somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলেবেলায় একদিন

১০ ই মার্চ, ২০১১ রাত ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাশেদ খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে। বন্ধুরা অবশ্য ছোট করে তাকে রশি বলে ডাকে, আসলে রাশেদ সাবার মাঝে একটা বন্ধন তৈরী করে। ও সাবইকে বেধেঁ রাখে ওর দুষ্টুমী আর মায়া দিয়ে। অবশ্য এই নামটা রাশেদের মোটেও পছন্দ নয়।

এলাকার বড় ভাইরা কোন দুষ্টুমীমূলক কাজ পড়লে এইছোটখাট দুষ্টু বাহিনীটাকেই খবর দেন। বড়রা এই মাসুম বাচ্চাদের উৎপাতে বিরক্ত হলেও তেমন কোন শাস্তির ব্যবস্থা নিতে পারতেন না। তাই বান্দরামী কাজে তাদের প্রশংসা ও কদর ছিলো বড় আপু-ভাইদের কাছে।

রাশেদ বরাবরই ক্লাসে ফার্স্ট হয়। চশমা পরা ভদ্র পিকলুর কিছুতেই বোধগময় হয় না সারাদিন দুষ্টুমী করেও কি করে এত ভালো রেজাল্ট করা যায়।
স্কুলের সবাই মোটামুটি অতিষ্ঠ হলেও ভালো ফলাফলের কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যেত না। সবার কাছে অবশ্য রাশেদ খারাপ না বেশি পড়ুয়া আর শান্তশিষ্ট জনের চোখের বালি,আর অন্যদের চোখের মণি।

কতদিন যে স্কুল পালিয়ে বন্ধুরা গিয়ে মাঠে ফুটবল খেলে কাদাঁয় মাখামাখি হয়ে বাসায় ফিরেছে, বড় আপুর কল্যাণে মা'র বকুনি থেকে বেচেঁছে। তার দীঘল কালো কেশের আপুটার বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে সে এখন আপুর কাছে পরম আদরের পাত্র। শত অন্যায় আবদারও এখন আর আপু ফেলতে পারেন না।
এলাকার পিকনিকের জন্য চাদাঁ তোলার দায়িত্ব তার কাধেঁই বর্তায়। যে যেমন দেয় বাধাঁধরা কোন নিয়ম নেই। তারপর একটা দিন আনন্দোল্লাস!!!
সেদিন রাশেদের আপুটাকে বড় বেশি আপন মনে হয়। তাদের মতো বাদঁড় টাইপ ছেলেদের রান্না সব আপু করে দিয়েছে।
নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না, পরের দিন থেকে সেই আগের মতো ঝগড়া। নিয়মিত জ্বালাতন।

অবশ্য বাবা রাশেদকে মোটেও পছন্দ করেন না। ছেলে হবে ভদ্র শান্ত-শিষ্ট মেধাবী। কিন্তু এই ছেলের মেধা ছাড়া আর কিছুই নেই। আদব-কায়দার ধার ধারে না। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ, রাশেদের কত পরিকল্পনা, কি করবে না করবে কিন্তু বাবা পাঠিয়ে দিলেন মসজিদে ইমাম সাহেবে কাছে। কিছুদিন ধর্মকর্ম করার জন্য। সারা বছর তো অধর্মের কাজ করেই যায়। এই অত্যাচার থেকে বাচাঁর জন্য রাশেদ নিজেই অত্যাচার শুরু করল। ইমাম সাহেবে ওযুর পানিতে রঙ মিশিয়ে রাখলো, রাতের বেলা টিনের চালে ঢিল ছোড়া, বন্ধুরা সবাই যেন নতুন কাজ পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে শুরু করলো। কিছুদিনের মধ্যেই ছাড়া পেলো সে।

পাড়ার মিষ্টির দোকান ছিলো তাদের জন্য উদার হস্ত। অবশ্য তা না হলে কিভাবে যেন দইয়ের পাতিল ছিদ্র হয়ে যেত দোকানী নিজেও জানত না।

অংক স্যার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ক্লাস নেন বলে একদিন চকের আগা-গোড়া তেল মাখিয়ে রাখল, বোর্ডটাও নষ্ট করে রাখল যেন স্যার লিখতে না পারেন।
পরে শাস্তি পেতে হয়েছিলো। ভীষণভাবে সেদিন প্রতীজ্ঞা করেছিলো আরেকদিন এর চেয়ে ভয়ংকর কিছু করবে।

বৃষ্টির দিন হেডস্যারের বাসা থেকে স্কুলে আসার পথে বিছানো ইটগুলো সব সরিয়ে রেখেছিলো ,যেন স্যারের স্কুলে আসতে অনেক দেরী হয়।

একবার ফুটবল খেলায় প্রতিযোগী দলের এক সদস্য তাকে ল্যাঙ মেরে ফেলে দেয়। প্রায় দেড় মাস বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছিলো, এই প্রথম সে দুষ্টুমিতে কারো কাছে হেরে যায়। হেডস্যার তাকে দেখতে এসেছিলেন। ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলো সেদিন আর মনে মনে প্রতীজ্ঞা করেছিলো এবার সুস্থ হয়ে ওঠার পর আর কোন দুষ্টুমি করবে না।

সুস্থ হয়ে ওঠার পর থেকে আর কেউ কোন দিন তাদেরকে কোন ধ্বংসাত্মক কাজ করতে দেখেনি। তাদের দুষ্টু ছেলের দল এখন ভালো ছেলের দল হিসেবেই বেশি পরিচিত।

উৎর্সগ: নিহাল সোনা

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯
৩৯টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×