somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক একরে বটগাছ চল্লিশ একরে মন্টু মিয়া দেখতে চাইলে চলে যান সাতহ্মীরায়,,,,,

১৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


লোকমান হোসেন পলা

( একদিনের জন্য বিশেষ কাজে সাতহ্মীরায় গিয়েছিলাম, ভ্রমণ বিলাসী মানুষ চেস্টা করি সময় বা সুযোগ পেলেই পাখি হয়ে যেতে। অতি কম সময়ে পাখির চোখে দেখে নিলাম বনবিবির বটতলা, আর মিন্টু মিয়ার বাগান)




মন্নোমুগ্ধকর , সুন্দর প্রাকৃতিক মায়াভরা ও শান্ত সাতহ্মীরা জেলা।এই শহর হতে মাত্র ২৫ কিলোমিটার গেলেই বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের (ভুমরা) দেবহাটা উপজেলা। যে উপজেলাতে আছে অতীত আর ঐতিহ্যতে ভরা। আছে হৃদয় ছোয়া দু' শত বছরের বট বৃক্ষ। স্থানীয়ভাবে বটতলা কিংবা বনবিনি তলা নামে পরিচিত। প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত এই বট তলা। গাছের শাখা প্রশাখা শিকড় থেকে বিরাট রুপ লাভ করেছে।
সকলে ধারনা করেন,অতীতে সাধু সন্যাসীরা এখানে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দেবদেবীর পূজা অর্চনা করতেন। আবার অনেকে মনের কামনা পূরনে নির্জনে এখানে এসে বনবিবিকে মনের কথা শোনাতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন আর কোন সাধূ সন্যাসী এসে এখানে বসেনা,থাকেনা কেউ ধ্যানে মগ্ন। শুধু প্রতিদিন বিনোদনের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী পুরুষ ভিড় জমায়। এখানে গাছের শিকড় ও প্রশাখা আছে,যেখানে বসে অনেকে সময় কাটায়।

বর্তমানে সাধু সন্যাসীদের ধ্যান,পূজা-অর্চনা না হলেও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে জমে ওঠে বৈশাখী মেলা। স্থানীয় জনসাধারনের উদ্যোগে বিরাট বটগাছের নিচে প্রতি বছর পহেলা মাঘে হাজত মেলার আয়োজন করা হয়। বৃহৎ বটগাছে আবার পরষ্পর বেড়ে চলেছে। আবার এর চারপাশে জনবসতি গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এতে নিজের সৌন্দর্য হারাচ্ছে বনবিবি।

স্থানীয়দের বিশ্বাস,হাজার বছরের এই বৃক্ষটির কোন অংশ যখনি কেউ কাটতে চেষ্টা করে,তখন তার কোন না কোন বড় বিপদ হয়। তাই আর কেউ কাটতে যায়না। ঐতিহাসিক এই জনপ্রিয় বটতলা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে অনেক মানুষ আসেন একটু অবসরে সময় কাটাতে। বৃক্ষ ছায়ায় সুনিবিড় পাখির কিচিরমিচির ,নয়নাভিরাম এই স্থানে বসে থাকলে মনের ক্লান্তি অবসর হয়ে যায়। প্রাকৃতির এই পরিবেশে কে বা না আসতে চায়। কিন্তু আসলে এতো সুন্দর যায়গায় কোন বসার স্থান নেই। পিকনিক করার সুযোগ থাকলেও,এখানে নেই কোন সু-ব্যবস্থা। এছাড়া আশে পাশে নিরাপদ খাওয়ার পানির উৎস্য নেই।

এই স্থানটি একটি গুরুত্বপূর্ন স্থান হিসেবে পরিচিত থাকলেও ধীরে ধীরে তার
স্বাধীনতা হারাচ্ছে। বটতলাকে আরো সন্দর করে গড়ে তুলতে ও উপজেলার সুনাম অর্জন করতে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় এই ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে বিনোদনকেন্দ্রে পরিনত করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা যায় বলে মনে করেন সুধীজনরা।

******
মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট

মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট (Mozaffer Garden & Resort) সাতক্ষীরায় মন্টু মিয়ার বাগান বাড়ি নামে বহুল পরিচিত। সাতক্ষীরা জেলায় ১২০ বিঘা জায়গা জুড়ে ১৯৮৯ সালে জনাব কে, এম, খায়রুল মোজাফফর (মন্টু) এই মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্ট স্থাপন করেন। সবুজে পরিপূর্ণ এবং খোলামেলা প্রাকৃতিক পরিবেশ সহজেই এখানে আগত অতিথিদের নজর কাড়ে। মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে থাকার জন্য ৪ টি ভবনে মোট ৩০ টি কক্ষ রয়েছে। কারুকাজপূর্ণ এসব কক্ষগুলোতে রয়েছে আধুনিক জীবন যাপনের সমস্ত নাগরিক সুবিধা।

মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টের লেকে রয়েছে প্যাডেল বোট এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা। এছাড়া আছে মিটিং ও কনফারেন্স রুম, মাছের অ্যাকিউরিয়াম, থ্রীডি থিয়েটার ও চিড়িয়াখানা, চিলড্রেন পার্ক, খেলার মাঠ এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয় ভাস্কর্য। চাইলে অতিথিরা এখানে ব্যাডমিণ্টন এবং টেবিল টেনিসও খেলতে পারেন। মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টের পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা মসজিদ রয়েছে। এই রিসোর্টের চিড়িয়াখানাকে দেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি চিড়িয়াখানা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। চিড়িয়াখানার বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি আগত অতিথিদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। পিকনিকের জন্য মোজাফফর গার্ডেন এন্ড রিসোর্টে সর্বমোট ১০৫ টি পিকনিক স্পট রয়েছে। রিসোর্টের রেস্টুরেন্টে রয়েছে সকল প্রকার দেহী এবং চায়নিজ খাবারের ব্যবস্থা। আগত অতিথিদের সাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তা এবং গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা।

কিভাবে যাওয়া যায়
ঢাকা থেকে বাসে সাতক্ষীরা
ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব ৩৪৩ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলী, নবীনগর, শ্যামলী, কল্যাণপুর এবং সাভার থেকে সাতক্ষীরা যাবার এসি এবং ননএসি বাস রয়েছে। এদের মধ্যে এসপি গোল্ডেন লাইন, এ কে ট্রাভেলস (02-8032916), হানিফ এন্টারপ্রাইজ (02-8011759), গ্রীন লাইন, মামুন এন্টারপ্রাইজ, ঈগল পরিবহন (02-8017698, 02-8017320), সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস এবং শ্যামলী পরিবহন উল্লেখযোগ্য। মানভেদে এ সমস্ত বাসের টিকেটের জন্য ৫০০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

থাকবেনঃ
ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেশ কয়েটি হোটেল রয়েছে, ভাড়া ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৪৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×