somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গবাজার

০৮ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমি সামু ব্লগ তন্ন তন্ন করে খুজলাম- আশ্চর্য বঙ্গবাজার নিয়ে একখানা লেখাও নেই!!!!!!!!!
বঙ্গবাজার নিয়ে আমার গল্পটা করি আগে। ঢাকা কলেজে পড়ি তখন। ফ্যাশোনেবল পোষাকের জন্য বঙ্গবাজারের চরম নাম-ডাক। অল্প পয়সায় বিশ্বের নামী-দামি ব্রান্ডের কাপড় কিনতে সবাই ছুটে যায় বঙ্গ বাজারে। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। কখনো কলেজের বন্ধুদের সাথে কখনো একাকি ছুটে যেতাম ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজারে। বাজারের সেই গলি ঘুপচিতে ভ্যাঁপসা গরমে আধা সেদ্ধ হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরে ঘুরে শত সহস্র পুরনো কিংবা হাল ফ্যাশোনের অদ্ভুত সব বাহারি পোশাক মুগ্ধ নয়নে দেখতাম। প্রতিবার পথ হারাতাম আর নতুন কিছু আবিষ্কার করতাম। প্রথমে দরদামের স্টাইলটা রপ্ত করতে না পেরে ঠকে আসতাম হর-হামেশা! ধীরে সুস্থে সেটাও শিখে গেলাম। শুধু কি পোশাক আষাক –কত বিচিত্র কিসিমের মানুষের পদচারনা ছিল সেখানে। শত শত বিদেশী ও বিখ্যাত মানুষের পদভারে মুখর ছিল সে জায়গাটা। বিদেশীদের পেছন পেছন একাকী কিংবা দল বেধে ঘুরে বেড়াত বহু-ভাষী ইঁচড়ে পাকা টোকাই ছেলেরা। হিন্দী উর্দুতো মামুলি ব্যাপার আরবি থেকে শুরু করে তারা রুশ ডয়েস পর্যন্ত জানত। দোকানীদের সাথে যোগ সাজস ছিল তাদের- ভাল কাষ্টমার গছাতে পারলে ছিল বাধা কমিশন। দোকান মালিকেরা তাদের বেশ তোয়াজ করে চলত। আমি একবার পাকিস্তানি বিখ্যাত ক্রিকেটার আকিব জাভেদ সহ আরো কয়েকজন ক্রিকেটারের মুখোমুখি হয়েছিলাম।
বঙ্গবাজারে কেনাকাটার জন্য দরদামের বিশেষ পারদর্শীতা থাকতে হোত – না হলে ঠকে যাবার সম্ভবনা ছিল শতোতভা। ২০০ টাকার প্যান্ট দেড় হাজার টাকা দাম হাঁকাত দোকানী। এর থেকে সিরিয়াস বিষয় ছিল পোশাকের খুঁত, ভাল করে মাপ দিয়ে দেখে না আনলে ছোত বড় হবার সম্ভবনা তো ছিলই, বাতিল হয়ে যাওয়া গার্মেন্টস-এর এর মালে ছেড়া ফাটা দাগ থাকতই, কখনো দেখা গেছে শার্টের এক হাতা ছোট আর এক হাতা বড়, জীন্সের প্যান্টের এক পকেট ফাঁকা-সেখানে কোন থলে নেই!!
বঙ্গবাজারের একদম পেছনে ছিল ধনী দেশ থেকে ( মুলত আমেরিকা- সেদেশের মানুষদের ফেলে দেয়া বা দান করা পোশাক) আসা পুরনো কাপড়ের দোকান। যার বেশীরভাগ ছিল শীতের পোশাক- সোয়েটার হুডি থেকে শুরু করে ফারের ওভারকোট পর্যন্ত! এর একধারে ছিল সারি সারি পুরনো কোট আর ব্লেজারের দোকান। বিদেশে যাবার আগে অনেকেই একবার ঢুঁ মেরে যেতেন এই বাজারে। কঠিন শীতের দেশগুলোতে পরিধানের জন্য গরম কাপড়ের একমাত্র ভরসাস্থল ছিল বঙ্গবাজার। চিটাগাং এর জহুর মার্কেট ও বেশ পচিতি লাভ করেছিল সে জন্য।
গার্মেন্টস-এর বিখ্যাত সব ব্রান্ডের স্টক লট, কিউ সি পাস না করা কিংবা লেফট ওভার মাল গুলোর মুল ঠিকানা ছিল তখন বঙ্গবাজার। বিদেশি ক্রেতা ও তাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের যোগান দেওয়া কাঁচামাল ব্যবহারের পর দেশের পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে যত কাপড়, সুতা, বোতাম, জিপার ইত্যাদি উদ্বৃত্ত থাকে মূলত সেগুলি দিয়ে তৈরি বলে বঙ্গবাজারের পোশাক দামে সস্তা। বাজারের দো-তালায় ছিল সেলাইয়ের কারিগরেরা। তারা সেই সব সামগ্রী দিয়ে প্রাই নিখুঁতভাবে অনুররন করত মুল ব্র্যান্ডের। ওরা এতটাই দক্ষ ছিল যে, সেই পোশাক দেখে- ওটা কপি মাল তা গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজারদেরও ধরবার উপায় থাকতনা।
