বেশীরভাগ মেয়ে একটি জায়গায় ভুল করে । একটি ছেলেকে ভালো লাগলো বেশ ভালো । কিন্তু এই ভালো লাগার দুটি শ্রেণী - একটি মায়া অন্যটি ভালোবাসা ।কিন্তু বেশীর ভাগ মেয়ে মায়াকে ভুল করে ভালোবাসা ভাবে । প্রাকৃতিক কারণেই বাংলাদেশের মানুষের চেহারায় মায়া মায়া ভাব থাকে ।
ভালোলাগা আর মায়া এক বিষয় হতে পারে কিন্তু ভালোলাগা আর ভালোবাসা কখনই এক নয় ।
মেয়েরা বা ছেলেরা সেই মায়ায় পরে । কিন্তু এই মায়ার ১০০ ভাগের ১০ ভাগও কিন্তু প্রেম বা ভালোবাসা না। কিন্তু প্রেমের দীর্ঘ সময় কেউ ছেলে বা মেয়ে এই বিষয়টি মোটেও বুঝতে পারেনা। এমনকি বিয়ের পর পর্যন্ত বা বিয়ের অনেক সময় পার হলেও কেউ এই বিষয়টি টের পায়না। কিন্তু সংসার জীবনে কি যেন তার প্রিয় মানুষটার মাঝে খুঁজে পায়না ?
সেই খুঁজে না পাওয়া এক সময় হয়ে যায় বিরক্তি । তখন একে অপরের নানা কাজে বিরক্ত হয় কারণে অকারণে । জমতে থাকে অভিযোগের পাহাড়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক কারণে বাকী জীবন বোঝার মত বয়ে বেড়ায় অর্থহীন একটি সম্পর্ক ।
যদিও ভুলটি ছেলে মেয়ে সবাই করে কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরনের ভুলের মাশুল দিতে হয় মেয়েদের। কারণ মেয়েরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সংসার সামলায় সে খুব কাছ থেকে প্রিয় মানুষটিকে দেখার বোঝার সুযোগ পায় । বিশেষ করে বিয়ের আগে হয়ত কিছু সময় কাছে থাকা কিন্তু বিয়ের পরে প্রতি মুহূর্ত কাছে বা একসাথে থাকা । ফলে বিয়ের আগে কিছুই বোঝা যায়না কিন্তু বিয়ের পরে ধীরে ধীরে বিষয়টি স্পষ্ট হতে থাকে। ঠিক যেমন চাঁদ দূর থেকে অপরূপ কিন্তু যত কাছে যাবেন তত স্পষ্ট হবে চাঁদের কলঙ্ক।
ছেলেরা কাজে বেশীরভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকে সংসারের খরচ ছাড়া হয়ত অন্য কোন বিষয় তার চোখেই পরেনা । ফলে সে তেমন কিছুই বুঝেনা। কিন্তু মেয়েটি সারাক্ষণ ঘরে থাকে সে প্রতি মুহূর্ত সংসারের প্রিয় মানুষের সব কিছু অনুভব করে । কিন্তু প্রিয় মানুষটার ক্ষেত্রে কোথায় যেন একটা মিল খুঁজে পায়না । বিয়ের আগে যেভাবে মানুষটাকে ভেবেছিল বিয়ের পরে দেখে ভুল । তখন শুরু হয় নানা অভিযোগ । আসলে ওগুলো অভিযোগ নয় তার মায়ার ভুল। কিন্তু সে বুঝেনা । এই বিষয়টি প্রথম ধরা পরে মেয়েটির কাছে । সংসারে আসে অশান্তি।
আপনি যাকে ভালোবাসবেন তার ভুল শুদ্ধ সবই ভালোবাসবেন, অভিযোগ থাকবে ঝগড়া হবে কিন্তু ভালবাসবেন । অশান্তি হবেনা বা এই মানুষটার সাথে অর্থহীন একটি সম্পর্ক এটি কখন মনে হবেনা।
ভালোবাসায় বা প্রেমে আন্ডার স্ট্যান্ডিং বা সেক্রিভাইস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । খুব ঠিক কথা কিন্তু যখন বলে এই বিষয়টি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ তখনই আমার প্রশ্ন কেন ?
আম গাছে আম হবে , লিচু গাছে লিচু এটি ন্যাচারাল এখানে কোন সূত্র বা কারসাজী করতে হয়না । ঠিক তেমন প্রেম বা ভালোবাসায় একে অপরের জন্য সেক্রিভাইস , আন্ডারস্ট্যান্ডিং এমনকি জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিবে এটাই ন্যাচারাল এখানে বলার বা বোঝার কিছু নেই ।
কিন্তু মায়ার ক্ষেত্রে আছে কারণ মায়ার একটি সীমা বা মাত্রা আছে তুমি মায়ার জন্য কতটুকু পর্যন্ত করতে পারো তার একটি সিমারেখা সবারই আছে । কিন্তু অবশ্যই মায়ার মাত্রা অসীম নয় কোন ভাবেই নয় । এবং মায়ার জন্য অবশ্যই কারণ চাই ।
কিন্তু প্রেম বা ভালোবাসার ক্ষেত্রে কোন সীমা নাই তুমি যাকে ভালবাসবে প্রেম করবে তার জন্য তোমার দিগন্ত উন্মুক্ত তোমার যা আছে যত টুকু আছে সব দিয়ে ভালবাসবে তবু মনে হবে আরও ভালোবাসি । কিন্তু কোন কারনের প্রয়োজন নেই । এটি খোদা প্রদত্ত তাঁর ইচ্ছা। এখানে কারও হাত নেই ।
একটি গরীব অভাবি মানুষকে দেখলে মায়া লাগে তাকে কিছু সাহায্য করা যায় । কিন্তু তাকে অবশ্যই ঘরে কেউ সারা জীবনের জন্য নিয়ে আসবেনা। এটি মায়া এবং মায়ার সীমা।
কিন্তু মায়া আর ভালোবাসার চেনার উপায় কি ?
এক্ষেত্রে দুজন দুজনকে কেন ভালো লাগে তার কারণগুলো বের করুন । পয়েন্ট আউট করুন । ভাবুন ।
যদি সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পান তাহলে আমি দুঃখিত হয়ত আপনি যাকে ভালবাসছেন ভাবছেন সেটি আসলে আপনার মায়া । আরও ভালোভাবে ভেবে সম্পর্ক এগিয়ে নিন।
কারণ মায়ার একটি নির্দিষ্ট সীমা এবং সময় আছে । সেই সীমা এবং সময় পার হলে হয়ত যে মানুষটিকে এখন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি ভাবছেন এক সময় তাকে অসহ্য লাগবে।
আর যদি সুনির্দিষ্ট কোন কারণ নেই , কেন ভালো লাগে জানিনা , সুন্দর না , স্মার্ট না , তবু কাছে থাকতে ভালো লাগে কথা বলতে ভালো লাগে কিন্তু কোন কারণই নেই । আমি বলব সেটিই ভালোবাসা। কারণ ভালোবাসার কারণ একটাই ভালোলাগা। এছাড়া আর কোন কারণই ভালোবাসার কারণ নয়।