(ঘরের খেয়ে অনেক বনের মোষ তাড়ালাম। আর নয় এইবার ক্ষ্যামা দিচ্ছি!)
এবার আমরা চোখ ফেরাই একটু হামাসের দিকে।আসলে হামাসের শক্তিমত্তা কেমন?
মুসলিম বিশ্ব তো বটেই বিশ্বের প্রথম সারির মিডিয়াতেও এত বেশী প্রপাগান্ডা ছড়ানো আছে হামাসকে নিয়ে যে আসলে ওদের শক্তিমত্তা নিয়ে রয়ে গেছে অনেক ধোয়াশা!
খোদ ইসরাইল স্বীকার করে যে, তারা যা ধারনা করে হামাসের শক্তিমত্ত্বা সন্মন্ধে হামাস তার থেকেও বহুগুন শক্তিশালী। মুসলিম বিশ্ব দাবি করে তেমনি। কিন্তু সন্দেহবাদীদের( সিঙ্ঘভাগ) দাবি যে এটা নেহাতই একটা গুজব- আসলে এটা মুলত ইসরাইলের একটা চাল। ফিলিস্তিনির নিরীহ সাধারন মানুষের উপর নির্বিচারে আক্রমনের একটা জঘন্য কৌশল মাত্র।
আসলা আমাদের মত অতি সাধারন মানুষের ভরসা একমাত্র মিডিয়া- নিজেদের সরেজমিনে তদন্ত করার তো কোন উপায় নেই। তাই বিভিন্ন মিডিয়ার প্রকাশিত সংবাদ থেকে যতদুর যম্ভব নিরপেক্ষভাবে চেষ্টা করা হবে হামাসের শক্তিমত্ত্বা সন্মন্ধে ধারনা নেবার।
ইসরাইলি সরকারি দফতর কতৃক প্রকাশিত গাজা স্ট্রিপের একটা ম্যাপ! লাল অঙ্কিত দাগ গুলো টানেলের যা সনাক্ত করে ২০২১ সালে ইসরাইল বিশেষ বিমান হামলার মাধ্যমে ধ্বংস করে। এই টানেল ধ্বংস করার জন্য তারা অত্যাধুনিক বোমা ব্যাবহার করে। এর অর্থ নিশ্চিতভাবে গাজা স্ট্রিপের নীচে ব্যাপক টানেলের অস্তিত্ব ছিল।
* বিবিসির রিপোর্ট। ২০১৫ বিবিসির এক সাংবাদিক নিজে ঘুরে ঘুরে দেখেছেন গাজা স্ট্রিপের সুরক্ষিত টানেলের অভ্যান্তরে। চাইলে নেট থেকে তার ভিডিও দেখে নিতে পারেন।
হামাস দাবী করছে গাজা স্ট্রিপের নীচ দিয়ে তাদের পাঁচশ কিলোমিটার জুড়ে এরকম টানেল আছে - যা দিয়ে শুধু মানুষ নয় ভারি অস্ত্র থেকে শুরু করে দুরপাল্লার মিসাইল পর্যন্ত স্থানন্তর করা সম্ভব। ( হামাস বলেছে যে ইসরাইল এ পর্যন্ত মাত্র তাদের পাঁচভাগ টানেল সনাক্ত ও ধ্বংস করতে পেরেছে।)
~ ঈজিপশিয়ান বর্ডারের ওপাশে এরকম একটা টানেলের মুখ। অনেক বড় কিছু প্রবেশ করানো সম্ভব এপথ দিয়ে অনায়াসেই।
তবে চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে এসব টানেল একটা আরেকটার সাথে কানেক্টেড নয়। কিছু সঙ্কেত ব্যাবহার করে বিভিন্ন টানেলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়।
প্রতিটা টানেলের মুখ কোন বাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল নয় মসজিদের বেসমেন্টে। টানেলগুলো এমনভাবে করা হয়েছে যে, টানেল ভাঙতে হলে বাড়ি,মসজিদ, স্কুল, হাসপাতাল ভাঙতে হবে। আর সেগুলো ভাঙ্গার সমস্যা কোথায় জানেন? বোকা মানুষের বোকা বোকা কথা অনেকের ভাল লাগবে না শুনতে তারপরেও বলব- একেবারে পোস্টের শেষে।
*****
হামাসের রকেট
হামাসের কাছে ১৫ থেকে ১৬০ কিলো মিটার রেঞ্জের প্রায় ১০ হাজার রকেট এখনো মজুত আছে। যার দূর পাল্লার কিছু মিসাইল নাকি ইরান রাশিয়া এমন কি উত্তর কোরিয়া তেকে পাচারকৃত।
ইসরাইলী ডিফেন্সের বড় মাথাব্যাথার কারন এই রকেটের একটা বড় অংশ তাদের আয়রন ডোমকে ফাঁকি দিয়ে নাকি সরাসরি ভু-খন্ডে আঘাত হানতে পারে। ( ইসরাইলী ডিফেন্স এখানে একটা গ্রাফ দিয়েছে, হামাসের কোন রকেট তাদের মুল ভুমির কোন পর্যন্ত আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে)