৭০ এর দশকের শেষ দিকে শুরু হয় গার্মেন্টস শিল্প- আশির শুরুতে সেটার প্রসার লাভ করে অতি দ্রুত। রমরমা ব্যাবসা শুরু হয় মধ্য আশিতে। ঠিক তখুনি গড়ে ওঠে বঙ্গবাজার! বঙ্গবাজার মুলত তাঁর ব্যাবসায়িক খ্যাতি পরিচিতি ও মুল ধারার ব্যাবসা করে ৮৫ থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত। ৯৫ তে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুরো বাজার ভস্মিভুত হবার পরে বেশ কিছু দিনের জন্য পুরো ব্যাবসা স্থবির হয়ে পড়ে। স্টক লট, লেফট ওভার ও পুরনো ও কিউ সি ফেইল মালের বাজারগুলো সারা ঢাকা তথা পুরো দেশ জুড়ে। নতুন করে গড়ে ওঠা বঙ্গবাজার তাঁর স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে অনেকখানি। এখনো অনেক মানুষের ভরসার স্থল বঙ্গবাজার- তবে ধনী দেশের পুরনো পোশাক এদেশে আর আসেনা তেমন। যদিও সস্তার, পাইকারি ও ব্রান্ডের কাপড়ের প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে এখনো বেশ সুনামের সাথেই টিকে রইয়েছে বঙ্গবাজার- তবুও তাঁর সেই ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে বিদেশ ছুট আর ফ্যাশনেবল মানুষের কাছে তাঁর গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে অনেকখানি।আমি রাশীয়া যাবার সময়ে পুরো শীত আর পোশাক কিনেছিলাম বঙ্গবাজার থেকে। সেগুলো পরে রাশীয়ার -৩৫ দিগ্রী ঠান্ডা সামলেছিলাম বেশ ভালভাবে। আমিসহ বাকি সবাই-ও পোশাকাদি সেখান থেকেই নিয়েছিল। শুধু কি রাশিয়া- ইউরোপ আমেরিকা সহ হেন দেশে বাঙ্গালী যায়নি তখন বঙ্গবাজারে ঢুঁ না দিয়ে। প্রানের এই ঢাকা শহরের আরেক প্রাণ ছিল তখন বঙ্গবাজার।



বঙ্গবাজারের ইতিহাস
বঙ্গবাজার ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় অবস্থিত মূলত তৈরি পোশাক বিক্রয়ের একটি বাজার। এই বাজারে সবধরনের পোশাক-পরিচ্ছদ ও পোশাক তৈরির কাটা কাপড় সস্তামূল্যে বিক্রয় হয়। এখানে দেশের সকল এলাকার এবং বিদেশেরও অসংখ্য ক্রেতা প্রতিদিন ব্যক্তিগত ব্যবহার বা উপহারের জন্য তৈরি পোশাক কিনতে আসে। খুচরা ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে পাইকারি হারে মালামাল কিনে থাকে। তবে শুরুতে এটি তৈরি পোশাকের বাজার ছিল না। ১৯৬৫ সনে জায়গাটি নানা ধরনের খুচরা পণ্যের হকার ও ছোট দোকানদারদের ব্যবসায় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। সে সময় ফুলবাড়িয়ার এই জায়গাটি ছিল ঢাকার প্রধান রেলস্টেশনের একেবারে সংলগ্ন এবং এ কারণে বাজারটিও হালকা খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও স্যুভেনির বিক্রয়ের একটি আদর্শ স্থানে পরিণত হয়েছিল। বাজার গড়ে ওঠার বছর চারেকের মধ্যেই ফুলবাড়িয়া থেকে রেলস্টেশন কমলাপুরে সরিয়ে নেওয়া হলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগস্থল বলে স্থানটির গুরুত্ব আগের মতোই রয়ে যায়। ফলে হকার ও অন্যান্য দোকানদার এই বাজার পরিত্যাগ না করে বরং এখানে স্থায়িভাবে থাকার ব্যবস্থা করে। তাদের অনেকেই আবার অবৈধভাবে অস্থায়ী টিনশেড তৈরি করে।
১৯৭৫ সালে ঢাকার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সব ধরনের টিনশেড ও অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে দিয়ে এখানে একটি পাকা বাজার গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ জায়গাটির মালিকানা ছাড়তে অস্বীকার করে। এ অবস্থায় দোকানমালিকরা রেল কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে বার্ষিক ইজারা চুক্তির ভিত্তিতে খন্ড খন্ড জায়গায় নিজ নিজ দোকান বসানোর অধিকার লাভ করে। শেষ পর্যন্ত ১৯৮৫ সালে সিটি কর্পোরেশন জায়গাটির মালিকানা পায় এবং ১৯৮৯ সালের মধ্যে পরিকল্পিত পাকা বিপণি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করে। নতুনভাবে তৈরি বাজারটির মোট আয়তন ২১,২৫০ বর্গফুট। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ এই পাঁচ বছরেই মূলত বাজারটি তৈরি পোশাকের বাজার হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বাজারটি বঙ্গবাজার নামে নিজ পরিচিতি অর্জন করলেও বস্ত্তত এখানে গুলিস্তান, মহানগরী ও আদর্শ হকার্স মার্কেট নামের অন্য তিনটি সংলগ্ন বাজারের দোকান একত্রে মিশেছে। এদের সীমানা এখন আলাদা করা দুরূহ।
