পৃথিবীর বহু দেশে সমকামীতা বৈধ করা হয়েছে । কিন্তু কোন ধর্ম সমকামীতাকে সমর্থন করেনা । প্রকৃতি কি সমকামীতা সমর্থন করে? উত্তর “না” কারণ প্রকৃতিতে প্রতিটি জীবের জোড়া রয়েছে । অর্থাৎ প্রতিটি জীব স্ত্রী বা পুরুষ করে সৃষ্টি হয়েছে । কিছু লিঙ্গ জটিলতা রয়েছে কিন্তু তা থেকে নতুন প্রানের জন্ম হয়না । লিঙ্গ ত্রুটি নিয়ে যেমন জন্ম হয় তেমনি শারীরিক অন্যান্য অঙ্গেরও ত্রুটি থাকে কিন্তু তা অবশ্যই স্বাভাবিকতা না ।
পুরুষ ও স্ত্রী হিসেবে সৃষ্টি করার মূল কারণই হচ্ছে বংশ বৃদ্ধি । কেননা প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এক্স ও ওয়াই ক্রোমোজোম ছাড়া নতুন প্রানের জন্ম সম্ভব নয় । কিন্তু সমকামীতার ফল কি ? ধরি পুরো পৃথিবীর মানবজাতি সমকামী হয়ে গেল । তখন কি হবে ? নতুন কোন মানব শিশুর জন্ম হবেনা যেহেতু সমকামীতার ফলে এক্স এক্স আর ওয়াই ওয়াই ক্রোমোজোমের সাথে মিলিত হচ্ছে যার ফল শূন্য । এতে ফল দাড়াবে যেহেতু নতুন মানব শিশুর জন্ম হবেনা তাহলে মানুষের বংশবিস্তার বন্ধ হয়ে যাবে । একসময় বর্তমান মানবজাতি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।ঠিক এই কারণেই ধর্ম বা প্রকৃতি সমকামীতা মেনে নেয়না ।
এখন প্রশ্ন আসে পৃথিবীর বহু সংখ্যক মানুষ সমকামী । তাহলে তারা কি ভুল ? হ্যাঁ ভুল । পৃথিবীর সমকামীর চেয়ে বহুগুন বেশী নানা মরনঘাতি নেশায় আসক্ত মানুষের সংখ্যা তাহলে নেশা করা বৈধ কেন করা হবেনা ? কারণ এটি বৈধ করলে মানুষ মারা যাবে অর্থাৎ মানুষের বংশ বৃদ্ধি রোধ হয়ে যাবে । ঠিক এই কারণেই সমকামীতা বৈধতা দেয়া বন্ধ করা উচিত। এটি একটি মানসিক ব্যাধি। নেশাগ্রস্থ মানুষকে যেমন ভাল করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয় ঠিক তেমনি সমকামী মানুষকেও প্রতিকারের জন্য নানামুখি ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ । সমকামীতা একটি মানসিক ব্যাধি।এটি স্বাভাবিক কোন চাহিদা নয় ।এটিকে স্বাভাবিকভাবে নেয়ার কোন সুযোগ বা কারণ কোনটিই নেই। এটি প্রতিকারে সবার এগিয়ে আসা উচিৎ।
সমকামীরা প্রকৃতির অন্য প্রাণীদের দিয়ে নানা উদাহরণ দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করে সমকামিতা একটি প্রাকৃতিক স্বাভাবিক বিষয় । কিন্তু প্রকৃতিতে মানুষ অন্য প্রাণীদের চেয়ে নিজেকে বুদ্ধিমান দাবী করে। সমকামিতার মত কেবল অর্থহীন নিছক যৌন আনন্দের মত একটি বিষয় কি বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ ? যে সম্পর্ক বা বিষয়টির কোন ফল নেই । বরং মানবতা বা বংশ বৃদ্ধির জন্য যা পরিষ্কার হুমকি।
সমকামিতা কি ? বিশ্লেষণ করলে যা দাড়ায় কেবল শারীরিক বা অস্বাভাবিক যৌন তৃপ্তি ছাড়া এর আর কোন দিক কি রয়েছে ? নতুন কোন প্রানের উদ্ভব কি সম্ভব? অতি উদারতা বাদের ভয়ঙ্কর একটি নিদর্শন এই সমকামিতা । কেবল যৌন তৃপ্তির জন্যই একটি অস্বাভাবিক সম্পর্ক বৈধতা দিতে হবে ।তাহলে যদি এরপরে দাবী করা হয় পশু সঙ্গমের বৈধতা দিতে হবে। তখন কি করবে আজকের যে সকল দেশ সমকামিতা বৈধ করল তখন ঐ সকল দেশ কি করবে? অসুস্থ অস্বাভাবিক সমাজের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল ঐ সকল দেশ।যদি কখনো পশু সঙ্গম বৈধ করার দাবী করা হয় তখনও ঐ সকল দেশ তা বৈধ করে দিয়ে অতি উদারতার প্রমাণ দিবে ।সমকামিতা আর পশু সঙ্গম খুব কি পার্থক্য কোন পার্থক্য নেই দুটোই কেবল বিকৃত যৌন তৃপ্তির পথ আর কোন কিছুই নয়। অতি উদারতাবাদের এই হচ্ছে নমুনা ।
সমকামীরা বংশ বৃদ্ধির জন্য অন্য পন্থার যুক্তি দেয় । এর মধ্যে একটি টেস্ট টিউব বেবি। ঠিক আছে মেনে নিলাম টেস্ট টিউব বেবি । সারা পৃথিবীর মানব জাতি সমকামী হয়ে গেল । নারী পুরুষের মিলনে নতুন কোন প্রানের সৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল । শুধু টেস্ট টিউব বেবি বা এই প্রক্রিয়ায় নতুন মানুষ সৃষ্টি হতে শুরু হল। কি হবে তখন । বাবা মার পরিচয় হীন মানুষের সৃষ্টি শুরু হবে , যাদের কোন পরিচয় থাকবেনা , যাদের কোন পরিবার স্বজন থাকবেনা , যারা কোন দিন জানবেনা পারিবারিক বন্ধন কি , মানব সমাজ কি , মানব সমাজের বন্ধন কি ওরা জানবেনা ।
ঠিক যেমন ফার্মে গরু ছাগল মুরগী উৎপাদন করা হয় ঠিক তেমনি মানুষ উৎপাদনের ফার্ম হবে । এক শ্রেণীর মানুষ তাদের নানা প্রয়োজনে ঐ সকল ফার্ম থেকে এই ক্লোন মানুষ ক্রয় করবে। কি চমৎকার!
