somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবিকৃত অলৈাকিক কুরআন । বিকৃত অন্যান্য ধর্মগ্রন্হ সমূহ যা ছিলো মানুষ শোষণের হাতিয়ার ।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুগে যুগে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা পথ ভ্রষ্ট মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার জন্য অনেক নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন । সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষা ভাষীর জনগোষ্ঠী ছিলো এবং তারা বিভিন্ন এলাকায় বাস করত । সাধারণত নবী-রাসূলগণ যখন মানুষকে এক স্রষ্টার দিকে আহ্বান করত তখন তাদের সাথে সংঘর্ষ হতো শাসক গোষ্ঠীর, সমাজে প্রভাব গোষ্ঠীর । কারণ ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারাই মূলতঃ মানুষকে বিভিন্ন কাল্পনিক দেব দেবী তৈরী করে তাদের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভয় দেখাত । শাসক গোষ্ঠী নিজেদেরকে সেই সব দেব দেবীর প্রতিনিধি দাবী করে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে শ্রদ্ধা ও আনুগত্য আদায় করত । তাদের এই কাজে তাদেরকে সহায়তা করত শয়তান । শাসক গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী গোষ্ঠী নতুন নতুন ধর্মীয় আচার আচরণ চালু করত , পৃষ্ঠ পোষকতা করত এবং এক সময় তা সমাজে ব্যাপকভাবে চালু হয়ে যেত জনসাধারণের মাঝে ।

ইতিহাস বলে, সনাতন ধর্মে পুর্নজন্ম মতবাদ , বর্ণবাদ প্রথা, সতীদাহ প্রথা, ইহুদী ধর্মের জায়নাবাদ, খ্রীষ্ট ধর্মের ত্রিত্ববাদ এগুলো সব তথাকথিত ধর্ম বেত্তাদের দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে । এগুলো মূল ধর্মে ছিলোনা ।

"বলুনঃ তাদের কথামত যদি তাঁর সাথে অন্যান্য উপাস্য থাকত; তবে তারা আরশের মালিক পর্যন্ত পৌছার পথ অন্বেষন করত।" (১৭:৪২)

আমরা যদি নবী-রাসূলদের ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখব যে সমাজে শাসক গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী ব্যাক্তিরাই নবী-রাসূলদের সত্য পথ প্রচারের প্রধান বাধা হয়ে দাড়িয়েছে । কারণ, সত্য ধর্ম সমাজের শোষণ, দাস প্রথা এবং মানুষকে ঠকানোর পথ বন্ধ করে দেবে । ইব্রাহীম (আঃ) এর সময় রাজা ছিলো নমরুদ , যাকে ইংরেজীতে বলে Nimrod. হযরত মূসা (আঃ) এর সময়ে ছিলো ফেরাউন Firaun. তাদের প্রত্যেকের ভয় ছিলো সত্য ধর্ম গ্রহণ করলে আমাদের শাসন ব্যবস্হা ধসে পড়বে । ফলে তারা সব টুকু শক্তি ব্যয় করতো সত্যকে ধামা চাপা দিতে , তার প্রচার না হতে । কুরআনে সারা দুনিয়ার সকল জনপদের কাহিনী আসেনি । এটা আনা সম্ভবও নয় । শুধু মাত্র কয়েকজন নবীর ঘটনা এসেছে এবং উদাহরণ স্বরূপ তাদের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে । কুরআনে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বলেছেন, তিনি প্রত্যেক জনপদে সতর্ককারী পাঠিয়েছেন ।

"আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি। তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে, তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যারোপ করেছিল। তাদের কাছে তাদের রসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শন, সহীফা এবং উজ্জল কিতাবসহ এসেছিলেন।" (৩৫:২৪-২৫)

"আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছি, যেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন। আর ওহী পাঠিয়েছি, ইসমাঈল, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, ও তাঁর সন্তাবর্গের প্রতি এবং ঈসা, আইয়ুব, ইউনূস, হারুন ও সুলায়মানের প্রতি। আর আমি দাউদকে দান করেছি যবুর গ্রন্থ। এছাড়া এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত আমি আপনাকে শুনিয়েছি ইতিপূর্বে এবং এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শোনাইনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে কথোপকথন করেছেন সরাসরি।"(৪-১৬৩-১৬৪)

"যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাপন্ন লোকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করি অতঃপর তারা পাপাচারে মেতে উঠে। তখন সে জনগোষ্টীর উপর আদেশ অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আমি তাকে উঠিয়ে আছাড় দেই।"(১৭:১৬)


নবী-রাসূলগণ তাদের বাণী প্রচার করে এই দুনিয়া ত্যাগ করে চলে গেলে, অবিশ্বাসীরা তাদের মত পথকে পরিবর্তন করে দিত । তাদের সুবিধামত সাধারণ গোষ্ঠীকে শোষণ করার জন্য রাসূলদের প্রদত্ত ওহীকে তারা পরিবর্তন করে দিত এবং নতুন নতুন বিষয় যোগ করে দিতো । এরপর তারা এগুলোকে স্রষ্টা থেকে আগত বলে প্রচার করত ।

"অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে (সুবিধা আদায় করতে পারে)। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।" (২:৭৯)

কুরআন ছাড়া আর কোন ধর্মগ্রন্হই আর অবিকৃত নেই । কুরআন-ই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ্র যা অবিকৃত আছে এবং থাকবে কারণ স্রষ্টা নিজে একে অবিকৃত রাখার এবং সংরক্ষণ করার দায়িত্ব নিয়েছেন ।

"আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।" (১৫:৯)

যার ফলে ১৪০০ বছর পার হয়ে গেলেও কুরআন এখনও অবিকৃত আছে । সারা পৃথিবী থেকে সমস্ত কুরআন এর কপি আগুনে পুড়িয়ে ফেললেও আবার কুরআন হুবহু রচনা করা যাবে , কারণ দুনিয়াতে লক্ষ লক্ষ কুরআন এর হাফিজ রয়েছে, যারা সমস্ত কুরআন মুখস্ত করে রেখেছে কুরআনের নিজস্ব ভাষা আরবীতে। সুতরাং অনুবাদের মাধ্যমে যে কুরআন পরিবর্তিত হয়ে যাবে তার কোন সম্ভাবনাও নেই, যেটা হয়েছে বাইবেলের ক্ষেত্রে ।

http://www.newsweek.com/2015/01/02/thats-not-what-bible-says-294018.html

"আপনার প্রতি আপনার পালনকর্তার যে, কিতাব প্রত্যাদিষ্ট করা হয়েছে, তা পাঠ করুন। তাঁর বাক্য পরিবর্তন করার কেউ নাই। তাঁকে ব্যতীত আপনি কখনই কোন আশ্রয় স্থল পাবেন না।" (১৮:২৭)

"আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।"(২৯:৪৮)

যে কোন ধর্মের ভিত্তি হলো তার ধর্মগ্রন্থ্র এবং অনুসারীগণ । অনুসারীগণ তাই অনুসরণ করে যা তাদের ধর্মগ্রন্হে আছে । সুতরাং কোন ধর্মের মূল গ্রন্হসমূহ যখন বিকৃত হয়ে যায়, মিথ্যা প্রবেশ করে সেই ধর্ম আর টিকে থাকতে পারেনা । যা টিকে থাকে তাহলো ধর্মের বিকৃত রূপ । এজন্য বর্তমানে ইসলাম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মের ধর্মগ্রন্হসমূহে এখনও ধর্মের আদিরূপ একত্ববাদ অবশিষ্ট আছে এবং মহানবী (সাঃ) আগমণের ভবিষ্যত বাণীও সেগুলোতে রয়ে গেছে কিন্তু বিকৃতি ও মিথ্যার অবাধ প্রচারে এবং প্রসারে সত্যকে স্বীকার করার হিম্মত খুব কম লোকেরই রয়েছে ।

"আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি, তারা তাকে (মোহাম্মদ সাঃ) চেনে, যেমন করে চেনে নিজেদের পুত্রদেরকে। আর নিশ্চয়ই তাদের একটি সম্প্রদায় জেনে শুনে সত্যকে গোপন করে। বাস্তব সত্য সেটাই যা তোমার পালনকর্তা বলেন। কাজেই তুমি সন্দিহান হয়ো না।"(২:১৪৬-১৪৭)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×