দেশে ট্রেডমার্ক আইন তেমন শক্ত নয় আর ডিজাইন ও সেলাই কৌশল নকলেও স্থানীয় দর্জিরা খুবই দক্ষ বলে বঙ্গবাজারের পোশাক সামগ্রী বিদেশি লেবেলে চালিয়ে দেওয়া হয়। তবে পোশাকগুলি গুণগতভাবেও উন্নত। ঢাকার সিদ্দিক বাজার, তাঁতিবাজার, বাংলাবাজার, বংশাল এবং অন্যান্য এলাকার অনেক স্থানীয় পোশাক প্রস্ত্ততকারী প্রতিষ্ঠানের শো-রুম বা সেলস কাউন্টার হিসেবেও বঙ্গবাজারে অনেক দোকান আছে। মোট ২,২০০ দোকানের জন্য বঙ্গবাজারের পরিসর অপ্রতুল বলে এর ভিতরে দোকানের সারিগুলি অপ্রশস্ত। অনেক সময় ক্রেতার ভিড়ে ভিতরটা হয়ে ওঠে অসহ্য। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতা ছাড়াও খুচরা ও পাইকারি ভিত্তিতে পোশাক সামগ্রী কেনার জন্য এখানে আসে ভারত, নেপাল, ভুটান, রাশিয়া, ইরান ইত্যাদি দেশের ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী ক্রেতারা। বাংলাদেশে অবস্থিত অনেক দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বিদেশিরাও এ বাজারে প্রায় নিয়মিত আসে। এভাবে বঙ্গবাজার দেশের বাইরেও পরিচিতি অর্জন করেছে। প্রতিদিন বঙ্গবাজারে আসা বিদেশি ক্রেতাকে সাহায্য করতে অল্পবয়সী স্বশিক্ষিত অনেক দোভাষীকে বাজারের ভিতর সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। বিদেশি কোন ভাষাতেই এদের তেমন দক্ষতা না থাকলেও দরদাম এবং পোশাক-পরিচ্ছদের নাম, রং ও সাইজ বোঝানোর জন্য দরকারি বিদেশি ভাষায় এরা যথেষ্ট পারদর্শী।
দেশে এবং বিদেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবাজার এমনিতে যে পরিচিত অর্জন করেছিল তা আরও ব্যাপক হয় ১৯৯৫-এর একটি দুর্ঘটনার মাধ্যমে। ঐ বছর এক বিশাল অগ্নিকান্ডে গোটা বাজার ভস্মীভূত হয়ে যায় এবং ঘটনাটি পত্রিকা, রেডিও-টেলিভিশনে সবিস্তার প্রচারিত হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এরপর বাজারটিকে নতুন করে গড়ে তোলে। এর মধ্যে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স এবং সুন্দরবন কমপ্লেক্স নামে দুটি দশ তলা বাজার ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। পরিকল্পনায় এদের প্রথমটি বঙ্গবাজার এবং দ্বিতীয়টি মহানগরী ও আদর্শ হকার্স মার্কেট-এর দোকানিদের জন্য নির্ধারণ করা আছে।



ব্লগে বঙ্গবাজার

সচলায়তন- ব্লগার রাগিব, ২/২/২০০৮ ( যে কোন বাংলা ব্লগে এই একটা লেখাই পেয়েছি- লেখকের অনুমতি না নিয়ে লেখার কিছু অংশ পাঠকদের সাথে শেয়ার করছি)
বঙ্গবাজারে কেনাকাটা করার বেশ কিছু কৌশল আছে। যদি খুব মাঞ্জা মেরে যান, দোকানদার আপনাকে মালদার পার্টি মনে করে ঐরকমই দাম চাইবে। বঙ্গ-তে কেনাকাটা করতে হলে তাই আমি সবসময় যেতাম স্যান্ডেল পায়ে, টিশার্ট আর জিন্স পরে।
দামাদামি হলো বঙ্গতে আমার সবচেয়ে পছন্দের ব্যাপার। জিন্সের দাম চাইতো শুরুতে ৮০০ টাকা। আমি বলতাম ১০০ টাকার নীচে, বা ভালো লাগলে খুব বেশি হলে ১০০টাকা। দোকানদার হয়তো আঁতকে উঠে কিপটামি সংক্রান্ত একটা বাঁকা কথা বলতো। ওসব কথা গায়ে মাখলে আর বঙ্গতে কেনাকাটা করা লাগতো না। তাই দিব্বি বিশাল হাসি বজায় রেখে দোকানদারের সাথে আড্ডা জমাতাম। কারণ, দোকানদার যদি আপনার পিছনে ২০ মিনিট বা আধা ঘন্টা সময় ব্যয় করে, তাহলে এক সময় ঠিক দামেই জিনিষটা দিয়ে দিবে। নইলে তো তার সময়টা গচ্চা গেলো। এরকম আড্ডা মারতে মারতে ৮০০ টাকা দাম হাঁকা ঐ জিন্স কিনতাম ১৮০ বা খুব বেশি হলে ২২০ টাকায়।
ঐযে বলেছিলাম, কাপড় চোপড় দেখে ওরা দাম হাঁকে। বিয়ের পরে একদিন আমার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ঐ একই দোকানদার একই জিন্সের দাম শুরু করলো ১৫০০ টাকা হতে। অবশ্য দামাদামির স্টাইল দেখে বুঝে নিলো অল্প পরেই যে পুরানো পাবলিক। ২২০ টাকাতেই শেষে দিলো।
বিদেশে যখন পড়তে যাচ্ছি, তখন শীতের বড় জ্যাকেট কিনতে বঙ্গবাজারে গিয়েছিলাম। পিছনের দিকের একটা জায়গায় এগুলো বিক্রি করে। প্রচুর শীতের কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম ঐবার, যার মধ্যে দুইটা বড় জ্যাকেট ছিলো, একটা হাঁটু পর্যন্ত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর ওখানকার বাংলাদেশীরা ভয় দেখালো। ৫-৬ বছর দেশে যাননি, এমন একজন প্রশ্ন করলেন, ইলিনয়ের শীত তো খুব বেশি, কাপড় কিনবো কবে। আমি জানালাম আমার বঙ্গের জ্যাকেটের কথা। উপস্থিত অনেকে হাসাহাসি করলেন, বললেন বঙ্গের ঐ জ্যাকেটে বাংলাদেশের শীত মানতে পারে, আমেরিকার শীত মানবে না। কাজেই আমি যেন মানে মানে সময় থাকতে এখান থেকে জ্যাকেট কিনে নেই। তখন অবশ্য গরম কাল ছিলো, তাই অন্যরা কী জ্যাকেট পরছে তা দেখিনি। ভাবলাম, বঙ্গ কী শেষ পর্যন্ত ডোবাবে নাকী আমাকে!!
