somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জীবজগতের পরিনতি

৩০ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানিং পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ে ব্যপক কথা বার্তা হচ্ছে সারা দুনিয়াতে । বিশেষ করে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষ উদ্বিগ্ন। উদ্বিগ্ন না হয়ে উপায়ও নেই। দিন দিন যে ভাবে উষ্ণতা বেড়ে চলেছে তা সত্যিই আতংকের বিষয়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছেন উনবিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের পর পরই মূলত: বিশ্বের বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর কারনও খুব সোজা তা হলো - এ সময়ের পর থেকে শিল্প উৎপাদন ক্ষেত্রে যে যন্ত্রের ব্যপক ব্যবহার শুরু হয় তার চালিকা শক্তি ছিল ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ্বালানী যেমন- কয়লা, তেল এসব। কয়লা ও তেল পোড়ালে বিপুল পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। এটা আমরা এখন প্রায় সবাই জানি। আর এটাও জানি যে , কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস হলো একটা গ্রীন হাউস গ্যাস। গ্রীন হাউস গ্যাস বলতে কি বোঝায়? অনেকেই বিষয়টি জানেন। তার পরেও একটু খোলাসা করা যাক। আমরা দেখেছি -শীত প্রধান দেশে কাঁচ দিয়ে এক খন্ড জমি উপর নীচ ঘেরা দেয়া হয় ও তার ভিতর শাক শবজি চাষ করা হয়, যাকে গ্রীন হাউজ বলা হয়। প্রচন্ড শীতের সময় যখন বাইরে বরফ জমতে থাকে , তখন এ গ্রীন হাউজের মধ্যে কোন বরফ জমে না। এর কারন হলো - স্বচ্ছ কাঁচের ফাক দিয়ে সূর্যের যে পরিমান তাপ ভিতরে প্রবেশ করে ঠিক সেই পরিমান তাপ আর বিকিরিত হয়ে বের হতে পারে না। কাঁচের দেয়াল তাপ বিকিরনে বাধা দেয়। তাই কিছু পরিমান তাপ ভিতরে অতিরিক্ত জমা হয়ে থাকে। এর ফলাফল হলো - গ্রীন হাউজের ভিতরকার তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার চাইতে বেশী থাকে তাই বাইরে বরফ জমতে শুরু করলেও ভিতরে তা জমে না ও উষ্ণ থাকে আর তার ফলে শীত কালেও শাক শবজি চাষ করা সম্ভব হয়। একে বলে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া। তো এ গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ার নাম থেকেই গ্রীন হাউজ গ্যসের নাম করনের সূত্রপাত।

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ক্ষেত্রে কার্বন ডাই অক্সাইড তাপ ধরে রাখার কাজটা করে বলে একে গ্রীন হাউজ গ্যাস বলে। তার মানে- সূর্য থেকে যে পরিমান তাপ পৃথিবীতে পতিত হয় ঠিক সেই পরিমান তাপ প্রতিফলিত হয়ে পূনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায় না। তা যদি যেত তাহলে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটত না। এ তাপের একটা অংশ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে থাকে, এর ফলে এরা নিজেরা যেমন কিছুটা উত্তপ্ত হয়, তেমনি গোটা বায়ূমন্ডলকেও উত্তপ্ত করে তোলে। কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস যে পরিমান তাপ শোষন করত তা যদি আবার রাতের বেলায় বিমুক্ত করে দিত তাহলে কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। তবে পৃথিবীর জলবায়ূ গঠনের জন্য আবার সীমিত আকারে এ প্রতিক্রিয়ার দরকারও আছে। তা না হলে পৃথিবী হতো প্রচন্ড ঠান্ডা একটা জায়গা। সমস্যা হচ্ছে- বর্তমানে যা ঘটছে তা হলো বিষয়টা বর্তমানে চলছে নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে । এটাই আমাদের বিশ্ব প্রাকৃতিক পরিবেশকে বিরাট রকম হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। অবশ্য শুধু যে কার্বন ডাই অক্সাইড ই এ কান্ড টি করে মানে গ্রীন হাউজ গ্যাসের কাজটা করে তা কিন্তু নয়। বায়ূমন্ডলের জলীয় বাষ্প, মিথেন গ্যাস এরাও দারুন ভাবে এ কাজটা করে। যেমন- জলীয় বাষ্প প্রায় ৩৬-৭০%, কার্বন ডাই অক্সাইড ০৯-২৬%, মিথেন-০৪-০৯%, ওজোন ০৩-০৭% পর্যন্ত গ্রীন হাউজ এফেক্টের কাজ করতে পারে। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন ওঠে- সব দোষ কেন কার্বন ডাই অক্সাইডের ওপর দেয়া হচ্ছে? গুরুত্ব পূর্ন প্রশ্ন। বিষয়টি হলো - সেই লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে যে পানি ছিল তা আজও প্রায় একই রকম আছে তাই তা থেকে উৎপন্ন জলীয় বাষ্পের পরিমানও প্রায় একই রকম।