somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

স্বপ্নবাজ অভি
দীর্ঘ অন্ধরাতে গোলাপ বিষয়ক কোন কবিতার পাতায় আমি নৈঃশব্দ্য আর অনিভপ্রেত ক্লান্তির মিলন দেখিয়েছি । গোলাপের মঞ্জুরীবিন্যাসে নাকি বলা ছিল “নৈকট্য ভয়ানক” !

নীলফামারীর ডায়েরী

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নীলফামারী দূরের কথা উত্তরবঙ্গে বগুড়ার পরে কখনো যাওয়া হয় নি । ব্লগ থেকে শুরু হওয়া শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সামনে রেখে নীলফামারী যাওয়া হলো , কিন্তু এতো ভ্রমণ নয় যেন জ্বলজ্যান্ত অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার !! বলা তো যায়না স্মৃতি কখন দুষ্টুমি করে তাই এখনি লিখে রাখি নীলফামারীর ডায়েরী !

০৯ ই জানুয়ারী রাত ৯ টায় পর্যাপ্ত শীতের কাপড় নিয়ে মিরপুরে গিয়ে হাজির হই , ওখান থেকেই আমাদের যাত্রা শুরু হবে , একে একে আমার যাত্রা সঙ্গী হয় কাল্পনিক ভালোবাসা , আমিনুর রহমান , কুনোব্যাঙ , একজন আরমান , স্নিগ্ধ শোভন , কান্ডারী অথর্ব , জেরিফ , মৈত্রী, মাগুর ! ব্লগার মাগুর ভাইয়ের কল ফর ব্লাড সংগঠনের সাইক্লিষ্ট ছেলেরা শেষের কয়েক দিনে পরিণত হয় “রাইড ফর স্মাইল ” নামে । সারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত হয় ৮০ বস্তার মত কাপড় , এবং ২ কার্টুন নতুন সুয়্যেটার ! আর আমাদের মূল লক্ষ্য কম্বলগুলো আগেই পৌছে গেছে নীলফামারীতে । ওখানে স্থানীয় একটি গার্মেন্টস সম্পূর্ণ দেশীয় তৈরী ওলের এই কম্বল গুলো আমাদের গন্তব্য স্থলে নিয়ে পৌছে যান আমাদের আগেই , আমরা গিয়ে মূল্য পরিশোধ করি! এতগুলো বস্তা নিয়ে তো আর অন্যভাবে যাওয়া সম্ভব নয় , ঠিক করা হয় একটি বড় সাইজের পিক আপ ! বাজেট সংকুলানের জন্য বস্তার সাথী আমরা সবাই ! আমাদের সাথে রাইড ফর স্মাইল টিম থেকে যাত্রা সঙ্গী হয়েছেন পাঁচ জন । সাভারের বিএপটিসি স্কুলে রাখা ছিল আরো ৪০ টির মর কাপড় ভর্তি বস্তা ! সেই স্কুলের দুইজন ছাত্র সেখান থেকে আমাদের সঙ্গী !
তারপরই মূলত জার্নির শুরু , ট্রাক চলা শুরু হলেই হুহু বাতাস । সবার পর্যাপ্ত শীতের কাপড় থাকলেও পরিবেশ টা মোটেই অনুকূল নয় !
কিছুক্ষণ পর সবাই সবার সাথে পরিচিত হতে শুরু করে , কার জেলা কোথায় ইত্যাদি ইত্যাদি !
সাভার থেকে উঠা উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট জেলার পরিচিয়ে বলে উঠলো ” আমি গোপালী “! যদিও পরে তার নাম ই হয়ে গেছে গোপালী ! আমার নিজেরই এখন তার আসল নাম মনে পড়ছেনা। সে একটা জ্ব্যান্ত বিনোদোন ... যাদুঘরে সাজিয়ে রাখার মত । তার এইম ইন লাইফ হচ্ছে “একটা মটর সাইকেল কিনবে , তারপর বিদেশ চলে যাবে ”
কঠিন শীতেও প্রচন্ড হাসানোর জন্য গোপালীকে ধন্যবাদ ! আর ভার্চুয়াল মাফ চেয়ে নিচ্ছি মাত্রা অতিরিক্ত মজা নেয়ার জন্য !


