somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাতুড়ি......

১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হাতুড়ি ভাল কোচ, কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু হাতুড়ি কে সব কিছুর শেষ ভাবার কারন কি? হাতুড়ি কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে দেশের জন্য অবশ্যই ভাল হত কিন্তু সে যেভাবে লাগাম ছাড়া হয়ে যাচ্ছিল তাতে দেশের ক্রিকেটের মঙ্গল থেকে অমঙ্গল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ।

হাতুড়ির সম্পর্কে সব চেয়ে বেশি যেটা বলা হয় তা হচ্ছে হাতুড়ির কোচিং এ বাংলাদেশ নাকি সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। মানে এর আগে কোন কিছু নাই, হুট করে হাতুড়ি আসল আর বাংলাদেশ সমানে সাফল্য পাওয়া শুরু করে দিয়েছে!! একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো না? বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি কোন একক ব্যক্তির সাফল্য না। একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া পরে এই সাফল্য এসেছে। যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গ্রিনিজের হাত ধরে। হোয়াটমোরের হাতে পরিবর্তন ক্রিকেটের সূচনা। ছোট ছোট দল হলেও জয়ের অভ্যাস তৈরি হয়েছিল তখনই।ছোট ছোট দল কে হারাতে হারাতেই ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারত আর দক্ষিন আফ্রিকা কে হারিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সেই দলে এখনকার মত অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কয়জন ছিল?
জিমি সিডন্স অনেকের অপছন্দের কোচ ছিল। সেই সিডন্সের সাফল্য কি কিছু মাত্র কম ছিল? আইসিএলে প্রথম সারির খেলোয়াড়দের হারিয়ে দল যখন নড়বড়ে তখন সেই দল হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড কে প্রথমবারের মত। নিউজিল্যান্ড কে ধবল ধোলাই করা হয় সিডন্সের আমলেই।
এরপর স্টুয়ার্ট ল আসে কোচ হয়ে। খেলোয়াড়দের মানসিকতার যে পরিবর্তনের শুরু তা স্টুয়ার্ট লয়ের আমল থেকেই শুরু বলে মনে করা হয়। এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ!! এত তাড়াতাড়ি ভুল গেলে চলবে? তা এই লয়েরর আমলেই। স্বল্পকালীন কোচ ছিলেন শেন জার্গেনসেন, সেই জার্গেনসেনের সময় বাংলাদেশ হারিয়েছে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ কে। নিউজিল্যান্ড কে করেছে দ্বিতীয় বারের মত ধবল ধোলাই।

এই লম্বা সফর শেষ হয়েই হাতুড়ির হাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম এসেছে। তারপরেও তার সাফল্য আসা শুরু করেছে কিন্তু তার আসার পরে না, শুরু হয়েছে মাশরাফি নামক ম্যাজিক যখন থেকে ম্যাজিক দেখানো শুরু করেছিল তারপর থেকে।এর আগে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের কাছে ৫৮ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ, যা হাতুড়ি প্রেমিকরা কখনোই বলে না। হাতুড়ি বরং সৌভাগ্যবান, তার সময় বাংলাদেশ টিম যে পরিমান পরিপক্ক তা এর আগে কখনোই ছিল না। যে বেস্ট ফাইভের কাঁধে ভর দিয়ে হাতুড়ির সাফল্যের ঢোল বাজানো হয় সেই অভিজ্ঞ পাঁচজনের একজন কেও হাতুড়ি তৈরি করেনি। বরং এদের কে সময় সময় অগ্নি পরীক্ষা দিতে হয়েছে কোচের কাছে। অবিশ্বাস্য প্রতিভা নিয়ে আসা মমিনুল কে এখন চিন্তা করতে হয় দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ কে সকালে বিকালে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। মুসফিকের মত ব্যাটসম্যান কে কোচ নাকি ১৫ সালেই বাদ দিতে চেয়েছিল!! ওয়ানডেতে সাকিবের সাথে তাল দেওয়ার মত আরেকজন স্পিনার আমাদের এখন পর্যন্ত হতে পারে নাই কারন মহান কোচ আব্দুর রাজ্জাকের মত স্পিনার কে জাস্ট দুই বছর আগেই ছেঁটে ফেলে দিতে পেরেছিলেন বলে।

অমঙ্গল হওয়ার আশংকা আসে কারন আমাদের কোচ একজন নির্বাচকও বটে। এবং এমন একজন নির্বাচক যিনি একটা ফাস্ট ক্লাস ম্যাচ দেখার প্রয়োজন মনে করেন না। খেলোয়াড় তৈরি হবে বাতাসে? কোচ একজন খেলোয়াড় কে নির্বাচন করবে গায়েবী কোন তরীকায় নাকি? আর তাই নাইম ইসলাম যত ভালই খেলুক ফাস্ট ক্লাস ম্যাচে তার আর জাতীয় দলের জার্সি পরার সৌভাগ্য কপালে জুটে না।

হাতুড়ি নাকি দারুন পেশাদার কোচ! তার পেশাদারিত্বের নমুনা হচ্ছে তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ছুটি কাটিয়েছেন মাত্র ২২০ দিন। যদিও তার জন্য বরাদ্দ ছুটি ছিল ৪০ দিন। আর তারপর থেকে এখন পর্যন্ত কাটিয়েছেন ১৫০ দিন। চরম পেশাদার ভঙ্গি যা হোক।

হাতুড়ির মনে হয়েছে তাই দলে জায়গা দিয়েছেন জুবায়ের লিখন কে, তানভির হায়দার কে শুভাগত হোম কে। আর তার পূর্ণ খেসারত দিতে হয়েছে বাংলদেশ দল কে এবং সেই সাথে এই খেলোয়াড়দের কেও। মুস্তাফিজ কে দলে আনার কৃতিত্ব দিতে চায় অনেকে হাতুড়ি কে অথচ সত্য হচ্ছে মুস্তাফিজ কে দলে নিতে মাশরাফিকে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়েছে কোচের সাথে। সাফল্য আসার পর সব বাহাবা কোচের আজকে!!!

হাতুড়ি ভাল কোচ, তার ট্যাকনিক্যাল জ্ঞান অসাধারণ। কিন্তু তিনি যখন কোচ থেকেও বেশি কিছু হয়ে উঠতে চান, খেলোয়াড়দের আশ্রয় স্থলের জায়গায় আতঙ্কের নাম হয়ে যান তখন সম্ভবত তার চলে যাওয়াই মঙ্গল। এভাবে চলতে থাকলে আপত দৃষ্টিতে ভাল কিছু মনে হলেও সামনে শ্রীলঙ্কার মত দশা হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের। কোচ দিয়ে সাফল্য বিচার করা বোকামি ছাড়া আর কিছু না। যার কারনে কিংবদন্তী অস্ট্রেলিয়া দলের সাফল্য নিয়ে আলোচনায় কেউ জন বুকানন কে স্মরণ করে না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×