ওজোন গ্যাসের বিষয়টাও তাই। সেকারনে এরা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পর্যায়ক্রমিক ভাবে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশকে নিয়ন্ত্রন করেছে। তাই পৃথিবীতে পর্যায় ক্রমিকভাবে কখনো বরফ যুগের সূচনা ঘটেছে কখনো বা উষ্ণ যুগের সূচনা ঘটেছে , বলা বাহুল্য তা ছিল নিয়মতান্ত্রিক ও ভারসাম্যপূর্ন। যখন খুব ঠান্ডা যুগের সূচনা ঘটেছে তখন পৃথিবীতে বিচরন করা বিভিন্ন প্রজাতির প্রানীর এক বিরাট অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তবে শুধুমাত্র বায়ুমন্ডলের জলীয় বাষ্প বা অন্যান্য গ্যাসই এসব বিরাট পরিবর্তনের একমাত্র নিয়ামক তা ঠিক নয়, এর সাথে আরও অন্যান্য নিয়ামক আছে। কখনো কখনো উল্কাপাতও আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। এখন সবাই জানে যে আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি বছর আগে সারা দুনিয়ার প্রবল পরাক্রান্তের মত বিচরন করে বেড়ানো ডাইনোসর জাতীয় প্রানীরা সমূলে বিনাশ হয়ে গেছে এরকমই একটা উল্কাপাতের কারনে। প্রায় ১২ কোটি বছর আগে সৃষ্ট ডাইনোসররা গোটা পৃথিবীতে দাপটের সাথে সুদীর্ঘ ৬ কোটি বছর রাজত্ব করার পর অবশেষে তারা সমূলে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঘটনা বিজ্ঞানী মহলে দারুন কৌতুহল আর আগ্রহের বিষয়। কিভাবে উল্কাপাতের ফলে সেটা সম্ভব? বেশ বড় আকারের ( আনুমানিক এক কিলোমিটার লম্বা) একটা উল্কা পিন্ড যখন প্রচন্ড বেগে ( প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪৫ কিমি) পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল ( অনুমান করা হয় আমেরিকার আরিজোনাতে, সাগর মহাসাগরের কোথাও পড়তে পারে) তখন সে সংঘর্ষটা ছিল কয়েক হাজার পারমানবিক বোমার সমতূল্য। এতে গোটা পৃথিবীর আকাশ ধুলিপূর্ন মেঘে ঢাকা পড়ে গেছিল দীর্ঘদিন। এর ফলে সূর্য থেকে আলো ও তাপ ঠিক মতো পৃথিবী পৃষ্ঠে পতিত হয়নি দীর্ঘ সময়। একারনে পৃথিবীতে বন জঙ্গলের এক বিরাট অংশ ধ্বংশ হয়ে গেছিল সঠিক তাপ ও আলোর অভাবে। তাতে তৃণভোজী প্রজাতির একটা বিরাট অংশই খাদ্যের অভাবে মারা যায়। অন্যদিকে তৃন ভোজী ডাইনোসররাও খাদ্যের অভাবে সব মারা যায়, অন্যান্য প্রজাতির প্রানী মারা যাওয়াতে খাদ্যের অভাবে মাংশাসী ডাইনোসররাও সবাই মারা যায়। তাদের এ মৃত্যূ ত্বরান্বিত হয় তারা মূলত ঠান্ডা রক্তের প্রানী বলে। যেমন- সাপ বা ব্যাঙ এরা ঠান্ডা রক্তবাহী প্রানী। যে কারনে শীত কালে এরা বাইরে তেমন বিচরন করে না। গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকে যাকে হাইবারনেশন বলে। শীত কাল পার হলেই গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে। তাপের অভাবে ডাইনোসরদের ডিমগুলো ফুটে বাচ্চা বেরোয় না। সব ডিমগুলো জমে যায়। যা এখনও বিভিন্ন যায়গাতে ফসিল আকারে পাওয়া যায়। এভাবেই তখন ডাইনোসর সহ এক বিপুল সংখ্যক প্রজাতির বিনাশ ঘটে যায় দুনিয়া থেকে। তবে এ ধরনের ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে ক্ষুদ্র আকারের উষ্ণ রক্ত বাহী স্তন্যপায়ী প্রানীদের কিছু বেঁচে যায়। আর তাদের থেকেই উদ্ভব ঘটে আজকের বিপুল সংখ্যক স্তন্যপায়ী প্রজাতির যার অন্যতম এক প্রজাতি আমরা মানুষরাও। সুতরাং ধরে নেয়া যায় যে - এ ধরনের উল্কাপাতের মত একটা ঘটনা না ঘটলে দুনিয়াটা এখনও ডাইনোসরদের কবলেই থাকত। হয়ত এসব ডাইনোসররা বুদ্ধিমান জীবে পরিনত হতো , কে জানে ? যাহোক, এত কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে - সব সময় নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই যে পৃথিবীর সব কিছু চলেছে বা চলে তা ঠিক নয়।

আবার পূর্বের প্রসঙ্গে ফিরে যাই। কেন সব দোষ কার্বন ডাই অক্সাইডের ওপর দেয়া হচ্ছে? কারন, মানুষ খুব দ্রুত বায়ূমন্ডলে এ গ্যাসটির পরিমান বৃদ্ধি করেছে ও অদ্যাবধি করে চলেছে। যে কারনে এ গ্যাসের কারনে বিশ্ব বায়ূমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই মানুষ জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে বহুগুন। একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, বর্তমানে যে পরিমান জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো হয় তা থেকে আনুমানিক ২১.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয় প্রতি বছর। তবে পুরো কার্বন ডাই অক্সাইড যে বায়ূ মন্ডলে জমা হয় তা ঠিক নয়। এর একটা অংশ সবুজ গাছপালা তাদের খাদ্য প্রস্তুতের জন্য ব্যবহার করে যাকে আমরা সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বলি আর বস্তুত: যা গোটা জীব জগতের খাদ্যের যোগান দেয়। দেখা গেছে, এভাবে উদ্ভিদ কর্তৃক ব্যবহার ও সাগরের পানি কর্তৃক শোষণ ইত্যাদির মাধ্যমে উৎপাদিত কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্র ৫০% অর্থাৎ ১০.