somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষমা করো ধ্রুবতারা

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

***
অলস সময়ের আনাগোণায়
দিন গুলো মোর তোমার পানে ছুটে চলা কোন এক.......

হতাশার পাখি যখন করুণ সুরে ডেকে যায়
আমার জানলার কার্ণিশ ধরে
মন তখন তোমার পানে ছুটে চলে........

অলস সময়ে যখন কিছু ভালো লাগে না আমার নীল রঙের খাতা খুলে বসে যাই, পেছনে ফিরে যাই অনেক পেছনে যেখানে যে সময়টা রঙের প্রলেপ মেখে রঙ ছুড়তাম। প্রজাপতির ডানায় ভর করে স্বপ্ন আকঁতাম।প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে নীল রঙের ডায়েরীটায় সারাদিনের কর্মলিপি লিখে রাখতাম আর বেশি লিখতাম তোমার কথা। তোমাকে কতটা ভালোবাসি এই কথাটা কখনো তোমাকে বলতে পারিনি মুখে, সবসময় ঐ ডায়েরীকে বলতাম, ভীষণভাবে বলতাম।
তুমি কোন রঙের জামা পড়েছ তোমাকে কেমন লাগছিলো, তুমি কিভাবে কখনো কোন কথায় হেসেছ, কিভাবে আমার দিকে তাকিয়েছিল। তোমার সাথে আমার সেইসব অনুভূতির বিনিময় হয়নি কখনো কিন্তু সব কথা আমি বলতাম নীলরঙের সেই ডায়েরীতে। মনে হতো সেই তুমি, তুমি শুনতে পাচ্ছো সব। মাঝে মাঝে চোখের জল মুছে তোমার সাথে কথা বলতে বসে যেতাম। যদিও তুমি অনুপস্থিত কিন্তু কেন জানিনা মন শান্ত হয়ে যেত। মনে হতো যেন আমি তোমারই সাথে বলেছি কথা।অস্থির সময়ে সেসব পুরনো দিনের ফেলে আসা সময়ের দিকে ফিরে যেতে আমার খারাপ লাগে না মনে হয় যদি আরেকটিবার ফিরে পেতাম সেই দিনগুলি। আচ্ছা তুমি কি শুনতে পাও কখনো, বুঝতে পারো কখনো, তোমার কি এমন করে না হলেও ক্ষনিকের জন্য মনে পড়ে না সেসব দিনের কথা?! হয়তো না। তুমি ভুলেই বসে আছ।


***

কি করছো মা, এত রাত জেগে পড়ছো? শরীর খারাপ করবো তো.
-মা কালকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে, ফাইনাল রিপোর্ট। ড্রাফ্টের পর আর কাজ করা হয়নি, এখন ঘুমালে কি চলবে।

একটা কথা বলবো মা
-কিছু যে বলতে এসেছো তা বুঝতে পারছি, বলে ফেলো। সময় নিয়ো না অযথা।

আচ্ছা এখন কি তোমার মন ভালো, আমি চাই তুমি সুখী হও জীবনে অনেক প্রতিষ্ঠিত হও।
-বুঝলাম সব মা চায় এমন তার সন্তানের জন্য।

আমি চাই এমন একজন তোমার জীবনে আসুক যেন তোমার আর কোন
কষ্ট না থাকে, সে তোমার অতীতের সব কষ্ট ভুলিয়ে দেবে।
-আর ভালো লাগে না।

শোন মা আমি তোমার জন্য..........
-আমি কিছু জানতে চাই না, দেখতে চাই না

জীবনের সবকয়টা মুহূর্ত এক হয়না কখনো সেটা কি জানো, এভাবে একা আর কতদিন চলবে। আমি তো সারাজীবন থাকবো না, তখন তুমি কিভাবে থাকবে, তুমি কি জানো এখন এই তোমার একাকিত্ব যাকে তুমি জীবনবোধ বলে ধরে নিয়েছো এই একাকিত্ব তুমি বেশিদিন সইতে পারবে না।
-কে বলেছে পারবো না, কতটা বছর পেরেছি ১৩টা বছর কি তোমার কাছে খুব কম সময় মনে হয়?

কৈশোর তারুণ্যের উচ্ছলতায় তুমি যা পারো একটা সময় এসে দেখবে জীবন অনেক বদলে গেছে সময় সব বদলে দেবে, মানিয়ে নেয়ার জন্য শিখতে হয় জানতে হয়।
-হুম জেনেছি বুঝেছি।

একবার আমার উপর আস্থা রাখো মা, তুমি সুখী হবেই
-তোমার যা খুশি করো।


***

তোমারে করিয়াছি জীবনের...ধ্রুবতারা........