আমরা যত আগাচ্ছিলাম শীতের প্রকোপ তত বাড়ছে , কেউ কারো উপর শুয়ে আছে , হাত –পা নাড়ার ও কোন উপায় নেই , সবাই মেনেই নিয়েছে এভাবেই যেতে হবে ! এক কথায় লক হয়ে গেছে সবাই !
টাঙ্গাইল পেরিয়ে যমুনা নদী পার হবার মনে হলো এরি নাম শীত !! বৃষ্টির মত কুয়াশা , ৫ হাত দূরের জিনিস ও দেখা যাচ্ছিলোনা ! ধীরে ধীরে ট্রাক আঘাতে লাগলো আর পেছনে আমাদের সবার হাত মৌজা , মাথার টুপি ভিজে ছপছপ করছে (কুয়াশায়)! হাত – মুখ সব জমে গেছে ! এতক্ষণ ড্রাইভারের সাথে ছিল স্নিগ্ধ শোভন ! তার ভয় লাগছে সামনে , এইজন্য সে পেছনে চলে এসেছে , ঠান্ডা থেকে বাচার লক্ষ্যে এবার সামনে যাবে কাল্পনিক ভালোবাসা !
বগুড়াতে আমরা ছোট্ট একটা যাত্রা বিরতি দেই , সেখানে রাতের খাবার খাই , যদিও রাত ২ টার সময় ওখানে কিছুই নেই , ঠান্ডা ভাত আর ঠান্ডা ডিম ভুনা খেয়ে মনে হয় শীত আরো বেড়ে গেল! কিছুক্ষণ পর সামনে ড্রাইভারের সাথে বসা কা_ভা আবিস্কার করলো ড্রাইভার সাহেবের এসিস্টেন্ট ঘুমোচ্ছে , আর ড্রাইভার সাহেব ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই চালাচ্ছেন ! কি ভয়ানক ব্যাপার ! বগুড়া থেকে রংপুর পর্যন্ত বাকী রাস্তা ড্রাইভার ঘুমিয়েছে আর ট্রাক চালিয়েছেন আমাদের প্রিয় কাল্পনিক ভালোবাসা !
রংপুর যখন পৌছালাম তখন সকাল সাড়ে ছয়টার মত বাজে , ওখানে আরেকটি বিরতি ! ওখানে আমাদের সাথে যোগ দেয় ব্যাক পকেটের চিঠি (অফিসিয়াল ক্যামেরা ম্যান) আর ব্লগার নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ !


এতক্ষণ ট্রাক চালাইছেন এবার পাহারা দেন , আমরা চা খেয়ে আসি !!


এভাবেই বসে ছিলাম!~


সবাই সবার :)

তখন রোদের দেখা পাওয়া যাওয়ায় বাকী রাস্তা একটু হাত পা খুলে যাওয়া গেল , আমরা আশা করেছিলাম সকাল ১০ টার ভিতরে পৌছে যাবো , কিন্তু ঘন কুয়াশা আর ড্রাইভার ভ্রান্তির জন্য গিয়ে পৌছালাম দুপুর ১২টার দিকে ! সেখানে আমাদের কানাডা প্রবাসী ব্লগার মোস্তফা কামাল পলাশ ভাইয়ের বাড়িতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তার ছোট ভাই পল্লব ভাই , বিতরণের জায়গায় ওনারা আগেই সার্ভে করে সর্বাধিক দুস্থদের একটা তালিকা করে রেখেছিলেন , পলাশ ভাইদের সামাজিক সংগঠন “হালিমা ফাউন্ডেশনের ” উদ্যোগে!



অমানবিক জার্নির পর সবাই অল্প কিছুক্ষণ রেষ্ট নিলো , ফ্রেশ হলো ! রেষ্ট নেয়ার সময় নেই , সেখান থেকে আমিনুর রহমান ভাইয়ের শ্বশুড় বাড়ি ঘন্টা খানেক দূরত্বে , উনি গেলেন জুনিয়র জেসনকে নিয়ে আসতে !


বাপ আমাকে গেলু ডাকে , আগে অভি চাচ্চু ডাকলেও সে আমাকে এখন বাপের পথ অনুসরণ করে গেলু চাচ্চু ডাকা শুরু করে দিছে /:)/:)


যাবার আগে আমার উপর দায়িত্ব পড়লো ট্রাক থেকে বাছাই করার জন্য কোন বস্তা গুলোতে কাপড় গুলো গুছানো আছে , যেগুলো গুছানো আছে সেগুলো ট্রাকে থাকবে আর যেগুলো গুছানো নেই সেগুলো হালিমা ফাউন্ডেশন ঘুছিয়ে পরদিন বিতরণ করবে !
এক্কেবারে রাতেই ঘুমাবো ঠিক করে উঠে পড়লাম ট্রাকে , আর স্থানীয় এক চাচার সহায়তায় আলাদা করলাম বস্তা গুলো ! সম্ভবত রাইড ফর স্মাইল টিম ছাড়া শুধুমাত্র আমি জানতাম কোন


বস্তায় কি আছে , তাই আমাকে একাই করতে হলো এই কাজ !








