সেপ্টেম্বর। টঙ্গী। টাম্পাকো। কারখানা। শ্রমিক—
আজ রাতেই হয়তো ছুটি; দু'দিন পরেই ঈদ।
মধ্যবয়সী মাতার ফোনকলের নির্মল প্রশ্ন আসে—
ঘরমুখো পুত্র: কাল ভোরের ট্রেনে ফিরবো মা।
সদ্য নাবালিকা পেরুনো বোনের ফোনকলে বুকচাপা আবদার ভাসে—
ঘরমুখো দাদা: লিপি, কী নিবি বল—চুড়ি, ফিতে, টিপ আর গোলাপি জামা?
মৃত্যুঞ্জয়—নবীন পিতা।
তার কন্যার বয়স পাঁচ; একটি স্কুল ব্যাগ নিতে হবে।
বিয়ের দু'মাস হয়েছে। এখনো ঘোমটার আড়ালে কামনার উচ্ছ্বাস কমেনি—কামিনী লতা।
লজ্জাবতীর খুদে বার্তা: ফোনে এসব বলতে পারবো না—মনেকরে দু'প্যাকেট প্যাড কিন্তু নিবে।
সেপ্টেম্বর। টঙ্গী। টাম্পাকো। কারখানা। শ্রমিক—
আজ রাতেই হয়তো ছুটি; দু'দিন পরেই ঈদ।
অর্ধচন্দ্রময় আকাশ। সন্ধ্যে নামে—দুম!
ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় মেঘ জমে যায়, আগুনে চড়ে খুন।
স্থির ভবন।
আগুনের উত্তাপ।
জীবনের আর্তনাদ...
এদিকে আগুনে ঝলসে কাবাব শ্রমিক;
ওদিকে রক্ত-মাংসে উল্লাস—ঈদ...ঈদ!
ফায়ার সার্ভিস, বার্ন ইউনিট—এ সন্ধ্যেতে বিফলে যেতে থাকে সকল ঈশ্বর!
ঊনত্রিশ লাশ—
মধ্যবয়সী মাতার ঘরমুখো পুত্র ভোরের ট্রেনে ফেরে না।
সদ্য নাবালিকা পেরুনো লিপির ঘরমুখো দাদা
চুড়ি, ফিতে, টিপ আর গোলাপি জামা নিয়ে ফেরে না।
মৃত্যুর কাছে হেরে যায়—নবীন পিতা মৃত্যুঞ্জয়;
তার কন্যা বৃথা চেয়ে স্কুল ব্যাগ নিয়ে ফেরা পিতার অপেক্ষায়।
লজ্জাবতী কামিনী লতার ঋতুবদল হয়; কামে ভাটা পড়ে; লজ্জা মিশে যায় দূর নীলিমায়...
ফায়ার সার্ভিস,
পৃথিবীর সমস্ত আগুন থেমে যায়।
তাদের দাউদাউ চিত্তপোড়া আগুন কে নেভায়? কে নেভায়...