গাজা উপত্যকার অন্য প্রধান সশস্ত্র গোষ্ঠী হল প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ, যাদের কাছে একটি শক্তিশালী অস্ত্রের ভাণ্ডারও রয়েছে।
ধারনা করা হয় স্বউৎপাদিত পাচারকৃত ২০ কিলোমিটার থাকে দূরপাল্লার
(৮০কিলোমিটার) প্রায় ৫০০০ রকেট আছে।
এ ছাড়া গাজার অন্যান্য ছোট বড় সশস্ত্র সংগঠনের হাতে ১৫ কিলোমিটার থেকে ৪৫ কিলোমিটার রেঞ্জের প্রায় ১০ হাজার রকেট আছে।
( সুত্র ইসরাইলী ডিফেন্স ফোর্স)
স্বাভাবিকভাবেই ইসরাইল যখন গাজায় সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমন করবে তখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে এই সংগঠনের সবগুলো একসাথে কাধে কাধ মিলিয়ে নয়তো নয়তো বিচ্ছিন্নভাবে পাল্টা আক্রমন শুরু করবে।
~ ৯ অক্টোবর সকালে গাজা থেকে উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে একের পর এক রকেট ইসরাইল অভিমুখে।
দৃশ্যটি ইসরায়েলের অ্যাশকেলন শহরের; ৯ অক্টোবর, ২০২৩-এর। ইসরায়েলের আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেমগাজা উপত্যকা থেকে উৎক্ষেপণ করা রকেটকে বাধা দিচ্ছে। ~ ইসরাইলের গর্বের প্রতিক আয়রন ডোম। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। বহু রকেট সেই আয়রন ডোমের নিছিদ্র প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে ফাঁকি দিয়ে আগাত করেছে ইসরাইলের মুল ভুখন্ডে। ~ রকেটগুলোকি এভাবেই ছোড়া হয়েছিল? এ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। সহজে বহনযোগ্য লঞ্চপ্যাড ছাড়া ইসরাইলী ডিফেন্সের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোনভাবেই এত এত রকেট ছোড়া সম্ভব নয়।
যাকে আসলে আমরা মিসাইল বা রকেট হামলা বলছি, অত্যাধুনিক রকেট বা মিসাইলের সাথের তার পার্থক্য কতটুকু-আসলে এর ধ্বংস্বাত্মক ক্ষমতা কতটুকু? এটা ইসরাইলের মাথাব্যাথার কারন কতটুকু? এটা কি সঠক যায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম? এটা কি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত? নাকি শুধু জুজু বুড়ির ভয়। এগুলো জানতে হলে আমাদের দরকার একটা নিরপেক্ষ মাধ্যমের খবর। আপাতর রাশিয়ার সনবাদ মাধ্যমকে আমি নিরপেক্ষ হিসেবে ধরে একটা নিবন্ধ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি;
মুল নিবন্ধ ( news.zerkalo Russia)
হামলা শুরুর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হামাস জঙ্গিরা ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে। হামাস কমান্ডার মোহাম্মদ দেফ দাবি করেছেন ৫০০০ রকেট ছুড়েছেন- আর ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তারা ৪০০০ উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যাই হোক না কেন, এটি অনেক: বিভিন্ন অনুমান অনুসারে, একটি পূর্ণ-স্কেল আক্রমণের পুরো প্রথম বছরে, রাশিয়া ইউক্রেনে ২০০০ থেকে ৫০০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। রাশিয়ার মত শক্তিশালী পরাশক্তি এক বছরের যুদ্ধে যতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল সেই পরিমান ক্ষেপণাস্ত্র হামাসের মত ক্ষুদ্র একটা সতস্ত্র সংগঠন গাজা স্ট্রিপের মত অতই ঘনবসতপূর্ন ছোট্ট একটা এরিয়া থেকে কীভাবে নিক্ষেপ করল? আসুন এটা বের করা যাক।
