কিরে তুই খেলি না যে? গার্মেন্টসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে নিতেই মা রান্না ঘরে উকি দিলেন। রনি ভাত নিয়ে বসে আছে। একটু ছুঁয়েও দেখেনি। মুখ গম্ভীর। দেখেই বোঝা যাচ্ছে মায়ের উপর অভিমান করেছে সে। অবশ্য অভিমানটুকু অমূলক নয়। মা বলেছিলেন আজকে মাংস রান্না করবেন কিন্তু করেন নি। গত একমাসেও সে একটু মাংস খেতে পারে নি। এই নিয়েই তার রাগ।
মা কাজ করতে করতেই চেচিয়ে বললেন, "নবাবের ঘরে জন্মাইছিস নাকী? বাপ নাই তার রোজ রোজ বাটিভর্তি মাংস খাওয়া লাগবো, ভাত যোগাতেই জীবন তেজপাতা হইয়া যাইতাছে! " রনির রাগ আরো বাড়তে থাকে। বাটিতে বাটিতে মাংস কে চায়! কয়েক টুকরা হলেই তো হয়। আর প্রতিদিন তো সে চায় নি সপ্তাহে অন্তত একদিন হলে ক্ষতি কী? তার মন জবাব খুজে পায় না। ভাত ছুয়েও দেখে না রনি। নাজমা বেগম দ্রুত কারখানার দিকে ছুটে যান। তার মতো দরিদ্র গার্মেন্টস কর্মীর হাতে ছেলের অভিমান ভাংগানোর মত বাড়তি সময় নাই। থাকুক খাওয়া পড়ে যখন ক্ষুধা লাগবে তখন ছেলে ঠিকই খেয়ে নেবে।
দুপুরবেলা পেটপুরে খেলো রনি। মাংস ভাজাটা দারুণ ছিলো। অনেকটা দোকানের ভাজা মুরগীর মতো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রনি দ্রুত কড়াই পরিস্কার করতে লাগলো। এই কড়াইয়ে যে তার ছেলে একটা ধাড়ি ইদুর ভেজে খেয়েছে এটা জানলে তার মা যে কী করবেন কে জানে?