সরকারি কলেজের স্টুডেন্টদের কে খারাপ চোখে দেখা , বোধ হয় সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষকদের এক অঘোষিত চিরাচরিত নিয়ম ।
সুযোগ পেলেই হেনস্থা করতে যেন কুণ্ঠাবোধ করেন না ।
যাইহোক এবার মূল কথায় আসি ,
এবারের এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী আমি ।
আজ পদার্থ ১ম পত্রের ব্যবহারিক পরীক্ষা ছিলো আমার ।
যথারীতি অন্যান্যসব দিনের পরীক্ষার মত ভদ্র পোশাকে পরীক্ষার সেন্টারে গেলাম ।
পরীক্ষা শুরু হলো ।
প্রশ্ন দেবার বেলা ,এক শিক্ষক জিজ্ঞাসা করলেন ,কমপক্ষে তিনটি পরীক্ষণের নাম বলো যা তুমি ভালো করে পারো ।
আমি তিনটির নাম বললাম ।তার মধ্যে থেকে একটি দিলেন ।
আমার ভাগ্যে পড়লো ,স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে দৈর্ঘ্য এবং স্ক্রুগজের সাহায্যে ব্যাস নির্ণয়ের মাধ্যমে একটি নিরেট সিলিন্ডারের আয়তন নির্ণয় ।
সবাইকে প্রশ্ন দেওয়ার পর অন্য এক শিক্ষক বললেন ,কেউ পেন্সিল দিয়ে ডাটা লিখবে না ,অবশ্যই কলম দিয়ে লিখবে ।
তো ,আমি লিখা শুরু করলাম ।
একে একে ডাটাগুলো লিখে মোটামুটি আসল কাজগুলো শেষ করে ফেলেছি ।
আর ডাটা লিখার সময় প্রথমে আমি পেন্সিল দিয়ে লিখি ,উদ্দেশ্য একটাই যাতে কোন ভুল না হয় আর খাতাটা যাতে পরিচ্ছন্ন থাকে ।
পরে শেষ রিডিং নেবার পর রাবার দিয়ে মুছে কলম দিয়ে পুনরায় লিখে নিবো ।
এভাবে স্লাইড ক্যালিপার্স এর হিসাব শেষ করে স্ক্রুগজের ডাটা টা কলম দিয়ে অর্ধেক লিখে শেষ করেছি ,এমন সময় ভাইভার ডাক এলো ।তখনো পরীক্ষা শেষ হবার এক ঘণ্টা বাকি ।
খাতা নিয়ে গেলাম ।স্যার খাতা উল্টে জিজ্ঞেস করলেন ,পেন্সিল দিয়ে কেনো ?
উত্তরে আমি বললাম ,স্যার ভুল যেতে না হয় ,তাই পেন্সিল দিয়ে লিখেছি ।
হিসেব বের করার পর কলম দিয়ে লিখে নিবো ।
এই কথা শেষ করতে না করতেই যে ডাটা টা কলম দিয়ে লিখেছি ওটা লাল কালি দিয়ে কেটে দিলেন এবং বললেন পেন্সিলে লিখা কেনো ?
আমি বললাম ,স্যার এটা তো কলম দিয়ে ই লিখেছি ।
শুনলেন না কোন কথা ।
তারপর স্ক্রুগজের ডাটা টা ও কেটে দিলেন এবং চলে যেতে বললেন ।
আমি একেবারে হতবাক ।
কিছু ই বলতে পারলাম না ।পাছে বেয়াদবি হয়ে যায় ।
এখন আমার কথা হলো ,পরীক্ষা চলাকালীন সময়েই কি খাতা দেখে শেষ করে ফেলা নিয়ম ?
আর আমার ভুলটা কী ছিলো ?
২৫ ই যদি না পাবো !তাহলে গত দুইটা বছর এতো সিন্সিয়ারলি রেগুলার ব্যবহারিক করে লাভ কী হলো ?
আর প্রাইভেট শিক্ষকদের সুপারিশে সারা বছর কলেজে না গিয়ে অন্যরা ২৫ এ ২৫ পাবেই বা কেনো ?
আমার দোষ টা কী ?
না সরকারি কলেজের ছাত্র হিসেবে শিক্ষকের আক্রোশের শিকার ?
