বাংলাদেশের তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট
কারচুপি আর সহিংসতার অভিযোগের তদন্তের
আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ।
আমাদের বর্তমান সরকার এতোটাই সাহসী এবং দৃঢ় প্রতিঞ্জ যে জাতিসংঘের কথাকে সবসময়ই তুচ্ছ হিসেবেই দেখেন । কেননা বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নত দেশ হতে চলেছে । এ দেশ কারোর কাছে আর হাত পাতে না । এ দেশে এখন আর সেরকম দূর্যোগ নেই যে জাতিসংঘের কাছে ভিক্ষা চাইবে ।
তাই আগেভাগেই ঐ সকল আজুবাজু সংস্থাকে কিছুই মনে করেন না আমাদের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার । যিনি বিশ্বের সপ্তম লৌহমানবী হিসেবেই সমাদ্রীত ।
জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন সংস্থার কথাকে তুচ্ছঞ্জান হিসেবে দেখার দরুণ অনেক বড়ধরনের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে । যা অনেকের কাছেই অজানা । কিন্তু সেদিকে খেয়ালই নেই আমাদের দেশের নাগরিকদের । সাধারণ জনগণ বলে , ওসব খেয়াল করে লাভ কি ? তেলের দাম বিশ্ববাজারে ২০ টাকা আর বাংলাদেশে ১০০ টাকা । এটাই হলো সরকারের সেবা । আরো বিভিন্ন উদাহরণ রয়েছে যা তুলতে চাই না । কেননা তা লিখতে গেলে ২ দিন পেরিয়ে যাবে ।
মূল কথায় আসি ,
বাংলাদেশে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ঢাকা ও
চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম
এবং সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে
জাতিসংঘ , ইইউ সহ বিভিন্ন উন্নত দেশ । জাতিসংঘের মহাসচিব
বান কি মুন এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ
তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান
জানিয়েছেন । অন্যদিকে বাংলাদেশে এই নির্বাচনের পর্যবেক্ষণকারী
সংস্থাগুলোও বলেছে, নির্বাচনে প্রচুর অনিয়ম
হয়েছে এবং নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি।
তবে শাসক দল আওয়ামী লীগ মনে করে, এসব
সমালোচনার বাস্তবতা নেই । অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনারও আওয়ামিলীগের সাথে সুর মিলিয়ে একই কথা বলছে । যে নির্বাচনে কোন সহিংসতা
ঘটে নি ।
আমার মতে নির্বাচন কমিশনার দিনকানা । তিনি দিনে কিছু দেখেন না । তাই রাতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব বলেন ।
অন্যদিকে সাবেক মন্ত্রী এবং ঢাকার একটি অংশের নির্বাচন
পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা
ফারুক খান বলেন, "এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের
মতো বাংলাদেশের কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচন
এতো সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে হয়নি " ।
তিনি আরো বলছেন, "দুঃখজনকভাবে কোন একটি দল
সবকিছু না জেনেই, কোন একটি দল বা গোষ্ঠীর
বক্তব্য শুনেই মন্তব্য করে। কিন্তু কোন দল কি
নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে?
যতদূর আমি জানি, নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং
অফিসারের কাছে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। হলে
সেটা নিশ্চয়ই দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী
ব্যবস্থা নেয়া হবে " ।
ঠিক এরকম বক্তব্য করেই কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা ফেললেন আওয়ামিলীগের সাবেক এ মন্ত্রী ।
তিনি কি জানেন না যে বিরোধী দল নির্বাচন শেষ হতে না হতেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে ? তারাতো সংবাদ বিঞ্জপ্তিতিতে নির্বাচনের কারচুপির কথা উল্ল্যেখ করেই নির্বাচন বয়কট করেছেন , নাকি ?
