উপরোল্লিখিত শিরোনামের সংখ্যা নিয়ে পাঠকদের মধ্যে বিতর্ক থাকলেও আশা করি উদ্দেশিত বক্তব্যে কারো দ্বিমত নাই। ২৫শে ফেব্রুয়ারী সংঘটিত আন্তঃবাহিনী বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ড নিঃসন্দেহে আমাদের জাতীয় জীবনে নজিরবিহীন। সে ঘটনার পর থেকে এতদবিষয়ে বিভিন্ন গুণীজনের লেখা, বক্তব্য ও ভাবনা যুগপৎ বেতার ও ছাপা মাধ্যমে এত বেশী মাত্রায় প্রকাশ পেয়েছে যে, এ বিষয়ে যে কোনো লেখা পাঠকের মনে দ্বিরুক্তিজনিত বিরক্তি উৎপাদনে বাধ্য। তদুপরি এ ফোরামের অতিমাত্রায় রাজনীতি সচেতন বিদগ্ধ পাঠকদের কাছে আমার ন্যায় নগন্যের কিছু প্রকাশ করা মুক্তাবনে উলু ছড়ানোর দোষে দুষ্ট হওয়ার শংকা তো থেকেই যায়। এতদসত্ত্বেও, সাম্প্রতিক কালে সরকার ও সরকারের বাইরের কিছু ব্যক্তির বক্তব্য ও ঘটনাপ্রবাহই এই লেখার উস্কানিদাতা আর সেই উস্কানি তাড়িত দায় থেকেই এ লেখার অবতারনা । শুরুতেই সেসব বক্তব্য ও ঘটনা সমূহ বিস্মৃতিপ্রবণ আমাদের বাংগালী মানসকে স্মরণ করিয়ে দেয়া যাক।
১। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র, যিনি আবার তার উপদেষ্টাও বটে, গত নির্বাচনের আগে 'হার্ভার্ড রিভিউ' নামক এক জার্নালে জনৈক ইরাক যুদ্ধের এক যুদ্ধাপরাধী মার্কিন জেনারেলের সাথে এক গবেষণা (?) প্রবন্ধ লেখেন যাতে বলা হয়েছে গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ জংগীদের প্রজনন ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এসব জংগীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। ২০০৮ এর নির্বাচনে যদি, এবং কেবল যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যায় তবেই এসব জংগীদের শায়েস্তা করা সম্ভব, অন্যথায় নয়। (বিস্তারিত পড়ুনঃ Click This Link)। আওয়ামী লীগ বর্তমানে ক্ষমতাসীন। তবে কি সেনাবাহিনীর জংগীরা শায়েস্তাধীন? ভাবনার বিষয় বটে।
২। সদ্য নিহত বিডিআরের সাবেক ডিজি জেনারেল শাকিল তার লিখিত এক প্রবন্ধে দেখিয়েছেন যে, চোরাচালানিদের জন্য সছিদ্র (porous) ও অতিমাত্রায় প্রবেশ্য বাংলাদেশ-ভারত দীর্ঘ সীমান্ত পাহারার পরিবর্তে ভারতকে ট্রানজিট দিয়ে কিভাবে বাংলাদেশ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারে(বিস্তারিত পড়ুনঃ Click This Link)। এ প্রবন্ধের ছত্রে ছত্রে জেনারেল শাকিল ভারতকে ট্রানজিট দানের পক্ষে যে ওকালতি করেছেন তা পাঠে যে কোন সচেতন পাঠকেরই এ মর্মে ভুল হতে পারে যে, তিনি জেনারেল শাকিলের ছদ্মনামে কোন ভারতীয় জেনারেলের লেখা পড়ছেন কিনা, কিংবা লেখক সত্যিই জেনারেল শাকিল হয়ে থাকলে বাংলাদেশের এ জেনারেল তার বেতনের দ্বিতীয় চেকখানা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেই পেতেন কিনা।
৩। ১/১১ এর স্বঘোষিত প্রধান রূপকার জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ছিলেন দেশের দন্ডমুন্ডের হর্তাকর্তা। রাষ্টের প্রধান দারোয়ান হয়েও সকল নীতি নির্ধারনী বিষয়ে এ বাকপ্রবণ সেনাপ্রধান এতসব মুখরোচক কথা বলেছেন যে, তার সেই বক্তৃতামালা নাকি ছিল একুশে বইমেলার 'বেস্ট সেলার'। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে, বিডিআর বিদ্রোহে তার বাহিনীর এতজন সেনাকর্তা নিহত হলেও বিদ্রোহ নিরসনে ব্যক্তিগতভাবে তার এবং তার বাহিনীর কি ভূমিকা ছিল এবং বর্তমানেই বা এ জঘন্য হত্যাকান্ডের বিচারে তার ভূমিকা কি, সে বিষয়ে তার এ রহস্যময় নিরবতা আমাদের বিস্মিত করে বৈকি?