হামাসের ক্ষেপনাস্ত্রের ধরন
আমরা যখন ইউক্রেনে নিক্ষেপ করা রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলি, তখন আমরা প্রকৃত (প্রযুক্তিগত অর্থে) তাকে ক্ষেপণাস্ত্র (অস্ত্র) বলতে চাই - দূরপাল্লার ইস্কন্দার, ক্যালিবারস, কিনজালস, এক্স ২২/৩২, এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র। এটি স্পষ্টতই গ্র্যাডের মতো একাধিক লঞ্চ রকেট সিস্টেম দ্বারা নিক্ষেপ করা অপেক্ষাকৃত ছোট প্রজেক্টাইলগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে না - অন্যথায় সংখ্যার ক্রম সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। BM-২১ গ্র্যাড ডিভিশন হল ১৮টি গাড়ির সমন্ময়ে একটি সালভো। যা দিয়ে ৭২০ টি রকেট মাত্র ২০ সেকেন্ডে নিক্ষেপ করা যায়। এগুলো কে মুলত রকেট না বলে 'গ্র্যাড শেল' বলাই শ্রেয়।
একই সময়ে, গ্র্যাড শেলগুলি হ'ল হামাসের ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্রের অন্যতম বিস্তৃত ধরণ, যার সাথে স্বদেশে তৈরি কাসাম (কাসেম রকেট)
বা ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে৷২০০০-এর দশকে বিখ্যাত ইসরায়েলি আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্র্যাডস এবং কাসামসের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য এটি তৈরি হয়ে ছিল।
ইসরায়েল মোটামুটি এই ধরনের পুরনো প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধের সময় (জুলাই-আগস্ট ২০০৫), শিয়া সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর জঙ্গিরা ইসরায়েলে প্রায় ৪ হাজার গ্র্যাড এবং কাসাদ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, যার মধ্যে ১ হাজার জনবহুল এলাকায় আঘাত করেছিল। এবং ১০ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত, ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে ১৫০০ টিরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।
প্রযুক্তিগত অগ্রগতি
ধারনা করা হয় হামাস তার "পৃষ্ঠপোষক" ইরানের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পায়। ইরান গ্র্যাডের জন্য অনেকধরনের শেল তৈরি করে যার কিছু রাশিয়াতেও রপ্তানি করে। রাশিয়া এর কিছু ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করেছে। যাইহোক, ইরান থেকে গাজা উপত্যকায় এসব রসদ সরবরাহ করা খুব একটা সহজ নয়। অতএব, এখানে (অবশ্যই, ইরানের সমর্থনে) - তবে খুব সস্তা কাসাম ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপক উত্পাদন শুরু করেছিল।
