Click This Link
শুরু করি আমার এক বন্ধুর ফেইসবুকে ওয়াল পোস্ট দিয়ে
"বি.এম কলেজে এসে প্রথম যেদিন class করলাম কাউকে চিনিনা!হটাত্ পিছন দিক থেকে এক হাবাগোবা,টাকমাথা ওয়ালা ছেলে আমায় ডাক দিল!আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম কি ভাই? সে বলল নাম কি? আমি হাত বাড়িয়ে বল্লাম "জিকো"।সে বলল জিউক্কা!আমি হেসে বললাম আপনার নাম ?সে বলল "সো-হাইগ্গা"!এরপর বুঝলাম ওর যুক্ত অক্ষরে ঝামেলা আছে; এরপর ও আমাদের অন্যান্য বন্ধু যেমন কবিরকে,তুষারকে প্রথম দুই অক্ষরের সাথে মানব দেহের একটি অঙ্গ সন্ধি বিচ্ছেদ করে(অনেকের সুক্ষ রুচির ব্যাঘাত হতে পারে) ডাকতো! দোস্ত সোহাগ সেই দিনগুলো কথা আমার খুব মনে পরছে ,দেখ আমার চোখ ভিঝে গেছে! Miss u dosto shohag @ shohaigga."
মনে পড়ে গেল অনার্সের সেই দুরন্ত দিনগুলোর কথা। একটা অপ্রতিরোধ্য জীবন-যাপন করতাম তখন।
আমাদের তখনকার বিভাগীয় প্রধান শ্রদ্ধেয় হাবিব স্যারের কথা "আমার দীর্ঘ চাকরীর জীবনে এমন ব্যাচ আমি দেখি নাই"।
এক ম্যাডাম শ্রদ্ধেয় দুল-আশয়ারী একদিন আমায় বলেন "আমার দীর্ঘ চাকরীর জীবনে আমি দু'জন ছাত্রকে কোন দিন ভুলতে পারব না, এক হলা তুমি আর একজন ছিল আমাদের তিন ব্যাচ বড়। তোমরা কখনো নিজের কথা চিন্তা কর নাই সব সময় ডিপার্টমেন্টের কার কি সমস্যা তাই নিয়া ভাববছ। অন্যের জন্য সব সময় যে কোন ধরনের ধুঁকি নিতে তোমরা আপত্ত কর নাই। তোমরা আগুন লাগিয়ে দাও কিন্তু কারো গায়ে তার আঁচ লাগতে দাও না। তোমরা আমার ছাত্র হলে হলেও আমি তোমাদের শ্রদ্ধা করি"।
এক স্যার (নামটা উল্লেখ না করি), আমায় একদিন বলের, "সোহাগ তোমার সাথে আমি সব সময়ই বন্ধুর মত আচরন করছি। কাজেই তুমি আমায় বন্ধু, বড় ভাই, যা ইচ্ছা ভাবতে পার"
আমাদের প্রক্টিক্যাল পরীক্ষায় দায়িত্বরত ইন্টার্নাল স্যার আমার কাছে এসে বলে, "একজন ছাত্রের কয়টা সুপারিশ দরকার?" আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধু কবির বলে "স্যার কথাটি কি আপনি সোহাগকে বলছেন?" স্যার বলেন "আমার হাতে ৭ (সাত) টি একই নাম্বার আছে যার সবগুলো-ই অন্য স্যাররা দিয়েছেন। সেই নাম্বারটা তো সোহাগের-ই জানতাম"। কবির বলে " স্যার; আমি নিশ্চিত সোহাগ কখনো করো কাছে সুপারিশের জন্য যায় না। ওর সুপারিশের দরকার হয় না।"
আমাদের কলেজে এক নতুন স্যার এসেছেন, তাঁর আমার সম্পর্কে কোন ধারনা না থাকায় একদিন সব স্যারদের মাঝে আমার সমালোচনা করতে ছিলেন। তখন অন্য স্যাররা বলে উঠেন, "স্যার আপনি হয়তো জানেন না সোহাগ যা বলবে ডিপার্টমেন্টের ছোট, বড় বা সম ব্যাচের সকল ছাত্র তাই-ই করবে। সবাই ওকে এতই ভাল জানে"।
যখন অনার্স প্রথম ব্যাচে ক্লাশ শুরু হয় কেন জানি প্রথম থেকেই সবার কাছে খুব প্রিয় হয়ে উঠছিলাম। কেন জানি সবাই নিজে থেকেই আমার উপর নির্ভর করত। এই দায়িত্ব অঘোষিতভাবেই এসে পড়ত। দেখা গেল কোন কাজের চাঁদা তোলার দায়িত্ব অন্য কাউকে দেয়া হল কিন্তু সবাই নিজে থেকেই আমার কাছে চাঁদা দিয়ে যেত।
কেউ কোন সমস্যায় পড়লে কোন না কোন পর্যায়ে আমার কাছে আসত।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ডিপার্টমেন্টের যে কোন ধরনের গোপন তথ্য বা খবর আমার কানে আসত-ই।
সবশেষ একটি মজার তথ্য দিয়ে শেষ করি:
একদিন প্রাক্টিক্যাল ক্লাশে আমাদের এক নতুন স্যার খুব বকাবকি করতে ছিল। গালাগালি ও করতে ছিল। আমিও সেই ক্লাশে উপস্থিত। কিন্তু আমি কোন কথা না বলে নিরবে আমার আস্তানায় ফিরে আসি। কিছু পরেই আমাদের অন্য এক স্যার আমার কাছে এসে উপস্থিত। আমার পাশে বসলেন। হাঁপাতে হাঁপাতে বললেন, "সোহাগ তুমি কিছু মনে কর না, ...... (সেই স্যারের নাম...) তোমার সম্পর্কে তো জানে না কিছুই।" আমি বলি, "কেন স্যার কি হয়েছে?"। স্যার বলে , ".... তো ক্লাশে বকাবকি করছে। আমি ওকে বুঝিয়ে বলব। আর এমন করবে না"। আমি বলি, "না স্যার; এটা কোন ব্যাপার না, স্যারদের গালি আমাদের কাছে আশির্বাদ স্বরূপ"।
সত্যি আবারও চোখে জল এসে যায়, ভালবাসার ঘায়ে।
Click This Link