somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাকে মাপ করে দিবেন স্যার !!!!!!!!!

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




গল্পটা পড়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছি কতক্ষণ ধরে বলতে পারব না। সত্যি অসাধারন একটা লেখা।

টিফিন এর সময় সব ছেলে-মেয়ে টিফিন করতে বাইরে গেল । সবাই ক্লাস থেকে বের হয়ে কেউ কেউ গেল ক্যান্টিন এ আবার কেউ কেউ মাঠে খেলতে । কিন্তু এর থেকে একটি ছেলে এর কোনটিতেই গেল না । মাঠের এক কোনে , গাছের নিচে বসে আছে । প্রতিদিন ই এই রকম দেখা যায় । ক্লাসে এ অনেকেই এই ছেলেটিকে দেখতে পারে না । ছেলেটার জামা নোংরা , চুল গুলো এলোমেলো । আর বাকিদের , সুন্দর জামা -কাপড়। সুন্দর করে পরিপাটি করে আসে সবাই শুধু ঐ ছেলেটি ছাড়া । সামনে পরীক্ষা । স্কুলে টাকা দিতে হবে । সবাই যার যার বাসায় জানায় । সবার বাবা-মা এসে টাকা পরিশোধ করে গেছে । শুধু ঐ ছেলেটির পরীক্ষার ফি বাকি । ছেলেটি ক্লাসে আসলেই স্যার ফি এর কথা জিজ্ঞাসা করে । আর ছেলেটি চুপ করে থাকে । এই ভাবে ২-৩ দিন গেল । স্যার রা বুঝতে পারলো , এই ছেলে ার টাকা দিতে পারবে না । হেড স্যারের কাছে নিয়ে ছেলের নামে নালিষ করলো । হেড সার ছেলেটিকে তার রুমে ডাকলো । অনেক বকা ঝকা করলো । বাবা-মা দিয়ে পরের দিন ক্লাসে আসতে বলল । "প্রথম দিন তোমার বাবা-মা এসে সেই যে ভর্তি করে দিয়ে গেল আর তাদের মুখ এ দেখলাম না ১ বছরের । কাল যদি তোমার বাবা-মা আমার সাথে দেখা না করে তুমি আর ক্লাসে আসবে না । এখন যাও । "

ছেলেটির বয়স তত বেশী হবে সা ।১৪-১৫ . ছেলেটি কাদতে কাদতে ক্লাসে গিয়ে তার ছিড়া - ব্যাগ টি নিয়ে বের হয়ে গেল স্কুল থেকে ।

সেই থেকে ছেলেটি আর স্কুলে আসে না ।


অনেক দিন পর সেই স্কুলের হেড স্যার একদিন রাস্তায় রিক্সার জন্য দাড়িয়ে ছিল । কোথা থেকে যেন একটা রিক্সা এসে বলল , স্যার উঠেন । স্কুলে যাবেন ?

স্যার একটু আশ্চর্য হয়ে রিক্সা চালকটির দিকে তাকিয়ে রইলো । একটা ১৪-১৫ বছরের ছেলে রিক্সা চালাচ্ছে । স্যার আরও বেশী অবাক হল , যখন দেখলো এই ছেলেটা সেই ছেলে . যাকে সে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছিল ।

স্যার আর কথা বলতে পারলো ণা । চুপ করে রিক্সায় উঠে বসলো। ছেলেটি কথা বলতে শুরু করলো।

" স্যার , আমাকে চিনছেন ?
= স্যার , না (না চিনার ভান করে বলল - )

"স্যার ঐ দিন পরীক্ষার ফি দিতে পারি নাই তাই আমাকে বের করে দিছিলেন। আমি সেই ছেলে ।

= হুম . চিনতে পারছি

" স্যার আপনে ঐ দিন আমারে স্কুল থেকে বের না করে দিয়ে আমি , আজ না খেয়ে মরতাম ।

= মানে

" স্যার আমি এতিম । রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম । আর বিভিন্ন স্কুলের সামনে দারাইয়া থাকতাম আর ভাবতাম আমি যদি পরতে পারতাম ।

একদিন একটা , সাহেব তার বউ আমারে দেইখা , আপনার স্কুলে ভর্তি করাইয়া দিছিল। আমি অনেক খুশি ছিলাম । কিন্তু স্কুলে ভর্তি করানোর পর আর সেই সাহেব- মেডাম রে দেখি নাই । আর আমি পাগলের মত , খাইয়া না খাইয়া সারা দিন স্কুলে পইরা থাকতাম । সাবই যখন টিফিন খেত , আমি দূরে এক কোনে বসে বসে , সবা্র খাওয়া দেখতাম । আর কান্না করতাম । ক্ষিধা অনেক লাগতো । কিন্তু ক্লাস করতে বেশী ভাল লাগতো । তাই না খাই য়া ক্লাস করতাম । আর রাতে গিয়া রাস্তার পাশে ঘুমাইতাম ।

আপনে আমারে স্কুল থেকে বের করে দেবার পর বুঝতে পারলাম , পড়া শুনা আমাদের জন্য না । যাদের পেটে ১ বেলা বরপেট খাবার জুটে না , বাবা- মা নাই তাদের জন্য পড়া লেখা না । তাই ঐ দিন থেকে স্যার আমি রিক্সা চালাই তাছি । এখন স্যার প্রতিদিন ৩ বেলা হোটেল এ ২ প্লেট ভাত , সাথে মাছ , ডাইল . দিয়া পেট ভইরা ভাত খাই ।

..... স্যার মাফ কইরা দিয়েন , আমি কি সব বকবক কইরা আপনেরে ডিস্টার্ব করতাছি । স্যার স্কুল আইসা পরছে ।

= এই নেও ভাড়া ।
" স্যার এই ডা কি কন ? আপনি আমার স্যার , আপনার থেকে আমি টাকা নিয়া বেয়াদবি করতে পারমু না । স্যার ।

বলে ছেলেটা চলে গেল ।

আর ততখনে , হেড স্যারের , দুচোখ দিয়ে অঝর পানি পড়ছে । রিক্সায় যাও রুমাল দিয়ে মুছতেছিল , কিন্তু এখন যেন আর মুছে শেষ করা যাচ্ছে না । যেই ছেলে টা কে সে , না জেনে অনেক কথা শুনিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়ে ছে , আহ সেই ছেলে তাকে এত সম্মান দিল ? স্যার হাটতে হাটতে আর চোখের পানি মুছতে মুছতে নিজের রুমে ডুকলেন ।


লেখাটির লিঙ্ক
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×