** দাম্মাম থেকে হজ কাফেলার আমির আহমাদ উল্লাহ যা বললেন তা নিচে দেওয়া হল ।
মিনা ট্রাজেডির প্রধান কারণ হিসেবে বেশিরভাগ মানুষের ধারণা, সৌদি প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমানের গাড়ি বহরের কারণে আলোচিত ২০৪নং সড়কে ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে। একথাটি প্রথম তুলেছে সৌদি আরবের চিরবিরোধী ইরান। কিন্তু এই দাবীর স্বপক্ষে কোন তথ্য বা প্রমাণ এখনো পর্যন্ত তারা উপস্থাপন করতে পারে নি। বরং ঘটনার দিন সেখানে কোন ভিআইপির গাড়ি বহর আমার চোখে পড়ে নি। এমনকি আমার সাথী-সঙ্গী ও ঘটনার স্বিকার অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, তারাও কেউ এমন কিছু বলতে পারেন নি। আশ্চর্যের বিষয়, সময়-স্থান কিংবা ভেতরে কে আছেন- এর কোন কিছুই স্পষ্ট নয় এমন একটা গাড়ি বহরের ভিডিও ক্লিপ প্রচার করে সেখানে ক্যপসন জুড়ে দেওয়া হচ্ছে ‘এই সেই সৌদি প্রিন্সের গাড়ি বহর যার কারণে মিনায় শতো শতো লোক নিহত হয়েছেন’।
জামারাতের ব্রিজের উপরে হেলিকপ্টার অবতরণের ব্যবস্থা আছে এবং সেখান থেকে নিরাপত্তা কর্মীদের কপ্টার সারাক্ষণ উড্ডয়ন ও অবতরণ করে থাকে। সৌদি প্রিন্স জামারাতে যেতে চাইলে নিয়ম অনুযায়ী হেলিকপ্টারে করেই সেখানে যাওয়ার কথা তাঁর! সেই সময় জামারাতের আশেপাশে যে পরিমাণ ভিড় থাকে সেখানে কোন ভিআইপির গাড়ির বহর যাওয়া কেবল কল্পনতেই সম্ভব, বাস্তবে নয়। তাছাড়া দুর্ঘটনার সময়কাল ছিল প্রায় সকাল আটটা। প্রিন্স যদি হজ্জের কাজে সেখানে গিয়ে থাকেন তবে মুযদালিফায় রাত্রি ঝাপন তো আরো তিন ঘন্টা আগেই (ফজরের সময়) শেষ হয়ে গেছে! তবে সেখানে এতো সময় দেরি করে তিনি কেন বের হতে যাবেন জামারাতে?
কেউ কেউ বলছেন, তিনি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। একথা তারাই বলতে পারেন যারা ঈদের দিন সকালে জামারাতের আশপাশে মানুষের ভিড় সম্পর্কে অবগত নন। এমন ভয়াবহ ভিড়ের মুহুর্তে কোন প্রিন্স তো দুরের কথা বড় কোন দায়িত্বশীলও সেখানে যেতে পারেন না। সুতরাং এই সংবাদটি পুরাই ভুয়া। অথচ আমাদের দেশের বেশিরভাগ হাজী সাহেবরা একশ্রেণীর মিডিয়ার অপপ্রচারের কারণে না জেনে অবলীলায় সৌদি প্রিন্সের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন! ইরানীরা কেন প্রিন্স মুহাম্মাদ বিন সালমানকে টার্গেট করছে, সেটাও তাদের অনেকে জানেন না।
এদিকে দুদিন আগে দৈনিক মানবজমিনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে হজ্জ ফেরত এক লোক জানিয়েছেন, তিনি নাকি জামারাতের বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় ছিলেন। হঠাত মানুষের আর্তচিৎকার শুনে সেখান থেকে লাফ দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন। অথচ ঘটনাস্থল জামারাত থেকে বেশ দূরে। জামারাতে মানুষের কোলাহল ও তাকবীর ধ্বণিতে যতোটা মুখরিত, সেখানে অতদূর থেকে কোন শব্দই শোনা যাওয়া সম্বব নয়। আর জামারাতে সেরকম কোন কিছু শোনা গেলে সেখান থেকে মানুষ হুড়োহুড়ি করে পলায়ন করতো। বাস্তবে তেমন কিছু ঘটে নি। তাছাড়া জামারাতের ব্রীজ (ভবন)টির উচ্চতা সাধারণ বিল্ডিংয়ের উচ্চতার চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি। আর নিচে এক বিন্দু জায়গাও পাকা ছাড়া নেই। তাহলে সেই ভদ্রলোক কি করে ৬/৭তলার উচ্চতা থেকে নিচে পাকার উপর লাফ দিয়ে বাঁচলেন?? এমন বহু মিথ্যা বা ধারণা প্রসূত কথা মানুষ অহরহ অবলীলায় বলে বেড়াচ্ছেন। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
ইনশা আল্লাহ বাকিটা পরের পর্বে দেওয়া হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