চৈত্রের দুপুর। খা খা রোদ। বিকাল চারটায় অফিস শুরু। প্রতিদিন সাড়ে তিনটার আগে বেরিয়ে পড়ি। তখনো চারদিকে ঝাঝা রোদ। রাতে ঘুম ভালো হয়নি। বউয়ের সংগে রাগারাগি হয়েছে। সপ্তাহে একবার এরকম হয়ই। মনটা খারাপ। প্রচণ্ড গরম। তিন বছরের পুরনো টেবিল ফ্যানটা তেল দিয়ে ঠিক করেছি। কিন্ত এক ঘণ্টা সারভিস দেয়ার পর ঘড়ং করে থেমে গেল। রাতে যেন দোজখের মধ্যে বাস করলাম। উপরে সিলিং ফ্যানটার বাতাস যেন আগুন।
সারারাত ঘুমাতে পারিনি। বেলা ১১টায় ঘুম থেকে ওঠা। ফ্রেসনেস। খাওয়া। অতপর দোকানে গিয়ে চা খাওয়া। সিগারেট ধরিয়েছি এমন সময় বউয়ের ফোন। বললাম বাসায় গিয়ে ব্যাক করছি। কুড়িলের ব্যাচেলর বাসাটা ভাল আবার ভাল না। আমার রুমমেট হয়তো গাজাখোর। তা না হলে তার বন্ধুরা কেন সব গাজাখোর হবে? সারাক্ষণ চোখ লাল থাকে তার। রাতে ঘুমের ঘারে বকে। মনে মনে বলি সালা পাগলছাগলের রুমে উঠে পড়লাম। নিয়তিকে দোষ দিলাম। প্রাইভেট ভার্সিটির পোলা। বিসিএস পরীক্ষা কি জানেই না। মনে মনে বললাম সালা বলদের সাথে থাকতে পারবো তো?
তনু হত্যায় বিক্ষোভ চলছে সারাদেশে। ইমরান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুসিয়ারি দিলেন। পরে বোঝা গেল আওয়ামী লীগই তাকে নামিয়েছে। উদ্দেশ্য ব্যাংকের টাকা লুটের ঘটনা ধামাচাপা দেয়া। এসব ভাবতে ভাবতে দুই গ্লাস পানি খেয়েই বেড়িয়ে পড়লাম অফিসের দিকে। বিনা বর্ষায় কুড়িলের রাস্তাঘাটে পানি। নর্দমা পরিষ্কারের কাজ চলছে। লাফিয়ে লাফিলে চলতে হলো। কাছেই অফিস। তাই হেঁটেই পথ চলি।
বাসাটা ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করছি। এপ্রিলের ভাড়াসহ অ্যাডভ্যান্স দেয়া হয়ে গেছে। বউকে বলিনি। বললে টাকা কোথায় পেলে, জানালে না ইত্যাদি বুংচুং প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কারণ মাস শেষে আমার কাছে টাকা থাকে না। ২৫ হাজার টাকা বেতন পাই। কিস্তি দিই ১০ হাজার টাকা বউ-বাচ্চা ৬ হাজার টাকা। বাড়ি এক হাজার টাকা। বাকি টাকা দিয়ে ঢাকায় থাকার চেষ্টা করি। বাসা নিয়ে পরিবার নিয়ে এসেছিলাম। আবার পাঠিয়ে দিয়েছি। চলবে প্রতিদিন দিনলিপি............
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:১৬