প্রথম রাউন্ডের খেলা শেষ হবার পরেই আঁচ করা গেছে, স্মরণকালের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ফুটবলের তীর্থভূমি ব্রাজিলে ! দুর্দান্ত নাটকীয় ম্যাচ , খেলার এক্কেবারে শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে থাকা দলগুলোর লড়াই করার মানসিকতা উপহার দিয়েছে একের পর এক স্নায়ুচাপের ম্যাচের। বাজে রেফারিং ও দেখেছি আমরা । কাগজে কলমে কয়েকটা ছোট দল নক আউটে থাকায় বড় দলগুলোর মারাকানার রাস্তাটা সোজা মনে হলেও বাস্তবতা ভিন্ন ,মাঠের লড়াইয়ে অপেক্ষাকৃত কম ঐতিহ্যবাহী দলগুলোই বরং সবচেয়ে বেশী ধারাবাহিক । এখন মূলত স্নায়ুচাপের লড়াই , এখানে কেউ দ্বিতীয় হতে আসেনা , সবাই প্রথম হতে চায় । একপাশে কান্না আরেকপাশে আনন্দ অশ্রু গ্রেটেষ্ট শো অন দা আর্থের নিখাদ বাস্তবতা।
দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলাগুলোতেও আমরা তাই দেখেছি !
২৮ জুন ২০১৪:
স্বাগতিক ব্রাজিল বেলা হরিজন্তে মুখোমুখি হয় আরেক ল্যাটিন দল চিলির । একেবারে ফেলে দেয়ার মত দল নয় চিলি , নক আউটে এসেছে স্পেনকে টেক্কা দিয়ে ! তার উপরে ২৫ বছর আগে বেলা হরিজন্তেতেই দলদুটোর তিক্ত অভিজ্ঞতা ও ফিরে ফিরে আসছিল !
ঐ ম্যাচ টিও ছিল বিশ্বকাপেরই তবে মূল পর্বের নয় , বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের যে জিতবে সেই মূল পর্বে খেলবে । এমন হাই টেম্পার ম্যাচে ব্রাজিল এগিয়ে গিয়েছিল ১ গোলে , ল্যাটিন ফুটবলে বাজি ফুটানোটা নতুন কিছু ছিলনা , একটা ফটকা ফুটে চিলির গোল-কিপারের পাশে , মুখে রক্ত সিরিয়াস ইঞ্জুরড। চিলির খেলোয়াড়রা খেলবেনা , ফিফার নিয়ম অনুযায়ী দর্শক হাঙ্গামায় স্বাগতিক দেশ নিষিদ্ধ পর্যন্ত হতে পারে !! হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়লেন দুঙ্গা , রবাতোরা ! কিন্তু মূল কাহিনী তখনো বাকী , এক জাপানী সাংবাদিক ছবি তুলেছিলেন সেখানে ধরা পড়ে চিলির গোলকিপারের ব্লেড দিয়ে নিজের মুখ নিজেই রক্তাত্ব করার ঘটনা ! সেই ছবি ব্রাজিল সরকার কিনে নিয়ে ফিফায় জমা দেয় , আজীবন নিষিদ্ধ হয় চিলির গোলকিপার আর ব্রাজিল চলে যায় মূল পর্বে , পেছনের রাস্তা দিয়ে চিলির বিশ্বকাপ যাত্রাটা থমকে যায় ।
সেই ঘটনার ফুটেজের এর লিঙ্ক দেয়া থাকলো !!
এমন তিক্ত অভিজ্ঞতাই হয়তো স্কলারীকে বাধ্য করেছে বলতে আমরা বরং অন্য কাউকেই পেলেই খুশি হতাম । ওনার কথা রেখেছেন চিলিয়ানরা । বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল ব্রাজিলের , হেক্সার নেশায় মাতাল তরুন ব্রাজিল দলকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে স্কিল এর পাশাপাশি টেম্পারমেন্ট , ধারাবাহিকতা , নিয়মতান্ত্রিকতাও লাগে বিশ্বসেরা হতে !!
