চলছে বিএনপি ও সমমনা দলের তিন দিন ব্যাপী অবরোধ কর্মসুচী। অবরোধটা হরতালের মত গনতান্ত্রিক কর্মসুচী কি না সেটা আমার জানা নেই। কে এই কর্মসুচীর প্রবক্তা সেটাও আমার জানা নেই। আমার জানা নেই এই উপমহাদেশ ছাড়া আর কোন গনতান্ত্রিক দেশে এই ধরনের অবরোধ কর্মসুচী পালন হয় কি না? আমি অবশ্য এটাই জানি না আসলে জনগন কারা? ওরা যে বলে সারা দেশের জনগন আমাদের সাথে আছে সেই জনগন কে বা কাহারা তাদেরও আমি চিনিনা- এরা সবাই অশরিরী আত্মার জনগন সম্ভবত!!!
হরতাল মুলত কোন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে সাধারন জনগনের নিরব প্রতিবাদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হাতিয়ার হবার কথা ছিল। যেখানে তারা সব ধরনের সরকারিকাজ ও উতপাদনমুলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের বিরত রেখে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দেবে বা পঙ্গু করে দেবে। সেখানে বাজার ঘাট স্কুল কলেজ নিজেদের ব্যাবসা বানিজ্য আয় রোজগার বন্ধ করে উপোস করে মরার কথা নেই মনে হয়। আর গনতন্ত্র মানে কাউকে জোর করে তার কাজ থেকে বিরত রাখার কথাও নেই মনে হয়? তবে আমরা কোন ধারার গনতন্ত্রে আছি? এই ধারার গনতন্ত্রের প্রবক্তা কে???
আমাদের কথা কে শুনবে? আমরা কার কাছে গিয়ে বলব আমাদের কষ্টের কথা দুঃখের কথা যন্ত্রনার কথা? আর কতদিন এভাবে দগ্ধ হব?
***এবার আসি অন্য কথায়***
বিএনপি এখন একটা আউলা ঝাউলা সংগঠন! ওরা এই মূহুর্তে সঠিক নেতৃত্ব সঙ্কটে ভুগছে। কি দিয়ে কি করবে দিশা পাচ্ছে না।
আওয়ামীলীগ নির্বাচনের আগে তাদের নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত রাখার জন্য তাদের জোশ দেখার জন্য সারাক্ষন সারাক্ষন ফিলেডে নজরদারিতে রাখছে যাতে আবার বিরোদীদল কোনভাবেই মাঠ দখল না করতে পারে। ওদের সাথে আছে প্রসাশন। কুছ প্রোয়া নেহী- ওরা নেতাদের অভয় দিচ্ছে- শান্তি মিছিল করছে, শো ডাউন করছে। কাড়ি কাড়ি টাকা পকেটে পুরছে। রাস্তার মোড়ে একদল চেয়ার নিয়ে বসে সারাদিন গুলতানি মারছে আর চা বিড়ি ফুকছে সাথে চলছে বিরিয়ানি আর নাস্তার মচ্ছব! যুবকের দলেরা চাদার পয়সায় তেল পুড়িয়ে মহল্লায় মোটর সাইকেল দিয়ে বিকট শব্দে হুদাই চক্কর দিয়ে বেড়াচ্ছে!
নেতারা পকেট থেকে এই শেষ সময়ে বড় কষ্টের কামাই থেকে দু-পয়সা খসে গেলেও বেশ শান্তিতে ঘুম যাচ্ছেন! এমন দাপুটে কর্মী থাকলে আর কিসের ভয়।
জামাত তো পুরা গেছে- বিএনপি'র ছ্যাড়াবেড়া অবস্থা আর সমমনা দলের কথা আর কইয়েন না ওরা বরাবর ছাগলের আট নম্বর বাচ্চা! পুলিশ র্যাবে সব নিজেদের লোক ভর্তি। মাঠে নামলেই প্যাদানী!
কিন্তু দাড়ান মিয়া ভাই ... একটা কথা আছে! গতকাল অন্যরকম একটা শো ডাউন হোল। বেশী ফালাইয়েন না- এইটা দেখে কিছু একটা শিখেন। নাইলে আখেরে পস্তাবেন।
***
এই আন্দোলনের সাথে গার্মেন্টসের কর্মীরাও তাদের মুজুরী বাড়ানোর আন্দোলনে নেমেছে। দুটো মিলে একটা ভজঘট পরিস্থিতি!