যখন শীতকাল এলো, তখন শেষ হাসিটা আমিই হাসলাম। চারিদিকে সবাই যেই জ্যাকেট পরছে, সবই বঙ্গের জ্যাকেটের কপি। কিন্তু তফাৎটা হলো, এসব জ্যাকেট এরা কিনেছে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ ডলার।
বঙ্গবাজার দীর্ঘজীবী হোক | সচলায়তন (sachalayatan.com)

বঙ্গবাজার নিয়ে কিছু ব্লগারের মন্তব্য;
আমাদের সোহানী আপু বেশ উচ্ছ্বসিত বঙ্গবাজার নিয়ে- আরো ব্লগার হয়তো তাদের বঙ্গবাজারের স্মৃতিগুলো শেয়ার করতে চেয়েছেন কিন্তু উপযুক্ত মাধ্যম পাননি।
ব্লগার শাহ আজিজ ভাই বলেছেন: একসময় ৮০র শেষ দিকে গার্মেন্টস রিজেকটেড মাল আসত বঙ্গবাজারে , ধুমসে কিনতাম । এখন রিজেকট বলতে নেই। বঙ্গবাজারের উপরে ভালো সেলাই দরজিরা তৈরি করে লেটেসট কাপড় , ডিজাইন কপি আসে লুকিয়ে গার্মেন্টস কারখানা থেকে।
বঙ্গ না থাকলে ঢাকার পোলাপাইনের আর পাট মারা হতো না। আমাদের এক ফ্রেন্ড একদিন ভার্সিটিতে আসছে 'adidas' এর একটা গেঞ্জি পড়ে। তার সে কি ভাব! এইটা অরজিনাল, এইটা সেটা। কয়দিন পর দেখলাম রিকশা আলা থেকে শুরু করে সবার গায়ে সেই অরিজিনাল গেঞ্জি।~রায়হান আবীর
চিন্তা করে দেখলাম আমার ব্র্যান্ডের তেমন কোন জামা-কাপড় নাই মন খারাপ জামা-কাপড় পড়া লাগে, তাই হাতের কাছে যা পাই তা-ই পড়ি। ব্র্যান্ড নিয়ে কোন মোহ নাই। এ কারণেই হয়তো বংগবাজারেও তেমন ঢুঁ মারা হয় নি। তবে ছোটবেলায় কেউ একটু বিদেশী সিল-ছাপ্পড় মারা কাপড় পড়লেই আমরা খেপাতাম এটা 'টাল এন্ড কোং' (জহুর মার্কেট) থেকে কেনা হয়েছে দেঁতো হাসিঅন্য পাঠকদের জন্য এখানে চট্টগ্রামের জহুর মার্কেট সম্পর্কেও একটু বলি। এটা অফিশিয়াল নাম 'জহুর হকার্স মার্কেট'। কিন্তু এক সময় এটা 'টাল কোম্পানী' বা 'টাল এন্ড কোং' নামে পরিচিত ছিল। জাহাজ থেকে আসা বিদেশী পুরানো লটের কাপড় টাল করে মার্কেটে রাখা হতো বলে এই নাম। এখন অবশ্য সবই বাংলাদেশী গার্মেন্টস-এর কাপড়। এছাড়া আন-অফিশিয়ালী এ মার্কেটকে আমেরিকান ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের নামেও ডাকা হয়। নিক্সন আমলে এটাকে ডাকা হত 'নিক্সন মার্কেট', রেগান আমলে 'রেগান মার্কেট' ইত্যাদি। এভাবে এখন আর ডাকা হয় কি না জানি না। নাম-করণের এই ধারাটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগত।~তানভীর-২০০৮
আগেরবারে বঙ্গবাজার থেকে অনেককিছু কিনেছিলাম। দিল্লীর সরোজিনী মার্কেটের মত। তবে এখন বাংলাদেশের টাকার দাম পড়ে যাওয়ায় বঙ্গবাজারই লাভজনক। তাই এবার আমেরিকা যাচ্ছি বলে তার আগে বঙ্গ আর সরোজিনী দুই থেকেই মার্কেটিং সেরে রেখেছি - আমেরিকায় গিয়ে যাতে কিছু কিনতে না হয়।বঙ্গে আমার সমস্যা হয়েছিল যে আমাকে ভারতীয় বলে আইডেন্টিফাই করে ফেলছিল লোকে। তাই বেশী দাম ... তবে সাথে লোকবল নিয়েই গিয়েছিলাম। তারা দরাদরী এক্সপার্ট। তাই কিনে ফিরতে পেরেছি। নাহলে খালি হাতেই ফিরতে হত। চিনেও একই রকম আন্ডারগ্রউন্ড মার্কেট আছে অনেক। তবে সেখানে ভারতীয় বলে নিজেকে গরিব দেখিয়ে সুবিধা পাওয়া যায় বরং।~দিগন্ত –পশ্চিমবাংলা

~ দোভাষী পারভিন

বঙ্গবাজার নিয়ে বিভিন্ন সময়ের সেরা নিউজগুলো দেখে নিই;
পাঁচ-সাতটি ভাষা জানেন। এক সময় এ বিদ্যার বলে আয় করেছেন ঢের। কিন্তু এখন যতই দিন যাচ্ছে ততই কঠিন হচ্ছে জীবিকা। কোনো কোনো দিন বিনা উপার্জনে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে ঘরে।
এ কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন রাজধানীর বঙ্গবাজারের দোভাষীরা। ইংরেজি, আরবি, ফারসি, রাশিয়ান, নাইজেরিয়ান, ফিলিপাইন, জার্মানসহ অনেকগুলো ভাষা রপ্ত তাদের। প্রাতিষ্ঠানিক ভাষাশিক্ষা নয়। শুনতে শুনতে, বলতে বলতে দোভাষী হওয়া এ লোকদের দেখা মেলে বঙ্গবাজারে গেলে।
কয়েক দশক ধরে রাজধানীর এ বাজারে বিদেশিদের কেনাকাটায় সহায়তা করছেন তারা। বিদেশিদের কথা শুনতে শুনতে, বলতে বলতে একেকজন রপ্ত করেছেন পাঁচ-সাতটি ভাষা। প্রতিদিন উপার্জন করেছেন ভালো অঙ্কের টাকা।
কিন্তু সেদিন আর নেই। বঙ্গবাজারে বিদেশিদের ভিড় কমেছে। সেই সঙ্গে ভাটা পড়েছে দোভাষীদের আয়ে। ইতোমধ্যে অনেকেই পেশা ছেড়েছেন। এখনও যারা সাধের পেশাটি ছাড়েননি, তারা কাজ না পেয়ে মাঝেমধ্যে ঘরে ফিরছেন খালি হাতে। ফলে বঙ্গবাজারে আগে যেখানে ৩০-৩৫ জন দোভাষী কাজ করতেন, এখন সেখানে আছেন ১০ জনেরও কম।
