জামাত বন্ধ করলেই যদি জাতি কলঙ্কমুক্ত হতো তবে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যে বিজয় মিছিল করেছিলো সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা সেরুপভাবেই জাতির সাধারণ জনগণরা আজ বিজয় মিছিল করতো । এখানে শেখ হাসিনা জনগণ বলতে বোঝান শুধুই তাঁর দল এবং দলের নেতা কর্মীদেরকে ।
তাই জানগণ কথাটির সাথে সাধারণ কথাটি লাগিয়ে নিয়েছি । সরকার এতোটাই মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে জামাত শিবির বন্ধ করছে । আর আদৌ কি সমাজের জন্য এই দল দুটো আভিশাপস্বরুপ হয়ে দাঁড়িয়েছে ? নিশ্চয়ই না । যদি হ্যাঁ হতো তবে দেশে তাঁরা কখনই সাধারণ জনগণের প্রত্য্ক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারতো না । সাধারণ জনগণ রাজনীতি বোঝেন না । আর তারা কখনও বুঝতেও চান না । কেননা রাজনীতি মানেই সংঘাত । আর এই সংঘাতে কখনও কেউ কোন স্বার্থ ছাড়া জড়াতে চাইবে না । জামাত একটি রাজনৈতিক সংগঠন । তাঁরা ধর্মকে পুঁজি করে নয় , তাঁরা ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেশে রাজনীতি করছে । একমাত্র আলীগ দল তাঁদের নিজ স্বার্থের কথা ভেবেই জামাতকে নিষিদ্ধ করছে । জামাত কোন হঠাত্ ভাবে তৈরিকৃত কোন রাজনৈতিক দল নয় । এই জামাত মুক্তিযুদ্ধের আগেও নির্বাচন করেছে । কিন্তু কখনই তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি । কেননা তখনকার আলীগ দল মতে তাঁরা ছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী দল । তখন ধর্মীয় সংগঠন জামায়ত এ ইসলামী চেয়েছিলো যে দেশে ইসলাম ধর্মকে সুপ্রতিষ্ঠীত করতে । যেন সকলেই ইসলামকে মেনে চলে । দেশে যেন ইসলামী রীতিনীতির প্রচলন হয় । কিন্তু তাঁরা পাকিস্তানের কূরুচিপূর্ণ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত ছিলো একথা স্পষ্ট তাঁদের সৃষ্ট শান্তি কমিটি । কিন্তু সেগুলো এখন অতীতে ইতিহাস । আর অতীতকে ভুলে যাওয়াই ভালো । কেননা অতীতকে নিয়ে থাকলে দেশ কখনই উন্নতি লাভ করতে পারবে না । দেশকে পরিপূর্ণ গণতান্ত্রীক করতে হলে দেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন একান্তই কাম্য । সে যে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলই হোক না কেন ।
জামাত বন্ধ করতে হলে দেশের কোটিরও বেশি জামাত নেতাকর্মী , সদস্য এবং তাঁদের দলের সমর্থকদের নিষিদ্ধ করতে হবে । শুধু নিষিদ্ধই না তাঁদের সকলকেই ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে । যা সরকারের পক্ষে কখনই সম্ভব নয় । বলা বাহুল্য যে সরকার নাকি সবকিছুই পারে । তো এটা পারতেও বেশি সময় নেয় নি সরকার । বাংলাদেশ জামাতের সকল নেতাকর্মীদের জেলে পুড়িয়েছে সরকার । যা সারকারের চোখে বেশ বড় একটা সাফল্য । আর এই সাফল্য সাধারণ জনগণের কাছে ভয়াবহ । কেননা জামাত এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে আবারও লাগাতার হরতাল দেবে । দেশের সাধারণ জনগণের আয় রোজগার বন্ধ হবে । কিন্তু তাতে কোন যায় আসে না সরকারের । কেননা সরকার সাধারণের জন্য নয় । সরকার কেবল তাঁর নির্দিষ্ট জনগণের জন্য ।
রাজাকার কি শুধুই জামাতিরাই ?
এ প্রশ্নের উত্তর আদৌ পায় নি দেশের আপামর শিক্ষিত সমাজ । আর কোন দিন পাবেও না । সরকারকে অনুরোধ করব দেশে এহেন পরিস্থীতি আনবেন না যেন তা, সাধারণ জনগণকে বিষীয়ে তোলে । দেশ বর্তমানে যা আছে সেরকমই থাক । জামাতকে জেলে পুড়িয়েছেন তাঁরা সেখানেই থাক । তাঁদেরকে নিয়ে আর মাথা ব্যাথার কোন কারণই হয় না । তবে কেন যে আলীগ সরকার এমনটি করছে তা বোঝা অনেক কষ্টসাধ্য । আশা রাখি ভবিষ্যতে তা স্পষ্ট হবে ।
এখানে বলতেই হয় আপনারাতো আবার নির্দিষ্ট জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ।
সাধারণ জনগণকে আপনারা কবেই ভুলে গেছেন !
সাধারণ জনগণ আপনার খেলা দেখে অতীষ্ট হয়েছে । তাই একটু থামেন । দেশকে অগ্রগতীর কাজ করছেন ভালো কথা । কিন্তু অন্যদের কথায় কেনো এতো মাথা গরম করেন ? গরম মাথা নিয়ে দেশ চালানো যায় না । তাই বিরোধীদের জন্যও একটু সুযোগ দিন কিছু বলতে । কেননা তারাও তো একসময় দেশের সরকার ছিলো । জামাতকে নিষিদ্ধ করছেন ভালো কথা । কিন্তু দ্যাখেন আবার যেন পা পিছলে না যায় । দেশটা কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের সৃষ্ট নয় । দেশটা সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন দিয়েই কেনা । তাই দেশকে নিয়ে কোন রাজনৈতিক দলের ছিনিমিনি খেলা সাধারণ জনগণ সহ্য করবে না । সরকারের জনগণ ফুঁসলে দেশে অস্থীরতা সৃষ্টী করে । কিন্তু দেশের সাধারণ জনগণ যদি একবার ফুঁসছে তো আলীগ বিএনপি কিংবা জামাতই হোক কোন দলেরই কিচ্ছু করার থাকবে না । কেননা কেউ কখনও ভোট দিতেই যাবে না । দেশে যে দলই আসুক সকলের রুপ ঐ একই । কে কতো ধানে কতোটুকু চাল তুলতে পারে তাঁরই রাজনীতি বাংলাদেশে । বাংলাদেশের এহেন পরিস্থীতিমূলক রাজনীতিতে আমার মতো সাধারণদের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ভালো । অন্তত পক্ষে দেশে হরতাল থাকবে না এবং কৃষকরাও গরুর মাংস কিনে খেতে পারবে ।