ঘটনা ২ ।এখানে শেষ নয় ,এখন শুনুন ,স্যারের (যে স্যার আমার খাতা কেটে দিয়েছিলো)লুইচ্চামীর কথা ।
গতকাল ছিলো আমাদের কলেজের মেয়েদের পদার্থ ব্যবহারিক ।
মেয়েরা পরীক্ষা শেষ করে যখন বেরিয়ে যাবে তখন ই স্যার দরজার ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়লেন ।
ঐ শিক্ষক না সরায় ,মেয়েরা বাধ্য হয়ে পাশ ফিরে যাওয়া ধরলো ।
তখন তিনি মেয়েদের বলে উঠলেন ,এই তোমারা যাও ভালো কথা ।কিন্তু আমারে ধাক্কা দিবা না ।
আচ্ছা বলেন তো ,এই কোন ধরণের নষ্টামি ?
ঘটনা ৩ :আজ আমাদের সাথের একটা ছেলেকে স্যার চেক করলে ,নকলে ধরা পড়ে।
যদিও নকল টা তার প্রশ্নের সাথে মিলে নি ।
এটা বড় কথা না ,কথা হলো নকল টা পাওয়ার পর স্যার সবাইকে বললেন ,কারো কিছু থাকলে বাইরে ফেলে দাও ।
অনেক ছাত্র স্যারের সামনে নকল ফেলে দিলো কিন্তু তাদেরকে নকল আনার দায়ে দোষী করা হলো না ।যাকে চেক করে নকল পেলেন তাকে করা দোষী ।
কারণ যারা নকল এনে পরে স্যারের সামনে ই ফেলে দিয়েছিলো তারা ছিলো ওখানে উপস্থিত আরেক শিক্ষকের প্রাইভেটের ছাত্র ।
যে বেচারি বলি হলো ,তাকে এক্সপেল্ড না করে দুই ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখলেন ।পরীক্ষা শেষে এডমিট কার্ড টা রেখে দিয়ে তাকে বের করে দিলেন ।
এই মানসিক যন্ত্রণা দেবার কোন মানে ছিলো ?
আর এটা শিক্ষকে কোন ধরণের নৈতিকতা ?
ঘটনা ৪.এবার আসি আমাদের কলেজের কথায় ।
আমাদের রসানের প্রদর্শক শিক্ষক ।নাম বললাম না ।
উনার বড় খায়েশ একাদশ ,দ্বাদশ এবং অনার্সের থিওরি ক্লাস নিবেন ।
মানে ব্যবহারিকে প্রদর্শক হিসেবে থাকতে উনার ভালো লাগে না ।
কিন্তু তিনি ক্লাস নেবার সুষোগ না পেয়ে ,ব্যবহারিক ক্লাসের পুরো সিস্টেমকে জিম্মি করে রেখেছেন ।
আর এর সবচে কঠিন শিকার আমরা ।
দ্বাদশ ক্লাসে একটা ব্যবহারিক ও করান নি ।
ব্যবহারিক ক্লাসে গেলে ,লবণ দিয়ে বলতেন নিজে করো ।
না পারলে এবং জিজ্ঞাসা করলে শুরু করতেন অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি ,এমনকি বাবা মা তুলে ।
এখন প্রশ্ন হলো ,আমার বাবা মাকে তুলে গালি দেওয়ার অধিকার ঐ শিক্ষকে কে দিলো ?
এছাড়া আমাদের ই কলেছে ,
ইসলামের ইতিহাসের এক শিক্ষক আছেন ,উনি কোন মেয়েকে কোন ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলেই দৌড়ানো শুরু করেন ,উভয়কেই।
একদিন দেখলাম ঐ শিক্ষক একটি মেয়ের পেছন পেছন দৌড়চ্ছেন ।আর মেয়েটি ও প্রাণ বাঁচাতে দে দৌড় ।
দোষ ঐ একটাই ।
উনার ক্লাসে কোন পড়া হয় না ।কোন মেয়ে কেমন খারাপ ,এসব নিয়ে তীক্ষ্ন কথাবার্তা বলেন পুরোটা সময় ।
আর বাবা মা তুলে গালি তো একদম ফ্রি ।
এখন আপনারা ই বলেন ,ঐসব শিক্ষকদের কী করা উচিত ?
মনটা অসম্ভব খারাপ ।গ্রেড একটা ফসকে গেলো ।:-(
বিঃদ্রঃ মূল ঘটনাগুলো সহজ ভাষায় বলার চেষ্টা করেছি মাত্র ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



