somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর মহা আবিস্কার -- মখা স্কেল! যা দিয়ে মানুষের মখাটিভিটি বা মখাত্ব পরিমাপ করা যায়!! কিন্তু সেই বিজ্ঞানীর অবশেষে কি হয়েছিল তা জানতে এই গপ্লটি পড়ুন।

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্টারন্যাশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলন । সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন সারা বিশ্বের সেরা সাইকিয়াট্রিস্টগন । বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন ডঃ আব্দুল্লাহ । সম্মেলনের দুইটি অংশ । প্রথম অংশ জার্মানির ‘বন’ শহরে পরশু শেষ হয়েছে । দ্বিতীয় অধিবেশন বসছে নেদারল্যান্ডের ‘হেগ’ শহরে । এ নিয়ে আজ সকালে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল ডঃ আব্দুল্লাহর বাসায় । বাংলাদেশের পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে – ‘ বাংলাদেশের মনোবিজ্ঞানী ডঃ আব্দুল্লাহ গতকাল বন থেকে হেগে গেছেন’ ।
ডঃ আব্দুল্লার সাত বছর বয়সী ছেলে খবর দেখে তার মাকে প্রশ্ন করেছে- মাম্মি, বাবা কেন বনে পায়খানা করতে গেছেন ? তুমি না বলো- যেখানে সেখানে পায়খানা করলে ডায়রিয়া হয় ?

সকালে স্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে । ডঃ আব্দুল্লার স্ত্রীর নাম মিমু । মিমু তো ঘটনা বলে হাসতে হাসতে কথাই বলতে পারছিল না । এদিকে ডঃ আব্দুল্লার মেজাজ খারাপ । বাচ্চা ছেলেটা বাবার সম্পর্কে কী একটা খারাপ ধারণা পেয়ে গেল । দেশে সাইকিয়াট্রিস্টদের পাগলের ডাক্তার বলা হয় । বিদেশি পাগলের ডাক্তারগুলার ওপর ডঃ আব্দুল্লাহ মহা বিরক্ত হলেন । শালারা সম্মেলন আয়োজনের জন্যে ‘বন’ আর ‘হেগ’ ছাড়া পৃথিবীতে আর জায়গা পেল না ?

প্রথম অধিবেশনে বিশ্বের মানুষের মনস্তাত্বিক অবস্থার ওপর বিস্তর আলোচনা হয়েছিল । নানারকম সমীক্ষা, গবেষণা পত্র উত্থাপন করা হয়েছিল । দিন দিন মানুষের মনস্তত্ব জটিলতর হচ্ছে । মানুষ বেশি মাত্রায় মানসিক চাপে ভুগছে । বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের মানুষেরাই বেশি মানসিক চাপে ভুগছেন । পারস্পরিক সম্পর্কের জটিলতাও বাড়ছে । পরিবার , বন্ধন এই শব্দগুলো কেমন যেন সেকেলে হয়ে যাচ্ছে ।
ডঃ আব্দুল্লাহ প্রথম অধিবেশনে শিশুদের মানসিক অবস্থা নিয়ে একটা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন । এতে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে শিশুদের ওপর ছোটবেলা থেকেই নানামুখি চাপ সৃষ্টি করছে পরিবেশ । শিশুরা নিজেদের ভেতর মেলামেশার সুযোগ পাচ্ছে না , খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না, চিন্তা করার সুযোগ পাচ্ছে না । স্কুল, টিউটর , পরীক্ষা , প্রতিযোগিতা... শিশুরাও এখন মহাব্যস্ত ......