৪। বিডিআর হত্যাকান্ডের তদন্তে এফবিআই এবং স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের তড়িঘড়ি অংশগ্রহন এ তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা ও আন্তর্জাতিকতা প্রদানের লক্ষ্যেই উদ্দেশিত বলে আমরা মনে করি। কিন্তু হঠাৎই এ দু’টি সংস্থার দৃশ্যপট থেকে তিরোধান এবং তাদের বর্তমান অবস্থান ও উদঘাটিত তথ্য সম্পর্কে দেশবাসীকে অন্ধকারে রাখা আমাদের দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ইংগিতবহ।
৫। তদন্তের শুরুতেই তদন্তকারী দলসমুহের সমন্বয়ক ফারুক খান ভারতীয় মিডিয়ার সুরে তদন্তের বরাতে বিভিন্ন জংগী কানেকশনের বয়ান যেরকম সোৎসাহে মিডিয়ায় প্রকাশ করে আসছিলেন তা হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে বন্ধ হয়ে যায় আওয়ামী নেতা তোরাব আলী ও তদীয় পুত্র লেদার লিটনকে নিয়ে মিডিয়ার খবর প্রকাশ। অকস্মাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন গুরু নানক দলীয় প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানকে নিয়ে, যাদের আবার অবধারিত চিকিৎসা কেন্দ্র সিংগাপুরে অবস্থিত। তাদের দু’জনের এবং দেশের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট চিন্তিত ও সন্দিহান হবার কারণ আছে বৈকি।
৬। বিডিআরের বর্তমান ডিজি মইনুল হোসেনের আকস্মিক ভারত সফর এবং ভারতীয় মন্ত্রী ও সচিব যথাক্রমে প্রনব ও শিবসংকর বাবুদের বাংলাদেশে ঝটিকা সফর যেকোন সন্দেহপ্রবনের ভুরু উত্থানের উপযুক্ত কারণ হতে পারে। তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে বিডিআরের বর্তমান ডিজির ভারত প্রেমে প্রদর্শিত উচ্ছ্বাস ও বিডিআর পুনর্গঠনে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপনে তার অস্বাভাবিকমাত্রার বিরোধীতা। ডিজি মহোদয়ের মতে বিডিআর পুনর্গঠনে যতই কালক্ষেপন, ততই দেশের সর্বনাশ। উল্লেখ্য যে, এ ডিজি ও অন্যান্য কর্মকর্তারা প্রেষনে নিয়োজিত হয়েও বিডিআরের পোষাক পরিধানে নাকি যার পর নাই শরমিন্দা। পাঠক, কিছু আঁচ করতে পারছেন? আরো উল্লেখ্য যে, যে দেশের সাথে সীমান্ত রক্ষায় আমাদের বিডিআর নামক বাহিনীর দরকার তার পুনর্গঠনে সেই ভারতের উপযাচক হয়ে পৌনঃপুনিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ আমাদের জন্য বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য।
৭। দেশের ১৫ কোটি মানুষ যখন বিডিআর হত্যাকান্ডের তদন্তের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় তখন আকস্মিকভাবে এর তদন্তকাল ১ মাস বাড়িয়ে দেওয়া এবং অন্য দু’টি স্পর্শকাতর ইস্যু - খালেদার বাস্তুচ্যুতি ও দুদক বনাম সংসদীয় কমিটির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ সংঘটিত করে মিডিয়া ও তাদের ভোক্তা দেশবাসীকে বিডিআর তদন্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসা থেকে বিরত রাখার আপাত সফল কূটকৌশল আমাদের ভাবিত করে বৈকি।