কেননা কেন্দ্রের পুলিং অফিসাররাই যদি রুমের দর্জা বন্ধ করে ভোট দেয় তাহলেতো বিএনপি হারবেই । আর এ হারকে তো তাঁরা সহজভাবে নিতে পারে না । কারণ তাঁরাতো জনগণের ভোটে জিততে বা হারতে চায়, আওয়ামি এজেন্টদের কাছে নয় । ফারুক খান কি এটা শোনেন নি যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদল স্বয়ং প্রমাণ পেয়েছে যে সিটি নির্বাচনে সম্পূর্নরুপে অনিয়ম এবং কারচুপির মধ্য হয়েছে । আর কিভাবে প্রমাণ চান তাঁরা ? তাঁরাতো বিরোধীদের কোন কথারই দাম দেন না ।
কে করেছে কারচুপি ? কারচুপি করেছে আলীগের এজেন্টগণ । কেননা কোন কেন্দ্রেই জীবনের ভয়ে বিএনপি সমর্থীত এজেন্ট ছিলো না । আর যদিও কজন ছিলেন তাঁদেরও আলীগ সমর্থীতরা কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে ।
অনেক স্থানেই পুলিশের উপস্থিতিতে ভোট
জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে বলে পর্যবেক্ষকরা
বলছেন ।
নির্বাচনে কারচুপি বিষয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম
যেসব তথ্য দিয়েছে, এমনকি বহুল প্রচলিত ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলাদেশ শাখার
সংবাদদাতাদের সরেজমিনে জাল ভোট দিতে দেখার
উদাহরণ প্রসঙ্গে ফারুক খান বলেন, "এটা সত্যি হতে
পারে না । কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টরা
কি এজন্য রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ
করেছেন " ?
আর অভিযোগ করলে কি তারা শুনতেন ? আর কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদেরতো অপমান করে বের করে দেয়া হয় । তাহলে প্রশ্ন আসে এটি কিভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় ?
ভোট জালিয়াতির যে অভিযোগ উঠেছে, সেজন্য
আওয়ামী লীগ একেবারেই বিব্রত নয় বলে মন্তব্য
করেন ফারুক খান। কারণ কোন ভোট জালিয়াতির
কোন ঘটনা ঘটেনি বলেই তাঁর দাবি ।
তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা, আওয়ামী
সমর্থিত প্রার্থীদের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন,
যার ফলে প্রমাণিত হয় যে, ভোটাররা নির্বিঘ্নে
ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির বিষয়ে যেসব পত্রিকা
সংবাদ প্রকাশ করেছে, তারা সমসময়েই বাংলাদেশের
জনগণের বিরুদ্ধে, সামনে এগিয়ে যাবার বিপক্ষে
অবস্থান করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ফারুক খান বলেন, এর আগে সর্বশেষ ঢাকা সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালে। সে
সময় নির্বাচনী সহিংসতায় সাতজন নিহত হয়েছিল।
আমার তো মনে হয়না, এর আগে বাংলাদেশের কোন
স্থানীয় সরকার নির্বাচন এত সুষ্ঠু, সুন্দর ও
ভালোভাবে হয়েছে " ।
এখানে তিনি যখন অতীতকেই টেনে আনলেন তাহলে অতীতের ঘটনা সম্পর্কেও বলতে হয় । সেনাবাহিনীর গুলিতেই নিহত হয়েছিলো ঐ সকল ভোট জালিয়াতিকারীরা । তাঁরা বিভিন্ন কেন্দ্রে জালভোট দেয়ার চেষ্টা করে এবং পরে তা প্রমাণিত হয় তাঁরা সকলেই আলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্ট ছিলেন ।
আলীগ দল প্রায় সময়ই অতীতকে নিয়েও আসেন আবার অতীতকেও সহজে ভুলে গিয়ে ভুলভাবে বক্তব্য দেন । আসলে অতীতে পাকিরা ছিলো বাংলার শত্রু , তাই বলে বর্তমানেও তাঁরা আমাদের শত্রু ? আর এই শত্রুতার মূলে কারা ছিলো ? অবশ্যই ভারত এবং ব্রিটিশরা । যারা শত্রুতামি লাগিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে মুচকি মেরে হাসেন তাঁদেরকেই আমরা বন্ধু ভাবছি । আর যাই হোক দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাইলে এসব শত্রুতামিকে কুরবানি দিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে । তবেই আমার বিশ্বাস দেশ উন্নত থেকে উন্নততর হবে ।।