somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিস্তির টাকা সময়মতো দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এনজিও সংস্থারা মাথা গুজাবার ঠাইটুকুই নিয়ে গেলো দিনমজুরি নাছিমা বেগমের ।

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাদারিপুরে ঘটল এক হৃদয় বিদারক ঘটনা । প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ।
এনজিও'র ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে
না পারায় নাছিমা বেগম নামের এক দিনমজুরির
বসতঘর ভেঙে এনজিও কর্মকর্তারা সবকিছু নিয়ে গেছে । বসতঘর ভেঙে
নেয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অসহায় পরিবারটি । যারা কিনা দিনে আনে আর দিনে খায় ।
আজ শনিবার দুপুরে মাদারীপুর জেলার কালকিনি
উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি
গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে ।
ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসী জানায়, চলতি
বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আশা নামের একটি এনজিও'র
কালকিনি উপজেলার সমিতিরহাট ব্রাঞ্চ থেকে ১৫
হাজার টাকা লোন নেয় উপজেলার কাচারিকান্দি
গ্রামের দিনমজুর আলি খার স্ত্রী নাছিমা বেগম ।
কিন্তু চার কিস্তি পরিশোধের পর দরিদ্র
পরিবারটি আর কিস্তি দিতে ব্যর্থ হতে থাকলে এনজিও
কর্মকর্তারা পরিবারটির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে ।
এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে ঋণগ্রস্ত পরিবারটি । এমন
পরিস্থিতিতে আজ শনিবার দুপুরে এনজিও'র
কর্মকর্তারা হঠাত্‍ এসে দিনমজুরির ঘর ভেঙে নিয়ে যায় ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এনজিও আশা'র
সমিতিরহাট ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আ. রউফ ও
সহকারী ম্যানেজার নাজমুল হোসেন বলেন, ঋণের
কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সেই
পরিবারটিই ঘর বিক্রি করেছে। আমরা শুধু ক্রেতা
ঠিক করে দিয়েছি ।
কিন্তু অন্যদিকে ঋণগ্রহিতা নাছিমা বেগম একথা মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন ।
ঋণগ্রস্ত নাছিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
কিস্তির টাকা দিতে না পারায় এনজিওর লোকজন
কোথা থেকে একজন লোক এনে বলে তোমাদের
থাকার ঘর ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে ।
এ কথা বলেই তারা ঘর ভেঙে নিয়ে যায় । আর আমরা অসহায়
হয়ে চোখের সামনেই নিজেদের শেষ আশ্রয় মাথা
গোজার একমাত্র ঠাঁই ঘরটাকে ভেঙে নিয়ে যেতে দেখি । এখন কোথায়
গিয়ে মাথা গুজব ? কোথায় থাকবো ? কি করব ? তার কিছুই জানি না ।
এখন কথা হলো শুধু কি আশা এনজিও ? দেশে এরকম হাজার হাজার এনজিও বা সমিতি রয়েছে । যারা দুস্থ এবং অসহায়দের ঋণ দিয়ে থাকেন । কিন্তু বাস্তবে আমরা কি দেখছি । দুস্থদের সাথে ঋণের টাকা দিতে বাধ্য করতে কি করছে ঐ সকল এনজিওগুলো ? হয়তোবা খবরটি কোন এক সাংবাদিকের এলাকায় ঘটেছে বিধায় তা আমাদের কাছে এসেছে । কিন্তু না , দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় , প্রতিটি থানায় , প্রতিটি মহল্লায় এনজিও সংস্থাগুলোর এরকম ন্যাক্যারজনক ঘটনা প্রমাণ পাওয়া গেছে । যার কতোকগুলো সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে আবার কতকগুলো নিরবই থেকে যায় । এতে কি প্রমাণিত হচ্ছে ? ঐ সকল ঋণ প্রদানকারীর লক্ষ্য কি বোঝা যাচ্ছে ? তাঁরা কি দুস্থদের জন্যই এনজিও খুলেছেন নাকি নিজেদের প্রফিটের জন্যই ? দিনমজুররা খেঁটে খুটে যা আয় করেন তা দিয়ে অন্তত কোনমতে সংসার চালান । তাঁর উপর আবার কিস্তি ! হ্যাঁ সেটাও সময়মতনই সপ্তাহে সপ্তাহে পরিশোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালান । না খেয়ে হলেও গ্রামের অনেক পরিবার একাজ করে থাকেন । নয়তো তাঁদের আর কখনও ঋণ দেবে না ঐ সকল এনজিও বা সমিতিগুলো । এখানে নাছিমা বেগম এবং তাঁর স্বামী একজন দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন । ভাবা দরকার একজন দিনমজুর কিভাবে সংসারের খরচ চালিয়ে আবার কিস্তিও কিভাবে পরিশোধ করেন ? আমার জানামতে ১৫ হাজার টাকার সাপ্তাহিক কিস্তির পরিমাণ আনুমানিক ৩৫০ টাকা প্রায় । একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৫০ টাকার কিছু বেশি । বর্তমানে যে হারে সবজি বা তরিতরকারি এবং মসলা জাতীয় পণ্যের যে চরা দাম তাঁতে করে দুস্থদের অনেকেই ভাতের সাথে একটি মরিচ পিষেই হিংস্র ক্ষুধার্ত পেটটিকে কিছুটা শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করেন দিনে রাতে মাত্র দুইবারই । যা ভাবলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে । এতে করে তাদের বাড়তি পুষ্টি চাহিদা থেকে তারা ব্যাহত হচ্ছেন ।
যা হোক , বাংলাদেশের এনজিও সংস্থার মূল উদ্দেশ্য এখন স্পষ্ট । তাঁরা গরিব দুস্থদের জন্য তাঁদের এনজিও খুলে বসেন নি । তাঁরা শুধুমাত্র লাভের দিকেই ঝুঁকে থাকেন । আর মিথ্যা ফটোগ্রাফি দেখিয়ে সবার কাছে এবং অবশ্যই সরকারের কাছে প্রশংসিত হতে চান । সরকার কেন এসকল ব্যাপারে নিরব ? যদিও এগুলো সরকারের চোখে ছোটখাঁটো ব্যাপার । না এগুলো কখনওই ছোটখাঁটো কিছু নয় । দেশে দুস্থদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ ভাগ প্রায় । সত্যিই , এ এক বিশাল জনগোষ্টি । সরকার কি পারবে ২০২১ এর মধ্যে এই ৬৬ কে ০ তে নামাতে ? কেননা সরকার শপথ নিয়েছেন যে ২০২১ এর মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুশীল সমাজ উপহার দেবেন ।
আর এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে সরকার । সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট একটি বাড়ি একটি খামার নামে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে বর্তমান সরকার । আজকের ঘটনায় কি প্রমাণিত হলো ? সরকারি এ প্রজেক্ট থাকা সত্যেও দুস্থ জনগণ কেন ঐ সকল বেসরকারি এনজিও সংস্থাগুলোর দিকে ঝুকছে ? মানলাম সরকারের সাথে তারাও কাধেকাধ মিলিয়ে কাজ করছে । কিন্তু তাঁরা বাস্তবে কতোটুকু করছে ? তাহলে কি সরকারের এ প্রজেক্ট সাধারণের আস্থা হারিয়েছে ? নাকি তাঁরা একেবারেই দুস্থ বলে সরকার বা ঐ এনজিওরা ঋণ দিতে ভয় পাচ্ছে ? নাকি অন্য কিছু ? এ ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ সরকার ।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের কি কোনই আইন নেই ? তাঁরা কি একটি পরিবারকে এভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়াটাকে সহজ ভাবেই মেনে নেবে ? আমি মনে করি এ বিষয়ে আমাদের প্রসাশন ব্যাবস্থাকে সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার এবং একটি বাস্তবসম্মত আইন প্রণয়ন করা দরকার ।
নাজানি কতো পরিবার এভাবেই তীব্র দারিদ্র্যতার মুখে পরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে । যার দরুণ দিনকেদিন চুরি , ডাকাতি , খুন , রাহাজানি , হত্যা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মতো হিংস্র কাজগুলো বেড়েই চলেছে ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×