গতকাল মিরপুর ১১ থেকে ১২ নম্বর সারাদিন ছিল রনক্ষেত্র। পুরো এলাকা ছিল গার্মেন্টস কর্মীদের দখলে। এখানকার কমিশনার যুবদলের বিরাট এক নেতা অবিংসবাদি ঝুট ব্যবসায়ী, এলাকার মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রক( জানা মতে) যিনি প্রতিমাসে বিশাল অঙ্কের চাদার বিনিময়ে এলাকার সব গার্মেন্টসের প্রটেকশন দেয় তিনি বরাবরের মত তার পোলাপাইনকে লাঠিসোটা যন্ত্রপাতি দিয়ে পাঠায় গার্মেন্টসের কর্মীদের ভয় দেখানোর জন্য কেউ যেন আন্দোলনে শরিক না হয়।
ওরা গিয়ে বরাবরের মত ধমক ধামক দেয়- দুই চাইরটারে দেয় চর থাপ্পর। শটগান পিস্তল দেখায়- ভাবে এইটাতেই ঠান্ডা!
ছবি দেখুন;
এরপর আচমকা গার্মেন্টস শ্রমকেরা বের হয়ে আসল শুরু হল ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
তারপরে দখল নিল ওরা প্রধান রাস্তায়। গাড়ি আটকে শুরু হোল মিছিল আর অবরোধ। বিএনপির পোয়া বারো;
তারপরে আসলেন এখানকার সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা যিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামিলীগের বড় পদে আছেন-স্থানীয় এমপির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী- তার বড় ভাই মুলত ক্যাডার লালন পালন করেন। যার নামে এখানকার নান্নু মার্কেটের নামকরন। তিনি নাকি তার বাহিনী পাঠালেন। ওরাও এসে খাইল বেদম মাইর। পুলিশ দিউরে দাঁড়িয়ে দেখছে সব কাছে এগুতে সাহস পায় না। গার্মেন্টের কর্মীরা ওদের ধাওয়া দিয়ে ছড়িয়ে পড়ল। ক্ষোভে এগার নম্বরের বিভিন্ন গলিতে- সেখানকার বাসা বাড়তে ইটপাটকেল ছুড়ল;
এরপরে নাকি এমপি সাহেব পাঠাইলেন তার ক্যাদার (ক্যাডার) বাহিনী। তারা আসল একঝাক মোটসাইকেল দাবড়িয়ে। দু'শ মিটার দূর থেকেই ভাব গতিক খারাপ দেখে মোটর সাইকেল ঘুরিয়ে কিছুক্ষন সাইলেন্সরে ঝড় তুলে পগাড় পার। এমপি সাহেব নাকি রোগী দেখতে এসে দাবড়ানি খাইলেন;
এরপরে কর্মীরা বার নম্বরের অভুমুখে দিল ধাওয়া। শান্তি বাহিনীরা চেয়ার ছেড়ে হাওয়া।
এরপরে মিরপুরের ১২ নম্বরের আশেপাশের কাচ ঘেরা শাটার ছাড়া যত দোকান ছিল সব ভাংচুর শেষে তারা যখন মোল্লা মার্কেটের অভিমুখে রওনা হল তখন বাধ্য হয়ে র্যাব নামল মাঠে;
* ছবিগুলো সব প্রথম আলো থেকে নেয়া। কিছু সংবাদ প্রথম আলো থেকে কিছু আমার নিজের শোনা ও দেখা। শোনা কথায় তথ্যগত ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। আমি জানি আমার এই তথ্য তাদের নজরে আসবে না কিংবা আমার কথা তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছুবে না তবে মোদ্দা কথা হচ্ছে ; পুরো বিষয়টা ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের জন্য বড় একটা সতর্ক সংকেত।
*** আপডেট***
~মিরপুরে ফের আজ গার্মেন্টস কর্মীদের সহিংস আন্দোলন- পুরো পল্লবী থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সারিসারি RAB এর গাড়ি। ছবিটি একটু দূর থেকে নেয়া-কাছে যেতে সাহসে কুলায়নি!
~গতকাল পল্লবী মার্কেটে গার্মেন্টস কর্মীদের ভাঙচুরের ক্ষত চিহ্ন!