সরেজমিনে বঙ্গবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাবুলের চায়ের দোকানের সামনে অপেক্ষা করছেন চার-পাঁচজন দোভাষী। দৃষ্টি তাদের সামনের সড়কে। কোনো বিদেশি ক্রেতা এলেই তারা ছুটে যান। প্রথমে তিনি (বিদেশি) কোন দেশের সেটা জেনে নেন। ভাষা জানা দোভাষী ওই বিদেশির সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটায় সহযোগিতা করেন।
দোভাষী হিসেবে আয় কেমন— জানতে চাইলে আল আমিন নামের এক দোভাষী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদেশি ক্রেতারা ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক দেন। তবে এখন তাদের সংখ্যা অনেক কমেছে। ফলে সবদিন আয়ও হয় না।
এক সময় দোভাষীরা প্রচুর আয় করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বেশিদিন আগের কথা নয়। বঙ্গবাজার তখন খুবই জমজমাট। নানান দেশের কাস্টমার আসত। আমাদের বাপ-চাচা, মা-খালারা দোভাষীর কাজ করে ‘তেলেঝোলে’ ছিলেন। ছোট বেলায় তাদের সঙ্গে চলতে চলতে পাঁচ-সাতটা ভাষা শেখা হয়ে যায়। তাদের দেখাদেখি আমরাও দোভাষী হয়ে যাই। এখন মনে হয় ‘ফাইসা’ গেছি।”
বিদেশি ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে দোভাষী ইসমাইল হোসেন বলেন, এক সময় বিদেশি ক্রেতাদের পোশাক কেনার নামকরা স্থান ছিল বঙ্গবাজার। তখন রাজধানীতে ভালো মানের হোটেল বলতে ছিল শেরাটন আর সোনারগাঁও। হোটেল দুটি বঙ্গবাজারের কাছাকাছি। ফলে বিদেশিরা বঙ্গবাজারে কেনাকাটা করতে আসতেন। এখানে পোশাকের দামও ছিল তুলনামূলক কম।
রেবেকা খাতুন নামের আরেক দোভাষী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবাজারে আগে খুবই ব্যস্ত সময় পার করতাম। একের পর এক বিদেশি ক্রেতা আসত। তাদের নিয়ে বাজারে ঘুরতাম, কেনাকাটা করে দিতাম। তারা ভালো বকশিস দিত। এখন সকাল-সন্ধ্যা বসে থেকেও তাদের দেখা পাওয়া যায় না।
আগে প্রচুর বিদেশি ক্রেতা আসত। দিনে গড়ে ৩০-৩৫ জন দোভাষী কেনাকাটায় তাদের সহযোগিতা করত। এখন ৭-৮ জনকে দেখা যায়। সারাদিন অপেক্ষা করেও বিদেশি ক্রেতাদের দেখা পায় না তারা। ফলে তাদের আয় হয় না, আমাদের বেচাবিক্রিও মন্দা যায়।
এ দোকানির ভাষায়, দোভাষীরা কেউই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ভাষা শেখেনি। ছোট বেলা থেকেই বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে তারা ৮-১০টি করে ভাষা রপ্ত করে ফেলেছে। এখানকার অনেকেই বংশানুক্রমে দোভাষী। অন্যকোনো দক্ষতা না থাকায় এখন তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
ঢাকার বঙ্গবাজার নামে পোশাকের দোকানগুলোয় আসা বিদেশী ক্রেতাদের সহায়তা করেন অনেক তরুণ-তরুণী দোভাষী।
তেমন কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও ইংরিজি তো বটেই, আরবি, রুশ, জার্মান, ফরাসী এরকম পাঁচ-ছটি করে ভাষা জানেন এরা।
ঢাকায় বঙ্গ বাজারে নানান নামী ব্র্যান্ডের জিনস বা শার্ট কমদামে পাওয়া যায় তা হয়ত অনেকেই জানেন। এসব কাপড় কিনতে প্রচুর বিদেশিরা সেখানে যান।
এই বিদেশী ক্রেতাদের সহায়তার জন্য কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই গড়ে উঠেছে দোভাষী ছেলে মেয়ের দল। দোভাষী হিসাবে কাজ করে ভালো পয়সা আয় করছেন তারা।
বঙ্গবাজারে এদের পদচারণা ক্রমশই বাড়ছে এবং শুধু ক্রেতা নয় দোকানীরাও মাঝে মধ্যে তাদেরকে ডেকে সাহায্য নেয়।
এদের অনেকের সাথে কথা বলে দেখা গেল, ইংরেজি আর আরবিটাই তারা বেশি বলেন। তারা আরো জানেন ফ্রেঞ্চ, ফারসি বা রুশ ভাষার অল্প কিছু।
মার্কেটের বাইরে সকাল থেকে দলবেঁধে বসে থাকেন। ১৫ থেকে ২০ এর কোঠায় তাদের বয়স। মার্কেটে কোন বিদেশি এলে তারা লেগে পড়েন কাজে।
মিরাজ বলছিলেন তিনি ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, ফিলিপিনো, মালে এসব ভাষা বলতে পারেন।
ইংরেজিটাই বেশি বলে এই দোভাষীর দল। এর পর আছে আরবি আর ফারসি। ফ্রেঞ্চ বা রুশ ভাষাও জানেন কেউ কেউ। ইংরেজিতে আমেরিকান এ্যাকসেন্টেও বেশ ভাল রপ্ত করেছেন কয়েকজন।
লেখাপড়ার গণ্ডি বেশি দুর পর্যন্ত গড়ায়নি কারোরই। কিন্তু এতগুলো ভাষা কিভাবে শিখলেন তারা?