এইসব কথাবার্তা বলেছিলেন প্রায় ঘন্টাখানেক । তিনি নিতান্ত অনিচ্ছা নিয়েই প্রথম অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছিলেন । মনে মনে কিছুটা অস্থিরতাও বোধ করছিলেন । কখন তাঁর আবিস্কার উপস্থাপন করবেন সে নিয়ে টেনশন বোধ করছিলেন । তিনি আশা করেন – এই আবিস্কার দেখে সবাই টাস্কি খেয়ে যাবে ।

অবশেষে ‘হেগ’ এ শুরু হলো ইন্টারন্যাশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব । এই অধিবেশনে মনোবিজ্ঞানের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে । পরিকল্পনা হবে । নতুন পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা হবে । এছাড়া মনোবিজ্ঞানের উন্নয়নে বিশ্বের সাইকিয়াট্রিস্ট গণ কী করেছেন তা নিয়ে পর্যালোচনা হবে ।

অনেকেই অনেক জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা শুরু করলেন । বেশিরভাগই চিকিৎসা সংক্রান্ত । বেশ কিছু নতুন ড্রাগের কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা হলো । সিজোফ্রেনিয়া, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার , হিস্টিরিয়া, ম্যানিয়া , ফোবিয়া এইসব নিয়ে কথাবার্তা । কোন ড্রাগ কোন রোগে ভালো কাজ করছে- এইসব আবিস্কার আরকি ।

একসময় এলো ডঃ আব্দুল্লাহর পালা । তিনি তাঁর প্রেজেন্টেশন শুরু করলেন । সবাই উৎসুক হয়ে তাঁকিয়ে রইলো প্রোজেক্টরের দিকে । বাংলাদেশের এই বিজ্ঞানী একটি ‘মানসিক অবস্থা পরিমাপক স্কেল’ আবিস্কার করেছেন ।
ডঃ আব্দুল্লাহ বলছিলেন- দেখুন বিশ্বে অনেক কিছু নিয়ে স্কেল আবিস্কৃত হয়েছে । পদার্থ-রসায়ন বা গণিতের কথা বাদ দিলে চিকিৎসা বিজ্ঞানেও বেশ কিছু স্কেল প্রচলিত আছে । ব্রেইন ফাংশান বোঝার জন্য গ্লাসগো কোমা স্কেল , মেটাবলিক অবস্থার জন্য বডি মাস ইনডেক্স স্কেল............ ইত্যাদি । কিন্তু আমাদের এই সেক্টরে তেমন কোন সহজ স্কেল এখনো চালু হয়নি ।

কারো মানসিক অবস্থা যাচাই করার জন্য আমি একটি স্কেল আবিস্কার করেছি । এই ক্ষুদ্র ডিভাইসটি সহজেই একজন মানুষের মানসিক অবস্থা নির্ণয় করবে এবং এটিকে একটি গ্রেডে প্রকাশ করবে ।

এই স্লাইডে দেখুন – এই ডিভাইসটি যে স্কেলে মানুষের মানসিক অবস্থা প্রকাশ করবে সেটির নাম দিয়েছি ‘মখা স্কেল’ । ‘মখা’ স্কেলে শুন্য থেকে একশ পর্যন্ত গ্রেড আছে । এখানে সর্বনিম্ন অবস্থা জিরো । সর্বোচ্চ একশ । যার গ্রেড যত কম তাঁর মানসিক অবস্থা ততটা ভালো । ‘একশ’ গ্রেডটি যে অবস্থা নির্দেশ করে তা আমাদের দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মানসিক অবস্থা । তিনি বলেছেন- কয়েকজন মানুষ ইচ্ছে করলেই ধাক্কা দিয়ে একটি নয়তলা বিল্ডিং ধ্বসিয়ে দিতে পারে । একজন মানুষকে ইনসেন বা পাগল বলার জন্য তার মখা স্কেল গ্রেড অবশ্যই সত্তরের উপরে হতে হবে ।

এই স্কেলের প্রতি গ্রেডকে বলা হবে মখাটিভিটি বা মখাত্ব । ধরুন আপনার অবস্থা নির্দেশ করছে ষাট । তাহলে আপনার মখাটিভিটি বা মখাত্ব ষাট । আপনার অবস্থা খারাপের দিকে ।

বিপুল হাততালি হতে লাগলো হলরুমে । হাততালির শব্দে ডঃ আব্দুল্লার আওয়াজ আর শোনা গেল না ।

..............................