৮। মহাজোটের ক্ষমতারোহনের পর অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা এবং সদ্য স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হওয়া আগাচৌ এর সাম্প্রতিক কালে করা দু’টি বক্তব্য যেকোন বিবেচনায় তাৎপর্যবহ। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত লালদীঘীর সভায় চৌধুরী সাহেব বলেছেন যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতলেও ক্ষমতায় নেই!! একই ব্যাক্তি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আরেক সংবর্ধনা সভায় বলেছেন যে, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা সি আর দত্তকে সেনাপ্রধান না করা ছিল অন্যায় এবং বাংলাদেশের সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীতে ন্যুনতম ৫ শতাংশ হিন্দু নিয়োগ না দেওয়া বিডিআর হত্যাকান্ডের অন্যতম কারণ। “ধান্ধাবাজ পাগলের সব কথাই প্রলাপ নয়”- এ অনুসিদ্ধান্তকে স্বতঃসিদ্ধ ধরে নিলে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা অনুসন্ধানে তদন্তের কি আর কোন প্রয়োজন থাকে? পাঠক, আপনাদের অবগতির জন্য আরেকটি তথ্য এখানে জানিয়ে রাখা দরকার যে, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ঐ অনুষ্ঠানে অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২০ আগষ্ট ২০০৭ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র - সেনা দাঙ্গার অন্যতম অভিযুক্ত শিক্ষক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বাবু নিম চন্দ্র ভৌমিক যিনি তৎকালীন সেনা সরকার দ্বারা আটক হয়ে জেল খেটেছিলেন।
সাম্প্রতিককালের ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনা ও বিশিষ্টজনের অনেক বক্তৃতা বিবৃতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য, উপরোক্ত আপাত অসংলগ্ন বিষয়গুলো নিশ্চয়ই বিডিআর হত্যাকান্ডের কারণ অনুসন্ধানে আপনাদের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় যোগসূত্র হিসেবে কাজ করবে। আমার উত্থাপিত উপরোক্ত তালিকার প্রতিটি বিষয়ই বিস্তারিত বিশ্লেষণের দাবি রাখলেও এ লেখার পরিসর ও পাঠকের ধৈর্য্য বিবেচনায় পরিহার্য। তারপরেও নিজস্ব বিবেচনার কিছু অনুধাবন প্রকাশ না করলেই নয়।
মনে পড়ে, ২৯ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপর্যস্ত পরাজয়ের পর চারদলীয় জোট নেতারা বলেছিলেন নির্বাচনে জনগনের মতামতের প্রতিফলন হয়নি এবং তাদের দেওয়া রায় (যা অভিযোগকারীদের ভাষায় তাদের পক্ষে ছিল) ছিনতাই হয়ে গেছে। এমন বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে খুবই স্বাভাবিক বিবেচ্য হলেও আমার কাছে খুবই অস্বাভাবিক লেগেছিল জাতীয়তাবাদীদের সেই অর্বাচীনতা দেখে। কতটা নির্বোধ হলে একটা দল বলতে পারে যে, তাদের পক্ষে দেওয়া রায় ছিনতাই হয়ে গেছে? যে দল তাদের পক্ষে দেওয়া জনগনের ভোট রক্ষা করতে পারে না, তাদের কোন যোগ্যতার জন্য জনগন ভোট দেবে? যারা নিজেদের ভোট, জান এবং (অধুনা পরিলক্ষিত আলামত অনুসারে) বাস্তুভিটা পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচাতে পারে না তাদেরকে জনগন তাদের জানমাল ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব না দিয়ে তো তাহলে অন্যায় করেনি। জাতীয়তাবাদীরা এসব বলে তাদের অসহায়ত্ব কতটা প্রকাশ করছেন তা বুঝতে না পারলেও বাংলাদেশ বিরোধীরা ঠিকই বুঝেছেন। তারা বুঝে নিয়েছেন যে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল শক্তি রাজনৈতিক দল নয় বরং এদেশের স্বাধীনতাপ্রিয় সাধারণ জনগন এবং দেশপ্রেমিক সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী। এ দুই শক্তির পারস্পরিক আস্থায় ভাংগন ধরানো গেলে বাংলাদেশ অবনত হতে বাধ্য। এর সফল ধাপ ছিল ১/১১ এর সফল মঞ্চায়ন যাতে করে বাহিনীসমুহকে জনগনের মুখোমুখি দাঁড় করানো গেছে কিছু উচ্চাভিলাসী সেনা কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহায়তায়। দ্বিতীয় ধাপ আন্তঃবাহিনী বিদ্রোহ, হত্যাকান্ড ও ফলশ্রুতিতে পুনর্গঠনের নামে নিঃশেষিতকরণ। এক্ষেত্রে নেতৃত্বদানকারী সেনাকর্তাদের অভিলাস আমার বিবেচনায় অভিন্ন। আজকে সেনাবাহিনীর যেসব কর্তারা প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে বিডিআর পুনর্গঠনের নামে স্বেচ্ছায় কিংবা অত্যুৎসাহের বশে চালের গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন তাদের ভেবে দেখার সময় এসেছে এ পুনর্গঠনের যৌক্তিকতা। আজকের বিডিআরের ডিজি যদি মনে করেন বিডিআরের পোষাকে রক্তের দাগ থাকায় পরিধেয় নয়, তাহলে সেনাবাহিনীতে স্বাধীনতা উত্তর সংঘটিত চার চারটি রক্তাক্ত বিদ্রোহের রক্তমাখা পোষাক পরিধানের জন্য অতি নির্লজ্জ ও নিন্মমানের রুচির প্রয়োজন। এক বিদ্রোহের কারনে যদি রৌমারীর বীর বিডিআরের নাম পরিবর্তিত হয়ে যায় তাহলে চার বিদ্রোহের জন্য সেনাবাহিনী নামক প্রতিষ্ঠানটির তো কোন নাম থাকারই অধিকার থাকে না।
বিডিআরের প্রাক্তন ডিজি জেনারেল শাকিল তার প্রবন্ধে সছিদ্র সীমান্তের কারণে চোরাচালানরোধের ব্যর্থ্যতায় ট্রানজিটের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। বিডিআরের ডিজি হিসেবে এ করিতকর্মা জেনারেলের দায়িত্ব ছিল সছিদ্র সীমান্তকে চোরাচালানীদের জন্য নিশ্চিদ্র করা, কোনভাবেই ট্রানজিট দানের ওকালতি করা নয়। যদি চোরাচালান রোধের প্রতিকার ট্রানজিট হয়ে থাকে তাহলে বিডিআর নামক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা কোথায়? তাহলে কি তিনি বিডিআর বিলুপ্ত হোক তাই চেয়েছিলেন? বিডিআর জওয়ানদের তার ও তার পরিবারের প্রতি দেখানো নির্মম ক্ষোভ কি তাহলে তারই বহিঃপ্রকাশ?
বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনাকর্তাদের লাশ আমাদের বিবেকের মানবিক অনুভুতিগুলোকে যে মাত্রায় আহত করেছিল ঠিক একই মাত্রায় প্রতিনিয়ত আহত করছে বিডিআর সদস্যদের গামছা পেঁচিয়ে তথাকথিত আত্মহত্যার খবর। সেনাকর্তাদের পরিবার পরিজনদের প্রতি যে নৃশংসতা দেখানো হয়েছিল তারচেয়ে কম নৃশংসতা আমরা দেখাইনি পিলখানায় বাসরত বিডিআর সদস্যদের পরিজনদের আলামত সংগ্রহের নামে বাস্তুচ্যুত করে পথে ঠেলে দিয়ে। পিলখানা থেকে উদ্ধার পাওয়া সেনাসদস্যদের পরিজনদের দেখার জন্য আত্মীয়দের যে আকুতি পিলখানা গেটে আমরা দেখতে পেয়েছিলাম, তারচেয়ে বেশি আকুতি দেখতে পাচ্ছি পিলখানায় আটককৃত জওয়ানদের খবরের আশায় চেয়ে থাকা স্বজনদের অনাহারী শংকিত চোখেমুখে। বিডিআর সদস্য আর সেনাসদস্য এই পরিচয়ের বাইরে সকলের সর্বোপরি নৈর্ব্যক্তিক পরিচয়, মানুষ হিসেবে যদি আমরা নিজেদের গণ্য না করি তাহলে বোধ করি এ বৈরিতার শেষ হবে না। আর তা নাহলে প্রলম্বিত সে বৈরিতা একদিন বাংলাদেশকেই নিঃশেষ করে দিবে। আজ নববর্ষের প্রথম প্রহরে প্রার্থনা করি, স্রষ্টা যেন বাংলাদেশকে সে অভিশাপে অভিশপ্ত না করেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