প্রথম দিককার কাসাম রকেট তিন কিলোমিটারের বেশি উড়ত না এবং সর্বোচ্চ আধা কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করত। ২০০৮ সালে, ঘরে তৈরি ফিলিস্তিনি রকেটের আরও দুটো প্রজন্ম উপস্থিত হয়েছিল। "কাসাম-২" এর রেঞ্জ ছিল আট কিলোমিটার (৫-৭ কেজি ওয়ারহেড সহ) এবং "কাসাম-৩" ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে গিয়ে এ আঘাত করার ক্ষমতা অর্জন করে ( ১০-২০ কেজি বিস্ফোরক বহন করে)। কাসামের দৈর্ঘ্য, পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে, ০.৭ থেকে ২.৩ মিটার পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। সর্বশেষ, চতুর্থ প্রজন্মের ঘরে তৈরি ফিলিস্তিনি ক্ষেপণাস্ত্রের নিজস্ব নাম "এল-কুদস-১০১" । এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আরো বেশী বিস্ফোরক নিয়ে ইতিমধ্যেই ১৬ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে।
পানির মোটা পাইপের টুকরো থেকে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সাধারণত সন্ত্রাসীরা ঘরে তৈরি লঞ্চার থেকে উৎক্ষেপণ করে। তদনুসারে, তাদের লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করা প্রায় অসম্ভব। ২০২১ সালের মে মাসে ইসরায়েলে হামলার তৃতীয় দিনে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ফিলিস্তিনিদের দ্বারা নিক্ষেপ করা ১০০০টিরও বেশি রকেটের মধ্যে প্রায় ২০০টি ইসরাইলের ভুমি পর্যন্ত পৌছুতে পেরেছে।
'গ্র্যাড শেল'গুলির উড়ে যাবার সক্ষমতা ৪০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে এবং তবে ইরানীদের তৈরি রকেটগুলি - ৫৫কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে। গাজা স্ট্রিপ থেকে তেল আবিবের দক্ষিণ শহরতলী বা জেরুজালেমের চরম পশ্চিম শহরতলিতে হামলা চালানোর জন্য এটি যথেষ্ট।
হামাসের কাছে আরও দূরপাল্লার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যদিও সেগুলির বেশি নয়। M-৭৫, ৭৫ কিমি, ফজর -১০০ পর্যন্ত, R-১৬০ - ১২০ কি.মি. পর্যন্ত আঘাত করে। এছাড়াও ২০২১ সালে, প্রকাশ হয়েছিল যে হামাস প্রথমবারের মতো ঘোষিত ১২০-কিলোমিটার রেঞ্জের সাথে নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, A120। ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘতম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে বেশ কয়েকটি সিরিয়ান M-302 ক্ষেপণাস্ত্র যার ফ্লাইট রেঞ্জ ২০০ কিমি পর্যন্ত। এটি গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের প্রায় পুরো ভূখণ্ডকে "উড়িয়ে" দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
যদিও হামাস জঙ্গিদের ট্র্যাক করা ঘাঁটিতে ক্লাসিক মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম নেই, তারা স্থির স্থাপনাগুলি ব্যবহার করে যা কেবলমাত্র বিশাল রকেট হামলা চালানোর জন্য মাটিতে স্থাপন করা হয়। ২০২১ সালে, A120 ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য আট-ব্যারেল ইনস্টলেশনের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল।
আজ, ৭ অক্টোবর হামাস যে আক্রমন চালিয়েছে সেটা সেটা একবারে ৩১৫টি রকেট উৎক্ষেপণের একটি 'স্যলভো'। এই ধরনের "স্যালভো' দিয়ে, দিনে কয়েক হাজার ছোট ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা মোটেই কঠিন কাজ নয়।
তবে শুধু রকেট নয় হামাসের হাতে যেহেতু রাশিয়া আর উত্তর কোরিয়া থেকে রকেট আসতে পেরেছে তাহলে এর থেকে ভয়ঙ্কর কোন অস্ত্র ও প্রযুক্তি যে তাদের হস্তগত হয়নি এর গ্যারান্টি কি?