ব্যাপার কি ভ্রাতা এমন গান গুনগুন করছেন।
ব্যাপার কিছুই না। মন একবার পেছনে ফিরে যায় তো আরেকবার সামনে বর্তমানেই স্থির থাকা দায়।
ভালোবাসার কি চরম দায়, যাকে আমি অবহেলা করে ফেলে এসেছি আজ এতটা বছর হয়ে গেলো,সেই আমার মনে কড়া নাড়ে বারে বারে। এ যন্ত্রণা থেকে বাচাঁ বড় দায়।
আমি আজ রাতের আকাশে অজস্র তারা গুণি, মনে মনে তারাদের সাথে কথা বলি, হয়তো তাদের কাছে আমার ব্যর্থতার কথা বলা তোমার কাছে আমার বাণী পৌঁছে দেয়া। শুধু দুঃখিত কথাটা বলে তোমার কাছ থেকে পালানো যে ছিলো চরম বোকামি সে আমি হারে হারে টের পাচ্ছি। দোহাই লাগে, অভিধান থেকে যেন এই শব্দটা মুছে যায়। কেউ যেন আর কোন ভাষা খুঁজে নেয়। অন্তত পক্ষে আমার মতো এত সংক্ষিপ্ত না।

বাবা আজ এতো দেরী করলে যে?
-একটা জরুরী কাজ ছিলো যে মা, তুমি খেয়েছো।
হু বাবা জানো কাল না বেণু খালা চলে যাবে, তুমি কি ছুটি নেবে!

নিতে তো হবেই, মা থাকলে কি আর আমাকে এত চিন্তা করতে হতো! মনে মনে কেবল একটা দীর্ঘশ্বাস। আমাকে একা ফেলে জগৎ সংসারের সমস্ত ভার দিয়ে চলে যাওয়া। টুশির মাকে আমি অনেক ভালোবেসেছিলাম সারা জীবন তাকে আকড়ে ধরে রেখে দিতে চেয়েছিলাম বলেই হয়তো এতো তাড়াতাড়ি সে চলে গেল। অনেক অভিমান নিয়েই চলে গেল। আমাকে একটিবার সুযোগটা দিল না পর্যন্ত তার ভুল ভাঙানোর। কত ভুলের বোঝা নিয়ে চলছি আমি।

***

অনেক বছর পর একটা রেল স্টেশনে দেখা হয়ে গেল ইলার সাথে। অপেক্ষা করছিলাম আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য, ইলা ও করছিলো। ও ঠিক ওর পছন্দের রঙ নীল রঙের শাড়ি পড়েছিলো। এতটা বছর পরেও কেন জানি ওকে দেখে বুকের ভেতরটা মুচঁড়ে ওঠল, কিন্তু আমিতো ওকে ভালোবাসিনি।

প্রচন্ড তেষ্টায় চোখে জল এসে গেলো, আমার টুশির আজ এমন একটা মা থাকতে পারতো।

কথা হয় ইলার সাথে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,সেই চির পরিচিত স্টেশনে ভিন্ন আবহে।

ভালো আছেন?
-কি ব্যাপার তুমি আমাকে আপনি করে বলছো যে?

আপনার মতো এমন একজন সম্মানিত ব্যক্তির সাথে কথা বলতেই কেমন ভয় করে।
-ইলা তুমি এখনো সেই আগের মতো আমাকে খোচাঁ দিয়ে কথা বলছো।
বলছি, কিন্তু আপনিতো দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রাণী তাই আপনি বলছেন না আগের মতো মুডে। কোথায় গেল এত রাগ।

বললেন না আপনার কথা।
-তুমি কি আমাকে ক্ষমা করেছো ইলা, আমি ভালো নেই একদম। নিঃসঙ্গতায় ডুবে মারা যাচ্ছি। তোমাকে আমি যতটা কষ্ট দিয়েছি তার চেয়েও বেশি পেয়েছি।

স্যরি আপনার এসব প্রলাপ শোনার কোন সময় নেই আমার।


***
ট্রেনের হুইশেল শোনা গেল। সময়ের দ্রুততায় সবাই চলে যায়। চলন্ত ট্রেনের গতিতে সবাই ছুটে চলে। সময়ের হিসেবে কোথায় একদন্ড ভুল হয় না।

আজো আমার হিসেব মিলেনি শুধু, আজো আমার জানা হলো না আমার ধ্রুবতারাকে। কাছে পেয়েও অনেক দূরে। এলোমেলো চিরদিনের আমি একাই রয়ে গেলাম। যে ভালোবাসা একদিন দূরে ফেলে দিয়েছি আজ তার কাঙাল হয়ে মরতে বসেছি। তবুও বেচেঁ থাকা এভাবে।

***
সময়ের স্রোতে পরিবর্তনের ভেলায় ভেসে যায় সবাই। গন্তব্য কেবল শূন্যে........।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:১১
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×