কি করছে একজন আরমান ?? চোখ বন্ধ করে বলে দিলাম সে প্রেমালাপ করছিল , ব্যাক পকেটের চিঠির সাহসী লেন্সে ধরা খেয়েছে !

তারপর গিয়ে গোসল করে অমানবিক একটা খাওয়া দিলাম , পলাশ ভাইদের বাড়িতে রাজকীয় নাস্তার আয়োজন , আমি কয়টা রুটি খেয়েছিলাম মনে করে লজ্জা পেতে চাইনা (আমি কিন্তু বেশী খেতে পারিনা ) ! কিছুক্ষন পরেই দুপুরের খাবার ,খাবার খেয়েই বিতরণের উদ্দেশ্যে ৭ মাইল দূরের হাই স্কুলে যেতে হবে , তাই আর কি করার আবার খেলাম !
তারপর কম্বল নিয়ে আর যেই বস্তাগুলো মোটামোটি ঘুছানো আছে সেগুলো নিয়ে আবার ট্রাকে উঠলাম , এখন আমাদের সঙ্গী হিসেবে যোগ দিলেন পল্লব ভাই , স্থানীয় আরো একজন আর জুনিয়র জেসন !
গ্রামের চিকন রাস্তায় সবাই খোলা ট্রাকে , কিছুক্ষন পর পর খেজুর গাছ আর বাশ থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে মাথা নোয়াতে হচ্ছে ! এই সময় গোপালী একাই সবাইকে সতর্ক করার মহান দায়িত্ব পালন করছিল , কাছাকাছি আসলেই সে চিৎকার করে উঠছিল “বাঁশ বাঁশ !!! ”
যদিও মাঝে মাঝে সে অন্য গাছের সময় ও বাঁশ বলে চিৎকার করছিল ! জুনিয়র জেসন কা_ভার শরীরের ভিতরে ঢুকে বেশ উৎসাহের সঙ্গে সবার এই বাঁশ খাওয়া থেকে বাচার সংগ্রাম দেখছিল!

কিছুক্ষনের ভিতরে পৌছে গেলাম স্কুলে , সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সেই গ্রামের শীতার্ত মানুষ জন ! ২০১৪ সালে ৩ টাকায় হাম্বার খাটি দুধের চা পাওয়া যায় আমার কল্পনার বাইরে ছিল ! স্কুল কক্ষের ভিতরে আগে থেকেই বসে আছে তালিকায় স্থান পাওয়া দুস্থরা!






তাদের কম্বল দেয়া হবে , আর বাইরে অপেক্ষা করছে সবাই বস্তার ভিতরে করে নিয়ে যাওয়া নতুন – পুরাতন সুয়্যেটারের জন্য !


এই সময় স্থানীয় হালিমা ফাউন্ডেশনের লোকজন বিতরণের শুরুর কাজ গুলো করছিল ! একটু ফ্রি সময় পেয়ে হালকা একটা ফটোশেসন করে ফেললাম ট্রাকের উপর বসেই !




ব্লগীয় মিতার সাথে



কিছুক্ষন পর বিতরন কাজ শুরু হলো , শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গেল !
একপাশে কম্বল দেয়া হচ্ছিল , আর বাইরে যারা অপেক্ষা করছিল তাদের দেয়া হচ্ছিল সুয়্যেটার সহ অন্যান্য পুরাতন কাপড় ! এ সময় খুব বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে , মহিলাদের শীতের কাপড় বস্তার ভিতর থেকে পাতলা ওড়নাও বের হচ্ছিল । ৫ টা সুয়্যেটারের পর একটা ওড়না বের হলে কেমন লাগে!! যার ভাগ্যে সেটা ছিল খুব দ্রুত ওনাকে অন্য একটা দিয়ে মুখ রক্ষা করা হয় !
সেখানেই মূলত কিছুটা প্রাপ্তির দেখা মেলে , প্রাপ্তি একটাই যারা পেয়েছেন তাদের মুখের হাসি !











