মাথা কাজ করছে না, মনে হচ্ছে ঘোরের মাঝে ঢুবে যাচ্ছে। মনে হল খুব কাছ দিয়ে নিশব্দে কেউ গেল। পায়ের দিকে দরজাটা লাগানো। খাটের মাথার পর জানালা। মনে হল দরজা না খুলেই কেউ রুমে ঢুকে জানলার দিক দিয়ে বার হয়ে গেল। নিজেকে ও প্রশ্ন করল 'আমি কোথায়'?
লজিক কাজ করছে না। ভয়ন্কর ভয়ে সব তাল গোল হয়ে যাচ্ছে। রাতে প্রচন্ড গরমের অনুভূতি নিয়ে ঘুমাতে গেছে। তালগোল পাকানো স্বপ্নের শুরুতে, ঠান্ডা লাগা শুরু। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় হাতের কাছে একটা বড় টাওয়েল পেয়ে ওটাই গায়ে জড়িয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে জমে যাবে। ফ্যানটা বন্ধ করা দরকার।
আবার চোখ খুলল। জানালা গলে হালকা আলো আসছে। ভোর হয়ে গেছে। হটাৎ মনে হল সামনে দেয়াল না, কাচ। তার ওপাশে স্যাতশ্যাতে জংলায় গরিলার মত কিছু একটা বসে আছে। এক বা একাধিক। রোমস, বিশাল। চোখ বন্ধ করে ফেলার পরও গেল না চোখের সামনে থেকে।
এবার মনে হল মাথার পেছনেও কি হচ্ছে অনুভব করতে পারছে সে। মনে হল পিছনে কি হচ্ছে সব দেখছে। কোথা থেকে এসে আবার কোথায় যেন মিলিয়ে যাচ্ছে এরা। অদ্ভুত কিছু অস্তিত্ব। না যন্তু না মানুষ। ভাল করে খেয়াল করার চেষ্টা করে দেখল, দেখল আসলে এরা আকারে প্রকারেই ভয়ন্কর। কেউ ভয় দেখানোর মত কিছু করছে না।
আসলে এরা ওর অস্তিত্ব সম্পর্কেই উদাসীন। কেউই ওকে ঘাটাচ্ছে না, বা তাকে দেখছেই না।
রিজওয়ানা খুব সাবধানে পাশ ফিরল। ওটা কি নেকডে? নাকি মায়া-নেকডে, ওয়ার উলফ? যেতে যেতে তার দিকে একপলক তাকিয়ে গেল, পেছন ফিরে। ঠিক যেন চোখের মাঝে তাকাল, তার পর ঝাপসা কুয়াশার মঝে ঢাকা পড়ে গেল।
বুকের গভীর পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তলপেটে শিরশিরে অনুভূতি। মনে হয় জ্বর এসেছে। মথার মধ্যে প্রবল ঘূর্নিবার্তা। সো সো সো। মনে হল অথৈ জলে তলিয়ে যাচ্ছে, অনুভূতির শেষ সীমা...
(....)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:৫১