শুধু সামু ব্লগ নয় বাংলা ভাষার সবগুলো ব্লগের স্বর্ণ যুগ ধরা হয় সম্ভবতঃ ২০০৮-২০১৩ সাল পর্যন্ত!
এর মাঝে রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা, জামাত শিবির জঙ্গী যুদ্ধাপরাধী, আস্তিক নাস্তিক ইস্যু নিয়ে ব্লগের মাঠ এত গরম হয়ে ওঠে যে, এক সময় ব্লগের বৃত্ত ছাড়িয়ে সারা দেশে সেটা সংক্রামিত হয়ে যায়। ব্লগার হত্যা, সরকারী নজরদারী, স্বাধীনতা খর্ব, ব্লগের নিয়ন্ত্রন সহ অতি কট্টর কিছু ব্লগারের ভয়াবহ আক্রমনের স্বীকার হয়ে মানসন্মান রাখতে,মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ায়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় হয়রানীর স্বীকার হয়ে, কেউ ভয় পেয়ে- জান বাঁচাতে ব্লগের দরজা চিরতরে বন্ধ করে দেয়(- ব্লগের বর্তমান হাল হকিকতে এইটেই মুল গল্প হওয়ার কথা ছিল)
কিন্তু আসলেই কি শুধু তাই? আমি বিশ্বাস করি সামু ব্লগের সুচনা লগ্নেই একঝাঁক বুদ্ধিদীপ্ত উদীয়মান তরুন লেখক, কবি সামু ব্লগের প্লাটফর্ম মাতিয়েছেন। তাদের সাহিত্য, প্রবন্ধ, ছড়া কবিতা, ভ্রমন গল্প, বিজ্ঞান কল্প কাহিনী, দর্শন চিন্তা সহ অনেক ধারার লেখাই সহ ব্লগারদের দৃষ্টি কেড়েছে- ব্লগের মাঠ গরম করেছে। হাস্য রসে গল্পে মেতেছে সবাই।
তবে বাক স্বাধীনতার চরম অপব্যাবহার ও হয়েছে- পাশাপাশি ব্লগে সব সময়ই ভীষনভাবে দলাদলি চলেছে। অশ্লীল ব্লগিং এর পাশাপাশি চলেছে ব্লগ র্যাগিং। কোন একজনকে ছাগু ট্যাগ দিয়ে তার উপরে দল বেধে ঝাঁপিয়ে পড়া!
কত প্রতিভাবান প্রমিজিং ব্লগার এদের অত্যাচারে চোখের জলে ব্লগ ছেড়েছে তার ইয়ত্তা কি আছে??( আমার লেখায় কিংবা ব্লগ নিয়ে তৎকালীন আলোচনায় আমার ভুল হতে পারে- পুরনো ব্লগাররা আমাকে দয়া করে আমার ভুল ধরিয়ে দেবেন)
ছাগু, শিবির, নাস্তিক বিভিন্ন উপাধি দিয়ে একেকজনকে টার্গেট করা হোত- অবশ্য কেউ কেউ সত্যিই ব্লগের জঞ্জাল ছিল। তবে বরাবরই নারী ব্লগারদের জন্য ব্লগের প্লাটফর্ম বেশ মসৃন ছিল বলে আমি মনে করি( এ ব্যাপারে নারী ব্লগাররা ভাল বলতে পারবে)। তারা এসব থেকে দুরেও থেকেছেন পুরুষ ব্লগারররাও তাদেরকে বিশেষ একটা ঘাটেননি। আমার ধারনা অনেকেই সে জন্য নারী নিক নিয়ে ব্লগিং করত।(এখনো আছে কিছু হয়তো)
ব্লগে গত পাঁচ বছর বা তার কিছু অল্প বেশী কিছু আগে পরে এসেছে-তারা বেশ অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে, কষ্টে ব্যাথায় ভেঙ্গে পড়ে, উত্তেজিত হয়ে যায়, মারমুখী হয়ে ওঠে, কেউবা নিরবে ব্লগ ছেড়ে চলে যায়। তাদের উদ্দেশ্যে আমি ব্লগের তথাকতিথ সেই স্বর্ণ যুগের ব্লগ র্যাগিং এর কিছু নমুনা পেশ করছি। আমার ধারনা এর পরে আর তেমন করে অতি অল্পতেই কেউ কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।
মামো যার পুরো নাম ছিল মাহবুব মোর্শেদ! প্রথম আলো ব্লগের মডারেটর। চেহারা ভাবে কথায় বেশ আঁতেল একটা ভাব ছিল। কণ্ঠে একটু মেয়েলী টোন ছিল। তবে সমকালীন সময়ের সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে তার জ্ঞান গরিমা বেশ ভালই ছিল।
সামুর তখন রমরমা দিন। প্রথম আলো সামুকে দেখে মাঠে নেমেছে। কিন্তু সামুর বেশ কিছু ব্লগার( সবাই না কিছু- সবসময় এই কিছুরাই সবকিছু অস্থিতিশীল করে তোলে) দৃঢ় প্রতিজ্ঞ প্রথম আলোকে মাঠে টিকতে না দেয়ার ব্যাপারে।
প্রথমেই তারা সেই ব্লগের ট্যাগ দিয়ে ফেলল ‘আলু ব্লগ’ বলে। প্রথুম আলো ব্লগের কোন ব্লগার( বেশীরভাগ) সামুতে একটা পোস্ট দিলেই অনেকেই ‘আলু ব্লগের ছাগু’ ট্যাগ দিয়ে তাকে নাস্তানাবুদ করত। তার মাঝেও কেউ কেউ সামুতে টিকে গেছে হাতে পায়ে ধরে, ফাঁক ফোঁকরে ঢুকে পড়ে- কেউ নিক পাল্টে।