পারভীন বলছিলেন, “যখন ছোট ছিলাম, তখন বিদেশিরা মার্কেটে এলে তারা টাকা দিতো। তখন তাদের সাথে সাথে মার্কেটে চলে যেতাম। ওরা সাথে করে বাঙালি নিয়ে আসতো। আমরা তাদের কথা বার্তা দেখতাম। তারাও আমাদের অনেক কিছু বলতো। এভাবেই শেখা।”
দোকানিদের মধ্যেও বেশ জনপ্রিয় স্বশিক্ষিত এই ছেলেমেয়েগুলো। মার্কেটে গেলে দোকানিরাই দেখিয়ে দেন দোভাষীদের কোথায় পাওয়া যাবে। কারণ এতে তাদেরও লাভ।
শেখ সজীব নামে এক দোকানি বলছিলেন, “আমাদের বেশিরভাগের যেহেতু লেখাপড়া নেই। বিদেশিদের সাথে কথাবার্তা বলতে পারিনা। এই ছেলেমেয়েগুলো আমাদের তাদের সাথে কথা বার্তায় সহায়তা করে।”
বিদেশিদের শুধু ভাষা অনুবাদে সহায়তা নয়। দোতলা ভবনে সরু গলির দু পাশে ঠাসাঠাসি করে বানানো এসব দোকানে পণ্য খুঁজে পেতেও সহায়তা করে তারা।
সুদূর ভুটানের গেলেপু থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী পেমা সেওয়াং। বঙ্গ বাজার থেকে কাপড় কিনে নিজের দোকানে বিক্রি করেন তিনি।
এখানকার দোভাষীরা তার কাছেও বিস্ময়ের ব্যাপার। তিনি বলছেন, “আমারতো মনে হয় এটা খুবই আশ্চর্যের। লেখা পড়া না জানা সুবিধা বঞ্চিত এসব ছেলেমেয়েরা যে কয়েকটি করে বিদেশি ভাষায় কথা বলে সেটা আসলেই দারুণ ব্যাপার। আমার মনে হয় তাদের যদি আর একটু সহায়তা করা যায় - তাহলে তারা ভবিষ্যতে ঢাকা শহরে পর্যটকদের গাইড হিসেবে কাজ করতে পারবে”
কাজে শেষ হলে এসব বিদেশিরা ১০০ থেকে এক হাজার টাকা করে দেন দোভাষীদের। যার যেমন ইচ্ছে।
দোভাষীদের যার যে ভাষায় বেশি দক্ষতা কাস্টমার এলে দেশ বুঝে তার অগ্রাধিকার। কেনা কাটার পরিমাণ বেশি হলে কয়েকজন একসাথে মিলেও কাজ করেন।
নিজেরা একসাথে বসে ভাষার চর্চাও করেন এই দোভাষীরা।



বঙ্গবাজার থেকে নাইজেরিয়া যায় ৫০০ কোটি টাকার পণ্য
চোখে পড়ার মতো উচ্চতা, অ্যাথলেটিকের মতো স্বাস্থ্য। পরনে হিপ-হপ পোশাক। রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে এরকম ভিনদেশি ক্রেতাদের আনাগোনা এখন নিয়মিত ঘটনা। স্থানীয় ক্রেতাদের ভিড়ে ভিনদেশি এই ক্রেতারা কিছু বিক্রেতার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছেন।
ঢাকার এই বিখ্যাত মার্কেটের দোকানগুলোর পাশ দিয়ে যখন এই ক্রেতারা হেঁটে যান, তখন স্থানীয় দোকানীরা তাদেরকে ডাকেন, 'আরে বন্ধু! আসো আমার দোকানে।' এই সম্বোধনই স্থানীয় ক্রেতাদের সঙ্গে ভিনদেশি ক্রেতাদের পার্থক্য আরও স্পষ্ট করে তোলে। মূলত বড় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার একটি কৌশলই হলো এভাবে সম্বোধন করা।
এই ক্রেতারা নাইজেরিয়ার নাগরিক। তারা বাংলা শিখেছেন, যাতে ভালোমতো দরকষাকষি করা যায়। স্থানীয় ক্রেতাদের মতো তারা অল্প টাকার কাপড় কেনেন না। সরাসরি নাইজেরিয়ায় পাঠানোর উদ্দেশ্যে মোটা অঙ্কের মালামাল কেনেন তারা।
এক সূত্রে জানা গেছে, নাইজেরিয়ার ক্রেতারা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য নাইজেরিয়ায় পাঠান। বঙ্গবাজার ছাড়াও তারা মিরপুর, উত্তরা ও আশুলিয়া থেকে পোশাক কেনেন।
বঙ্গবাজারের কয়েকজন দোকান মালিক জানান, নাইজেরিয়ার ক্রেতারা তাদের কাছে 'বিশেষ ক্রেতা'। এক দশক আগেও বঙ্গবাজার ছিল শুধু স্থানীয় নিম্ন, নিম্নমধ্য ও মধ্যবিত্তদের পোশাকের বাজার। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই 'সস্তা' পোশাকের বাজারই নাইজেরিয়ানদের আমদানি গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।
বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক জাফর আহমেদ তালুকদার জানালেন, 'নাইজেরিয়ানরা স্টক লট কেনে। যেমন, ছোট ব্যবসায়ীরা ১০০ থেকে ১ হাজার পিস গার্মেন্টস পণ্য কেনেন, কিন্তু বড় ব্যবসায়ীরা কেনেন ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার পিস। তাদের ক্রয়ক্ষমতা যা-ই হোক না কেন, তারা নগদ টাকায় কিনে নেন। বাকি রাখেন না।'
করোনার সময় যখন স্বাভাবিক বেচাকেনা বন্ধ ছিল, তখন নাইজেরিয়ানরা বিকল্প উপায় বের করে কেনাকাটা চালিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে নাইজেরিয়ানদের ভালো জীবন
