্ধ। তারপর দেশবাসীকে শেখালেন এক নতুন ইতিহাস। আমরা মুগ্ধ হয়ে জানলাম নিক্সনের আমেরিকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সাথেই ছিল। পাকিস্তান কে কোন প্রকার অস্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করেনি এমন কি চিন্তাও করেনি। আমরা বাল্টিমোরের যে ঘটনা জানতাম তা বিলকুল ঝুটা, খাস মিছা কতা!! তিনি জানালেন মুক্তিযুদ্ধ মূলত ডিসেম্বরের ১০ তারিখেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি সময় আসলে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণের জন্য আলাপ আলোচনা চালাচ্ছিল। তবে ১৫ ডিসেম্বর ভুট্টু জাতিসংঘে কি করতেছিলেন তার কোন ব্যাখ্যা অবশ্য তিনি দেননি।তিনি জানালেন আমেরিকা যে সাবমেরিন পাঠিয়েছিলেন তা মুক্তিযুদ্ধ কে বাঁধা দেওয়ার জন্য না। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে রাশিয়া আর আমেরিকা এক সাথে কাজ করেছিল বলেও তিনি তত্ত্ব দিয়েছেন। তার জ্ঞান পরিমাপ করা আমার মত ক্ষুদ্রের দ্বারা সম্ভব না। আমার শুধু কুর্নিশ করতে ইচ্ছা করছে উনাকে। ভাগ্যবান আমরা যে এই সময়ে জন্মেছিলাম। সামনে তার নতুন বই আসছে মুক্তিযুদ্ধে ইসলাম!! আমেরিকাকে চাটা হয়েছে এবার মনে হয় অন্য কিছু দরকার উনার চাটার জন্য।
তবে আফসোস হচ্ছে। উনার হাজার হাজার ছাগল ফোলোয়ার বুঝলেও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর উনার বইয়ের কদর বুঝে নাই। উনার বই কে বাতিল্ করে দিয়েছে। এতে তিনি ভীষণ গোস্বা করেছেন। মাঝে তার অবশ্য একটু খারাপ সময় গিয়েছে। তিনি ভুল করে লুঙ্গি কে নিয়ে মাতামাতি করে ফেলেছিলেন মাত্রার বাহিরে। কিন্তু লুঙ্গি তো লুঙ্গিই। বেজায়গায় এমন ভাবে খুলে গেছে যে এই মহামন্য পর্যন্ত হকচিয়ে গেছেন। এর মধ্যে তিনি এক টিভি প্রোগ্রামে বলার চেষ্টা করেছিলেন যে বর্তমান যে নারী আন্দোলন চলছে বিশ্বজুড়ে তা পুরোটাই শরীর নির্ভর। পরে উপস্থাপক আর অন্য আলোচকের উপর নিচ থেকে চাপ খেয়ে বেচারা একটু চাপের মধ্যেই পরে গিয়েছিলেন। তবে চিন্তার কোন কারন নাই। তিনি আবার ফুল ফর্মে।
আহমেদ ছফা তার নিকট ও দূরের প্রসঙ্গ বইয়ে বলেছেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সর্বোত্তম বস্তু হচ্ছে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। তার সম্পর্কে ছফা সাহেব বলেছেন - “হজরত সাঈদী যদি গান করতেন, মাইকেল জ্যাকশনের কাছাকাছি পৌঁছাতেন।অভিনয় করলে ছবি বিশ্বাস কে ছাড়িয়ে যেতেন। নাচ করলে বুলবুল চৌধুরীর রেকর্ড ম্লান হয়ে যেত। নাচ গান অভিনয় এবং তার উপরে ধর্মকথা এই একের ভিতর চার তিনি সমন্বয় করেছেন। তাকে কি করে আমি সামান্য মানুষ বলব।” আজকে আহমেদ ছফা বেঁচে নাই। থাকলে তার লিস্টে এই মহামান্য প্রতিভার নাম তিনি তুলে নিতেন। তিনি একের ভিতরে চার দেখেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। আর আমাদের ''কি না কি'' ভট্টাচার্য যে একের ভিতর কত তা একমাত্র খোদা ছাড়া অন্য কারো পক্ষে অনুমান করাও কষ্টকর, দুঃসাধ্য এমন কি দুঃস্বপ্নও বটে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১১