somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব দোষ নন্দঘোষ ও তেল চুরির আখড়া!!

১৫ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ডাক্তারের এপয়নমেন্ট টাইমের ৩০ মিনিট আগেই হাসপাতেলে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে। আমি আরো পনের মিনিট আগেই গেলাম। ডাক্তারের চেম্বারে যাবার আগে বেশ কিছু নিয়মনীতি আছে। নতুন পেসেন্ট দেখে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করে হাসপাতালের একখানা স্মার্ট কার্ড করতে হল। এরপরে অন্য ফ্লোরে গিয়ে বিপি, হাই্‌ অক্সিজেন সিচুরেশন, ওজন সহ বেশ কিছু টেস্ট! ওইখানে নার্স প্রথমে ডিজিটাল মেশিনে বিপি মেপে, হাতে ধরা স্লিপে চোখ বুলিয়ে কেঁপে উঠে বলল, ওরে বাবা- আপনি বসেন উঠবেন না। আমার তো স্ট্রোক করার অবস্থা! তার মানে বিপি সেই লেভেলে যে মেশিনে অঙ্ক মাপতে পারছে না!!!
ঘটনা অন্যখানে; নার্স আতকে উঠে বলল, আপনি তো অমুক স্যারের পেশেন্ট? স্যার যদি দেখেন যে আমি ডিজিটালে মেপেছি তো আমার চাকুরি শেষ। উনার রোগীরে এনালগে মাপতে হবে, বলতে বলতে সে সেই আদ্যিকালের বিপি মেশিন আর স্টেথিস্কোপ বের করল।

এত বড় হাসপাতাল অথচ স্যারের কথা শুনে দেখি সবাই কাঁপে! নাম শুনলেই বলে ওরে বাবা - আপনি উনার পেশেন্ট!
এপয়নমেন্টের দেড় ঘন্টা পরে আমার ডাক পড়ল। শনিবারে নাকি রোগী কম থাকে আর সকালে আরো কম- ডাক্তার এতক্ষন রাউন্ডে ছিলেন। অনেক্ষন বসে আছি দেখে নার্স আজ্যাইর‍্যা খাতির গিন্নীরে ভিতরে নিয়ে বসাইল। তিনি আমকে বার বার সতর্ক করেছিলেন, খবর্দার বেশি কথা কইও না। যা জিগাইবে শুধু তাই কইবা। ডাক্তার একদম বেশি কথা পছন্দ করে না।
আমি ভাবি শালার কি ফ্যাসাদে পড়লাম!
বিশাল চেম্বার। করোনার ফজিলতে ইনিও কাঁচের ওপাশে বসে আছেন! সত্তুরের মত বয়স। বেশ শক্তপোক্ত গড়ন। রাশভারি মানুষ। আমার কল্পনার ভবিষ্যতবাণীরে এক্কেবারে ১০০ ভাগ সত্যি প্রমাণিত করে প্রথম প্রশ্ন- সিগারেট খান?

ভীষন বিব্রত ভঙ্গীতে আমি আড় চোখে বউ এর দিকে তাকিয়ে দেখি বা ঠোটে এক চিলতে হাসি। সে হাসির মানে আমি বুঝি। সে এক ভয়াবহ অপমানজনক - গা জ্বালানো হাসি!
ফ্যাস ফ্যাসে কন্ঠে বললাম, খাই- খুব কম।
-কয়টা?
-দেড় থেকে দুই টা।
-একটাও খাওয়া চলবে না। এমনি কোন ধুমপায়ী ব্যক্তিদের পাশেও বসা চলবে না। আজ থেকে ধুমপান পুরো বন্ধ! আমার কথামত চলতে পারলে এরপরে এখানে আসবেন -না হলে আসবেন না। ওক্কে?
ভীষন হতাশ হয়ে আমি ফের আড়চোখে গিন্নীর দিকে তাকাইলাম। সে বেশ উৎফুল্ল- তার তাকানোর ভঙ্গীটা এমন যে, কেমন জব্দ হলে। আমি এতদিন কইলাম- আমারে পাত্তা দিলা না। এখন দেখ; হাউ ম্যানি প্যাডি টু হাউ ম্যানি রাইস!

