somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগে ষোল বছর ~আসেন কিছু খানা-পিনা করি :)

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগে ষোল বছর হয়ে গেল দিন পনের আগেই কিন্তু সময় করে সেটা প্রচার করে কোন অভিনন্দন নেয়া হল না :( (আফসোস,ব্লগারদের বড্ড আকাল চলছে ব্লগে!!)
ত বছর লিখেছিলাম, এই সময়ে শহরের বেশীরভাগ গৃহিণী নাইওরে যায়। গ্রাম মফস্বল বেশ রমরমা হয়ে ওঠে- খাদ্য খানার খুশবু ছোটে। পিঠা পায়েস পুলির ধুম আয়োজন হয়, শীতের এই সময়ে খাল বিল সেচে প্রচুর মাছ ধরে মানুষ; সেই মাছ আর মাংসের মচ্ছব হয়। ব্যাবসা, চাকুর সহ বিবিধ কারণে বিবাহিত পুরুষদের সন্তান স্ত্রী-হীন অতি সু-সময় কিংবা দুঃসময়কাল এটা। কেউ হাত পুড়িয়ে রান্না করে কেউ ফ্রিজের খাবার গরম করে ক্ষুন্নিবৃত্তির প্রয়োজন মেটায়। দু চারজন হোটেল মোটেল কিংবা আত্মীয় বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেয়ে কাটিয়ে দেয়- তবে পরিবারের অন্যান্যদের নিয়ে যারা থাকে তাদের এইসব প্যারা নাই। বাড়ির কাছে যাদের শ্বশুরবাড়ি তারা এই নিঃসঙ্গকালটা উপভোগ করতে পারেনা বললেই চলে। ব্লগার রাজীব নুরের মত বউ বাচ্চার কথা মনে পড়লেই সাত সকালে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হয়।দাম্পত্যজীবনে স্বামী স্ত্রীর অন্তত বছরের একটা সময়ে কয়েকটা দিনের জন্য আলাদা থাকা অতীব জরুরী। কেন? এর পেছনে প্রচুর বিষয় ও ব্যাখ্যা আছে সেগুলো যারা সংসার করে তারাই বুঝবে ভাল।
আজকের গল্পটা একটু মূলত রসনা বিলাস নিয়ে; ( খানা-পিনার গল্প হলেই ব্লগার গোফরানের কথা মনে পড়ে যায়। ওদিকে খায়রুল আহসান ভাই আর আহমেদ জী এস ভাইকে বহুদিন ব্লগে অনুপস্থিত দেখে বড্ড চিন্তিত আছি। ব্লগে কম আসা হয় বলে 'জুন আপুকে'ও মনে হয় দীর্ঘ সময় মিস করছি। এ লিস্টে আর কয়েকজন আছে(ভুম' এর অনশন কি শেষ হয়েছে?

~শুরুটা করি বকফুল দিয়ে। আমি প্রায়শই সন্ধ্যেকালে ফ্যস্কটরি থেকে ফেরার পথে ডিয়াবাড়ি বৃন্দাবন বৈকালিক বাজারের পাশ দিয়ে আসি। ওখানে ঠিক আদিবাসী কিংবা পাহাড়ী ধাঁচের বাজার বসে। পাঁচ মিশালই শাক, কচি লাউপাতা, বকফুল, সরিষাফুল, কুমড়া ফুল থেকে শুরু করে সব ধরনের দেশি শাকসবজি মেলে। দাম একটু বেশী হলেও ভিন্নধর্মী ও টাটকা জিনিস পাওয়া যায়। ওখানকার বেশীরভাগ বিক্রেতাই হিন্দু পুরুষ-রমণী। ওরা দামাদামি মুলোমুলি হাঁকডাক কিছুই করে না। যা হোক আমার আড্ডার দাদাকে এই বাজারের কথা বললে তিনি আবদার করলেন সেখান থেকে বকফুল এনে দিতে। ভাগ্যগুণে আমি পরদিনই পেয়ে গেলাম- সেই ফুল পেয়ে দাদা সে কি খুশী। আমি বাসায় অর্ধেকটা নিয়ে মুসুরির ডাল আর বেসন দিয়ে ভেজে ফেল। কথা শুনে ছেলে-মেয়ে বিস্মিত-অভিভূত হল; ফুল নাকি ভেজে খায় সেটা ওর 'বাপের জন্মে' শুনেনি


বার আসি এই পেঁপের গল্পে। ঢাকায় ধোয়ার গন্ধ ছাড়া দেশি মিষ্টি পেঁপে পাওয়া নেহায়েত ভাগ্যের ব্যাপার। বেশীরভাগ সময় অতীব রঙ চমকানো দারুণ দেহ সৌষ্ঠবের পেঁপে কিনে খেতে গিয়ে চোখে পানি চলে আসে। আমার প্রিয় ফলের একটা পেঁপে- ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পেঁপে কিনে নিয়মিত ধরা খাই।সেদিন কিনলাম মাজার রোদের শাহ আলী বাজার থেকে। পেঁপে বিক্রেতা অন্য পেঁপের সাথে আমাকে এই পেঁপেটা দিয়ে বলল, এইটা নেন- মদ্দা পেঁপে। পুষ্টু আর মিষ্টি।
পেঁপের আবার মাদী মদ্দা হয় সেটা আমার ছেলে মেয়ের বাপ -ও বাপের জন্মে শুনেনি।
সেটা ওকে কইতেই-ও বিগলিত হাসি দিয়ে কইল; আমি এই জায়গায় সেরা পেঁপে বেচি। দাম দশটাকা বেশি নেই কিন্তু মাল এক নম্বর। যে কথা কইছি সেইটাই সই। আপনি জানেন না যে মদ্দা পেঁপে হয়। বাড়িতে নিয়ে খেয়ে দেখেন।
এরপর বহুদিন বেশ কয়েকদিন ওই বিক্রেতা আর তার মদ্দা পেঁপে খুঁজছি। কিন্তু দুটোই উধাও।