শুরুতেই কর্ণার থেকে এগিয়ে যায় ব্রাজিল , গোল করেন সেন্টার ব্যাক লুইজ। কিন্তু চিলি লড়াই ছাড়েনি , ব্রাজিলের মাঠ-মাঝ হাওয়া হয়ে যাওয়ায় খুব সহজেই নিজেদের অর্ধের বিপদ কাটিয়ে ব্রাজিলের দুর্গে হানা দিচ্ছিল সানচেজরা । ফলাফল হিসেবে গোল ও পেয়ে যায় চিলি । বাকী সময়েও অনভিজ্ঞ দলটি গুছানো নান্দনিক ফুটবল উপহার দিতে ব্যার্থ হয়েছে !
মাঝে হাল্কের একটি গোল রেফারী হ্যান্ডবলের অযুহাতে বাতিল করে !
নেইমার কে আটকে রেখে কাউন্টার এটাকে কিছুক্ষণ পরপরই আতঙ্ক তৈরি করছিল চিলি ! ৯০ মিনিটের ঠিক কিছু আগে চিলির গোল ঠেকিয়ে দেয় গোলবার ! দুর্দান্ত কিছু সেভ করেছেন অভিজ্ঞ গোলকিপার সিজার। অতিরিক্ত সময়েও আর কোন গোলের দেখা না পাওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে ,তারপর পেনাল্টি শুট আউটের ভাগ্য পরীক্ষা !
তীব্র স্নায়ুচাপের খেলায় সারাবিশ্বের দর্শক ও তখন স্নায়ুচাপের স্বীকার , ব্রাজিলের বিশ্বকাপ মিশন দ্বিতীয় রাউন্ডেই থেমে যাবে ? মানাই যায়না , বিশ্বকাপ যে রঙ হারাবে!!তারপরের গল্পটা সিজারের অতিমানবীয় গোল-কিপিং এর !
ব্রাজিলকে উদ্ধার করলেন সিজার !
খেলা শেষে চিলির খেলোয়াড়রা , দর্শক কাঁদলেন , ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাও কাঁদলেন সম্ভবত ভয় আর বিপদ কেটে যাবার কান্না
আপাতত হেক্সার স্বপ্ন এখনো অটুট !
দিনের অন্য খেলায় মুখোমুখি দুই ল্যাটিন দল উরুগুয়ে আর কলম্বিয়ার। সুয়েরেজ বিহীন উরুগুয়ে আর ফালকাও বিহীন কলম্বিয়ার ফারাক খুব বেশী না , কিন্তু ব্যাবধান গড়ে দিলেন এক তরুন কলম্বিয়ান! প্রথম অর্ধেই দুর্দান্ত এক গোল করেন কলম্বিয়ান বিষ্ময় বালক , ফুটবল দুনিয়ার নতুন সুপার স্টার জেমস রোদ্রিগুয়েজ !
দুরন্ত এক বলিতে বিদ্যুত গতির সেই টপ কর্ণার ছুঁয়ে জাল খুঁজে পাওয়া গোলটি যে মিস করেছেন সে অনেক কিছুই মিস করেছেন । এমন কিছু গোলের জন্যই রোমাঞ্চের ঝাপি নিয়ে হাজির হয় বিশ্বকাপ !
কলম্বিয়া মাঠে নিজেদের প্রমাণ করে ২-০ গোলে এগিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় , আরো একটি গোল করে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী স্কোরার রোদ্রিগুয়েজ !