৬৫ বিলিয়ন টন বিনষ্ট হয় কিন্তু বাকী ১০.৬৫ বিলিয়ন টন বায়ূমন্ডলে অতিরিক্ত হিসাবে জমা হয় ও প্রতি বছর এ হারেই কার্বন ডাই অক্সাইড জমা হয়ে চলেছে। একটা সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০০৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতি দিন প্রায় ১৮ মিলিয়ন টন কয়লা, ৮৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ও ১.০৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। যদি এ মাত্রায় ব্যবহার স্থির থাকে তাহলে পৃথিবীতে এ পর্যন্ত নিশ্চিত প্রাপ্ত জীবাশ্ম জ্বালানী দিয়ে চলতে পারে:কয়লা- ১৪৮ বছর, তেল - ৪৩ বছর ও প্রাকৃতিক গ্যাস- ৬১ বছর। তবে উৎপাদনে যায় নি এমন ধরনের সম্ভাব্য খনির মজুদ হিসাবে ধরলে এ হিসাব টা হবে এরকম- কয়লা-৪১৭ বছর, তেল- ৪৩ বছর, গ্যাস- ১৬৭ বছর (সূত্র: উইকিপিডিয়া) ।তবে হিসাবটা স্থির নয় কারন প্রতি বছর সারা বিশ্বের জ্বালানী চাহিদা বাড়ছে। এখন চলছে ২০১০ সাল, যে হিসাব দেয়া হলো তা ৪ বছর আগের,তার মানে ইতোমধ্যেই চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে ও সে হিসাবে জ্বালানী পোড়ানো হচ্ছে। তার অর্থ- প্রমানিত রিজার্ভ আগের হিসাবে না থেকে তা কমে যাবে। জ্বালানী পোড়ানোর মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো- আরও অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন ও তা বায়ূমন্ডলে জমা হওয়া যা পরিনতিতে বায়ুমন্ডলের আরও বেশী উষ্ণায়ণ। বিশেষ করে বিংশ শতাব্দীর শেষ তিন দশকে সারা বিশ্বে জ্বালানী ব্যবহারের মাত্রা অতি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিশ্বের উন্নত দেশ সমূহের পাশা পাশি অনেক উন্নয়নশীল দেশ তাদের উন্নয়নকে লক্ষ্যনীয় পর্যায়ে উন্নীত করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে- চীন, ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিন কোরিয়া, দক্ষিন আফ্রিকা ইত্যাদি দেশের কথা ধরা যায়। এছাড়া অন্যান্য ছোট ছোট উন্নয়নশীল দেশও লক্ষনীয় মাত্রায় অগ্রগতি সাধন করে। একারনে একদিকে যেমন জ্বালানী তেলের ব্যবহার বেড়েছে অন্যদিকে ব্যপকভাবে বনাঞ্চল উজাড় করে সেখানে নতুন নতুন জনবসতি গড়ে উঠেছে, ফসল ফলানোর জন্য কৃষি জমিতে পরিনত করা হয়েছে। ব্রাজিলের বিখ্যাত রেইন ফরেষ্ট আমাজন বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্যের একটা বড় নিয়মকের ভূমিকা পালন করে। ব্রাজিলে বিগত কয়েক দশকে ব্যপকভাবে সে বন উজাড় করে নতুন নতুন জনবসতি ও চাষ যোগ্য জমি সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া ভারত চীন ইত্যাদি দেশ সহ আফ্রিকা ইত্যাদি জায়গাতে ব্যপক ভাবে বন উজাড় করা হয়েছে অতিরিক্ত জনবসতির চাহিদা মিটাতে। যার ফলে, বিশ্বে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের যে প্রাকৃতিক স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র সবুজ গাছ পালা তাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমানে কমে গেছে। এতে বায়ূমন্ডলে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড প্রতি নিয়ত জমা হচ্ছে যা পরিশেষে বিশ্ব উষ্ণায়নকে বেগবান করছে।

বায়ুমন্ডলে বর্তমানে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান ৩৯০ পি পি এম যা প্রতি বছর প্রায় ২ পি পি এম বা তারও বেশী হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পি পি এম হলো - পার্টিকেল পার মিলিয়ন। অর্থাৎ বায়ূমন্ডলের প্রতি এক মিলিয়ন অনুর মধ্যে ৩৯০ টা অনু হলো কার্বন ডাই অক্সাইড। পরিমানটা দেখে খুব কম মনে হতে পারে কিন্তু দেখা গেছে, এই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের স্বল্প মাত্রাই মিলিয়ন মিলিয়ন বছরে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশকে পাল্টে দিয়েছে। অতীতে পৃথিবী যে মাঝে মাঝে বরফ যুগের মধ্য দিয়ে গেছে আবার তা শেষ হয়েছে, এর পুরা নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমানের কমা ও বাড়ার ওপর। কমে যাওয়ার মানে হলো- বিশ্ব অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা হয়ে যাওয়া যার ফলে বরফ যুগের সূচনা, আবার যখন এর পরিমান বেড়েছে তখন বিশ্ব উষ্ণ হয়েছে ও দুনিয়ার বিরাট অংশ বরফ মুক্ত হয়েছে। এ ঘটনাটাই বিগত লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চক্রাকারে ঘটেছে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে। তবে মাঝে মাঝে উল্কা পাত বা আগ্নেয়গিরির অগ্নুতপাত এ নিয়মের মধ্যে ছেদ ঘটিয়েছে। বর্তমানে সেই প্রাকৃতিক নিয়মের একটা বড় রকম ব্যত্যায় ঘটিয়েছে মানুষ। আর তাই এর প্রেক্ষিতে যাবতীয় ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার শিকারও মানুষ। ব্যপক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা গেছে গত ৮ লাখ বছরের মধ্যে এটাই বায়ূমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের সর্বোচ্চ পরিমান।