** *
২০০৬ সালে অপহৃত ইসরাইলী সৈন্য গিলাদ শালিদকে মুক্ত করার জন্য১১ অক্টোবর ২০১১ সালে ইসরাইল ১০২৭ জন ফিলিস্তিনী বন্দীদের মুক্তি দেয়। যাদের মধ্যে অধিকাংশ ইসরাইলীদের দৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ছিল।
শালিত বিনিময় চুক্তিতে ইসরাইলীরা তাদের পক্ষে কি যুক্তি দেখায় তা একটু জেনে নিই। এর ফলে অনেক কিছুই পরিস্কার হয়ে যাবে; কেন ইসরাইলী বাহিনী এখনো পর্যন্ত বারবার হুমকি দেবার পরেও স্থল আক্রমন করছে নার আর- হামাসের মুল শক্তিটা কোথায়?
চুক্তির পক্ষে যুক্তি;
‘ইসরায়েল তার নাগরিকদের মুক্ত করার জন্য যা কিছু করতে পারে তার একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটিও একটি জিউস নৈতিক বাধ্যবাধকতা; যেটা ‘পিডিয়ন শ্বুয়িম’ নামে পরিচিত। যেই নৈতিকতা বহু শতাব্দী ধরে ইহুদিদের জীবন বাঁচানোর জন্য উদ্ধৃত করা হয়েছে।
শালিত সুদীর্ঘ ৫ বছর ধরে বন্দী রয়েছে এবং তার মানসিক ও শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। হামাস রেড ক্রসকে তার অবস্থা পরীক্ষা করার অনুমতি দেয়নি এবং ২০০৯ সালে ইসরাইল তার বেচে থাকার শেষ চিহ্নটি পেয়েছিল। তিনি এখনও বেঁচে আছেন এই বিশ্বাস ও আশ্বাসের ভিত্তিতে, ইসরায়েলকে এখনই তাকে বাঁচাতে চাইবে কারণ এমনটা যদি তারা তা না করে তবে এটা আর কখনোই হয়তো সম্ভব হবে না।
~ হামাসের হাত থেকে মুক্ত হয়ে গিলাদ শাহিদ যেদিন ইসরাইলে ফিরে আসল।
শালিতের মতো তার বন্দী সৈন্যদের উদ্ধার করার জন্য ইসরায়েলকে তার যথাসাধ্য করতে হবে কারণ তা না হলে আইডিএফ সৈন্যরা ভবিষ্যতে হতো সর্বোচ্চ ঝুঁকি নেবার পরিবর্তে যুদ্ধে পিছু হটতে পারে। সামরিক বাহিনীতে তার তরুণ নাগরিককে সাথে চুক্তি করার সময়ে ইস্রায়েলের সেই নতুন সৈন্যদের সাথে একটি সামাজিক চুক্তিতে সীলমোহর করতে হয়- ‘তারা দেশের জন্য উত্সর্গ করবে এবং আত্মত্যাগ করবে তবে অবশ্যই জানতে হবে যে দেশ তাদের জন্য একই কাজ করবে।
এইতো গেল সামরিক বাহিনীর কথা। ইসরাইলে বসসতি স্থাপনের জন্য যেই ইহুদীগুলো অন্যদেশের ভিটে মাটি ছেড়ে একবারের জন্য ইসরাইলে পাড়ি জমায় তাদের সাথেও এমন একটা চুক্তি থাকে ইসরাইলী কতৃপক্ষের। অবশ্যই তাদের জান ও মালের গুরুত্ব ও নিরাপত্তা সর্বাধিক থাকবে। যে কোন নাগরিকের জীবন হুমকির সম্মুখীন হলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাস্ট্র তার জীবন বাচানোর চেষ্টা করবে। এর অন্যথায় হলে সারা পৃথিবীর ইহুদীরা ক্ষেপে যাবে। ভবিষ্যতে তারা আর কোনভাবেই কোন প্রলোভনেই ইসরাইলে বসতি স্থাপন করতে চাইবে না।
শালিতকে মুক্ত করার সময় চুক্তির শেষদিকে বলা হয়েছে শালিতের পরিবারের কথা। যার বিষয়েও ইহুদীরা বেশ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
****
শেষ কথাঃ
আগ্রাসী ইসরাইলের বড় ভয়ঃ