২৯ জুন ২০১৪:
নক আউটের আগুন ম্যাচে মাঠে নামে টপ ফেবারিট হল্যান্ড আর দুর্দান্ত খেলা মেক্সিকো ! প্রথম ৪৫ মিনিটে মাঠ দখলে ছিল মেক্সিকানদেরই। দ্বিতীয় অর্ধের শুরুতেই গোল করে বসে মেক্সিকোর সান্টোস ! এগিয়ে যায় মেক্সিকো ।
তবে কি ডাচ রূপকথার সমাপ্তি !! খেলায় ফিরে আসার জন্য প্রাণপনে লড়াই শুরু করে ডাচরা । তীব্র গরমে কাহিল সবাই , প্রথম বারের মত ফুটবল বিশ্ব দেখলো কুলিং ব্রেক । অধিনায়ক ব্যান পার্সির বদলে মাঠে নামলো হান্টেলার , গতি বাড়ে খেলায় , একের পর এক আক্রমণে খেলার শেষ ২৫ মিনিট হয়ে উঠে জমজমাট । এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোলকিপার বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছিল ডাচ আক্রমণ গুলো , মানব দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে তিনি! স্নেইডার ভাঙ্গলেন ডেড লক , পরাস্ত করলেন দুর্দান্ত ওচেয়াকে । এত তীব্র শট ছিল সেটি ওচেয়াে টের পেলেন বল জালে জড়বার ঠিক আগে !
খেলায় ফিরলো হল্যান্ড । ৯০ মিনিটের সময় মেক্সিকান ডি বক্সে ফাউলের স্বীকার হন রোবেন । পেনাল্টি কি ?
অনেকেই পেনাল্টির বিপক্ষে , কিন্তু এটি পরিস্কার ভাবেই পেনাল্টি ছিল , রিপ্লাই দেখে মেক্সিকান ডিফেন্ডার অনেক দিন পুড়বেন , তার টেকল করার কোন দরকার ই ছিলনা , বল পেত মেক্সিকান রাই যারা ক্লিয়ার করতো !
নাটকীয় ম্যাচের শেষ প্রান্তে পেনাল্টি পেয়ে হান্টেলারের দুর্দান্ত শটে শেষ আটে হল্যান্ড !
দিনের অন্য খেলায় মুখোমুখি ইতালি - ইংল্যান্ড কে বিদায় করে দেয়া বিশ্বকাপের ডার্ক হর্স কোষ্টারিকা আর সক্রেটিসের দেশ গ্রিস। গ্রীক রূপকথার মুখোমুখি ফুটবল বিশ্ব !
গ্রীস খেলছে বিশ্বকাপের নক আউটে মাঠে এরিস্টটল - সক্রেটিস না থেকে পারেন ?
কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে কিংবা টুর্নামেন্টের পেছনের ইতিহাসে কোষ্টারিকা পরিস্কার ফেবারিট । অধিনায়ক রুইজের গোলে এগিয়ে যায় কোষ্টারিকা , ৬০ মিনিটের কিছুক্ষন পরেই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে এক কোষ্টারিকান ডিফেন্ডার । ১০ জনের প্রতিপক্ষ পেয়ে আরো উদ্দীপ্ত হয়ে উঠে গ্রীকরা । কোষ্টারিকার আক্রমনভাগে গিয়ে আর আলোর মুখ দেখছিলনা গ্রীকরা। কিন্তু এই বিশ্বকাপ যে শেষ মিনিটের গোলের বিশ্বকাপ , তাই সক্রেটিসের দেশের ছেলেরা এখনই হার মানতে নারাজ। ৯০ মিনিটে গোল করে বসেন সক্রেটিস পাপাসটাথোপলোস ! অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও আর গোল পেলনা কোন দল , ১০ জনের দল নিয়েই শেষ লড়াই টা করলো কোষ্টারিকা , টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা কোষ্টারিকার বিশ্বকাপ মিশন কি গ্রীসের সামনেই শেষ ? মরতে মরতে বেঁচে উঠা গ্রীসেরই বা কি হবে ? দুই দলের সমর্থক , খেলোয়াড় সবারই চোখ ছলছল !