মামো( মাহবুব মোর্শেদ) মাঝে মধ্যে প্রথম আলো ব্লগের মডারেটরের খোলস ছেড়ে সামুতে একটা পোষ্ট দিলেই হোল- ব্যস আর যাবে কোথায়। কোন ক্যাচালের পোষ্ট নয়। কোন সাধারন, গল্প কবিতা বা প্রবন্ধ। বেচারা বহুভাবে চেষ্টা করেছে তার আসল নাম দিয়ে কিন্তু টিকতে পারেনি।
আসুন তার হাস্য রসে খোঁচা দেয়ার একটা নমুনা দেখি( আমি চেষ্টা করি বেশ ডিসেন্ট ভাষার একটা খোঁচা মারা পোষ্ট আনতে);
• বধিউর হলেন প্রথম আলোর মতিউর রহমান।
মামোর গল্পু ০৩
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:১৫
যুদ্দাপরাদির বিছার লই বলগে পছুর হাদুমপাদুমের সুযুগ লই আমাদের সগলের নয়নমনি মামো চিপা দি আসি ভাড়ি ভাড়ি কতা পুশ্ঠ করি আবার লাইনে উটিতে ছাইতেছে। ইহা শাবাবিক। কারন আলুবলগে তাহাকে কর্পুরেঠ পথ্যঙ্গ মুকে দি বসি থাকিতে হই, শুদু ঢুক গিলা ছারা সেইকানে আর করার কিচু নাই, মুক কুলিলেই বিপধ, একাদিক পথ্যঙ্গ মুকে ডুখি যাইথে পারে। তাই মুক কুলিতে গেলে মামোকে নিজের পাড়া অথিকৃম করি সামুতে আসিয়াই মুক কুলিতে হইভেক।
কিন্থুক কাগু কতা দিয়াছিল যে মামো সামুবলগে কিচু লিকিলেই এক্ট করি মামোর গল্পু লিকিবে। কাগু কতা দিয়া কতা রাকে।
গল্পু ০৩
বধিউর বাই মামোকে ডাকি বইল্লেন,"আচ্চা মামো বলগে কি তাখিবে না তাখিবে,নিয়মকানুন সব টিক করিথে হইভেক। তুমি কি তাহা করিথে পারিবেক নাকি লুগ্জন লাগিবেক?"
মামো মিরিদু মিরিদু হাসি মারি কহিলু,"হে বধিউর বাই আপুনি নিশছিন্থে তাকুন। সব কিচু আমার বেরেনে সমরক্কিত আচে। আলুবলগ ত আমারই বেরেন ছাইল্ঢ!"
বদিউর বাই বলিলেন,"গুঢ! তুমার ত অনেক বেরেন।"
মামো উটিয়া নিজের পুন্দ থাব্রাইড়া কহিলু, "এর নাম বেরেন!"
বদিউর বাই বলিলেন, "তাহইলে একন যাউ, আমার জন্য কড়া লিখারের একখাপ ছা বানাই লইয়া আইস।"
তাহার পর মামোর বেরেন হইথে বাহিড় হইলু আলুবলগ। তাই সেইকানে এত দুর্গন্দ।
---------------------------------------------------------------------------------------------
মন্তব্যঃ
... বলেছেন: মামো উটিয়া নিজের পুন্দ থাব্রাইড়া কহিলু, "এর নাম বেরেন!"
তাহার পর মামোর বেরেন হইথে বাহিড় হইলু আলুবলগ। তাই সেইকানে এত দুর্গন্দ।
ছি..ছি...পাবলিকে মাইন্ড খাইবো না?
একটু রয়ে সয়ে কাগু।
ব্যাপক মজা পাইছি।
ছাগল আর ছাগু কিন্তু সমার্থক শব্দ নয় (বাংলা অভিধান দেখুন দয়া করে)। ছাগল একটি নিরিহ প্রাণী, আর ছাগু..........................
... বলেছেন: সে জন্যই মহাকবি আলিফ দেওয়ান বলেছেন,কি বলেছেন?
মামোর কোলে ছাগু
করে দিলো হাগু
( অল্প কিছুসংখ্যক ব্লগার অনেক সময়ই ব্লগকে বিতর্কিত করেছে- কলুষিত করেছে। তাদের অনেকেই এক সময় হারিয়ে গেছে কেউ কেউ ফিরে এসেছে সুস্থ্য ধারার ব্লগিং এ। তবে এদের অনেকেই বুদ্ধিমান সু-সাহিত্যক ছিলেন বা আছেন। সামু ব্লগে আসুন আমরা সবাই মিলে একটা পরিবারের মত থাকি- কাউকে ভাল না বাসতে পারি অন্তত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য কিংবা ঘৃনা না করি। আসুন আমরা গঠনমুলক সমালোচনা করি।)
* গত দুইদিন ধরে ভাবছিলাম এই লেখাটা ব্লগে দিব কি-না। শেষমেষ আমি আবার কোন ফ্যাসাদে না জড়িয়ে পড়ি- দয়া করে আমাকে কেউ বেশি মাতবর ভাববেন না। অতীতে দায় এড়িয়ে গেছি। এখন কিছুএকটা করার চেষ্টা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২১ সকাল ৭:২৭