রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী খুন হয়েছেন। বাসা থেকে বেরিয়ে আর জীবিত ফিরে যেতে দেয়া হয়নি তাকে। নির্মম ঘটনা। খুন গুম হত্যা ধর্ষণ এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন খুন হচ্ছে। সমাজের সব ক্ষেত্রে নারীরা যতো এগিয়ে যাচ্ছে ততোই ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। এর পেছনে যতগুলো কারণ দেখানো হচ্ছে কিংবা সমাধান দেয়া হচ্ছে তার কোনোটাই কাজে আসছে না। কেউ বলছেন নারীর পোশাক ঠিক করতে হবে, কেউ বলছেন তাহলে তনুকে এভাবে হত্যার শিকার হতে হলো কেন? তনু তো পর্দানশীল নারী ছিলেন।
সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। এতে যদি বিদেশিরা নাক গলাতে আসে তবে মনে করতে হবে তাদের স্বার্থ হাসিল করতেই তারা নাক গলাচ্ছে। কিন্তু কোন পথে সমাধান? আমাদের আসল জায়গায় আসতে হবে। শ্রমিক শ্রেণীকে মর্যাদা দিতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য দূর করতে হবে। সম্পদের সমবণ্টন করতে হবে। সম্প্রদায় থাকবে। শ্রেণী থাকবে। অসাম্প্রসায়িক সমাজ ও শ্রেণীহীন সমাজ অলীক কল্পনামাত্র।
আমাদের শাসক শ্রেণীর কয়েকটি ভুল রয়েছে। তার মধ্যে এক নম্বর ভুল হলো নিজেদেরকে প্রভু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। অথচ তাদের হওয়া উচিত জনগণের সেবক। দিল্লীর গভর্নর কেজরিওয়াল থেকে শিক্ষা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু আমাদের শাসকরা নিজেদেরকে সেবক ভাবতে ঘৃণাবোধ করেন। এজন্য তাদের অস্ত্রধারী বাডিগার্ড লাগে। তারা সহজ ও সাবলীলভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। মুসলিম বিশ্বের প্রথমকালের দিকে উমর বিন খাত্তাব যে শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন তার থেকে শিক্ষা নেয়া যেতে পারে। তিনি অর্ধ পৃথিবীর শাসক ছিলেন। তার সময়ে নাগরিকরা তাদের অধিকার সরাসরি শাসককে বলেছেন। তাৎক্ষণিক সমাধানও হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। চরম তাপদাহ চলছে। অফিসের বাইরে গেলেই টের পাওয়া যায়। এক মিনিট হাটলেই যেন ঘামে গোছল হয়ে যাচ্ছে। পথঘাটে চলা অনেক কষ্ট। বিশেষ করে ঢাকা শহরের ট্রাফিক জামে পথ চলা জাহান্নামের আজাবের মতো মনে হয়। এ সমস্যার সমাধানও কোনো সরকার দিকে পারলো না।
বাসা থেকে বেরিয়েই আজ চায়ের দোকানে বসেছি। চারদিকে তাপদাহে মানুষ যেন হাফ ছেড়ে বাঁচতে চায়। তারপরও দোকান পাটে জলসা মুভিজের দৌরাত্ম্য কমে না। ভারতীয় চ্যানেল বাংলাদেশের মানুষের মনকে দখল করে নিয়েছে। এটা এক ধরণের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। তারা বাংলাদেশের বাজারে কাটতি বাড়াতে চাই। কৌশলে দখলে নিতে চাই এদেশের সহজ সরল মানুষের মনকে। এজন্যই হয়তো প্রসেনজিৎ জিৎ দেব এরা ঘন ঘন ঢাকা আসছে। বাংলাদেশিরা হুজুগে মাতাল। তাদের দেব জিৎরা এদেশে নিরাপত্তা, সম্মান সব পায়। আর আমাদের সাকিব খান কলকাতায় চরম অবহেলার শিকার হয়। এটা শাসক শ্রেণীকে বুঝতে হবে। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