পেনাল্টি শূট আউটের ভাগ্য পরীক্ষায় উতরে গিয়ে কোষ্টারিকা শেষ ১৬ তে , দুর্দান্ত একটি সেভ করেই ভাগ্য গড়ে দেন কোষ্টারিকান গোলকিপার ! আর গ্রীকদের বিশ্বকাপ মিশন আপাতত চোখের জলে সমাপ্ত ।
৩০ জুন ২০১৪:
উড়তে থাকা ফ্রান্সের মুখোমুখি আফিকার সুপার ঈগলরা । ফ্রান্স - নাইজেরিয়া ম্যাচ টিও ছিল উত্তেজনায় ঠাঁসা। গোল ব্যাবধান ২-০ , কিন্তু একেবারে শেষ পর্যন্ত তা ছিল ০-০ । আক্রমন -পালটা আক্রমনে চমৎকার একটি ম্যাচ ছিল ।
খেলা শেষ হবার কিছুক্ষণ আগে হেডে গোল করেন ফরাসী তরুন পগবা । অল্প সময়ে গোল শোধের নেশায় উলটো আরেকটা খেয়ে বসে নাইজেরিয়া । সুপার ঈগলদের বিশ্বকাপ মিশন শেষ ১৬ তে থমকে গেল , আর বেনজেমার ফ্রান্স চলে গেল শেষ ৮ এ।
দিনের অন্য খেলায় মুখোমুখি হট ফেবারিট জার্মানী আর টিকে থাকা একমাত্র আরব দেশ আলজেরিয়া ! যারা কিনা আলজেরিয়াকে সহজ প্রতিপক্ষ ভেবেছিলেন তারা কত বড় ভ্রমে ছিলেন সেটা ওনারা নিজেরাও জানেন না । খেলা শুরু হবার পর থেকেই আলজেরিয়াই বড় দল , দুর্দান্ত গতি , পাসিং আর ড্রিবলিং দিয়ে জার্মানীর স্বাভাবিক খেলাটাই নষ্ট করে দিলো । দু দলই দ্রুত গতিতে আক্রমনে যাচ্ছিলো , জার্মানীর চেয়ে আলজেরিয়ার আক্রমণ গুলোই ছিল অনেক বেশী সংঘবদ্ধ ! যে কোন মুহুর্তে গোল খেয়ে বসতে পারে জার্মানী । কিন্তু জার্মান রা খেলছিলেন ১২ জন নিয়ে , গোলকিপার ম্যানুয়েল নুয়ার একাই একজন সেন্টার ব্যাকের ভূমিকার পাশাপাশি গোল-কিপিং ও করছিলেন !
৯০ মিনিটের খেলা শেষে ফলাফল গোলশুন্য ড্র , অনেক সময় গোলে ভরপুর ম্যাচে ও এত উত্তেজনা থাকেনা !
অতিরিক্ত সময়ের ৯০ সেকেন্ডের মাথায় আলজেরিয়ার বুকে ছুড়ি বসায় জার্মানরা । দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় জার্মানী , গোল শোধে মরিয়া আলজেরিয়ানরা ডিফেন্সের ভুলে খেলা শেষের ২ মিনিট আগে আরেকটি গোল খেয়ে পুরো ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে পানি ঢালে ,শেষ বাশি বাজার ১ মিনিট আগে গোল করে বসে আলজেরিয়া , ২ মিনিট আগে গোল টা পেলে গল্পটা অন্যরকম হতো। নিজেদের কষ্ট বাড়ানোর জন্যই মনে হয় এমন গোল দেয়া । শেষ ৩০ সেকেন্ডেও জার্মান দুর্গে শেষ আক্রমণ টা করেছিল কিন্তু হলোনা শেষ ৮ এ জার্মানী , আর অনেক কাছে এসেও পরাশক্তিদের পরাস্ত করতে না পেরে আফ্রিকান আরবদের বিশ্বকাপ মিশন শেষ ১৬তেই সমাপ্ত !