বিতরণ শেষ ,আবার ট্রাকে উঠলাম , ৫ মিনিট দূরেই নীল সাগর ! পল্লব ভাই বললো এত কাছে এসে দেখে যাবেন না , কিন্তু কপাল খারাপ সন্ধ্যা ৬ টার পর গাড়ি নিয়ে ঢুকতে দেয়না , যাদের শরীরে অল্প একটু এনার্জি আছে তারা পায়ে হেটে নীল সাগর দেখে ফিরে এলো !

বাজারে নেমে সবাই চা খেলাম ! এই সময় আমিনুর রহমান আর তার ছেলে শীর্ষ আমাদের থেকে বিদায় নেয় !
তারপর বাসায় ফিরলাম , বাসায় ফিরে দুই রুমে ভাগ হয়ে রেষ্ট নেয়া শুরু ! মাগুর ভাইয়ের উপর দায়িত্ব পড়ে পোষ্ট দেয়ার , উনি কোন রকম পোষ্ট রেডী করতে শুরু করে !
পাশের রুমে আমরা আয়োজন করি” ব্লগার্স বনাম রক্তযোদ্ধা “ প্রীতি ২৯ কার্ড ম্যাচের!
আমি আর কাল্পনিক ভালোবাসা , কান্ডারী অথর্ব আর নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ দুটো দল !
রক্তযোদ্ধা ভাইদের নাম মনে পড়ছেনা ! ওনারা চার জন দুই দলে ভাগ হয়ে আমাদের বিপক্ষে খেলেছেন ! রাতের খাবারের আগ পর্যন্ত চলতে থাকে খেলা , পাশের রুমে মাগুর ভাইয়ের ব্লগে ছবি আপলোড করার সংগ্রাম !

রাতের খাবারের পর সবাই মিলে শীত উপভোগ করতে বাইরে গেলাম , কিন্তু উপোভোগ কালীন সময়টা ৫ মিনিটের বেশী দীর্ঘায়িত করা যায় নি !
তারপর ফিরে এসে সবাই শোয়ার আয়োজন করলো ! এক রুমে তুমুল ব্লগীয় আড্ডা জমে উঠেছে একজন আরমান ঘুমিয়ে গেলেও আমি ওনাদের আলোচনার উত্তাপে ঘুমাতে পারছিলাম না , বাধ্য হয়ে আলোচনায় অংশ নিলাম ! আড্ডার বিষয়বস্তু অবশ্যই ব্লগের অতীত আর বর্তমান , পথ কিভাবে হারালো ইত্যাদি ইত্যাদি !
রাত প্রায় আড়াইটার সময় মনে হলো কিছুক্ষণ ঘুমানো দরকার , সকালে উঠেই তোয়ে আবার ফিরে আসার যুদ্ধে নামতে হবে ! কথা বলতে বলতে ৩ টা বেজে গেল , ফ্লোরে ভাড়ী কম্বল বিছিয়ে আমি , জাদীদ ভাই আর কুনোব্যাঙ শুয়েছি , আর উপরে কান্ডারী অথর্ব সহ অন্যরা ! মাগুর মাছ আমাদের ছেড়ে পাশের রুমে গেল তার রক্তযোদ্ধাদের সাথে !
লাইট অফ করার ১০ মিনিট পর কান্ডারী অথর্ব হইচই করে উঠলো , যে কম্বল মুড়ি দিয়ে উনি শুয়েছিলেন সেটা উনি খুঁজে পাচ্ছেন না ! আজিব ব্যাপার , ভূতে নিয়ে নিলো নাকি ?? তাড়াতাড়ি লাইট জ্বালিয়ে দিলাম , আবিস্কার করলাম তার কম্বল তার পায়ের কাছে খুব সুন্দর করে ঘুচিয়ে রাখা !!!

