আন্দোলনরত মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পুলিশের বাধা ও ব্যাপক লাঠিচার্জ !!
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নেয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের ওপর পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে। এতে অভিভাবকসহ পাঁচজন আহত হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
উপরের অংশটুকু নিউস পেপার থেকে নেওয়া এখন আসি আমার কথায় ,
হায়রে আমার বাংলাদেশ, তোমার বুকে রক্ত না ছড়ানো পর্যন্ত কোন দাবী দাওয়াই আদায় হয় না । তোমার জন্মলগ্ন থেকেই তা চলে আসছে, মনে হচ্ছে বাংলাদেশে দাবী আদায়ের জন্য কর্তৃপক্ষ সর্বদাই মানুষদের আন্দোলনে যেতে বাধ্য করে । বাংলাদেশের কোন কর্তৃপক্ষই শান্তিপূর্ণ উপায়ে কোন সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী নয় । এটা নিশ্চয়ই দেশের জন্য শুভলক্ষণ নয় । দুর্ভাগা বাঙালি হয়তো যত সহজে মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছিল তত সহজে গণতন্ত্রের সাধ ভোগ করতে পারবে না ।
শিক্ষাখাতে ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনটি দুদিন দেখেই বলেদিয়েছিলাম সরকার এই দাবী মেনে নিতে বাধ্য হবে। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পুনঃ পরিক্ষার আন্দোলন সরকার মানবে না। আন্দোলন যতই শক্তিশালী হোকনা কেন।নানা কায়দায় একটা রাষ্ট্র অকার্যকর রাষ্ট্রের রূপলাভ করতে পারে। অন্য সবগুলোর প্রতিকার যদিও সম্ভব, কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস বা ঘুষের বিনিময়ে চাকরি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের হঠিয়ে মেধাহীনদের দ্বারা যদি কোন রাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদে চালিত হতে থাকে, তাহ’লে দিনে দিনে রাষ্ট্র যে রূপ লাভ করে- তাও এক অকার্যকর রাষ্ট্র ছাড়া আর কিছুই নয়; এবং এর প্রতিকার সাধন মূলতঃ অসম্ভব হয়ে দাড়ায়।সরকারই চাইছে মেধাশূণ্য জাতী সাড়াও পাচ্ছে সমান তালেই। তা না হলে সরকারের মন্ত্রী কিভাবে বলে বেড়ায় সুন্দর পরীক্ষা হয়েছে। মেধাশূণ্যদের বলা হচ্ছে ব্রিলিয়ান্ট!!! ওরা নাকি এবার খুব ভালভাবে পড়াশুনা করেছে তাই ভাল রেজাল্ট করেছে!!! হায়রে হীরক রাজার দেশ!
প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যতই প্রমাণপত্র হাজির করা হোক , মেধাবীরা বঞ্চনার শিকার নিয়ে যতই আকাশ পাতাল ফাটিয়ে আহাজারি করুক ,সরকার মানলে তো !
বাংলাদেশে সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা প্রথার যে আগ্রাসী প্রভাব তা সম্ভবত পৃথিবীর আর কোন দেশে নেই। কোটা পদ্ধতিতে যে জনবল জন প্রশাসনে নিয়োগ দেয়া হয় তাদের অধিকাংশ মেধাবী নয় এবং সংগত কারণে কাজে কর্মে ও তারা অদক্ষ। ফলে জন প্রশাসন থেকে জনগণের কাংক্ষিত সেবা পেতে বিড়ম্বনার সম্মুখিন হতে হয়।আমাদের দেশে বিশেষ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে চাকুরীর ক্ষেত্রে বিশেষ পরীক্ষা নেওয়ার একটা রেওয়াজ তৈরি হয়েছে। আগে কোটায় চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা নূন্যতম যোগ্যতা প্রমাণ করতে হত। বর্তমানে বিশেষ পরীক্ষা নেওয়ার কারণে সে সু্যোগই আর থাকলনা।কোটা নিয়ে ৩৪ তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারিতে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে গেল তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার এখন আরো কৌশলে কৌটাধারীদের চাকুরী দেওয়ার ব্যবস্থা করছে বলে মনে হয়। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টী সরকার কোন সময় গুরুত্বের সাথে নেয়নি, ভবিশ্যতে নেবে বলে ও মনে হয়না। র্যাবের হেফাজতে মৃত্যুবরণকারী ইউজিসি কর্মকর্তা বেঁচে থাকলে হয়ত কিছু তথ্য পাওয়া যেত। সে সুযোগ কৌশলে ধবংস করা হল কিনা সেটা ও গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার।আমাদের দেশে কোন ঘটনারই কুল কিনারা হয়না। সবগুলো চলে যায় হিমাগারে।
মূল কথা হচ্ছে, একটা কিছু সরকারকে করতেই হবে। ভর্তি, নিয়োগ আর স্কুল সমাপনী পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ একটি জাতি অনাদিকাল বহন করতে পারে না।"প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে সরকার সরসরি স্বনামধন্য ব্যক্তিদের নিয়োগ করুক। তাহলে ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা বলেই ধরা যায়। যতগুলো প্রসিডিউর সবগুলো তাদের হাত দ্বারায় সম্পন্ন করলে প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাবনা থাকবেনা বলে আমি মনে করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৩:৪৮