১ জুলাই ২০১৪:
দিনের প্রথম খেলায় মুখোমুখি ল্যাটিন জায়ান্ট আর্জেন্টিনা আর ইউরোপীয়ান ডার্ক হর্স সুইজারল্যান্ড । সুইজারল্যান্ড দলে বেশ কয়জন তারকা প্লেয়ার থাকায় অনেকেই ভুলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা দলে জাদুকর খেলে ! খেলায় বেশীরভাগ বল আর্জেন্টিনার দখলেই ছিল , মাঝে মাঝেই ভয়ানক কিছু প্রতি আক্রমণ করছিল সুইসরা। বিশেষ করে সুইস তারকা শাকিরির দ্রুত গতির আক্রমণ গুলো দেখার মত ছিল , তথাকথিত দুর্বল আর্জেন্টিনা দুর্বল ডিফেন্স লাইন বেশ দক্ষতার সাথে তা প্রতিহত করেছে। কেমন খেলেছে আর্জেন্টিনা? আমার জন্য মাঝমাঠে সুন্দর বুঝাপড়া ছিল , আক্রমণ গুলো ভাগ্যের ছোঁয়ায় পরিপূর্ণতা পাচ্ছিলোনা । মেসিদের কপালের ভাঁজ ধরিয়ে দিয়ে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ভাগে ও গোল পায়নি কোন দল ? তবে কি ব্রাজিলের মত আর্জেন্টিনাকেও যেতে হবে ভাগ্য পরীক্ষায়। মেসিকে এই ম্যাচে শুরু থেকেই পাহারায় রেখেছে সুইসরা , এঙ্গেল ডি মারিয়া বেশ কয়েকটি শট নিলেও গোল কিপার দক্ষতার সাথে ফিরিয়ে দেন! একবার সুযোগ পেয়েই মেসি খুব সুন্দর একটি পাস দিয়ে ডি মারিয়াকে বল দেন , চমৎকার ফিনিশিং এর মাধ্যমে গোলে পরিণত করেন ডি মারিয়া !
খেলার শেষ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের একটি হেড বারে লেগে ফিরে আসে , ভাগ্যদেবী ব্রাজিল -আর্জেন্টিনা দুই দলের সাথেই আছেন ! পেনাল্টি শুট আউটের ভাগ্য পরীক্ষায় না গিয়েই মেসি জাদুতে শেষ আটে , আর্জেন্টিনা ! সুইসদের বিশ্বকাপ মিশন চোখের জলে শেষ হলো শেষ ১৬ তে । টানা চতুর্থ বারের মত ম্যান অফ দা ম্যাচ হলেন জাদুকর মেসি!
দিনের অন্য খেলায় মুখোমুখি ডার্কহর্স বেলজিয়াম আর ক্লিন্সমেনের যুক্তরাষ্ট্র ! নিঃসন্দেহে এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা খেলা ছিল এটি । আক্রমণ পালটা আক্রমনের এক দুর্দান্ত ম্যাচ ছিল সেটি । দুই দলই খেলেছে ওপেন , পুরো আক্রমণাত্বক খেলা। হ্যাজার্ড , ফেলানিরা কিছুটা ফেবারিট ছিল , একই ম্যাচে ১৬ টি সেভ করে রেকর্ড গড়েন আমেরিকান গোল রক্ষক । গোলশুন্য ৯০ মিনিট , কিন্তু চোখের পলক ফেলার উপায় নেই , এই বুঝি গোল হলো ! অবশেষে গোল হলো অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে , দ্রুত দুটি গোল করে বসে বেলজিয়াম , হার মানেনি আমেরিকা ! পালটা আক্রমনে খেলা শেষের ১০ মিনিট আগে একটি গোল শোধ করে , টিকে থাকার লড়াইয়ে বাকী ১০ মিনিটে গোল হবার মত আরো বেশ কয়েকটি আক্রমণ করলেও ভাগ্যদেবীর সহায়তা না পাওয়ায় বেলজিয়াম চলে গেল শেষ আটে , আমেরিকান সকার টিমের বিশ্বকাপ মিশন শেষ ১৬ তেই থমকে গেল !
ইতালি , স্পেন , ইংল্যান্ড এমন হেভিওয়েট টিম গুলোর অভাব কিছুতেই বুঝতে দেয়নি তথাকথিত ছোট দল গুলো , বরং এদের লড়াই করার মানসিকতা উপহার দিচ্ছে স্মরণ কালের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপ , আমার বিশ্বাস কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাকী ম্যাচ গুলো ও আমাদের ফুটবল উন্মাদনায় মাতিয়ে রাখবে, বিশ্বকাপ যে চার বছর পর পর আসে !
গ্রুপ পর্বের স্মৃতিমালা !
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪২