ঘটনা টা আজ থেকে চল্লিশ বছর আগের। ওপার বাংলার সীমান্তের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন হাবিবুর রহমান সাহেব তাঁর স্ত্রী ও ৫ বছরের ছোট্ট শিশু। তারা দেশ থেকে পালিয়ে এসেছেন পাঞ্জাবীদের ভয়ে । প্রতিদিন সকালে রেডক্রস সহ নানা সংস্থা হাজির হয় রিলিফ নিয়ে। হাবিবুর রহমান ও সেখানে লাইনে দাঁড়ান রিলিফের জন্য। গতকাল থেকে ছেলেটার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। কিন্তু তিনি খাবার স্যলাইন যোগার করতে পারছেন না। রোদে দাঁড়িয়ে মানুষের ধাক্কা খেয়ে তিনি প্রায় নাকাল অবস্থা। তবুও তার কিছুই করার নেই। অনেকগুলো টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন ঠিকই কিন্তু হাবিবুর রহমান সাহেবের সে টাকার ব্যগ হারিয়ে তিনি রীতিমত অসহায়। নোয়াখালী অঞ্চলের খ্যাতিমান পাট ব্যবসায়ী মাওলানা হাবিবুর রহমান যার উপাধী ছিলো ফখরে বাংলা তিনি আজ লাইনে দাঁড়িয়েছেন স্যালাইনের জন্য।
হাবিবুর রহমান সাহেবের মুখে যখন এ কথা শুনছিলাম তিনি কাঁদছেন আর তার সেই ছোট্ট শিশুর সন্তান (লেখক নিজে) হু হু করে কাঁদছিলাম। আজকে লেখছি আবার কান্না পাচ্ছে। এত কষ্ট এত দুঃখ। দাদির মুখে শুনেছি বাবার অবস্থা যখন মরনপ্রায় দাদি এমন জোরে আত্মচিৎকার দিয়ে কাঁদছিলেন যে আশে পাশে শত শত লোকের ভীড় জমে গিয়েছিলো। কার যেন সামান্য দয়া হলো তিনি সাহায্য করায় বাবা বেঁচে যান।
৪০ বছর পর আজকে আবার প্রকৃ্তি সেই কাহিনী আমার সামনে হাজির করেছে। সম্পূর্ন নতুন মোড়কে।
ঐ যে নৌকাটা দেখা যাচ্ছে আমি দেখতে পাচ্ছি আমার আরেক মা আরেক ভাই আরেক বাবা আরেক দাদু এ আমার ঘরে আশ্রয় নিতে চাচ্ছে। কিন্তু আমি তাকে দুরদুর করে তাড়িয়ে দিচ্ছি। এ অপরাধ বোধ আমার কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, আমি ঘুমাতে পারিনা। আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে জলন্ত শিশুর লাশ। আমার মায়ের আত্মচিৎকারে পৃথিবীর আকাশ বাতাস সব ভারী হয়ে আসছে। আমি জানি আমার ঘর ভাংগা, সংসারে লোক বেশি কিন্তু তাই বলে এই বিপদের কয়েকটা দিন কি আমি আমার ভাইকে আগুনের মুখে ফেলে রাখবো?? আমি কি ভুলে গেছি আমাকেও একসময় কেউ না কেউ আশ্রয় দিয়েছিলো। জানিনা রাজনীতি,সমাজ,আইন কি বলে?? কিন্তু সব কিছুর উদ্ধে তো তারা মানুষ। আজকে দুনিয়ার ২য় বড় মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলছি। বার্মার মুসলমানদের এই দূর্দিনে আপনি হাত বাড়িয়ে দিন। দয়া করুন ওদের প্রতি। দরকার হলে তাদের আইসোলেট করে রাখুন একটি জায়গায়। তবু আসতে দিন। প্লিজ আসতে দিন। কষ্ট হবে হয়তো কয়েকটা দিন। কিন্তু আজকে এই চরম বিপদের দিনে যদি আমরা তাদের কাজে না আসি তাহলে বার্মার প্রতিটি শিশুর লাশের জন্য আপনাদের কে আল্লাহর কাছে সর্বপোরী বিবেকের কাছে দায়ী থাকবেন। কান্না আসছে লেখতে গিয়ে চোখের পানিতে সব কিছু ঘোলা হয়ে আসছে। আবারো বলছি একটু দয়া করুন ।
দেশ পরিচয় যদিও আমরা বাংলাদেশী সবাই মুসলিম বলে আমাদের কোন সীমানা তো বাধা নাই............হে দুনিয়ার অন্যতম মুসলমানের দেশের সরকার খুলে দাও তোমার সীমানা আমার মজলুম ভাইয়ের জন্য
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৯১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
তোমাকে লিখলাম প্রিয়
আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ
গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।
... ...বাকিটুকু পড়ুন