আদিভৌতিক গল্পের প্লট যখন মাথায় ঘুরছিল তখন মুছকি হাসি দিয়ে ধরা খেয়ে গেলেন বিটলার সেরা কাল্পনিক ভালোবাসা !
লাইট অফ করার পর উনি দ্রুততার সাথে কান্ডারীর গায়ের কম্বল খুলে সেটা আবার ঘুচিয়ে পায়ের কাছে রেখে দিয়েছেন , আবার উনি নিজেও কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়েও পড়েছেন ! হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যাবার উপায় !
কিছুক্ষণ পর জাদীদ ভাই আমাকে বললো চল কান্ডারী মিশন সমাপ্ত এবার পাশের রুমের এগুলারে ভয় দেখাই ! কিভাবে , মগে পানি নিয়ে বের হলাম , জাদীদ ভাই , আমি আর কান্ডারী ভাই ! প্ল্যান হলো বাইরে দিয়ে জানালা আমরা বার বার খুলে দিবো , এতে সবাই ভয় পেয়ে যাবে ! কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডায় বেশীক্ষন থাকা যাচ্ছিলোনা , তাই প্ল্যান বি ! সরাসরি পানি মারা হবে জানালা দিয়ে !!
জাদিদ ভাই লুঙ্গিটা বিশেষ কায়দায় বেঁধে উঠে পড়লেন জানালার কার্নিশের উপরে , আমি পানি সরবরাহ করলাম কিন্তু ব্যালেন্স না রাখতে পেরে বিশাল শরীর টা নিয়ে উনি চিৎপটাং হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন ! এই দৃশ্য না দেখে কেউ বুঝতে পারবেনা , কি হয়েছে ! কোনমতেই হাসি থামিয়ে রাখতে পারলাম না , এতে ভিক্টিমরা আমাদের উদ্দেশ্য জেনে যায় ! কি আর করার আমরা এসে ঘুমিয়ে পড়লাম !
সকালে ঘুম ভেঙ্গেই দেখি পলাশ ভাইদের বাসায় নাস্তার আয়োজন, যদিও আমরা অনুরোধ করেছিলাম সকালের নাস্তাটা সবাই আমিনুর ভাইয়ের শ্বশুড় বাড়িতে করবো !
নাস্তা করে ওনাদের সবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ দিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম !


এবার আর ট্রাকে কাপড় নেই , তাই খর বিছিয়ে সবাই বসে পড়লাম! নীলফামারী শহরে আমিনুর ভাইয়ের শ্বশুড় বাড়িতে নাস্তা করলাম আবার সবাই !




রক্তযোদ্ধা সাগরের সাথে জাদীদ ভাইয়ের এই ক্যাচালের ব্যাকগ্রাউন্ড স্টোরি জানা নাই !!!


মাগুর মাছ মার !

তারপর ফিরে আসার গল্প , রংপুর পর্যন্ত আমাদের সাথে ছিলেন ব্যাক পকেটের চিঠি আর নির্ল্পিপ্ত স্বপ্নবাজ !
ভাগ্য সহায় হলোনা , সূর্যি মামা দেখা দিলোনা! আবার ঠান্ডা বাতাস আমাদের সঙ্গী !
টাঙ্গাইল এসে পড়লাম ভয়াবহ জ্যামে ! পাক্কা ৪ ঘন্টা বসে ছিলাম এক জায়গায় , এর ভিতরে বিপদ বাড়িয়ে দিতে নামলো বৃষ্টী – সম্ভবত আমাদের অভিজ্ঞতার ভান্ডার পুরো করার জন্য!
তাড়াহুড়ো করে উপরে পর্দা টেনে দিলাম যেটা বালু ভর্তি , কিছুক্ষনের ভিতরে গরম লাগা শুরু হলো , পর্দা খুললে বৃষ্টি , বাতাস ! আর বন্ধ করলে গরম ! উন্নতমানের বিপদ !
বৃষ্টি কমলে সবাই নেমে হাটা ধরলাম , ড্রাইভারকে বলে দিলাম জ্যাম ছাড়লে সামনে এগিয়ে যেতে আমরা সামনেই থাকবো !
জ্যাম ছাড়লো , আবার যাত্রা শুরু , পর্দা দেয়া ট্রাকেই সবাই ! আমরা কয়জন ঠান্ডা বাতাস মেনে নিয়ে বাইরেই মাথা রাখলাম ! ঢাকায় পৌছালাম রাত ৩ টায় !
তখন মনে হলো “একটি স্বচ্ছ , নিরপেক্ষ , আন্তর্জাতিক মানের জার্নির পর প্রিয় কোলাহলের নগরীতে ”
এত কিছুর পরে প্রাপ্তিটা ও খুবই আনন্দ দায়ক ! বিতরণ শেষে যখন এক বৃদ্ধ বললো – একটা সুয়্যেটার পেয়েছি , এটাই সম্বল হবে !! আর কিছু হাসিমুখ !
যারা টাকা দিয়ে , বুদ্ধি দিয়ে সাহায্য করেছেন তাদের বিশেষ ধন্যবাদ ! আর রাইড ফর স্মাইল টিমের বন্ধুদের ও বিশেষ শুভেচ্ছা !

ফটোক্রেডিটঃ ব্যাক পকেটের চিঠি !

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪
৫৮টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×