সিঙ্গাপুর থেকে সাম্প্রতিক ২৪ জন বাংলাদেশী শ্রমিককে জঙ্গী সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এই দেশের নিউজ পেপারের হেডলাইন থেকে শুরু করে এই খবর 'টক অব দ্যা টাউন'' হয়ে দাড়িয়েছে। এই ঘটনা সিঙ্গাপুরে বসবাসরত বাংলাদেশী শ্রমিক ও প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির ওপর মারাত্মক বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। এই ধরনের ঘটনা সিঙ্গাপুরে এই প্রথমবারের মত ঘটেছে বলে বাংলাদেশী শুনলেই তার দিকে সন্দেহের চোখে তাকাচ্ছে এই দেশের অন্য জাতির মানুষেরা।
অথচ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পর এই ২৪জন শ্রমিককে রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাষাবাদ করার পর বাংলাদেশ পুলিশ নাকি সে রকম সন্দেহজনক কিছুর দেখা পায়নি , যার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ১২ জনকে ছেড়ে দিয়েছে । বাকি ১৪ জনও ছাড়া পাবার অপেক্ষায়।বাংলাদেশ পুলিশ যেহেতু সন্দেহজনক কিছু পায়নি তাহলে স্বরাস্ট্র মন্ত্রনালয় কড়া ভাষায় তাদের প্রতিক্রিয়া কেন সিঙ্গাপুরকে জানাচ্ছে না?
খোদ সিঙ্গাপুরেও প্রথম দুদিন সরকারকে সাধুবাদ জানালেও এখানকার সোস্যাল মিডিয়ায় কিছু মানুষ প্রশ্ন তুলেছে যে অভিযুক্ত বাংলাদেশী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে তাদের সিঙ্গাপুরের কোর্টে না তুলে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হল কেন? এই প্রশ্নগুলো কি বাংলাদেশ সরকারের করা উচিৎ নয় ?সুনির্দিষ্ট প্রমান ছাড়া শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে কেন একটি জাতির গায়ে ''জঙ্গী'' তকমা লাগানো হবে?
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন নাকি তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এখানকার পত্রিকা স্ট্রেট টাইমসকে জানিয়েছে যে এই শ্রমিকেরা বাংলাদেশের ব্লগার হত্যার সাথে যুক্ত থাকতে পারে!!!কোন প্রকার তথ্য প্রমান ছাড়া যে কোন দেশের হাইকমিশন সরাসরি নিজ দেশ ও নিজের দেশের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাড়াতে পারে , তার উদাহরন মনে হয় একমাত্র বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সরকার যদি এখনই কোন পদক্ষেপ না নেয় তবে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তির কথা বাদই দিলাম , শ্রমবাজারে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। সিঙ্গাপুর বিভিন্ন মেয়াদে বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত শ্রমিক নিয়ে থাকে।জঙ্গী তকমা লেবারদের গায়ে লেগে গেলে লোকাল এমপ্লয়াররা বাংলাদেশ থেকে আর শ্রমিক নেবে কিনা সন্দেহ। ইন্ডিয়ান, থাই, মিয়ান্মার এবং নেপালের সাথে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশী শ্রমিকেরা বহির্বিশ্বে নিজেদের জায়গা করে নিতে পেরেছে স্বল্প মজুরি ও তুলনামুলকভাবে ভাল ব্যবহারের কারনে।কিন্তু পাকিস্তান,আফগানিস্তানের মত জঙ্গী তকমা গায়ে লাগলে, কোন এমপ্লয়ারই এদের আর নিতে চাইবে না।