যদিও মুসলমানদের বুদ্ধি হাটুতে গিয়ে ঠেকেছে তবু একথা অস্বীকার করার যো নেই যে, পৃথিবীর ৫০ ভাগ মুসলিমদের সবচেয়ে বড় বিষয়টা হচ্ছে যুক্তিহীন আবেগ। আপনার শুনতে ভালো লাগুক বা না লাগুক এটা হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। হামাসের পক্ষে যে ৬৫ ভাগ ফিলিস্তিনিদের সমর্থন আছে তাদের অন্তত অর্ধেক যেকোনো সময় জান দেবার জন্য প্রস্তুত। ইসরাইল যতই বলুক না কেন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে এর । ১৫/২০ ভাগ ভাগ মানুষ কখনোই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে সরবে না। হাজার হাজার নারী তাদের শিশুদের বুকে আঁকড়ে মাটি কামড়ে সেখানেই পড়ে থাকবে মৃত্যুর প্রহর গুনবে তারা কিন্তু কোথাও যাবে না পালাবে না।
আপনার আমার কাছে যুক্তিহীন। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলে তারা শহীদ হবে। কিন্তু আমরা হাসবো তাদেরকে বোকা, মহা বেকুব বলব কিন্তু এসব কথা বলে ওদেরকে টলাতে পারবো না। ওদের পায়ের নিচে গর্তে কিংবা টানেলে বসে আছে ওদের স্বামী, সন্তান ভাই অস্ত্র হাতে। তারাও মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত প্রহর গুনছে- কাউকে নিয়ে মরবে তারা। ওদের কাছে হাতে বানানো রকেট, আর ছোট বড় অস্ত্র নয় শুধু অদের কাছে আছে প্রায় দুই'শ এর মত ইসরাইলি জিম্মি। যারা হাজার লক্ষ রকেটের থেকে শক্তিশালী। যাদের জীবনের মুল্য উপরে প্রতি মুহুর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকে লক্ষ ফিলিস্তিনীদের থেকেও বহুগুন বেশী। ইসরাইল কোন কিছুর বিনিময়েই এদের হারাতে রাজী নয়। অবহেলা অসাবধানতায় একজন জিম্মির মৃত্যু পুরো ইসরাইলকে কাঁপিয়ে দিবে। এর জবাবদিহির আওতায় আসতে হবে সরকার,গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী সহ দায়িত্বপূর্ণ সংস্থাকে। ভবিষ্যতে কোন সাধারন ইহুদী আর বিশ্বাস করবে না ইসরাইলী সরকারের আপ্তবাক্য- তারা ছুড়ে ফেলবে ওই পিডিয়ন শ্বুয়িম নামের চুক্তিপত্র!
ওদিকে টানেলে বসে থাকা ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা সহস্র মৃত্যু দেখে বড় হয়েছে। রক্তের হোলি খেলা ওদের কাছে কিছুই নয়- ধর্ম আর জাতীয়তাবাদের মন্ত্র ওদেরকে অন্ধ করে দিয়েছে ওদেরকে বধির করে দিয়েছে কারো কথাই ওদের কানে যাবে না আর। ওদের জন্মই হয়েছে যেন যুদ্ধ করে মরার জন্য। ওখানে শুধু মুসলিমদের নয় ওখানে আপনি ইহুদিদের বসান ওখানে খ্রিস্টানদের বসান ওখানে কখনো হিন্দু কিংবা জৈনদের বসানো সবাই একই মন্ত্রে দীক্ষিত হবে। ধর্ম আর জাতীয়তাবাদ যুগে যুগে মানুষকে এভাবেই অন্ধ বধির নিশ্বংস আর নিপীড়িত করে। কিছু মানুষকে আগ্রাসী করে আর কিছু মানুষ অকারনেই আগ্রাসনের শিকার হয়।
প্রসঙ্গ 'গাজা'~ আসেন একটু অন্যভাবে দেখি।১
প্রসঙ্গ 'গাজা'~ আসেন একটু অন্যভাবে দেখি। ২