নানা তথ্য উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ১৮৫০ সালের আগে , হাজারের বেশী বছর ধরে বিশ্ব তাপমাত্রা সার্বিকভাবে স্থির ছিল। এর পর থেকেই বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। কারন সহজেই বোধগম্য। এ সময় থেকেই মানব জাতি শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করে, অন্যন্য কাজে জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহারের মাত্রা বাড়ায়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের আগ পর্যন্ত এ উষ্ণায়নের গতি অতটা মারাত্মক ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকেই উষ্ণায়নের গতি বেগবান হয় যা বিগত কয়েক দশকে রীতি মতো মারাত্মক পর্যায়ে পৌছেচে। একটা সমীক্ষায় দেখা যায়- ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি দশকে বিশ্ব তাপমাত্রা বেড়েছে গড়ে ০.২৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড হারে (সূত্র: উইকিপিডিয়া)। তার মানে গত ৩০ বছরে এটা বেড়ে ০.৭৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড হয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে এক ডিগ্রীর কম অর্থাৎ খুব কম বলে মনে হতে পারে, কিন্তু গোটা বিশ্বের বায়ূমন্ডলের সাপেক্ষে এটা কম তো নয়ই বরং গোটা বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ওলট পালট করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট আর যা আমরা ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করছি। সারা দুনিয়াতে ঘূর্ণিঝড় , হারিকেন ইত্যাদির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে, আগের চাইতে অনেক ঘন ঘন এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটছে। এন্টার্কটিকার জমাট বরফ গলে গেছে অনেক খানি, উত্তর মেরুর বরফেরও অনেকটা পানিতে পরিনত হয়ে গেছে,পৃথিবীর বিভিন্ন পাহাড় পর্বত শৃঙ্গে থাকা হিমবাহের অনেকগুলোই নেই হয়ে গেছে, বাকীগুলোও নেই হয়ে যাওয়ার পথে। এর ফলে সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে লক্ষনীয় ভাবেই। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, ভারত ইত্যাদি সহ অন্যান্য সাগর মহাসাগর সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল আস্তে আস্তে পানির নীচে যেতে শুরু করেছে। এই ০.৭৫ ডিগ্রী হলো গড় বৃদ্ধি । বাস্তবে কোথাও .২৫ আবার কোথাও বা ১ ডিগ্রীর বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন গত ৩০ বছর যাবত এন্টার্কটিকার তাপমাত্রা প্রতি দশকে ০.৫ থেকে ০.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মানে কমপক্ষে ১.৫ ডিগ্রী সে. বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত ৩০ বছরে (সূত্র: British Antarctic Survey, Natural Environment Research Council, Cambridge CB3 0ET, UK.). ২০০৫ সালে নাসার বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে প্রমান পেয়েছেন যে শুধুমাত্র ২০০৫ সালেই প্রায় ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মত এক বিশাল জায়গার বরফ গলে গেছে(Click This Link) । আরও প্রমান পাওয়া গেছে যে , দিন যতই যাচ্ছে আরও অনেক বেশী বরফ গলে যাচ্ছে , যে সব হিমবাহ আছে তার পুরুত্ব কমে যাচ্ছে। ডিসকভারী বা জিওগ্রাফিক চ্যনেলে প্রতি নিয়ত এন্টার্কটিকা মহাদেশের বরফ কি মাত্রায় গলে যাচ্ছে তার প্রামান্য চিত্র অহরহ প্রচার করে। পৃথিবীর প্রায় ৯০% বরফ আছে এন্টার্কটিকা মহাদেশে। যদি এ মহাদেশের সব বরফ গলে যায় কোন এক দিন তাহলে সাগর মহাসাগর তলের উচ্চতা প্রায় ৭০ মিটার বৃদ্ধি পাবে বর্তমানের তুলনায় (সূত্র: Click This Link)। আর তখন বিশ্ব ব্যাপী কি ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসবে তা চিন্তা করলেও গা শিউরে ওঠে। যে পানির কারনে বিশ্বে জীব জগতের সৃষ্টি হয়েছে , সেই পানির কারনেই আবার দুনিয়ার লয় ঘটে যাবে। এ যেন সেই নূহ নবীর মহাপ্লাবন। উদাহরন স্বরূপ বলা যায়, আজ থেকে ২০,০০০ বছর আগে গোটা দুনিয়া জুড়ে চলছিল বরফ যুগ। বরফ যুগের শেষ হয়েছে আজ থেকে মাত্র বার তের হাজার বছর আগে , আর তার ফলে সাগর তলের উচ্চতা বেড়েছে ১০০ মিটারেরও বেশী। ফলে বিভিন্ন মহাদেশের এক বিরাট অংশই সাগর তলে তলিয়ে গেছে। ধারনা করা হয়, সেই বরফ যুগে ইউরোপ-এশিয়া থেকে মানুষ আমেরিকায় গেছিল আলাস্কা হয়ে কারন তখন যে বেরিং প্রনালী আমেরিকার আলাস্কাকে এশিয়ার ভূখন্ড থেকে উত্তর মেরুর কাছে বিভক্ত করেছে তখন তা ছিল বরফাচ্ছাদিত আর তা পার হয়েই সর্ব প্রথম মানুষ আমেরিকা মহাদেশে পা বাড়ায়।