কিন্তু এই চমৎকারটি একটা জায়গায় এসে আটকে যাবে হয়ে যাবে ভয়ঙ্কর। সেটি হচ্ছে মানুষের ভাবনা ক্ষমতা । একটি ক্লোন মানুষও ঠিক স্বাভাবিক মানুষের মতই ভাবতে পারে। সে যখন দেখবে তার মানবাধিকারের বিন্দুমাত্র মূল্য নেই । আর দশটা গৃহপালিত পশুর ন্যায় তার অবস্থান । তখন ক্লোন মানুষগুলো কি মেনে নেবে?
মেনে নেবেনা । ক্লোনরা তাদের অধিকার আদায়ে নামবে যা হবে পুরো মানব জাতির জন্য একটি ভয়ঙ্কর অবস্থা যা মানবজাতিকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাবে।
এবার আসি সমকামীতার আরও উন্নত পর্যায়ে সমকামীদের যৌন কামনা কেবল সমকামিতায় সীমা বদ্ধ থাকলো না । তাদের চাহিদা মানুষের গণ্ডী পেরিয়ে অন্য প্রাণীদের সাথে যৌন সঙ্গমের আকাঙ্খায় চলে গেল । সমকামীরা আন্দোলন শুরু করল পশু সঙ্গম বৈধ করার জন্য । শিয়াল কুত্তা ভেড়া ছাগল যা পাবে তার সাথেই যৌন সঙ্গম করার বৈধতা চাইল । কতটা যুক্তিসঙ্গত হবে সেই দাবী ? মানবতার মূল্যবোধ, পশুর সাথে মানুষের পার্থক্য কোথায় থাকবে ???
যদিও উন্নত বিশ্ব নামধারী দেশগুলোর মানুষ আরও অনেক এগিয়ে গেছে তারা এখন জড় পদার্থের সাথে যৌন সঙ্গম বৈধ করেছে। যার নাম দেয়া হয়েছে সেক্স ডল। পশ্চিমের বহু দেশে এটি এবং নানা কৃত্রিম সেক্স মেশিন বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন করছে । যে কোন সময় পশু সঙ্গম বৈধ করে দিবে পশ্চিমের দেশ শুধু অপেক্ষা দাবী তোলার।কিন্তু এই বিষয়টি মানব জাতিকে কোথায় নিয়ে যাবে ?
মানুষের মাঝে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে যেমন হিজড়া সম্প্রদায় , মানসিকভাবে সম লিঙ্গের প্রতি দুর্বলতা ঠিক তেমনি প্রকৃতিতেও আছে বিষধর সাপ, বাতাসে ক্ষতিকর কার্বন , মৃত্যু । কিন্তু মানুষ এখনো এমন পর্যায়ে উন্নিত হয়নি যেখানে এসে মানুষ সকল জটিলতার উত্তর পাবে বা সমধান করতে পারবে। কিন্তু একটি জটিলতার সমাধান বা উত্তর কখনই আরেকটি জটিলতা হতে পারেনা । মানুষকে অবশ্যই তার মেধা জ্ঞান দিয়ে জটিলতার উত্তর সমাধান বের করতে হবে । কিন্তু জটিলতাকে আরও বেশী জটিলতার মধ্যে নিয়ে গেলে কখনই সমাধান সম্ভব নয়।
একমাত্র ধর্ম মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দেয় কোন প্রমাণ ছাড়াই ।সকল ধর্ম এই সম কামিতা নিষিদ্ধ করেছে ।কারণ সমকামিতা মানুষের বংশ বৃদ্ধির প্রধান অন্তরায়।সুস্থ স্বাভাবিক সমাজ গড়ার অন্তরায়। মানবতার মূল্যবোধ অন্ধ করে দেয়ার কালো পথ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