বছরের পর বছর ধরে, নাইজেরিয়ান ক্রেতারা স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মিলে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। এই নেটওয়ার্কের মধ্যে আছেন দোকানদার, মালবাহক ও সিএনজি চালক, যারা তাদের ঢাকার কিছু এলাকার 'গোপন' গুদামে স্টক লট (পোশাক) পরিবহনে সহায়তা করে। স্টেকহোল্ডাররাও চেষ্টা করেন এই বিদেশিদের যেন বাইরের ঝামেলা পোহাতে না হয়।
তায়ো (ছদ্মনাম) ২০১২ সালে বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাবে খেলার সুযোগ করে নিতে বাংলাদেশে পাড়ি জমান। ১৫ বছর বয়স থেকেই তিনি পেশাদার ফুটবলার খেলছেন। একটি নরওয়েজিয়ান ক্লাবেও খেলেছেন। তায়ো যখন বুঝতে পারলেন, নরওয়েজিয়ান ক্লাবের সতীর্থদের চেয়ে তিনি বয়সে বড় হয়ে যাচ্ছেন, তখন বাংলাদেশে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য তায়ো ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা এবং একাডেমিক ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তায়ো ঢাকায় বসবাসরত আরও কয়েকজন নাইজেরিয়ানদের দ্বারা পরিচালিত গার্মেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
ব্যবসা কীভাবে চলে?—এ প্রশ্নের জবাবে তায়ো বলেন, 'বঙ্গবাজারের মতো ঢাকার অন্যান্য বাজার থেকে ১৫০ টাকায় একটি টি-শার্ট কিনে সেটি প্যাকেট করে পাঠানো হয় নাইজেরিয়ায়। সেই টি-শার্ট নাইজেরিয়ান আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করা হয় ৩০০ টাকায়, যা নাইজেরিয়ান মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ নাইরা।
আরেক নাইজেরিয়ান ব্যবসায়ী এডি বলেন, একটি ৬০ কেজির পার্সেলের (প্রায় ৩০০ পিস এক্সট্রা লার্জ টি-শার্ট) ট্রান্সশিপমেন্ট খরচ মাত্র ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। সামুদ্রিক মালবাহী জাহাজে এ পার্সেল নাইজেরিয়া পৌঁছাতে সময় লাগে অন্তত তিন মাস।
মোটামুটি হিসাব থেকে বোঝা যায়, একজন নাইজেরিয়ান ক্রেতা নাইজেরিয়ার একজন আমদানিকারকের কাছে মাত্র ৩০০ পিস টি-শার্ট বিক্রি করে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা আয় করেন। তবে লাভের মার্জিন নির্ভর করে তারা বাংলাদেশি মধ্যস্বত্বভোগীদের কত দ্রুত এবং কী পরিমাণ টাকা দেন, তার ওপর।
তায়ো ও এডি দুজনেই একমত যে, 'এটা ভালো ব্যবসা।'
তায়ো ও এডি দুজনেই খ্রিষ্টান। তারা এখন নাইজেরিয়ায় ফিরতে চান না, কারণ বতর্মানে দেশটির শাসনক্ষমতায় আছেন মুসলিম রাজনীতিবিদরা। আর কট্টরপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামকে নিয়েও ভয় আছে।
তারা জানান, 'ধর্মীয় কারণ ছাড়াও আরও সমস্যা আছে। ওখানে তীব্র বিদ্যুতের সংকট। প্রত্যেক পরিবারে একটা করে পাওয়ার জেনারেটর আছে। শিল্প চালাতে ব্যয়বহুল জ্বালানি ব্যবহার করতে হয়। আর রাজনীতিবিদরা খুবই দুর্নীতিগ্রস্ত। আপনি ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবেন না। লাখ লাখ টাকা থাকলেও স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারবেন না।'

একটি ক্রমবর্ধমান অবৈধ ব্যবসা
নাইজেরিয়ায় পাঠানো স্টক লটের প্রকৃত পরিমাণ জানা সম্ভব নয়। সরকারি অনুমোদন ও বৈধ নথিপত্র ছাড়া বিদেশিরা দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি করতে পারেন না। কিন্তু টিবিএসের সঙ্গে কথা বলা কোনো নাইজেরিয়ানেরই আইনি কাগজপত্র নেই।
তার ওপর নাইজেরিয়ান সরকারের বিধিনিষেধের কারণে সে দেশের আমদানিকারকরা টেলিগ্রাফিক লেনদেন বা ওভারসিস ওয়্যার লেনদেন করতে পারেন না। এতে খরচ হয় ১০ হাজার ডলারের বেশি। মূলত এসব বাধা-বিপত্তিই বৈধ উপায়ে নাইজেরিয়ায় রপ্তানির সুযোগকে সীমাবদ্ধ করেছে।
' ৪০ ফুটের একটি কন্টেইনারে ১ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য ধরে। সেখানে ১০ হাজার ডলারের নথিভুক্ত পণ্য থাকে। আর বাকি অংশটুকু স্টক লট দিয়ে পূরণ করা হয়,' ।
নাইজেরিয়ার আমদানিকারকদের বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার আগে এলসি লাগে না। তাই কাস্টমস ডিক্লারেশন মিথ্যা হলেও তারা বাংলাদেশি চালান খালাস করতে পারে। 'এখানে কোনো ব্যবসায়িক ঝুঁকি নেই। গার্মেন্টস সরবরাহকারীসহ সিএনএফ এজেন্টসহ অন্যান্য সাহায্যকারীরা নগদ টাকা পান,' বলেন এজেন্ট।

নাইজেরিয়ানরা টাকার ব্যবস্থা করেন কীভাবে?