দুনিয়া জুড়ে অধিকাংশ বিজ্ঞানীই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিষয়কে এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। আর আমরা সাধারন মানুষরা কোন রকম তথ্য উপাত্ত ছাড়াই সেটা বুঝতে পারি বর্তমানে যে ভাবে প্রতি বছর গরমের প্রভাব নাগাড়ে অনুভব করি। অতীতে কোন বিশেষ কারনে যেমন- এল নিনো , এর প্রভাবে কোন কোন বছর মাত্রা ছাড়া গরম পড়তে দেখেছি যেমন ১৯৯৮ সালে । কিন্তু পরবর্তীতে এখন আমরা দেখি প্রতি বছরই মাত্রা ছাড়া গরম পড়ে,ঋতু চক্রে এসেছে আমূল পরিবর্তন। বাংলাদেশে এক সময় ছয়টা ঋতু ছিল ,গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত, হেমন্ত , শীত ও বসন্ত। বর্তমানে তারা মাত্র তিনটি ঋতুতে এসে ঠেকেছে। গ্রীষ্ম , বর্ষা ও শীত। অন্যান্যগুলো স্রেফ উবে গেছে জলবায়ূ পরিবর্তনের শিকার হয়ে। তার মধ্যে গ্রীষ্মকাল প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সময় জুড়ে বছরের, বাকী কয়মাস বর্ষা আর মাত্র মাসখানেক হলো শীত। শীত প্রধান দেশ যেমন- ইংল্যান্ড, জার্মানী, হল্যান্ড, বেলজিয়াম ইত্যাদি ইউরোপিয় দেশসমূহে দেখা যাচ্ছে শীত ঋতুর স্থায়ীত্ব কমে গ্রীষ্ম ঋতুর দৈর্ঘ বেড়েছে। বছরের যে সময়ে সেসব দেশে শীত অনুভুত হওয়ার কথা সেসময়ে তেমন শীত অনুভুত হয় না । শুধু তাই নয়, গ্রীষ্মকালে সেসব দেশে কখনও কখনেও উষ্ম মন্ডলীয় দেশের সমান তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়।কয় বছর আগে এসব দেশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা বসানোর কথা চিন্তা করত না বসত বাটিতে , বর্তমানে অনেক ঘরেই সে ব্যবস্থা আছে। আগে যেসব স্থানে শীতকালে বরফ পড়ত সেখানে বেশ কয় বছর ধরে বরফের কোন দেখা নেই। সুতরাং বৈশ্বিক উষ্ণতা অনুভব বা বোঝার জন্য আর বিজ্ঞানী বা জলবায়ূ বিশারদ হওয়ার দরকার নেই। সাগর তলের উচ্চতা যে লক্ষনীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তার উজ্জ্বল নিদর্শন বাংলাদেশ। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বাংলাদেশের দক্ষিন অঞ্চল পর পর দুটি ঘুর্ণিঝড়ের শিকার হয় যাদের বাহারি নাম হলো - আইলা ও সিডর। এ ঝড়ের ফলে দক্ষিন অঞ্চলের মূলত সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলের ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়। এসব এলাকার বেড়ী বাধ গুলো সব বালির বাধের মত উবে যায় সাগরের পানির জলোচ্ছ্বাসে। পানি স্থলভাগের অনেক অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। কিন্তু ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেমে যাওয়ার পর স্থলভাগে ঢুকে পড়া পানি আর বের হয় না। ঝড় হয়েছে দু তিন বছর আগে কিন্তু পানি আজও বেরিয়ে যায়নি। কারন স্থল ভাগের তল সাগরের পানির তলের চেয়ে নিম্নতর হয়ে গেছে। যতদিন বেড়ীবাধ ছিল ততদিন বিষয়টা ভালমতো বোঝা যায় নি। এসব অঞ্চলে সুদীর্ঘকাল কোন ঘুর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস হয়নি। তাই বিষয়টা এতদিন ধরা পড়ে নি। এসব অঞ্চলের মানুষ সেই যে ভিটে মাটি হারিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে দুবছর হলো , আজও তারা তাদের ভিটে মাটিতে ফিরতে পারেনি, কারন তা পানির নীচে অবস্থান করছে। আজও তারা রাস্তার দুপাশে বস্তি তৈরী করে মানবেতর জীবন যাপন করছে, বেচে থাকার জন্যে নির্ভর করে আছে সরকারী বেসরকারী ত্রাণ সাহয্যের ওপর। যে কারনে গত ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কোপেনহেগেনের বিশ্ব পরিবেশ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের এ বিষয়টি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেক দাতা দেশ সাহায্য করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এ সাহায্য দিয়ে যদি আগের মত মাটির বেড়ী বাধ তৈরী করে তা হবে স্রেফ অর্থের অপচয়। কারন যে কোন জলোচ্ছাসে তা আবারও বালির বাধের মত উবে যাবে। এখন দরকার হল্যান্ডের মত সাগরতীরে কংক্রিটের বাধ নির্মান। যে বাধ দিয়ে হল্যান্ড সাগর সমতলের প্রায় ২৩ ফুট নীচে হওয়ার পরও তাদের দেশটিকে রক্ষা করতে পেরেছে , একই সাথে সাগর থেকে অনেকখানি জমিও উদ্ধার করেছে। অর্থাভাবে সরকার সেধরনের কোন পরিকল্পনা করতে পারবে না , আর দাতাদের সাহায্যে কাচা মাটির বেড়ী বাধ দিলে তা হবে স্রেফ অর্থের অপচয় , তবে সরকারী দলের কিছু নেতা -পাতি নেতার আর্থিক অবস্থা তাতে ভাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে, লাভের মধ্যে ওটাই।

বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে আবার নানা রকম খেলা আছে আর তা বলা বাহুল্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারনে। অধিকাংশ বিজ্ঞানী বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানীর মাত্রারিক্ত ব্যবহারের ব্যপারে সম্পূর্ন একমত। তারপরও কিছু কিছু বিজ্ঞানী আছে যারা বলতে চায় যে হারে বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটছে তা নাকি তেমন উদ্বেগজনক কিছু নয়। বলাবাহুল্য, এটা তারা বলছে বড় বড় তেল কোম্পানীর কাছ থেকে টাকা খেয়ে । বড় বড় তেল কোম্পানীগুলো যারা এ ব্যবসা থেকে বিপুল মুনাফা অর্জন করছে, বাজার অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী তাদের কাছে মুনাফাটাই বড়। ভাবটা এমন যে - তাদের জীবনকালে পৃথিবী ধ্বংস না হলেই হলো , তারা মরার পর দুনিয়ার কি হবে তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। অত্যন্ত উদ্বিগ্নের বিষয় হলো - এ শ্রেনীর লোকদের মধ্যে মার্কিন মালিকানাধীন তেল কোম্পানী গুলি অগ্রগন্য। মার্কিন সরকারও অনেকটা এদের ক্রিড়ানক মাত্র। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব পরিবেশ সম্মেলনে মার্কিন সরকারের একগুয়ে মনোভাবে তার বহি:প্রকাশ ঘটতে দেখা গেছে। পৃথিবীর যে সব দেশ সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করে তার তালিকা নিম্নরূপ:
চীন- ২২.৩০%
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- ১৯.৯১%
ভারত- ৫.৫০%
রাশিয়া- ৫.২৪%
জাপান-৪.২৮%
(তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, ২০০৭ সালের তথ্য)

তালিকায় দেখা যাচ্ছে, চীন সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এর কিছু কাল আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল প্রথম ও তার কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের হার ছিল প্রায় ২৫%। কিন্তু সেটাও আসল বিষয় নয়। বিষয়টা হলো - মাথা পিছু কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন। সেখানে দেখা যাচ্ছে- ২০০৭ সালে আমেরিকার একজনের মাথা পিছু নির্গমনের হার বার্ষিক ১৮.৯ মে.টন যেখানে চীনের মাথা পিছু নির্গমনের হার মাত্র ৪.৯ মে.টন। আরও মজার তথ্য হলো - ১৯৯০ সালে যেখানে একজন মার্কিন নাগরিকের বার্ষিক নির্গমনের হার ছিল ১৯ মে.টন সেখানে চীনের হার ছিল মাত্র ২.২ মে.টন। কারন ১৯৯০ সালে চীনের জনসংখ্যা ছিল ১১৪ কোটি, যেখানে আমেরিকার লোকসংখ্যা ছিল -২৫ কোটি। বর্তমানে চীনের লোকসংখ্যা ১৩৪ কোটির কিছু বেশী যেখানে আমেরিকার জনসংখ্যা হলো ৩০ কোটির মত। উল্লেখযোগ্য হলো- ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত চীনের মাথা পিছু বার্ষিক কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের হার ছিল ২ থেকে ২.৯ মে.টন যেখানে আমেরিকার ছিল ১৯ থেকে ২০ মে.টনের মধ্যে। সুতরাং উপরোক্ত পরিসংখ্যান থেকে এটা অত্যন্ত সুষ্পষ্ট যে , বিশ্ব উষ্ণায়নের সিংহভাগ দায় বর্তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘাড়ে। সুতরাং এ থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার দায়টাও তাদের ওপর বেশী বর্তাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন দেখা যাক , আমেরিকা কিভাবে সে দায়টা গ্রহন করছে।

২০০৯ সালের কোপেনহেগেনে বারাক ওবামা যে ভাষণ দেন তাতে তিনি উল্লেখ করেন যে - তার দেশ ২০২০ সাল নাগাদ তাদের কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের হার বর্তমানের ১৭% কমিয়ে ফেলবে আর ২০৫০ সালের মধ্যে ৮০% কমাবে। তার মানে ২০২০ পর্যন্ত তাদের মোট নির্গমনের পরিমান বৈশ্বিক মোট পরিমানের ১৬% এর মতই থাকবে। কিন্তু এটা তো একটা কথার কথা। বাস্তবে দেখা যাবে আদৌ কমানো হয়নি। তার অর্থ আমেরিকা কোন রকম ছাড় দিতে রাজি নয়। তারা চায় অন্য দেশ সমূহ তাদের গ্রীন হাউজ গ্যাস নি:সরন কমিয়ে ফেলুক, পৃথিবীকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করুক আর ওরা শুধু বসে বসে নিরাপদে দুনিয়াদারী মাতব্বরী করবে ও জীবনকে ষোল আনা আনন্দ ফুর্তিতে ভাসিয়ে দেবে। এটা বোঝা যায়-এর আগে যখন বিশ্ব পরিবেশ সম্মেলন হয় তখন আমেরিকাকে গ্রীন হাউজ গ্যাস নি:সরনের