somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Elysium (2013)- চুলচেরা সমালোচনা রিভিউ!

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



Elysium মুভিটা দেখলাম, খুব একটা খারাপ না লাগলেও নেইল ব্লমক্যাম্প আর ম্যাট ডেমন এর মুভি হিসেবে আরও বেশী আশা করেছিলাম। অনেকে হয়তো বলবেন যে এটা এই বছরের সেরা সাইফাই, তবে আমার কাছে কিন্তু এর চেয়ে Oblivion অনেক ভালো লেগেছে। এই মুভিতে ভবিষ্যতের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে সেটা আমার কাছে তেমন বিশ্বাসযোগ্য মনে হল না, না সমাজ ব্যাবস্থা না প্রযুক্তি। বেশ কিছু প্লট হোল আছে ফিল করলাম, তার কয়েকটা হচ্ছে- (স্পয়লার আছে তাই যারা মুভিটা দেখেননি দয়া করে আর পড়বেন না!)
>
>
>
>
>
>
>
১. Elysium জিনিসটা কোনরকম বায়োডোম ছাড়াই একেবারে খোলা অবস্থায় থাকে কিভাবে? মুভিতে দেখলাম ইচ্ছামতো স্পেস শাটল ঢুকছে বেরুচ্ছে কোন বাধা ছাড়াই, এরকম থাকলে বায়ুমণ্ডল থাকে কিভাবে? মাধ্যাকর্ষণ থাকে কিভাবে? সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি বা অন্যান্য ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচে কিভাবে? এর বাইরে কোনরকম প্রটেক্টিভ গ্লাস লেয়ার টাইপ জিনিস থাকা কি যৌক্তিক না?

২. পৃথিবীর সরকার ব্যাবস্থা কি? মুভিতে তো শুধু Elysium আর লস এঞ্জেলেস ছাড়া পৃথিবীর আর কিছুই দেখলাম না? পুরো পৃথিবীর কি অবস্থা সেটা একবারও দেখানো হয়নি। তারমানে কি লস এঞ্জেলসই পৃথিবীর কেন্দ্র, একটাই রাষ্ট্র পৃথিবীতে? ভবিষ্যতের পৃথিবীতে তো রাজত্ব করার কথা চায়নার, আর ইউরোপ বা আমেরিকার অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্র/শহরের কোন দিশাও পাওয়া গেলো না। যদি লস এঞ্জেলস থেকেই এভাবে নিয়মিত শাটল যায় তাহলে তো সারা পৃথিবী থেকে প্রতি মিনিটে কয়েকটা করে শাটল যাবে Elysium এর উদ্যেশ্যে। কয়টাকে আটকাবে তাঁরা, তাঁদের তো কোন ডিফেন্স সিস্টেমই দেখলাম না!

৩. মেড-বে জিনিসটা একদম ভুয়া লাগলো, সব কিছুরই একটা লিমিট আছে। মানুষ এমন ম্যাজিকাল একটা জিনিস বানাতে পারলো অথচ অন্যান্য যেসব প্রযুক্তি দেখলাম সবই তো প্রায় ২০১৩ সালের কাছাকাছি। এতে দেখানো হয়েছে যে মরা মানুষকেও মেড-বে জীবিত করতে পারে, এমনকি ব্রেন এর অর্ধেক উড়ে গেলেও সমস্যা নাই (এমনকি দাঁড়িও আগের মত করে দেবে!)। কিন্তু জিনিসটা বিশ্বাসযোগ্য হতো যদি এতে শুধুমাত্র মৃতপ্রায় মানুষকে ভালো করা যায়, “মৃত” মানুষকে যায় না। তারমানে কি Elysium এর সবাই অমর? মানুষ যদি মেড-বে’র মত একটা জিনিস তৈরি করতে পারে তাহলে বয়সকে থামানোর মত কিছু আবিস্কার করতে পারলো না?

৪. ২১৫৪ সালেও একটা মানুষকে খুঁজে পাওয়া এত কঠিন, স্যাটেলাইট এর ক্ষেত্রে ১৫০ বছরে কি কোনই উন্নতি হয়নি নাকি? Elysium এর ডিফেন্স সিস্টেম এতই দুর্বল যে পৃথিবীতে পড়ে থাকা এক পাগলা এজেন্ট এর উপর নির্ভর করতে হয়? Elysium এর সবার বাসাতেই কি মেড-বে আছে? তাহলে সেখানের Hierarchy টা কি? ২১৫৪ সালেও মানুষ ম্যানুয়ালি গাড়ি বা স্পেস-শাটল চালাবে এটা হাস্যকর। Elysium এর পরিবেশ দেখানোর ক্ষেত্রে কল্পনাশক্তির অভাব লক্ষনীয়, যখনি বাইরে দেখিয়েছে, দেখি একটা মেয়ে বিকিনি পড়ে সুইমিংপুল এ সাঁতার কাটছে! এমনকি জামাকাপড় এর ক্ষেত্রেও ২০১৩ সালের স্টাইল সবাই ফলো করবে এটা হজম করা কঠিন।

৫. রোবট এর ফ্যাক্টরিতে কেন লিথাল ডোজ এর রেডিয়েশন লাগবে সেটার কোন ব্যাখ্যা নাই। স্পেস শাটল এ করে পৃথিবীর বাইরে যাওয়া এত সহজ না, এর জন্য বছরের পর বছর ট্রেনিং নিতে হয়। মুভিতে দেখলাম স্ট্র্যাপিং ছাড়াই গ্রেনেড হাতে ম্যাট শাটলে চড়ে Elysium এ যাচ্ছে...মাত্র ১২ মিনিটে! এছাড়া শাটল গুলোর গঠন এমন যে বাতাসের অনেক বাধা পাবে, এটা এত স্পীড তুলতে গেলে তো টুকরা টুকরা হয়ে যাওয়ার কথা!

৬. বায়োমেট্রিক এক্সোস্কেলেটন জিনিসটা ঠিক আছে, কিন্তু মাথায় যে এভাবে ইনফো নেয়া যায় আর সেটা চুরি করা এতই সহজ সেটা বুঝলাম না। যে ইনফো দিয়ে পৃথিবীর ইতিহাস বদলে দেয়া যাবে, সেই ইনফো কি আরও অনেক বেশী সিকিউর থাকার কথা না? আর তাহলে কার্লাইল সিস্টেম রিবুট করে নিজেই কেন প্রেসিডেন্ট হয়ে যায় না? মুভি দেখে মনে হল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্বাস্থ্য সমস্যা, অথচ এর চেয়েও বড় অন্যান্য ব্যাপারে আরও জোর দেওয়া যেত। এছাড়া মুভির এন্ডিং ও ভালো লাগে নি, কারন পৃথিবীর সবাই Elysium এর বাসিন্দা হয়ে গেলেই সমস্যা দূর হয় না...এতে ঝামেলা আরও বাড়বে, কমপ্লিট ক্যাওস হবে পৃথিবী Elysium দুই যায়গাতেই।

এরকম আরও অনেক জিনিসই আছে। ম্যাট এর অভিনয়ের ভক্ত ছিলাম সবসময়, তবে এই মুভিতে সে নিজের অভিনয় ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ তেমন একটা পায়নি মনে হচ্ছে। ভিলেনটাকে (ক্রুগার) ভালো লাগে নি, এমনকি জোডি ফস্টার ও তেমন কিছু করতে পারেন নি। টাইম ওয়েস্ট বলবো না, তবে আশার তুলনায় হতাশ হয়েছি বলতেই হবে। :P
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×