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য জানান, নাইজেরিয়ানরা ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মতো কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার ডিভাইসের মাধ্যমে অগ্রিম টাকা সংগ্রহ করেন। 'এছাড়া দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে সক্রিয় হুন্ডি নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও টাকা আসে,' বলেন তিনি।
সম্ভাবনা থাকলেও কাজে লাগানো হচ্ছে না
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি)-এর ২০২১-২২ অর্থবছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে নাইজেরিয়ায় ৪৪ লাখ ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৯.১৯ লাখ ডলার।
ইউএন কমট্রেড-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাইজেরিয়া ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১০৩.৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক পণ্য আমদানি করেছে। অথচ পাঁচ বছর আগেও দেশটির পোশাক আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫ মিলিয়ন ডলার।

ভয় ও সতর্কতা
আপনি যদি বঙ্গবাজারে কোনো নাইজেরিয়ানকে দেখেন, তাহলে দেখবেন বিদেশি এই ক্রেতা সাবধানে কাপড়ের টুকরোগুলো পরীক্ষা করছেন। এমন নয় যে পোশাকে ত্রুটি থাকলে তারা কিনবেন না। আরএমজি কারখানা থেকে বাতিল কাপড় কিনতেই তো তারা এই বাজারে আসেন। আসলে দর কষাকষির জন্য তারা জামাকাপড় যত্ন সহকারে পরীক্ষা করেন।
এরকম সময়ে তারা সাধারণত অন্য কারও কথায় মনোযোগ দেন না।কৌতূহলী মানুষ দেখলে তারা ভয় পায়, কারণ বাংলাদেশে অবৈধ আফ্রিকানদের সাইবার অপরাধ, স্ক্যাম, মাদকদ্রব্য ও যৌন ব্যবসার মতো নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন সম্পর্কে তারা অবগত।
বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার ২০০ নাইজেরিয়ান আছেন। তাদের মধ্যে বৈধ ভিসা আছে মাত্র ৩৮ জনের।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাইজেরিয়ানরা স্পোর্টস ও বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। ভারতীয় সীমান্ত দিয়েও নাইজেরিয়ানদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া আসল পরিচয় গোপন করতে ইচ্ছাকৃতভাবে তারা পাসপোর্টও নষ্ট করেন। মাঝে মাঝে সীমান্তরক্ষীদের হাতেও ধরা পড়েন তারা।
গত বছরের ৮ জুলাই ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে সিলেটে এক শিশুসহ তিন নাইজেরিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, তানজানিয়া, ঘানা, আলজেরিয়া, মালি এবং কেনিয়াসহ নয়টি আফ্রিকান দেশের শতাধিক মানুষ এখন বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে, দারিদ্র্যপীড়িত আফ্রিকান দেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশকে নিরাপদ বলে মনে করে।
স্থানীয় যেসব আরএমজি সরবরাহকারী নাইজেরিয়ানদের সঙ্গে নিয়মিত লেনদেন করে, তাদের দাবি, কেনিয়া, উগান্ডা, ঘানা, ক্যামেরুন ও অন্যান্য আফ্রিকান দেশ থেকে আসা বাংলাদেশে বসবাসকারীরাই আসলে নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। কিন্তু তারা নিজেদের নাইজেরিয়ান বলে পরিচয় দেয়।




বঙ্গবাজার টুকিটাকি লোকাল প্যান্টওয়ালা
মোহাম্মদ বেল্লাল প্যান্ট বিক্রি করেন। মালিক নন, কর্মচারী। আমাকে পুছ করলেন, কী লাগবে?
‘কিছু না, দেখতে আসছি।’
শুনে আগ্রহ করে তাকালেন। তারপর আলাপ হলো। জানলাম, কেরানীগঞ্জে বাসা। আগে ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। মালিকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় এক বছর আগে এখানে চলে আসেন। ভালোই লাগছে। আগের কাজে আর ফিরবেন না। দোকান মালিকের নাম পারভেজ। ১২ বছর ধরে বঙ্গবাজারে। লোকাল সব ধরনের প্যান্ট বিক্রি করেন। জিন্স, গ্যাবার্ডিন এসব। কালীগঞ্জে অনেক কারখানা। সেখান থেকে পাইকারি দরে প্যান্ট কিনে আনেন। পাইকারি দরেই বিক্রি করেন। খুচরা বেচেন না।
‘প্যান্ট নেয় মানুষ, টেকে এই প্যান্ট?’ পারভেজকে পুছ করি।
জবাব দিলেন পারভেজের সহকারী। বললেন, ‘ভাই, কী কন, সারা বাংলাদেশ থেকে এই প্যান্ট নেয়। ইভেন কি (এমনকি) বিদেশ থেকেও আইসা নিয়া যায়।’ নিজের পা উঠিয়ে প্যান্টের ওপর চাপড় মারলেন দুবার। ‘এই দ্যাখেন, আমি এইটা দেড় বছর ধইরা পরতাছি, কিচ্ছু হয় নাই, রংটাও জ্বলে নাই।’ ৩০০ টাকা দামেও প্যান্ট মেলে বঙ্গবাজারে। মুলামুলিতে (দামাদামি) যাঁরা অভিজ্ঞ তাঁদের জন্য ভালো জায়গা বঙ্গবাজার।
গেঞ্জির দোকানদার
মার্কেট ফাঁকাই লাগছিল। গেঞ্জির দোকানদার বসেই ছিলেন। ভালোই কথা হলো। জিজ্ঞেস করলাম, কাস্টমার কম ক্যান? ঈদের মাল কি বেইচা ফেলছেন, নাকি সামনে আরো চান্স আছে?’
বললেন, এক দফা বেচছি ভাই, এখন টুকটাক বেচা বিক্রি চলে আর কী! আসলে কাস্টমারই কম। বিক্রি আগের মতো নাই।’
জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, এখানকার দোকান মালিকদের টাকা-পয়সা কেমন?
উত্তর এলো, খুব ভালো অবস্থা থাকলে কি আর এইখানে দোকান নেয়? তয় এইখান থেইকা দোকান কইরা ম্যালা মাইনসেই বড়লোক হইছে। এই আমিই দেখছি।’
একটু থেমে, ‘আরেক সমস্যা, ব্যবসা আগের মতো নাই। মাইনসের ট্যাকা কইম্যা গেছে। সবাই একই রকমের মাল আনে। কেউ নতুন কিছু আনা পারে না। ঝুঁকি লইবার চায় না আর কেউ-ই। এর লাইগা ব্যবসাও ভাই ঝিম মাইরা গেছে গা।’
******


তথ্যসুত্রঃ
পেশা ছাড়ছে বঙ্গবাজারের দোভাষীরা; পেশা ছাড়ছেন বঙ্গবাজারের দোভাষীরা (dhakapost.com)
বঙ্গবাজারের দোভাষী: পাঁচ-ছ'টি দেশের ভাষা জানেন যারা - BBC News বাংলা
বঙ্গবাজার-নাইজেরিয়া: অবৈধ নাইজেরিয়ানরা যেভাবে অবৈধ আরএমজি রপ্তানি ব্যবসা গড়ে তুলেছে | The Business Standard (tbsnews.net)
বঙ্গবাজার দীর্ঘজীবী হোক | সচলায়তন (sachalayatan.com)
বঙ্গবাজার-banglapedia.org)
মীর হুযাইফা


সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৮
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×