মাত্রা কমিয়ে আনার অনুরোধ করা হয়েছিল, তখন বুশ জুনিয়র ছিলেন ক্ষমতায়, তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এটা করতে হলে তাদের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটবে, বহুলোক চাকরি হারাবে তাই তা করা সম্ভব নয়। এবার তো বারাক ওবামা মৌখিক ভাবে হলেও স্বীকার করেছে যে গ্রীন হাউজ গ্যাস নি:সরন আর তার প্রেক্ষিতে বিশ্ব উষ্ণায়ন একটা সত্যিকারের সমস্যা, বুশ তো সেটাও মানতে রাজী ছিল না। এসব দেখে শুনে মাঝে মাঝে মনে হতো , আমেরিকাতে যারা ক্ষমতায় যায় বা রাজনীতি করে তারা এতটা আহাম্মক হয় কেমনে। আর তাদের সাঙ্গ পাঙ্গরাই বা এসব বিষয়ে কিভাবে উল্টা পাল্টা পরামর্শ দেয়? পরে বুঝেছি আসলে তারা মোটেই আহাম্মক নয়। আসলে প্রথমত: তারা মুনাফার ব্যপারে কোন রকম ছাড় দিতে রাজি নয়, আর পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রাথমিক ধাক্কাটা আমেরিকাতে তেমন প্রকট নয়, যে কারনে বাকী বিশ্বে কোথায় কি হলো সে ব্যপারে মাথা ঘামানোটাকে তারা ফালতু হিসাবে গন্য করে। অবশ্য কোপেনহেগেন সম্মেলনে ওবামা রাজী হয়েছেন এ সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য তারা প্রাথমিকভাবে ১০ বিলিয়ন ডলারের একটা তহবিল গঠনে রাজী আছে। বিষয়টাকে আবার সেই তাদের মত বরাবর আর্থিক হিসেবেই গন্য করেছে। ভাবখানা যেন - এ টাকা কিছু গরীব দেশগুলোকে দিয়ে সেখানে কিছু গাছপালা লাগালে বা তাদের দেশের সাগর পাড় গুলোকে বাধ দিয়ে দিলেই সমস্যা মিটে যাবে। সেই সাথে বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা যে কিছু করল সেটাও প্রতিষ্ঠিত হবে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের এ ধরনের হালকা মানসিকতা বা মানব জাতির প্রতি তাদের এ ধরনের হালকা দায়িত্ববোধ আমাকে মাঝে মাঝে বিস্মিত করে। আর সাথে সাথে মনে হয় মানুষ যদি এতটা স্বার্থপর হয় তাহলে মনে হয় এ পৃথিবী থেকে এ জীবের চিরতরে বিলুপ্তি ঘটে যাওয়া স্রেফ সময়ের ব্যপার মাত্র।

বর্তমানেই সমস্যাটা যে পর্যায়ে চলে গেছে , সেখান থেকে সহসাই কোন ভাবে পরিস্থিতির উন্নতি না করলে মানব জাতির কপালে খারাবি আছে। এখন আর চিন্তা ভাবনা করে আস্তে ধীরে সিদ্ধান্ত নেয়ার কোন সময় ও সুযোগ নেই। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারনে ইতোমধ্যেই আমরা বিশ্ব পরিবেশে যে বিরূপ পরিস্থিতি অবলোকন করছি তাতে খুব বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবে না যেদিন গোটা দুনিয়াতে কেয়ামত শুরু হয়ে যাবে। সম্ভাব্য কি কি ঘটতে পারে তার একটা অনুমান করা যেতে পারে-

প্রথমত: গোটা দুনিয়ায় যে ঋতু বৈচিত্রে পরিবর্তন ঘটে গেছে আর কিছুটা পরিবর্তন ঘটলে এর সাথে আমাদের প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থা এক সময় ঠিক মতো খাপ খাওয়াতে নাও পারে। ঋতু বৈচিত্রের কারনে, অসময়ে অধিক বৃষ্টিপাত, খরা, অত্যাধিক সংখ্যায় ঘুর্ণিঝড়, দাবানল খুব স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে ইতোমধ্যে। এসব ঘটনার কারনে শস্য উৎপাদন যে কোন বছর হঠাৎ করে দারুনভাবে ব্যহত হতে পারে। যেমন- সাম্প্রতিক রাশিয়ার দাবানল। যার অনিবার্য ফলাফল- বিপুল শস্যহানি ও শস্য উৎপাদনে বিরাট ঘাটতি যা গোটা মানব সমাজকে একটা দীর্ঘ মেয়াদী দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিতে পারে। তখন খাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বে যুদ্ধ বিগ্রহ ঘটা আশ্চর্য কিছু না। তখন আর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার জমা থাকলেও তা দিয়ে খাদ্য পাওয়া যাবে না। কারন তখন কোন দেশ নিজেরা না খেয়ে খাদ্য বিক্রি করবে না। এর উদাহরন বিগত সময়ে আমরা দেখেছি। অনেক দেশই মাঝে মাঝে খাদ্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নানা সময়ে , বর্তমানে রাশিয়াতে সেটা এখনও চালূ আছে দাবানলে তাদের বিপুল শস্য হানি হওয়ার কারনে। এছাড়া অপেক্ষাকৃত উষ্ণ পরিবেশে এমন নতুন ধরনের ভাইরাস বা ব্যক্টেরিয়ার উদ্ভব ঘটতে পারে যারা ফসল উৎপাদনে বিপুল ব্যঘাত সৃষ্টি করতে পারে অথবা মানুষও তাতে ব্যপকভাবে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যা মহামারির আকারে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে যেতে পারে , যার নমুনা ইতোমধ্যেই আমরা দেখেছি , যেমন- বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, অ্যানথ্রাক্স ইত্যাদি। ভাগ্য ভাল এরা অতটা মারাত্মক নয়। কিন্তু এরা এইডস ভাইরাসের মত মারাত্মক হলে কি ঘটনা ঘটত একবার কল্পনা করা যাক। তখন দেখা যাবে, বিজ্ঞানীরা ভাইরাসের চরিত্র বুঝে ওঠার আগেই দুনিয়া থেকে সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেছে। আর চরিত্র বুঝতে পারলেই যে তার চিকিৎসা তাড়াতাড়ি তারা আবিষ্কার করে বসবে তেমন নিশ্চয়তাও নেই , যেমনটি ঘটেছে এইডস ভাইরাসের ক্ষেত্রে।

