somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গায়ে হলুদ>নাচ গান>মদ্যপান>ইভটিজিং>সংস্কৃতি

২৮ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশে বিয়ের আগেরদিন গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করার রীতি সেই প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। এটা আমাদের ঐতিহ্য ও লালিত একটি সংস্কৃতি।

মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানাধীন আড়িয়ল- বালিগাঁও ইউনিয়ন এর বালিগাঁও গ্রাম।
বিগত ১০/১২ বছর যাবত এখানে একটি অদ্ভুত সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।আমাদের এলাকায় গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক(!!??!!) অনুষ্ঠান থাকতেই হয়। কয়েকজন গানের শিল্পি বা দল আর একটি "ড্যান্স গ্রুপ"। নাচ/ গানের দলে "নারী" পারফরমার মাস্ট। সেই নারি পারফরমারকে সুন্দরী, তরুনী, সেক্সি হতে হবে। নাচ সবই "ডিসকো নাচ"। আশেপাশের আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশি, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলেই এই অনুষ্ঠান উপভোগ করে। অনুষ্ঠানের শিল্পি যত উড়াধুড়া- হোস্টের গর্ব তত বেশি। :|






ধনী গরিব সবাইকেই সাধ্যমত এরকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হয়। ইয়াং পোলাপান এক্ষেত্রে ব্যাপক উতসাহী। বর/কনের ভাই/মামা/চাচারা সাধারনত এর উদ্যোক্তা। শিল্পি ও সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করা হয়। ব্যপক আলোকসজ্জা করা হয়। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাত ২/৩ টা পর্যন্ত চলে নাচ গান।
যাদের বিবাহ যোগ্য ছেলে মেয়ে নাই কিন্তু শখ আছে ষোল আনা তারা তাদের ছেলের সুন্নতে খাতনা বা মেয়ের নাক/কান ফোড়ানী অনুষ্ঠানের আগের রাতে "গায়ে হলুদ" অনুষ্ঠান করে। B-)

এপর্যন্ত ঠিক আছে। এর সাথে সাথে এসব অনুষ্ঠানে "মদ/বিয়ার" অত্যাবশকীয়। এটা ছাড়া অনুষ্ঠান পূর্ণতা পায় না:| । ১৬-৩৫ বছরের মেহমানদের (বর/কনের ছোট/বড় ভাইয়ের দোস বন্ধুদের) জন্য এটা লাগবেই। দাওয়াতের সময়ই জিজ্ঞাস করা হয়- "কয় বোতল/কেস আনছোস???":P

এটাও ধনী গরিব সাধ্যমত আয়োজন করে। মদ- বিয়ারের জন্য গায়ে হলুদে বাজেট থাকে ১০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। :-/

একদিকে চলছে বিকট শব্দে নাচ গান আর একটু আড়ালে গিয়ে ছেলেদের মদ বিয়ার খাওয়া। খেয়ে দেয়ে তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। মিউজিকের তালে তালে তারা উদ্দাম নৃত্যে মেতে ওঠে। মুরুব্বিরা এদিন একটু নমনীয় থাকে। একটু ধনীদের বাড়িতে মোটামোটি প্রকাশ্যেই খাওয়া চলে। বয়সের ব্যবধানও অনেকে ভুলে যায়। বাপের বন্ধু আর পোলার বন্ধু একাকার হয়ে যায়;) । তো নাচানাচির সময় প্রায়ই ঘটে আগত কোন মেয়ের উপর অথবা আগত কোন নারী শিল্পির উপর উচ্ছৃংখল হামলা, ইভটিজিং। কখনো কখনো ব্যপার্টা ভয়ানক পর্যায়ে চলে যায়- মারামারি পর্যন্ত হয় X(X((


তো সম্প্রতি আমাদের গ্রামের মুরুব্বিরা আর মসজিদের ইমাম সাহেব মিলে ফতোয়া দিয়েছে যে- গায়ে হলুদে নাচ গান আর সাউন্ড সিস্টেম চলবে না। যে/যারা করবে তাদের অনুষ্ঠানে গ্রামের কেউ যাবে না।

দারুন ফল দিয়েছে তাদের এই শক্ত অবস্থানের কারনে। এখন প্রায় ৬/৭ মাস যাবত কোন অনুষ্ঠানে নাচ গান হয় না। এটা নিয়ে অবশ্য অনেকে মনঃক্ষুন্ন। কারন তাদের বাড়িতে হয়তো বহু বছর পর কারো বিয়ে শাদি হচ্ছে। তারা নাচাগানা করতে পারছে না।;)

নাচ গান বন্ধ হলেও মদ বিয়ার বন্ধ হয় নি। এখন দাওয়াতি পোলাপান অনুষ্ঠানে গিয়ে বিরিয়ানি খাওয়ার পর মদ/বিয়ার খেয়ে চুপ করে চলে আসে। এটা থামানোর উপায় মুরুব্বিরা এখনো বের করতে পারে নি।

এই সংস্কৃতি কম বেশি সমস্ত মুন্সিগঞ্জ জেলা জুড়ে চলছে।

-----------------------*************-----------

ব্লগে দেখতে দেখতে ২ বছর হয়ে গেল। নানা ঘটনামুখর এই ২ বছরে সামুতে নিয়মিতই ছিলাম। অত্যন্ত আনন্দের সাথেই ছিলাম। কখনো হয়তো ক্ষুব্ধ হয়েছি, বিরক্ত হয়েছি। এই ব্লগীয় পথচলায় যাদের অকুন্ঠ সমর্থন, ভালোবাসা পেয়েছি তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।


সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:৫৭
১৪০টি মন্তব্য ১৪০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×