
(এমন ঝিমিয়ে থাকা ব্লগ দেখতে ভাল লাগে না। এর থেকে আসেন আমার বেকুবির একটা গপ্পো শুনেন) বছর বিশেক আগের কথাঃ
দুপুরে চার্টার্ড ব্যাঙ্কে - ক্রেডিট কার্ডের টাকা জমা দিতে গিয়েছি । আমার পাশে এক ভদ্র মহিলা দাড়িয়ে চেকবুকে লিখছিলেন ।
কলমটা চেকের উপর ধরে কিছুক্ষন ইতিউত করে নিচুস্বরে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,- ভাই নিজে উঠালে কি লিখতে হয়? সেলফ- না?
আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে ঝটিতে বুঝলাম জীবনের প্রথম ব্যাংকিং করছেন,- জ্বী 'সেলফ' লিখতে পারেন আবার 'ক্যাশ'ও লিখতে পারেন।
'সেলফ' লিখে কলম নিয়ে নাড়াচাড়া করে ফের ইতস্তত কন্ঠে শুধালেন,- সই কোথাই করব ?
আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলাম - এখানে ।
সই করে টাকার অংকের কাছে স্থির হয়ে আবার ভাবছেন। হয়তো আমাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করতে সঙ্কোচ হচ্ছে ।
আমি এবার যেচেই তাকে বললাম,- ওখানে আপনি টাকার অংক কথায় ডিটেল লিখুন ।’
এবার তিনি একটু বোকার মত হেসে ঘাড় নেড়ে বললেন - জ্বী ।
লেখা শেষে আমি তখন ক্রেডিট কার্ডের নম্বর মেলানো নিয়ে ব্যাস্ত। আচমকা মহিলা প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা, টুয়েনটিন বানান কি?
- জ্বী কি বললেন?’ শব্দটা নতুন ঠেকছিল।
- টুয়েনটিন? টুয়েনটিন মানে তো বিশ।
তার কথায় আমি কনফিউসড। মনে মনে খুঁজছি 'টুয়েনটিন' এর বানান,- টি ডাব্লিউ ডাবল ই আই এন -না' টি ডাবল 'ই' এন । ’প্রথমে নিচুস্বরে নিজের সাথে বোঝাপড়া করে পরে একটু উঁচু স্বরে বললাম।
তিনি একটু হেসে বললেন,-আমি আসলে ঠিক কনফার্ম হতে পাছিলাম না টি আই এন-না-টি ই এন হবে।
***
আমার লেখা শেষ। আরো ভয়ঙ্কর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারে ভেবে আমি একটু তাড়াতাড়িই সেখান থেকে কেটে পড়লাম।
টাকা জমা দিতে গিয়ে আচমকা খেয়াল হল, আরে ওটাতো টুয়েনটি হবে তিনি নাইন্টিন এর পরে টুয়েনটিন ভেবে ফেলেছেন! তাহলে আমি কেন টুয়েনটিন বললাম? ছিঃ কি বড় ভুল। মহিলার কথায় আমি কনফিউস হয়ে গিয়েছিলাম। সে জন্যইতো এর বানান খুঁজতে তখন এত কষ্ট হয়েছে। ছিঃ ছিঃ। মহিলাটাই বা কেমন । বিশ ফর কি হয় জানেন না!
এদিক ওদিক তাকিয়ে ওনাকে খুঁজছিলাম। ক্যাশে গিয়ে নিশ্চয়ই ভীষন লজ্জায় পড়বেন।
একটু পরে দেখি বেশ দ্বীধার ভঙ্গীতে তিনি কাউন্টারের দিকে আসছেন। উনার দিকে আমাকে যেতে দেখে স্বভাবতই একটু ঘাবড়ে গেলেন। কাছে গিয়ে বললাম;
- ম্যাডাম ওটা টুয়েনটিন হবে না টুয়েনটি হবে। আপনার কথায় আমি দ্বীধান্বিত হয়ে পড়েছিলাম।
আমার কথায় তার মুখের রক্ত সরে গেল। অসহায় দৃস্টিতে আমার দিকে তাকালেন।
আমি তাকে সাহস দিয়ে বললাম সমস্যা হবে না। অ্যাকাউন্টতো আপনারই। ওখানে কেটে উপরে লিখে সিগনেচার করে দিন।
তিনি নিদারুন বিব্রত চেহারা নিয়ে ধীরে ধীরে আবার ফিরে গেলেন রাইটিং ডেস্কের দিকে।
যাবার পথে একবার ফের তাকালেন আমার দিকে। সে মুহুর্তে তার চোখ মুখের অসহায়ত্ব লজ্জা বিস্ময় আর বিব্রতভাব আমার ভুলতে বহুদিন লাগবে।
***
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