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে একবছর আগের কথা ভাবছিলেন ডঃ আব্দুল্লাহ । ঐ সম্মেলন ডঃ আব্দুল্লার আবিস্কারকে যুগান্তকারী আবিস্কার বলে ঘোষণা করেছিল । সেদিন সারাবিশ্বের মনোবিজ্ঞানীরা তাঁদের মখাটিভিটি জেনেছিলেন । সৌভাগ্যক্রমে সবার অবস্থাই মোটামুটি ভালোই ছিল । কারো মখাটিভিটি বিশ গ্রেড অতিক্রম করেনি ।

বিশ্বের বিখ্যাত পত্রপত্রিকাগুলিতে ডঃ আব্দুল্লাহর যুগান্তকারী আবিস্কারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয় । তাঁর ছবিসহ বিশাল বিশাল ফিচার ছাপানো হয়েছিল । তিনি ভেবেছিলেন দেশে ফিরে বিশাল সংবর্ধনা পাবেন । কিন্তু বিধি বাম । বিমানবন্দরে নামার সাথে সাথে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় । তাঁর এই আবিস্কারে বাংলাদেশ সরকারের মখানুভূতিতে আঘাত লাগে । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে মামলা করেন ।

ইতোমধ্যে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মখা স্কেল । বাণিজ্যিক ভাবে বিশেষ ডিভাইস বাজারজাত করা হয়েছে । মানুষ সবাই সাথে মখা স্কেল বহন করছে এবং কোন কাজ করার আগে নিজের মখাত্ব নির্ণয় করে নিচ্ছে ।

বাংলাদেশে মখা স্কেল এখনো নিষিদ্ধ । ধারণা করা হচ্ছে মখা স্কেল বাংলাদেশে চালু হলে দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক হোমরা চোমরার মখাটিভিটি বা মখাত্ব গ্রেড সত্তর অতিক্রম করবে । এরকম লোকদেরকে জনগন কোনভাবেই নিজেদের নেতা হিসেবে মানতে চাইবে না ।

জেল সুপারকে দেখা যাচ্ছে হাতে কিছু কাগজ নিয়ে ডঃ আব্দুল্লাহর সেলের দিকে এগিয়ে আসছেন । ওমা একি – তাঁর সাথে তো জাপানের মনোবিজ্ঞানী হাগুতো মুতিয়াটা কে দেখা যাচ্ছে । কাহিনী কি ?

জেল সুপার এসে সালাম দিলেন । ডঃ আব্দুল্লাহ , আপনাকে অভিনন্দন । নোবেল কমিটি আপনাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিয়েছে । আপনার আবিস্কারের ফলে সারাবিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । অপরাধ অনেক কমে গেছে । সবাই তাঁদের মখাত্ব নির্ণয় করে কাজ করায় কাজকর্ম সুচারুরুপে সম্পন্ন হচ্ছে । বিশ্বের অনেক নেতার মখাত্ব গ্রেড সত্তরের ওপরে হওয়ায় তারা অবসর নিতে বাধ্য হয়েছেন । আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আপনার মুক্তির জন্য বাংলাদেশকে চাপ দিয়েছেন । এছাড়া বাংলাদেশেও মখা স্কেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ করেছে । আসুন বেরিয়ে আসুন । বাইরে আপনার জন্য বিশেষ বিমান অপেক্ষা করছে ।

ডঃ আব্দুল্লাহ হতবাক হয়ে গেলেন । বাইরে পা দিয়ে মনের অজান্তে গান গাইতে লাগলেন তিনি-

‘আমরা সবাই মখা আমাদেরই মখার রাজত্বে
নইলে মোদের মখার সনে মিলবে কি সত্বে......’

ভ্রু কুঁচকে গেল জাপানের মনোবিজ্ঞানী হাগুতো মুতিয়াটার । তাঁর কাছে থাকা ‘মখা স্কেল’ লাল বাতি নির্দেশ করছে । গ্রেড সিক্সটি । অবস্থা ভালোনা ।

ব্যাপার দেখে ডঃ আব্দুল্লাহ মুচকি হেঁসে আবার শুরু করলেন-

‘আমরা সবাই মখা আমাদেরই মখার রাজত্বে
নইলে মোদের মখার সনে মিলবে কি সত্বে
আমরা সবাই মখা.........’

............এই গল্পটি লিখেছেন Muhsin Abdullah Mu
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×