আমি ডাক্তারকে বলতে চাইলাম; বস পয়ত্রিশ বছর ধরে যার সাথে সখ্যতা তারে এক মুহুর্তে একেবারে কেমনে ছেড়ে দিব? একটু সময় দেন। বলেন, আস্তে আস্তে ছেড়ে দিন। আপনি তো একবারও জিগাইলেন না আমি মদ গাজা, ইয়াবা, ডাইল, খৈনি, জর্দা, গুল, পান, তামাক খাই কিনা? আমি ভ্যাপ টানি কিনা? আমি আধুনিক আড্ডায় বসে হুক্কা টানি কিনা? মানুষের হাজারও রকমের নেশা আছে বদ অভ্যাস আছে যা দ্রত মৃত্যু বা ধ্বংসের দিকে - শুধু দোষ কি ওই এক সিগারেটের???
যেইখানে যাই ওই সিগারেটের বদনাম- তাকে নিয়েই সব আলোচনা সমালোচনা।
আমরা ধুমপান নিবারন করি ( আধুনিক) নামে সংগঠন আছে। কিন্তু আমরা ইয়াবা নিবারন করি বা মদ নিবারন করি কিংবা গাঁজা। অথবা ফেন্সিডিল নিবারন করি নামে কোন সংগঠন নেই এদেশে। লক্ষ লক্ষ ছেলে পেলে ড্রাগ নিয়ে শুধু নিজে নয় পরিবার সহ শেষ হয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার চুরি ডাকাতি, ছিনতাই খুন হচ্ছে ড্রাগের জন্য।
সিগারেট মোটেও শরিরের জন্য ভাল নয়।তামাকের ধোয়া শুধু ধুমপানকারীর জন্য নয় তার আশে পাশে যারা থাকে তাদের জন্যও ক্ষতিকর! কিন্তু আমরা প্রতিদিন ঢাকার যে ভয়ঙ্কর দুষিত বায়ু আর খাদ্য খাচ্ছি তার কি হবে বস????

* সেইদিন ডাক্তারের চেম্বারে বসে বসেই সিগারেট নিয়ে চমেতকার একটা কবিতা লিখেছিলাম। পরে দেখি সেই 'শার্ল বোদলেয়ারে'র খানিকটা অনুকরণ হয়ে গেছে - তাই আর এইখানে দিলাম না, এমনিতেই ব্লগে প্রথম পাতাইয় এই মূহুর্তে ১২ খান কবিতা ঝুলছে। ফেরামি একখানা দিলে- জাত কবিরা মাইন্ড খাইতে পারেন।
****
তেল চুরির আখড়া