- ইটা হইল মুলা ভর্তার সচিত্র রেসিপি। সবগুলো সরিষার তেলে ভেজে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিয়ে একটু স্বাদের পরিবর্তন আনতে পারেন।

~ (একা সংসারে ছটির দিনের শুরু পান্তা ভাত দিয়ে) চিত্রটা অতি সাধারণ। কিন্তু ডাল পানি আর কাঁচা পেঁয়াজের নীচে যেই ভাতটা আছে সেটা কিন্তু খাটি আউশ চালের। বড় দুর্লভ এই শহরে। পান্তা ভাতের সাথে মুচমুচে আলুভাজি বড্ড প্রিয় আমার কাছে।

~ মার এক বন্ধু বড় কর্পোরেট জব আর নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসা ছেড়ে গ্রামে গিয়ে কৃষক হয়েছে। সে ফেবুতে প্রোটিন বহুশত আবজাব( জবের ছাতু আখের গুড়, লতা পাতা আসেদ্ধ খাবার, অঙ্কুর শালগম এইসব) খাবারের পোস্ট দিয়ে বলে স্বর্গীয় এক সকালে চৌদ্দ কিলোমিটার দৌড়ে এসে এইসব খাচ্ছি। আমি আমি অত গভীরে না গিয়ে স্বর্গীয় বিকালে এগুলো খাচ্ছি। আত্মারে অত কষ্ট দিয়ে কি লাভ??

মার রসনা বিলাসে ইলিশ না থাকলে কেমন হয়। গিন্নী যাবার সময়ে একখানা ইলিশ কেটে দুবেলার সরিষা ইলিশ রেঁধে (প্রথম ছবি সেটারই) বাকিটা নুন হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রেখে গেছেন। ইলিশের সাইজ আহামরি নয় কিন্তু জাত এক নম্বর।

ত টাইট ফুড শিডিউলে হাঁপিয়ে যাই মাঝে মধ্যে :) তাই সেদিন বন্ধুর রেস্টুরেন্টে ভুরিভোজ হল।
তবে আপনারা যেমন ভাবছেন তেমন নয় মোটেও!!

~ যাচ্ছলে... নিজের হাতে করা এই ফুলো ফুলো পেঁয়াজুর ছবি শেয়ার করা হয়নি। শীতের বিকেলে এটা বেশ উপভোগ্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসনাতের বয়ানে সেনাবাহিনীর প্রস্তাব নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি, সেনা সদরের অস্বীকার

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:০১

হাসনাতের বয়ানে সেনাবাহিনীর প্রস্তাব নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি, সেনা সদরের অস্বীকার

ছবি: অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের একটি 'সংশোধিত' অংশকে রাজনৈতিকভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তবু তো ফাল্গুন রাতে এ গানের বেদনাতে আঁখি তব ছলছলো....আমার দুঃখভোলা গানগুলিরে ......

লিখেছেন ইন্দ্রনীলা, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫



মাঝে মাঝে আমার বুকের গহীনে এক ব্যথার নদী উথলে ওঠে। উথাল পাথাল ঢেউগুলো পাড়ে এসে আছড়ে পড়ে। উত্তাল বেগে ধেয়ে এসে ভেঙ্গে খান খান হয়ে পড়ে বুকের মাঝে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বিস্মৃতি"

লিখেছেন দি এমপেরর, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৫


সে যে আজ কোথা হারিয়ে গিয়েছে, আঁধার ছেয়েছে ঘনঘোর কালো;
চাঁদ নেই তারকারাজিও উধাও, নেই জ্বলে কোথা টিমটিমে আলো!
সে যে জানে শত হৃদয়ের কথা, মায়াজালে ঘেরা হাজার স্মৃতি!
কত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথা হালকা পোষ্ট!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:০৭

অবিশ্বাস্য হলেও লেকটির অবস্থান খোদ ঢাকায়; কেউ কি এর লোকেশন বলতে পারেন?



কাটা তরমুজের ছবিটা দেবার বিশেষ মাজেজা আছে;
উটিউবে একজন কামেল বুজুর্গান পাকা সূমিষ্ট তরমুজ কেনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলার্ট : শেখ হাসিনা আজ রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৭


বাংলাদেশের মানুষ কল্পনা করতে খুব ভালোবাসে। গুজব ও অপতথ্য শেয়ারে বাংলাদেশের মানুষ প্রথমদিকে থাকবে বলে অনেকের বিশ্বাস । দেশের মানুষের পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বইয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। আত্নউন্নয়ন মূলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×