দ্বিতীয়ত: পৃথিবীতে মিষ্টি পানির সবচেয়ে বড় উৎস হলো নদী-নালা খাল বিল, বৃষ্টির পানি, ভূ-গর্ভস্থ পানি এসব। আবার নদীনালা গুলোর পানির উৎস হলো পাহাড় পর্বতের ওপর অবস্থিত নানা হিমবাহ। এসব হিমবাহ দিন দিন গলে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। এক পর্যবেক্ষনে জানা যায়, হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ দিন দিন গলে তা নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীগুলোতে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। এর ফলে শুধু যে নদীর পানির পরিমান কমে যাচ্ছে তাই নয়, মাটির নীচের ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নেমে যাচ্ছে কারন এসব নদী নালার পানিই তো চুইয়ে চুইয়ে মাটির নীচে জমা হয়। হিমবাহগুলো সম্পূর্ন গলে গেলে নদীগুলো যাবে মরে। যা পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাবে। বর্ষাকালে একটু বেশী বৃষ্টি হলে মরা নদী তা ধারন করতে পারবে না কারন তারা সবাই নাব্যতা হারাবে, ফলে জনপদ মারাত্মক বন্যার কবলে পড়বে। ধ্বংস হয়ে যাবে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। এধরনের বন্যার কবলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে পড়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক পাকিস্তানের পাহাড়ী অঞ্চলে বন্যা তার প্রকৃষ্ট উদাহরন।পক্ষান্তরে গ্রীষ্মের সময় পানির প্রচন্ড অভাব হবে, মানুষ পানি পাবে না , চাষাবাদ করা যাবে না , এমনকি শুধুমাত্র পান করার পানি পাওয়াটাও দুস্কর হয়ে পড়বে। যা কিন্তু ইতোমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন নগরীতে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ঢাকা শহর তার উৎকৃষ্ট উদাহরন, প্রতি বছর এখানে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে হু হু করে।

তৃতীয়ত: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ইতোমধ্যেই ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে, নীচু অঞ্চল সাগরের পানির নীচে চলে যাবে। যেমন- মালদ্বীপ ইতোমধ্যেই এধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। আসলে সাগর মহাসাগরের তীরে অবস্থিত সব দেশের ক্ষেত্রেই ব্যপারটি সত্য। বহু দ্বীপ , উপদ্বীপ পানির নীচে তলিয়ে যাবে। এর ফলে সৃষ্টি হবে ভয়াবহ এক মানবিক সমস্যা। কোটি কোটি মানুষ হারাবে তাদের ভিটে মাটি। হয়ে পড়বে উদ্বাস্তু। উন্নত দেশসমূহে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তারা হয়ত বিষয়টাকে সামাল দিতে পারল, কিন্তু অনুন্নত দরিদ্র দেশে ঘটলে কিভাবে বিষয়টাকে সামাল দেয়া যাবে ? যেমন - বাংলাদেশ। ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ২০৩০ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে এদেশের সমস্ত নিম্নাঞ্চল সাগরের তলে তলিয়ে যাবে। এমনিতেই দেশটি অতিরিক্ত জনসংখ্যার ভারে ভারাক্রান্ত। ছোট্ট এ দেশের মাত্র ১. ১৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বাস করে বর্তমানে ১৬ কোটির বেশী মানুষ যার অধিকাংশই দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। জনসংখ্যার আধিক্যে দেশের প্রতিটি শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিছুকাল আগে একটা জরীপে দেখলাম, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সারা পৃথিবীর ১৫০ শহরের মধ্যে ১৪৯ তম স্থান দখল করেছে মানুষের বসবাসোপযোগী ভাল নগর হিসাবে। রাস্তাঘাটে মানুষ খালি গিজ গিজ করে, রাস্তা ঘাটে ট্রাফিক জ্যাম, বিদ্যুত নেই, পানি নেই, ঠিক মতো গ্যাস নেই। এত কষ্টের মধ্যেও মানুষ যে বেঁচে আছে এটাই আশ্চর্য। এর মধ্যে যদি কয়েক কোটি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়ে, দেশটার কি অবস্থা হতে পারে কল্পনা করতেও গা শিউরে ওঠে। তো এ ধরনের ঘটনা খালি বাংলাদেশ নয় দুনিয়ার আরো অনুন্নত ও দরিদ্র দেশে ঘটবে, কোটি কোটি মানুষ গৃহহারা হয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে ও গোটা বিশ্ব জুড়ে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটবে যা থেকে উত্তোরনের জন্য হয়ত কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আস
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×