বাংলা সাহিত্যে পঞ্চকবিদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। তিনি একাধারে কবি, নাট্যকার, গীতিকার ও সঙ্গীতশিল্পী। তিনি ডি. এল. রায় নামেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিখ্যাত গান ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’, ‘বঙ্গ আমার! জননী আমার! ধাত্রী আমার! আমার দেশ’ গানগুলো আজো সমান জনপ্রিয়। তিনি প্রায় ৫০০ গান রচনা করেছিলেন। তাঁর রচিত গানগুলো বাংলা সংগীত জগতে দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত। তিনি অনেকগুলো নাটক রচনা করেছিলেন। তাঁর নাটকগুলো সমালোচকগণ চার শ্রেণিতে বিন্যস্ত করেন- প্রহসন, কাব্যনাট্য, ঐতিহাসিক নাটক ও সামাজিক নাটক। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একঘরে, কল্কি-অবতার, বিরহ, সীতা, তারাবাঈ, দুর্গাদাস, রানা প্রতাপসিংহ, মেবার-পতন, নূরজাহান, সাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, সিংহল-বিজয় ইত্যাদি। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে জীবদ্দশায় প্রকাশিত আর্যগাথা (১ম ও ২য় ভাগ) ও মন্দ্র বিখ্যাত। তাঁর রচিত বিখ্যাত ব্যাঙ্গ কবিতা ‘নন্দলাল’ এখনো বাংলার মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় (১৮২০-৮৫) ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজবংশের দেওয়ান। তাঁর বাড়িতে বহু গুণীজনের সমাবেশ হতো। কার্তিকেয়চন্দ্র নিজেও ছিলেন একজন বিশিষ্ট খেয়াল গায়ক ও সাহিত্যিক। এই বিদগ্ধ পরিবেশ বালক দ্বিজেন্দ্রলালের প্রতিভার বিকাশে বিশেষ সহায়ক হয়। তাঁর মা প্রসন্নময়ী দেবী ছিলেন অদ্বৈত আচার্যের বংশধর। দ্বিজেন্দ্রলালের দুই দাদা রাজেন্দ্রলাল ও হরেন্দ্রলাল এবং এক বৌদি মোহিনী দেবীও ছিলেন সাহিত্যস্রষ্টা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৬