পনি কি বিরুলিয়া-আশুলিয়া বেড়িবাধ দিয়ে যাবার সময় এমন ত্রিপল দিয়ে ঘেরা জায়গা দেখেছেন? কিছুদুর পরপর দেখবেন এমন বাঁশের খুটিতে ছেড়া-ফাটা ত্রিপল ঘেরা জায়গা। ওপাশে লক্ষ্য করলে দেখবেন; একটা টং ঘর আছে। দিনের বেলা বেশীরভাগ সময় সেই টং ঘর বন্ধ থাকে। খোলা থাকলে দেখবেন সেখানে খোলা পেট্রোলিয়াম জাতীয় তেল বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই কিনছে। সিম্পল দৃশ্য! এভাবে ঢকার অনেক স্থানেই খোলা বাজারে পেট্রোলিয়াম তেল বিক্রি হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে; ১। এদের এই তেল আসে কোত্থেকে? ২। এদের দোকানের সামনে এমন ত্রিপল দিয়ে ঘেরা কেন?
উত্তর খোঁজার জন্য একটু গভীর রাতে এপথ দিয়ে আসলে - চোখ কান খোলা রাখলে আপনি ভিন্ন কিছু দৃশ্য দেখতে পাবেন। ওরা তখন সচল হয়। খুটিতে হারিকেন বাতি জালিয়ে সংকেত। লাল হলে সেটা বিজি আর হলিদ বা সবউজ হলে খালি। বেশীরভাগ সরকারি গাড়ি ও লরি ওদের টার্গেট। আগের থেকেই বেশীরভা কন্ট্রাক্ট করা থাকে। চলতি পথে গাড়ি সিগ্ন্যাল দিয়ে ত্রিপলের আড়ালে ঢুকে গেলেই আরোদুটো ত্রিপলের পর্দা দিয়ে সামনে পেছনে ঢেকে দেয়াতে কেউ গাড়ি ও নম্বর প্লেট নোট না করতে পারে। তার পর লাল বাতি জ্বালিয়ে তেল চুরি করে বিক্রি হয়। এই তেল যায় ঢাকার সব খোলা বাজারে। এখানে আপনার নিজস্ব গাড়ির বা অফিসের গাড়ির ড্রাইভারও অনেক সময় এইসব কাজে জড়িত থাকে।
***


প্রথম মেট্রোর কাজ শেষ। এমন বহু দামী কন্সট্রাকশনাল হেভী ইকুইপমেন্ট থেকে শুরু করে বহু মেশিনারিজ ও এক্সেসরিক একদম অলস পড়ে আসে। খুব দ্রুত যদি এমন কোন দানবীয় প্রজেক্টের কাজ শুরু না হয় তবে হাজার কোটি টাকার সম্পদ এমনি পড়ে পড়ে নষ্ট হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:৪৭
৪১টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তুই পাগল তোর বাপে পাগল

লিখেছেন আজব লিংকন, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



রাতে অর্ধেক কাউয়া ক্যাচাল দেইখ্যা হুর বইল্যা— মোবাইল ফোনের পাওয়ার বাটনে একটা চাপ দিয়া, স্ক্রিন লক কইরা, বিছানার কর্নারে মোবাইলটারে ছুইড়া রাখলাম।

ল্যাপটপের লিড তুইল্যা সার্ভারে প্রবেশ। বৃহস্পতিবারের রাইত... ...বাকিটুকু পড়ুন

যত দোষ নন্দ ঘোষ...

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০১

"যত দোষ নন্দ ঘোষ"....

বাংলায় প্রচলিত প্রবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। যে যত দোষ করুক না কেন, সব নন্দ ঘোষের ঘাড়েই যায়! এ প্রবাদের সহজ অর্থ হচ্ছে, দুর্বল মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমাদের বাহাস আর লালনের গান

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪১


দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হৈচৈ হচ্ছে, হৈচৈ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। একটা পক্ষ আগের সরকারের সময়ে হৈচৈ করত কিন্তু বর্তমানে চুপ। আরেকটা পক্ষ আগে চুপ ছিল এখন সরব। তৃতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ থাকে না কেউ থেকে যায়

লিখেছেন বরুণা, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০৩


চমকে গেলাম হঠাৎ দেখে
বহুদিনের পরে,
নীল জানালার বদ্ধ কপাট
উঠলো হঠাৎ নড়ে।

খুঁজিস না তুই আর খুঁজিনা
আমিও তোকে আজ,
আমরা দু'জন দুই মেরুতে
নিয়ে হাজার কাজ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরও একটি কবর খোঁড়া

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০৪

গোরস্থানে গিয়ে দেখি
আরও একটি কবর খোঁড়া
নতুন কেউ আজ মরেছে
এমন করে বাড়ছে শুধু
কবরবাসী, পৃথিবী ছেড়ে যাবে সবাই
মালাকুল মওত ব্যস্ত সদাই
কখন যে আসে ঘরে
মৃত্যুর যে নেই ক্যালেন্ডার
যে কোন বয়সে আসতে পারে
মৃত্যুর ডাক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×